মাদারীপুর পৌর শহরের ‘ভূঁইয়ার মাঠ’ খালটি কয়েক বছর ধরে ময়লা আবর্জনা ফেলা ও কচুরীপানায় ভরাট হওয়ায় পানি চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে বৃষ্টির মৌসুমে জলাবদ্ধতায় তৈরি হয়। এতে চরম ভোগান্তি পড়েন পৌরবাসী। স্থানীয়রা মনে করছেন, এই শীত মৌসুম থাকতেই খালটি খনন করে বর্ষার মৌসুমে নির্বিঘেœ পানি চলাচল করার ব্যবস্থা করা হলে জলাবদ্ধতা নিরসনের পাশাপাশি মশার উৎপাদনের হাত থেকেও রক্ষা পাবেন তারা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, মাদারীপুর পৌর শহরের ২ নং ওয়ার্ডের আমিরাবাদ এলাকার বলরামদেব মন্দির থেকে একটু উত্তরে অবস্থিত আমিরাবাদ জামে মসজিদ ভবনের নিচ থেকে উত্তর পাশে এবং শামসুননাহার উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের পূর্ব পাশে অবস্থিত ‘ভূঁইয়ার মাঠ’ এর ভেতর দিয়ে প্রায় ৮শ ফুট দৈর্ঘ্যরে ছোট একটি খাল রয়েছে। খালটির পাশ দিয়ে গড়ে উঠেছে মাদারীপুরের বেশ কিছু ফার্নিচার কারখানা। এই কারখানার বর্জ্য খালের ফেলার কারণে পুরো খালটির নাব্য কমে গেছে। ভরাট হয়ে গেছে খালের বিভিন্ন স্থান। এতে খালের গভীরতা আগের মতন না থাকায় সারাবছর এই খাল দিয়ে পানি প্রবাহ বন্ধ থাকে। তবে বর্ষা মৌসুম এলে চারপাশের পানি এসে এই খালে পড়ায় পুরো খালটির পানি চারপাশে ছড়িয়ে পড়ে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি করে। এতে এই এলাকায় বসবাস করা মানুষ পড়েছেন চরম ভোগান্তিতে। খালের বিভিন্ন স্থানে পানি জমে থাকায় সারাবছরই এডিশ মশার লার্ভা থেকে মশার উৎপাদন বৃদ্ধি পেতেই থাকে। এতে এলাকার মানুষ স্বাস্থ্য ঝুঁকিতেও পড়েন। তাই স্থানীয়রা কর্তৃপক্ষের কাছে এই খালটি নতুন করে খনন করে সারাবছরই পানি চলাচলের ব্যবস্থার দাবি করছেন।
স্থানীয় বাসিন্দা সাগর হোসেন বলেন, ‘আমিরাবাদ মসজিদ থেকে উত্তর দিকে বয়ে যাওয়া খালটির পাশে অনেকগুলো ফার্নিচারের কারাখানা তৈরি হয়েছে। এতের কাঠের গুঁড়িগুলো এই খালে নিয়মিত ফেলার কারণে খালের এক পাশের মুখ ভরাট হয়ে গেছে। এখন আর খালে পানি চলাচল করে না। এই খালটি বেশি বড় নয়।
সর্বোচ্চ ৮-৯শ ফুট হতে পারে। এই খালটি যদি কর্তৃপক্ষ নতুন করে খনন করে দুই পাড় বেঁধে দেয়। তাহলে সারাবছরই এই খালের পানি প্রবাহ থাকবে। এতে স্থানীয় বাসিন্দারা তাদের বাড়িঘরের ব্যবহৃত ময়লা পানিও ফেলতে পারবে। নাগরিক জীবন যাপনে আসবে ইতিবাচক পরিবর্তন।’
আরেক বাসিন্দা অসীম দাস বলেন, ‘এই খালটি দিয়ে তো আগে দেখতাম সারাবছরই পানি নামত। এখন তো পানি বের হওয়ার সিস্টেম নেই। তাছাড়া পানি বের না হওয়ার কারণে সারাবছরই এই খালে এডিশ মশার লার্ভা থাকে। এতে এই এলাকায় ডেঙ্গুরোগীর সংখ্যা বর্ষার সময়ে বেড়ে যায়। অনেকেই শুনেছি মশার কামড়ে ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়েছে। তাই এই ‘ভূঁইয়ার মাঠ’ খালটি খনন করা জরুরি।
এদিকে নজরুল ইসলাম নামের স্থানীয় এক মুরুব্বি বলেন, ‘আগে দলীয় সরকার ক্ষমতায় ছিল। তখন তো খাল খনন করতে গেলেই বাঁধা আসত। এখন তো অন্তবর্তীকালীন ইউনুস সরকার। এখন তো কর্তৃপক্ষের খাল খনন ও উদ্ধার কার্যক্রম করা খুব সহজ। এখন যদি এসব খাল উদ্ধার ও পুনঃখনন করা না হয়। তাহলে আর কোনোদিনই করা সম্ভব হবে না। শুধু এরাই নয়। কর্তৃপক্ষের কাছে এই খালটি খনন ও উদ্ধার নিয়ে অনেক মানুষ দাবি জানিয়েছেন।
এই বিষয়ে মাদারীপুর উন্নয়ন সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি অ্যাডভোকেট মাসুদ পারভেজ বলেন, ‘আমিরাবাদ এলাকার শামসুননাহার বালিকা বিদ্যালয়ের পূর্ব পাশের ‘ভূঁইয়া মাঠ’ খালটিতে এখন আগের মতন নাব্য নেই। ফলে পানি চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। এখন এই খালটি নতুন করে খনন করে দুই পাশে খনন করা মাটি ভালো করে পাড় বেঁধে দিলে খাল দিয়ে সারাবছরই পানি চলাচল করতে পারবে। এতে স্থানীয় বাসিন্দারা খালটি ব্যবহার করে যেমন নাগরিক সুবিধা পাবে। তেমনই জলাবদ্ধতার দুর্ভোগ থেকেও মুক্তি পাবে। মশার উৎপাদনও বন্ধ হবে। তাই খালটি জরুরি ভিত্তিতে খনন করে খালের প্রাণ ফিরিয়ে আনার দাবি করছি।’
আমিরাবাদ ‘ভূঁইয়ার মাঠ’ খাল উদ্ধার ও খনন কার্যক্রম বিষয়ে মাদারীপুর পৌরসভার পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা খন্দকার আবু আহমদ ফিরোজ ইলিয়াস বলেন, ‘খালটি ইতোমধ্যে আমরা দেখে এসেছি। খালটি দিয়ে যাতে সারাবছর পানি প্রবাহ থাকে এবং পৌরবাসী খালটির সুফল পেতে পারে সেই ধরনের উদ্যোগ আমরা খুব শীঘ্রই গ্রহণ করব।’
শুক্রবার, ০৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
মাদারীপুর পৌর শহরের ‘ভূঁইয়ার মাঠ’ খালটি কয়েক বছর ধরে ময়লা আবর্জনা ফেলা ও কচুরীপানায় ভরাট হওয়ায় পানি চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে বৃষ্টির মৌসুমে জলাবদ্ধতায় তৈরি হয়। এতে চরম ভোগান্তি পড়েন পৌরবাসী। স্থানীয়রা মনে করছেন, এই শীত মৌসুম থাকতেই খালটি খনন করে বর্ষার মৌসুমে নির্বিঘেœ পানি চলাচল করার ব্যবস্থা করা হলে জলাবদ্ধতা নিরসনের পাশাপাশি মশার উৎপাদনের হাত থেকেও রক্ষা পাবেন তারা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, মাদারীপুর পৌর শহরের ২ নং ওয়ার্ডের আমিরাবাদ এলাকার বলরামদেব মন্দির থেকে একটু উত্তরে অবস্থিত আমিরাবাদ জামে মসজিদ ভবনের নিচ থেকে উত্তর পাশে এবং শামসুননাহার উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের পূর্ব পাশে অবস্থিত ‘ভূঁইয়ার মাঠ’ এর ভেতর দিয়ে প্রায় ৮শ ফুট দৈর্ঘ্যরে ছোট একটি খাল রয়েছে। খালটির পাশ দিয়ে গড়ে উঠেছে মাদারীপুরের বেশ কিছু ফার্নিচার কারখানা। এই কারখানার বর্জ্য খালের ফেলার কারণে পুরো খালটির নাব্য কমে গেছে। ভরাট হয়ে গেছে খালের বিভিন্ন স্থান। এতে খালের গভীরতা আগের মতন না থাকায় সারাবছর এই খাল দিয়ে পানি প্রবাহ বন্ধ থাকে। তবে বর্ষা মৌসুম এলে চারপাশের পানি এসে এই খালে পড়ায় পুরো খালটির পানি চারপাশে ছড়িয়ে পড়ে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি করে। এতে এই এলাকায় বসবাস করা মানুষ পড়েছেন চরম ভোগান্তিতে। খালের বিভিন্ন স্থানে পানি জমে থাকায় সারাবছরই এডিশ মশার লার্ভা থেকে মশার উৎপাদন বৃদ্ধি পেতেই থাকে। এতে এলাকার মানুষ স্বাস্থ্য ঝুঁকিতেও পড়েন। তাই স্থানীয়রা কর্তৃপক্ষের কাছে এই খালটি নতুন করে খনন করে সারাবছরই পানি চলাচলের ব্যবস্থার দাবি করছেন।
স্থানীয় বাসিন্দা সাগর হোসেন বলেন, ‘আমিরাবাদ মসজিদ থেকে উত্তর দিকে বয়ে যাওয়া খালটির পাশে অনেকগুলো ফার্নিচারের কারাখানা তৈরি হয়েছে। এতের কাঠের গুঁড়িগুলো এই খালে নিয়মিত ফেলার কারণে খালের এক পাশের মুখ ভরাট হয়ে গেছে। এখন আর খালে পানি চলাচল করে না। এই খালটি বেশি বড় নয়।
সর্বোচ্চ ৮-৯শ ফুট হতে পারে। এই খালটি যদি কর্তৃপক্ষ নতুন করে খনন করে দুই পাড় বেঁধে দেয়। তাহলে সারাবছরই এই খালের পানি প্রবাহ থাকবে। এতে স্থানীয় বাসিন্দারা তাদের বাড়িঘরের ব্যবহৃত ময়লা পানিও ফেলতে পারবে। নাগরিক জীবন যাপনে আসবে ইতিবাচক পরিবর্তন।’
আরেক বাসিন্দা অসীম দাস বলেন, ‘এই খালটি দিয়ে তো আগে দেখতাম সারাবছরই পানি নামত। এখন তো পানি বের হওয়ার সিস্টেম নেই। তাছাড়া পানি বের না হওয়ার কারণে সারাবছরই এই খালে এডিশ মশার লার্ভা থাকে। এতে এই এলাকায় ডেঙ্গুরোগীর সংখ্যা বর্ষার সময়ে বেড়ে যায়। অনেকেই শুনেছি মশার কামড়ে ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়েছে। তাই এই ‘ভূঁইয়ার মাঠ’ খালটি খনন করা জরুরি।
এদিকে নজরুল ইসলাম নামের স্থানীয় এক মুরুব্বি বলেন, ‘আগে দলীয় সরকার ক্ষমতায় ছিল। তখন তো খাল খনন করতে গেলেই বাঁধা আসত। এখন তো অন্তবর্তীকালীন ইউনুস সরকার। এখন তো কর্তৃপক্ষের খাল খনন ও উদ্ধার কার্যক্রম করা খুব সহজ। এখন যদি এসব খাল উদ্ধার ও পুনঃখনন করা না হয়। তাহলে আর কোনোদিনই করা সম্ভব হবে না। শুধু এরাই নয়। কর্তৃপক্ষের কাছে এই খালটি খনন ও উদ্ধার নিয়ে অনেক মানুষ দাবি জানিয়েছেন।
এই বিষয়ে মাদারীপুর উন্নয়ন সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি অ্যাডভোকেট মাসুদ পারভেজ বলেন, ‘আমিরাবাদ এলাকার শামসুননাহার বালিকা বিদ্যালয়ের পূর্ব পাশের ‘ভূঁইয়া মাঠ’ খালটিতে এখন আগের মতন নাব্য নেই। ফলে পানি চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। এখন এই খালটি নতুন করে খনন করে দুই পাশে খনন করা মাটি ভালো করে পাড় বেঁধে দিলে খাল দিয়ে সারাবছরই পানি চলাচল করতে পারবে। এতে স্থানীয় বাসিন্দারা খালটি ব্যবহার করে যেমন নাগরিক সুবিধা পাবে। তেমনই জলাবদ্ধতার দুর্ভোগ থেকেও মুক্তি পাবে। মশার উৎপাদনও বন্ধ হবে। তাই খালটি জরুরি ভিত্তিতে খনন করে খালের প্রাণ ফিরিয়ে আনার দাবি করছি।’
আমিরাবাদ ‘ভূঁইয়ার মাঠ’ খাল উদ্ধার ও খনন কার্যক্রম বিষয়ে মাদারীপুর পৌরসভার পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা খন্দকার আবু আহমদ ফিরোজ ইলিয়াস বলেন, ‘খালটি ইতোমধ্যে আমরা দেখে এসেছি। খালটি দিয়ে যাতে সারাবছর পানি প্রবাহ থাকে এবং পৌরবাসী খালটির সুফল পেতে পারে সেই ধরনের উদ্যোগ আমরা খুব শীঘ্রই গ্রহণ করব।’