alt

সম্পাদকীয়

গণরোষের নামে নৃশংসতা : কোথায় সমাধান?

: বৃহস্পতিবার, ০৬ মার্চ ২০২৫

ঢাকার বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় ইরানের দুই নাগরিকসহ তিনজনকে এবং চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় ‘ডাকাত সন্দেহে’ দুই যুবকের গণপিটুনির শিকার হওয়ার ঘটনা দেশে আইনের শাসন ও মানবাধিকারের প্রতি ক্রমবর্ধমান উদাসীনতার একটি ভয়াবহ চিত্র তুলে ধরেছে। এই দুটি ঘটনা ভিন্ন স্থানে ও ভিন্ন প্রেক্ষাপটে ঘটলেও, মূল সমস্যা একইÑ ‘মব’ বা উত্তেজিত জনতার হাতে বিচারের নামে নৃশংসতা। এটি কেবল সামাজিক অস্থিরতার লক্ষণ নয়, বরং রাষ্ট্রের আইনি ও প্রশাসনিক ব্যবস্থার ব্যর্থতারও প্রতিফলন।

ঢাকার ঘটনায় দেখা যায়, মুদ্রা বিনিময় নিয়ে তর্কের জেরে ইরানের দুই নাগরিক ছিনতাইকারী হিসেবে চিহ্নিত হয়ে গণপিটুনির শিকার হন। এই দুই পর্যটক বাংলাদেশে ঘুরতে এসেছিলেন, কিন্তু তাদের অভিজ্ঞতা হয়ে উঠল একটি দুঃস্বপ্ন। পুলিশ তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করলেও, প্রশ্ন থেকে যায়Ñ এ ধরনের ঘটনা কেন ঘটল? কেন একটি সাধারণ তর্ক ‘মব’ তৈরি করে সহিংসতায় রূপ নিল? এর পেছনে কি সামাজিক অসহিষ্ণুতা, না আইনের প্রতি ভরসার অভাব?

সাতকানিয়ার ঘটনা আরও মর্মান্তিক। ‘ডাকাত সন্দেহে’ মসজিদের মাইকে প্রচারের পর স্থানীয় বাসিন্দারা দুজনকে পিটিয়ে হত্যা করেছে। নিহতরা প্রকৃত ডাকাত ছিলেন কিনা তা এখনও নিশ্চিত হয়নি। এই অনিশ্চয়তার মধ্যেই জনতা নিজেদের হাতে বিচার তুলে নিয়েছে, যা আইনের শাসনের প্রতি সরাসরি চ্যালেঞ্জ।

ঘটনা দুটি আমাদের সমাজে গভীরভাবে প্রোথিত অস্থিরতা ও আইনের প্রতি অবিশ্বাসের প্রতিচ্ছবি। যখন মানুষ পুলিশ বা আদালতের ওপর ভরসা না করে নিজেরাই বিচারকের ভূমিকা পালন করে, তখন আইনের শাসন প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়ে। সাতকানিয়ায় পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছলেও ততক্ষণে দুটি প্রাণহানি ঘটে গেছে। ঢাকায় পুলিশের দ্রুত হস্তক্ষেপ প্রাণ বাঁচালেও, সহিংসতা ঠেকানো যায়নি। এই ব্যর্থতা শুধু প্রশাসনের নয়, আমাদের সমাজের শিক্ষা, সচেতনতা ও মূল্যবোধেরও।

গণপিটুনি কোনো সমাধান নয়, বরং সমস্যাকে আরও জটিল করে তোলে। সরকারের উচিত এই ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা। পুলিশের তৎপরতা বাড়াতে হবে। আইনের প্রতি মানুষের ভরসা ফিরিয়ে আনার জন্য দ্রুত ও নিরপেক্ষ বিচার নিশ্চিত করতে হবে। নইলে এই ‘মব মেন্টালিটি’ আমাদের সমাজকে আরও গভীর সংকটের দিকে ঠেলে দেবে।

অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধে প্রয়োজন কঠোর প্রশাসনিক উদ্যোগ

আইনের শাসন নিশ্চিত না হলে সহিংসতার পুনরাবৃত্তি থামবে না

এসএসসি পরীক্ষার ফল : বাস্তবতা মেনে, ভবিষ্যতের পথে এগিয়ে চলতে হবে

বন্যা : কেন নেই টেকসই সমাধান?

জলাবদ্ধ নগরজীবন

ভূমিধসের হুমকি ও প্রস্তুতি

এশিয়া কাপে বাংলাদেশ নারী দল : অভিনন্দন

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসক সংকট : দ্রুত সমাধান প্রয়োজন

উপজেলা স্বাস্থ্যসেবায় সংকট

বজ্রপাত মোকাবিলায় চাই বাস্তবভিত্তিক পরিকল্পনা ও কার্যকর বাস্তবায়ন

মাদক নিয়ন্ত্রণে প্রতিশ্রুতি অনেক, ফলাফল প্রশ্নবিদ্ধ

আর্সেনিক দূষণ : জনস্বাস্থ্যের নীরব সংকট

ধর্মীয় অবমাননার অজুহাতে ‘মব জাস্টিস’ : সমাধান কোথায়?

সরকারি গাছ কাটা কঠোরভাবে বন্ধ করুন

এসএসসি পরীক্ষায় অনুপস্থিতি : বাল্যবিয়ে রোধে ব্যবস্থা নিন

জলাবদ্ধতা : প্রশ্নবিদ্ধ নগর ব্যবস্থাপনা

ভিজিএফ চাল বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ আমলে নিন

সার বিতরণে অনিয়ম : কৃষকের দুর্ভোগের অবসান হোক

ভারতে বিমান দুর্ঘটনা

ইরান-ইসরায়েল সংঘাত : যুদ্ধ নয়, শান্তিই টেকসই সমাধান

বাড়ছে করোনার সংক্রমণ : মানতে হবে স্বাস্থ্যবিধি

ডেঙ্গু মোকাবিলায় প্রস্তুত থাকতে হবে

ঈদুল আজহা : ত্যাগ, ভালোবাসা ও সম্প্রীতির উৎসব

ঈদযাত্রায় বাড়তি ভাড়া : ব্যবস্থাপনার ফাঁকফোকর ও নজরদারির সীমাবদ্ধতা

নির্বাচন নিয়ে বাদানুবাদ শুভ লক্ষণ নয়

অপরাধের উদ্বেগজনক প্রবণতা ও আইনশৃঙ্খলার বাস্তবতা

রেলের জমি দখলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন

বাসে ডাকাতি ও নারী নির্যাতন : সড়কে জনসাধারণের আতঙ্ক

স্মার্টকার্ড জটিলতায় টিসিবির পণ্য সরবরাহ ব্যাহত, ব্যবস্থা নিন

মামলার ন্যায্যতা ও আইনের শাসন: কিসের পরিবর্তন ঘটেছে?

প্যারাবন ধ্বংস ও দখলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন

বজ্রপাতে প্রাণহানি ঠেকাতে চাই প্রস্তুতি ও সচেতনতা

নারীর ডাকে ‘মৈত্রী যাত্রা’

খাদ্যে ভেজাল : আইন আছে, প্রয়োগ কোথায়?

চুয়াত্তর পেরিয়ে পঁচাত্তরে সংবাদ: প্রতিজ্ঞায় অবিচল পথচলা

দখলে অস্তিত্ব সংকটে বন

tab

সম্পাদকীয়

গণরোষের নামে নৃশংসতা : কোথায় সমাধান?

বৃহস্পতিবার, ০৬ মার্চ ২০২৫

ঢাকার বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় ইরানের দুই নাগরিকসহ তিনজনকে এবং চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় ‘ডাকাত সন্দেহে’ দুই যুবকের গণপিটুনির শিকার হওয়ার ঘটনা দেশে আইনের শাসন ও মানবাধিকারের প্রতি ক্রমবর্ধমান উদাসীনতার একটি ভয়াবহ চিত্র তুলে ধরেছে। এই দুটি ঘটনা ভিন্ন স্থানে ও ভিন্ন প্রেক্ষাপটে ঘটলেও, মূল সমস্যা একইÑ ‘মব’ বা উত্তেজিত জনতার হাতে বিচারের নামে নৃশংসতা। এটি কেবল সামাজিক অস্থিরতার লক্ষণ নয়, বরং রাষ্ট্রের আইনি ও প্রশাসনিক ব্যবস্থার ব্যর্থতারও প্রতিফলন।

ঢাকার ঘটনায় দেখা যায়, মুদ্রা বিনিময় নিয়ে তর্কের জেরে ইরানের দুই নাগরিক ছিনতাইকারী হিসেবে চিহ্নিত হয়ে গণপিটুনির শিকার হন। এই দুই পর্যটক বাংলাদেশে ঘুরতে এসেছিলেন, কিন্তু তাদের অভিজ্ঞতা হয়ে উঠল একটি দুঃস্বপ্ন। পুলিশ তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করলেও, প্রশ্ন থেকে যায়Ñ এ ধরনের ঘটনা কেন ঘটল? কেন একটি সাধারণ তর্ক ‘মব’ তৈরি করে সহিংসতায় রূপ নিল? এর পেছনে কি সামাজিক অসহিষ্ণুতা, না আইনের প্রতি ভরসার অভাব?

সাতকানিয়ার ঘটনা আরও মর্মান্তিক। ‘ডাকাত সন্দেহে’ মসজিদের মাইকে প্রচারের পর স্থানীয় বাসিন্দারা দুজনকে পিটিয়ে হত্যা করেছে। নিহতরা প্রকৃত ডাকাত ছিলেন কিনা তা এখনও নিশ্চিত হয়নি। এই অনিশ্চয়তার মধ্যেই জনতা নিজেদের হাতে বিচার তুলে নিয়েছে, যা আইনের শাসনের প্রতি সরাসরি চ্যালেঞ্জ।

ঘটনা দুটি আমাদের সমাজে গভীরভাবে প্রোথিত অস্থিরতা ও আইনের প্রতি অবিশ্বাসের প্রতিচ্ছবি। যখন মানুষ পুলিশ বা আদালতের ওপর ভরসা না করে নিজেরাই বিচারকের ভূমিকা পালন করে, তখন আইনের শাসন প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়ে। সাতকানিয়ায় পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছলেও ততক্ষণে দুটি প্রাণহানি ঘটে গেছে। ঢাকায় পুলিশের দ্রুত হস্তক্ষেপ প্রাণ বাঁচালেও, সহিংসতা ঠেকানো যায়নি। এই ব্যর্থতা শুধু প্রশাসনের নয়, আমাদের সমাজের শিক্ষা, সচেতনতা ও মূল্যবোধেরও।

গণপিটুনি কোনো সমাধান নয়, বরং সমস্যাকে আরও জটিল করে তোলে। সরকারের উচিত এই ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা। পুলিশের তৎপরতা বাড়াতে হবে। আইনের প্রতি মানুষের ভরসা ফিরিয়ে আনার জন্য দ্রুত ও নিরপেক্ষ বিচার নিশ্চিত করতে হবে। নইলে এই ‘মব মেন্টালিটি’ আমাদের সমাজকে আরও গভীর সংকটের দিকে ঠেলে দেবে।

back to top