রাজশাহী : ফসলের মাঠে বুক চিরে খনন করা হয়েছে শত শত অবৈধ পুকুর -সংবাদ
বরেন্দ্র অঞ্চলে এক কালের সবুজ ফসলের মাঠজুড়ে বিভিন্ন ফসল দেখা গেলেও গত কয়েক বছর জুড়ে সেই ফসলের বুকচিওে খনন করা হয়েছে শত শত অবৈধ পুকুর। এসব পুকুর বন্ধে স্থানীয় কৃষকরা একাধিকবার প্রশাসনসহ উচ্চ পর্যায়ে লিখিত ও মৌখিকভাবে অভিযোগ করেও কোন সুফল পায়নি।
জানা গেছে, রাজশাহীর, পুঠিয়া উপজেলার মোট কৃষি জমির পরিমাণ ৩৬ হাজার ৫৬৫ একর। উপজেলার ছয়টি ইউপির মধ্যে মোট চারটি ইউনিয়ান ভূমি অফিস রয়েছে। ভূমি অফিসগুলোর অধিনে গত কয়েক বছরে প্রায় ১৩ হাজার একর ধানী, ফলের বাগান, ভিটা জমিতে পুকুর খনন করা হয়েছে। এরমধ্যে শিলমাড়িয়া ও ভালুকগাছি ইউপিতে প্রায় ১১ হাজার একর ধানী জমিতে পুকুর খনন করা হয়েছে। তবে গত কয়েক বছরে মোট কত একর জমিতে পুকুর খনন করা হয়েছে তার সঠিক কোনো পরিসংখ্যান উপজেলা ভূমি অফিস দিতে পারেনি।
উপজেলা ভূমি অফিস বলছে, সরকারি নিয়ম অনুসারে ১৪২২বাংলা সাল থেকে ধানী জমি প্রতি শতাংশ দুই টাকা হারে খাজনা ধার্য করা হয়েছে। বাণিজ্যিক পুকুরের খাজনা ধরা হয়েছে প্রতি শতাংশ পৌর এলাকায় ৪০ টাকা, ইউনিয়ন এলাকায় ৩০ টাকা হারে। সরকার প্রতিবছর নতুন খননকৃত উপজেলার বানিজ্যিক পুকুরগুলো হতে মোটা অংকের রাজস্ব আদায় হতে বঞ্চিত হচ্ছে।
শিলমাড়িয়া ইউনিয়নের পচামাড়িয়া এলাকার কৃষক জমির উদ্দিন বলেন, এই এলাকায় গত কয়েক বছরে কী পরিমাণ নতুন পুকুর খনন করা হয়েছে। তা সঠিক বলা খুব কঠিন। তবে শিলমাড়িয়ার অধিকাংশ ধানী জমিগুলো বর্তমানে নতুন করে পুকুর খনন করা হয়েছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, অতীতের ও বর্তমান রাজনৈতিক দলের নেতারা, ইউনিয়ন ভূমি অফিসের অসাধু কর্মচারীকে বার্ষিক ভাবে টাকার সুবিধা দিলে, নতুন পুকুর খনন করা পুকুরগুলো ধানী জমি হিসাবে দাওশিলদারা খাজনা আদায় করছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উপজেলার এক উধর্বতন কর্মকর্তা বলেন, আমরা রাজনৈতিক চাপের কারণে, পুকুর খনন করতে দিতে হচ্ছে। তারপর বিভিন্ন মহল হতে আমাদের ওপর চাপসৃষ্টি করছে।
মোল্লাপাড়া ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম বলেন, অর্থের বিনিময় বাণিজ্যিক পুকুর গুলোকে ধানী জমির খাজনা নেওয়ার বিষয়টি সম্পন্ন মিথ্যা। গত কয়েক বছরের মধ্যে যে নতুন পুকুর খনন হয়েছে তার বেশিরভাগ ধানী হিসেবে খাজনা আদায় করা হয়েছে। বর্তমানে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে নতুন পুকুর খননের হিড়িক পড়েছে। আমরা পূর্বের তালিকা অনুযায়ী ধানী হিসাবে খাজনা আদায় করছি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা স্মৃতি রানী সরকার বলেন, কোথায় পুকুর খনন করা হচ্ছে তা আমাদের জানা নেই। কৃষি শুমারি অনুযায়ী উপজেলার ফসলি জমি নির্ধারণ হয়ে থাকে।
এদিকে বৃহস্পতিবার রাজশাহীর চারঘাটে মাসিক আইনশৃঙ্খলা সভায় অবৈধভাবে পুকুর খনন নিয়ে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা সৃষ্টি হয়েছে। অবেধভাবে পুকুর খননকারীদের কাছে অনেকটা অসহায় হয়ে পড়েছে স্থানীয় প্রশাসনসহ ভুক্তভোগী কৃষকরা।
এ বিষয়ে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আরিফ হোসেন বলেন, আমরা দিনের বেলায় অভিযান চালিয়ে পুকুরখনন কাজে ব্যাবহৃত ভেকুমেশিন নষ্ট করলেও রাতের আঁধারে চলছে পুকুরখনন। রাতের বেলায় ভ্রাম্যমান আদালত চালানোর কোনবিধান নেই।
চারঘাট মডেল থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) আব্দুল খালেক বলেন, মামলা দায়েরের পর থেকে আসামীরা আত্মগোপনে থাকায় তাদের গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি। তবে দ্রুত সময়ের মধ্যে আসামীদের গ্রেফতারে পুলিশ সক্ষম হবেন বলে দাবি করেন।
রাজশাহী : ফসলের মাঠে বুক চিরে খনন করা হয়েছে শত শত অবৈধ পুকুর -সংবাদ
রোববার, ১৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
বরেন্দ্র অঞ্চলে এক কালের সবুজ ফসলের মাঠজুড়ে বিভিন্ন ফসল দেখা গেলেও গত কয়েক বছর জুড়ে সেই ফসলের বুকচিওে খনন করা হয়েছে শত শত অবৈধ পুকুর। এসব পুকুর বন্ধে স্থানীয় কৃষকরা একাধিকবার প্রশাসনসহ উচ্চ পর্যায়ে লিখিত ও মৌখিকভাবে অভিযোগ করেও কোন সুফল পায়নি।
জানা গেছে, রাজশাহীর, পুঠিয়া উপজেলার মোট কৃষি জমির পরিমাণ ৩৬ হাজার ৫৬৫ একর। উপজেলার ছয়টি ইউপির মধ্যে মোট চারটি ইউনিয়ান ভূমি অফিস রয়েছে। ভূমি অফিসগুলোর অধিনে গত কয়েক বছরে প্রায় ১৩ হাজার একর ধানী, ফলের বাগান, ভিটা জমিতে পুকুর খনন করা হয়েছে। এরমধ্যে শিলমাড়িয়া ও ভালুকগাছি ইউপিতে প্রায় ১১ হাজার একর ধানী জমিতে পুকুর খনন করা হয়েছে। তবে গত কয়েক বছরে মোট কত একর জমিতে পুকুর খনন করা হয়েছে তার সঠিক কোনো পরিসংখ্যান উপজেলা ভূমি অফিস দিতে পারেনি।
উপজেলা ভূমি অফিস বলছে, সরকারি নিয়ম অনুসারে ১৪২২বাংলা সাল থেকে ধানী জমি প্রতি শতাংশ দুই টাকা হারে খাজনা ধার্য করা হয়েছে। বাণিজ্যিক পুকুরের খাজনা ধরা হয়েছে প্রতি শতাংশ পৌর এলাকায় ৪০ টাকা, ইউনিয়ন এলাকায় ৩০ টাকা হারে। সরকার প্রতিবছর নতুন খননকৃত উপজেলার বানিজ্যিক পুকুরগুলো হতে মোটা অংকের রাজস্ব আদায় হতে বঞ্চিত হচ্ছে।
শিলমাড়িয়া ইউনিয়নের পচামাড়িয়া এলাকার কৃষক জমির উদ্দিন বলেন, এই এলাকায় গত কয়েক বছরে কী পরিমাণ নতুন পুকুর খনন করা হয়েছে। তা সঠিক বলা খুব কঠিন। তবে শিলমাড়িয়ার অধিকাংশ ধানী জমিগুলো বর্তমানে নতুন করে পুকুর খনন করা হয়েছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, অতীতের ও বর্তমান রাজনৈতিক দলের নেতারা, ইউনিয়ন ভূমি অফিসের অসাধু কর্মচারীকে বার্ষিক ভাবে টাকার সুবিধা দিলে, নতুন পুকুর খনন করা পুকুরগুলো ধানী জমি হিসাবে দাওশিলদারা খাজনা আদায় করছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উপজেলার এক উধর্বতন কর্মকর্তা বলেন, আমরা রাজনৈতিক চাপের কারণে, পুকুর খনন করতে দিতে হচ্ছে। তারপর বিভিন্ন মহল হতে আমাদের ওপর চাপসৃষ্টি করছে।
মোল্লাপাড়া ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম বলেন, অর্থের বিনিময় বাণিজ্যিক পুকুর গুলোকে ধানী জমির খাজনা নেওয়ার বিষয়টি সম্পন্ন মিথ্যা। গত কয়েক বছরের মধ্যে যে নতুন পুকুর খনন হয়েছে তার বেশিরভাগ ধানী হিসেবে খাজনা আদায় করা হয়েছে। বর্তমানে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে নতুন পুকুর খননের হিড়িক পড়েছে। আমরা পূর্বের তালিকা অনুযায়ী ধানী হিসাবে খাজনা আদায় করছি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা স্মৃতি রানী সরকার বলেন, কোথায় পুকুর খনন করা হচ্ছে তা আমাদের জানা নেই। কৃষি শুমারি অনুযায়ী উপজেলার ফসলি জমি নির্ধারণ হয়ে থাকে।
এদিকে বৃহস্পতিবার রাজশাহীর চারঘাটে মাসিক আইনশৃঙ্খলা সভায় অবৈধভাবে পুকুর খনন নিয়ে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা সৃষ্টি হয়েছে। অবেধভাবে পুকুর খননকারীদের কাছে অনেকটা অসহায় হয়ে পড়েছে স্থানীয় প্রশাসনসহ ভুক্তভোগী কৃষকরা।
এ বিষয়ে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আরিফ হোসেন বলেন, আমরা দিনের বেলায় অভিযান চালিয়ে পুকুরখনন কাজে ব্যাবহৃত ভেকুমেশিন নষ্ট করলেও রাতের আঁধারে চলছে পুকুরখনন। রাতের বেলায় ভ্রাম্যমান আদালত চালানোর কোনবিধান নেই।
চারঘাট মডেল থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) আব্দুল খালেক বলেন, মামলা দায়েরের পর থেকে আসামীরা আত্মগোপনে থাকায় তাদের গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি। তবে দ্রুত সময়ের মধ্যে আসামীদের গ্রেফতারে পুলিশ সক্ষম হবেন বলে দাবি করেন।