বেরোবির ড. ওয়াজেদ ইন্টারন্যাশনাল রিসার্চ ইনস্টিটিউট
রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. ওয়াজেদ ইন্টারন্যাশনাল রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেনিং ইনস্টিটিউটের তিন বছর ধরে কার্যক্রম পুরোপুরি বন্ধ। অফিসেও আসেন না কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
অথচ নিয়মিত বেতন নেবার অভিযোগ উঠেছে। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে অবস্থিত ড. ওয়াজেদ ইন্টারন্যাশনাল রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেনিং ইনস্টিটিউটে গবেষক ভর্তির অনুমোদন না পাওয়ায় ২০২২ সালের পর থেকে তিন বছর ধরে কোনো কাজ নেই এই ইনস্টিটিউট।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, ইনস্টিটিউটে সর্বমোট সাতজন কর্মকর্তা ও একজন কম্পিউটার অপারেটর এবং একজন এমএলএসএস কর্মরত আছেন। সাতজন কর্মকর্তার মধ্যে আছেন অতিরিক্ত রেজিস্ট্রার খন্দকার গোলাম মোস্তফা, প্রিন্সিপাল সায়েন্টিফিক অফিসার ড. প্রসন্নজিৎ সরকার, সাবেক উপাচার্য মেয়ে রুমানা ফেরদৌসী জলীল, ম্যানেজমেন্ট বিভাগের বিভাগীয় প্রধান রফিউল আজম খানের স্ত্রী ডেপুটি রেজিস্ট্রার সিরাজুম মুনিরা, সিনিয়র সায়েন্টিফিক অফিসার আবু সায়েম, সিনিয়র রিসার্চ অফিসার ও শহীদ মুখতার ইলালীর বোন মেহজাবিন ইলাহী এবং রংপুর বিভাগের জিয়া পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক ও রিসার্চ অফিসার ড. মো. রোকনুজ্জামান।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক বিভাগের দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানান, ২০০৯ সালের ৩ ডিসেম্বর দশম সিন্ডিকেট সভার নবম সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ড. ওয়াজেদ ইন্টারন্যাশনাল রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেনিং ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠিত হয়। এই ইনস্টিটিউট থেকে এমফিল, পিএইচডি ডিগ্রি দিতে নীতিগত সিদ্ধান্ত নেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এরপর ২০১১ সালের ৩ নভেম্বর ২০তম সিন্ডিকেট সভায় নেয়া সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ২০১২ সালের ৭ মার্চ একটি জাতীয় দৈনিকে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে ২০১১-২০১২ শিক্ষাবর্ষ থেকে এমফিল, পিএইচডিতে ভর্তি করানো হয়। গবেষণার জন্য অনুমোদন না থাকলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন প্রভাবশালী ব্যাক্তির নিজের মেয়েকে নিয়োগ দেয়ার জন্য ইউজিসির অনুমোদন ছাড়াই এই ইনস্টিটিউটে গবেষক ভর্তির সিদ্ধান্ত নেন এবং তার আমলেই এই ইনস্টিটিউটে ভর্তি কার্যক্রম শুরু হয়।
এরপর ২০২২ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে ২০৫ জন গবেষক ভর্তি হন।
ওই এই ইনস্টিটিউটে ভর্তির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠলে কার্যক্রম স্থবির হয়ে যায়, ২০২২ সাল থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত এ ইনস্টিটিউটে কর্মরত প্রায় সব কর্মকর্তা ও কর্মচারী এখন বসে বসেই বেতন পাচ্ছেন বলে অভিযোগ ওঠে।
এদিকে কাজ না থাকার অজুহাতে অফিসেও নিয়মিত আসেননা কর্মকর্তা কর্মচারীরা। এর মধ্যে রিসার্চ অফিসার ড. মো. রোকনুজ্জামানের গবেষণা কার্যক্রমে তেমন না থাকলেও তিনি প্রশাসনিক অফিসসহ বিভিন্ন জায়গায় ঘোরাফেরা করেন বলে অভিযোগ উঠেছে। নাম অনিশ্চুক এক কর্মকর্তা বলেন, এই ইনস্টিটিউটে দুয়েকজন বাদে কেউই নিয়মিত অফিস করেন না, এছাড়া তারা গবেষণায়ও মনোযোগী না। বেশির ভাগই ব্যক্তিগত কাজে সময় দেন। অন্য দপ্তরে যেখানে লোকবল সংকট সেখানে গত তিন বছর ধরে কোনো কার্যক্রম ছাড়াই এভাবে এত কর্মকর্তাকে বসিয়ে বেতন দেয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তিনি।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, রোববার অফিস শুরুর পর বেলা সাড়ে ৯টায় গিয়ে একজন কর্মকর্তা ছাড়া আর কাউকে পাওয়া যায়নি। বিকেলে গিয়ে একই চিত্র দেখা যায়। পরের দিন সোমবার দুপুর ১২টায় গিয়ে কাউকে পাওয়া যায়নি।
কিছুক্ষণ পর রিসার্চ অফিসার ড. মো. রোকনুজ্জামান অফিসে এসে সাংবাদিকদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেন। এমন একটি অডিও ক্লিপ গণমাধ্যম কর্মীদের কাছে আছে। যেখানে তিনি সাংবাদিকদের নিয়ে তুচ্ছ তাচ্ছিল্যে করতে দেখা গেছে।
সার্বিক বিষয়ে জানতে রোকেয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. শওকাত আলী বলেন, রিসার্চ পাবলিকেশন ছাড়া কীভাবে এই সব পদে তারা নিয়োগ পেয়েছে সেটা আমারও প্রশ্ন। যাইহোক কর্মকর্তা কর্মচারী কারা অফিসে ঠিকমতো আসেন না এ ব্যাপারে রেজিস্টারকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
বেরোবির ড. ওয়াজেদ ইন্টারন্যাশনাল রিসার্চ ইনস্টিটিউট
বুধবার, ০৫ মার্চ ২০২৫
রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. ওয়াজেদ ইন্টারন্যাশনাল রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেনিং ইনস্টিটিউটের তিন বছর ধরে কার্যক্রম পুরোপুরি বন্ধ। অফিসেও আসেন না কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
অথচ নিয়মিত বেতন নেবার অভিযোগ উঠেছে। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে অবস্থিত ড. ওয়াজেদ ইন্টারন্যাশনাল রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেনিং ইনস্টিটিউটে গবেষক ভর্তির অনুমোদন না পাওয়ায় ২০২২ সালের পর থেকে তিন বছর ধরে কোনো কাজ নেই এই ইনস্টিটিউট।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, ইনস্টিটিউটে সর্বমোট সাতজন কর্মকর্তা ও একজন কম্পিউটার অপারেটর এবং একজন এমএলএসএস কর্মরত আছেন। সাতজন কর্মকর্তার মধ্যে আছেন অতিরিক্ত রেজিস্ট্রার খন্দকার গোলাম মোস্তফা, প্রিন্সিপাল সায়েন্টিফিক অফিসার ড. প্রসন্নজিৎ সরকার, সাবেক উপাচার্য মেয়ে রুমানা ফেরদৌসী জলীল, ম্যানেজমেন্ট বিভাগের বিভাগীয় প্রধান রফিউল আজম খানের স্ত্রী ডেপুটি রেজিস্ট্রার সিরাজুম মুনিরা, সিনিয়র সায়েন্টিফিক অফিসার আবু সায়েম, সিনিয়র রিসার্চ অফিসার ও শহীদ মুখতার ইলালীর বোন মেহজাবিন ইলাহী এবং রংপুর বিভাগের জিয়া পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক ও রিসার্চ অফিসার ড. মো. রোকনুজ্জামান।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক বিভাগের দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানান, ২০০৯ সালের ৩ ডিসেম্বর দশম সিন্ডিকেট সভার নবম সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ড. ওয়াজেদ ইন্টারন্যাশনাল রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেনিং ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠিত হয়। এই ইনস্টিটিউট থেকে এমফিল, পিএইচডি ডিগ্রি দিতে নীতিগত সিদ্ধান্ত নেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এরপর ২০১১ সালের ৩ নভেম্বর ২০তম সিন্ডিকেট সভায় নেয়া সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ২০১২ সালের ৭ মার্চ একটি জাতীয় দৈনিকে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে ২০১১-২০১২ শিক্ষাবর্ষ থেকে এমফিল, পিএইচডিতে ভর্তি করানো হয়। গবেষণার জন্য অনুমোদন না থাকলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন প্রভাবশালী ব্যাক্তির নিজের মেয়েকে নিয়োগ দেয়ার জন্য ইউজিসির অনুমোদন ছাড়াই এই ইনস্টিটিউটে গবেষক ভর্তির সিদ্ধান্ত নেন এবং তার আমলেই এই ইনস্টিটিউটে ভর্তি কার্যক্রম শুরু হয়।
এরপর ২০২২ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে ২০৫ জন গবেষক ভর্তি হন।
ওই এই ইনস্টিটিউটে ভর্তির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠলে কার্যক্রম স্থবির হয়ে যায়, ২০২২ সাল থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত এ ইনস্টিটিউটে কর্মরত প্রায় সব কর্মকর্তা ও কর্মচারী এখন বসে বসেই বেতন পাচ্ছেন বলে অভিযোগ ওঠে।
এদিকে কাজ না থাকার অজুহাতে অফিসেও নিয়মিত আসেননা কর্মকর্তা কর্মচারীরা। এর মধ্যে রিসার্চ অফিসার ড. মো. রোকনুজ্জামানের গবেষণা কার্যক্রমে তেমন না থাকলেও তিনি প্রশাসনিক অফিসসহ বিভিন্ন জায়গায় ঘোরাফেরা করেন বলে অভিযোগ উঠেছে। নাম অনিশ্চুক এক কর্মকর্তা বলেন, এই ইনস্টিটিউটে দুয়েকজন বাদে কেউই নিয়মিত অফিস করেন না, এছাড়া তারা গবেষণায়ও মনোযোগী না। বেশির ভাগই ব্যক্তিগত কাজে সময় দেন। অন্য দপ্তরে যেখানে লোকবল সংকট সেখানে গত তিন বছর ধরে কোনো কার্যক্রম ছাড়াই এভাবে এত কর্মকর্তাকে বসিয়ে বেতন দেয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তিনি।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, রোববার অফিস শুরুর পর বেলা সাড়ে ৯টায় গিয়ে একজন কর্মকর্তা ছাড়া আর কাউকে পাওয়া যায়নি। বিকেলে গিয়ে একই চিত্র দেখা যায়। পরের দিন সোমবার দুপুর ১২টায় গিয়ে কাউকে পাওয়া যায়নি।
কিছুক্ষণ পর রিসার্চ অফিসার ড. মো. রোকনুজ্জামান অফিসে এসে সাংবাদিকদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেন। এমন একটি অডিও ক্লিপ গণমাধ্যম কর্মীদের কাছে আছে। যেখানে তিনি সাংবাদিকদের নিয়ে তুচ্ছ তাচ্ছিল্যে করতে দেখা গেছে।
সার্বিক বিষয়ে জানতে রোকেয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. শওকাত আলী বলেন, রিসার্চ পাবলিকেশন ছাড়া কীভাবে এই সব পদে তারা নিয়োগ পেয়েছে সেটা আমারও প্রশ্ন। যাইহোক কর্মকর্তা কর্মচারী কারা অফিসে ঠিকমতো আসেন না এ ব্যাপারে রেজিস্টারকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।