খুটিগাছা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়
সিরাজগঞ্জ : স্কুল ভবনের নির্মাণকাজ বন্ধ -সংবাদ
সিরাজগঞ্জের তাড়াশে একটি দোতলা বিদ্যালয় ভবন নির্মাণকাজে নিম্ন মানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে। বিশেষ করে স্থানীয়দের বাধায় নির্মাণকাজ বন্ধ রয়েছে। নির্মাণাধীন বিদ্যালয়ের নাম খুটিগাছা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। এদিকে নতুন ভবন নির্মাণের শুরুতে বিদ্যালয়ের খেলার মাঠ খুঁড়ে মাটি নিয়ে বিদ্যালয়ের নিচু অংশে ফেলা হয় যা এখনও ভরাট করে দেয়া হয়নি। এ নিয়ে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও খুটিগাছা গ্রামবাসীর মাঝে ক্ষোভ লক্ষ্য করা গেছে।
জানা গেছে, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন কর্মসূচি প্রকল্পের আওতায় খুটিগাছা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নতুন ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে। তিন তলা ফাউন্ডেশনের এ ভবন নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় কোটি টাকা।
খুটিগাছা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অভিভাবক শিক্ষক সমিতির (পিটিএ) সভাপতি মো. আলমগীর হোসেন বলেন, নির্মাণকাজে নিমানের ইট ও বালু ব্যবহার করা হচ্ছে। আমরা ঠিকাদার মেসার্স আনিকা টেডার্সের স্বত্বাধিকারী মো. বজলুর রহমান ও তদারকি কর্মকর্তা উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপসহকারী প্রকৌশলী বাবুল আখতারকে অভিযোগ করেছি। পরে খুটিগাছা গ্রামের সাধারণ লোকজন নির্মাণকাজে বাধা দেয়। (১০ মার্চ) সোমবার থেকে কাজ বন্ধ রয়েছে।
দেশীগ্রাম ইউনিয়নের ছোট মাঝদক্ষিণা গ্রামের রফিকুল ইসলাম ও ছাদেক আলী নামে বিদ্যালয়ের দুইজন নির্মাণ শ্রমিক বলেন, নিম্নমানের ইট দিয়ে কিছু কাজ করা হয়েছে। পরে লোকজন বাধা দিলে অবশিষ্ট ইট বিদ্যালয়ের পুরান ভবনের সামনে রেখে দেয়া হয়েছে। বালুর মানও খুব খারাপ। ঠিকাদার খারাপ বালুর উপর ভালো বালু ফেলেছে। আমারা খারাপ বালুর সঙ্গে ভালো বালু মিশিয়ে কাজ করছি।
বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, তদারকি কর্মকর্তা বাবুল আখতারের সঙ্গে যোগসাযোস করে বিদ্যালয় ভবনের যেটুকো নির্মাণকাজ করা হয়েছে, তার চেয়ে অনেক বেশি টাকা বিল তুলে নিয়েছেন ঠিকাদার মো. বজলুর রহমান। মেসার্স আনিকা টেডার্সের স্বত্বাধিকারী মো. বজলুর রহমান বলেন, নিম্নমানের ইট ও বালু ব্যবহার করা হবে না। ইতোমধ্যে ইট সরিয়ে ফেলা হয়েছে। বিদ্যালয়ের মাঠের গর্তে মাটি ভরাটের জন্য ছয় হাজার টাকা দিয়েছি মাঠ কমিটিকে।
অপরদিকে খুটিগাছা গ্রামের বাসিন্দা ও তাড়াশ পৌর বিএনপির ৭ নং ওয়ার্ডের সভাপতি রেজাউল করিম শিল্পি বলেন, ছয় হাজার টাকা দিয়েছেন। কমপক্ষে আরও ১৫ হাজার টাকা লাগবে মাটি ফেলতে। বিদ্যালয় ভবন নির্মাণে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার ও খেলার মাঠের গর্ত ভরাট করে না দেওয়ায় গ্রামবাসী চরম ক্ষোভে রয়েছেন।
তদারকি কর্মকর্তা উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপসহকারী প্রকৌশলী বাবুল আখতার বলেন, বিদ্যালয়ের নির্মাণকাজ বন্ধ রাখা হয়েছে। মাঠের গর্ত ভরাটের জন্য ঠিকাদারের ১৮ হাজার টাকা দেওয়ার কথা মাঠ কমিটিকে।
খুটিগাছা গ্রামের আইছুব আলীর ছেলে ও সিরাজগঞ্জ সরকারি কলেজের অনার্সের ছাত্র শিহাব ইসলাম বলেন, তাড়াশ পৌর এলাকার কোথাও খেলাধূলার উপযুক্ত মাঠ নেই। প্রায় সব ধরনের টুর্নামেন্টের আয়োজন করা হয় খুটিগাছা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের খেলার মাঠে। রমজানের ঈদের পরের দিন এক দিনের ফুটবল টর্তুামেন্ট অনুষ্ঠিত হবে। গর্ত ভরাট করে না দিলে খেলাধুলা করা সম্ভব না এ মাঠে।
খুটিগাছা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নিলিমা মোহন্ত বলেন, বিদ্যালয়ের নতুন ভবন নির্মাণকাজে অতি নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করা হচ্ছে। খেলার মাঠে গর্ত করে রাখা হয়েছে। ঠিকাদার ও তদারকি কর্মকর্তা কোন গুরুত্ব দিচ্ছেন না। পরে বিদ্যালয়ের পিটিএ সভাপতিকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে সব কাজ ঠিকঠাক বুঝে নেওয়ার জন্য। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মুসাব্বির হোসেন বলেন, ইটের বিষয়ে জেনেছি। আমি কথা বলার পর নিম্নমানের ইট সরিয়ে নেয়া হয়েছে।
উপজেলা প্রকৌশলী মো. ফজুলল হক বলেন, বিদ্যালয় ভবন নিমার্ণে নিম্নমানের ইট ব্যবহার করা হলে সেই অংশ ভেঙে ভালো ইট দিয়ে পুনরায় নির্মাণকাজ করা হবে।
এ প্রসঙ্গে সিরাজগঞ্জ জেলা নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ছাইফুল ইসলাম বলেন, যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার জন্য উপজেলা প্রকৌশলীকে বলে দিচ্ছি।
খুটিগাছা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়
সিরাজগঞ্জ : স্কুল ভবনের নির্মাণকাজ বন্ধ -সংবাদ
শুক্রবার, ১৪ মার্চ ২০২৫
সিরাজগঞ্জের তাড়াশে একটি দোতলা বিদ্যালয় ভবন নির্মাণকাজে নিম্ন মানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে। বিশেষ করে স্থানীয়দের বাধায় নির্মাণকাজ বন্ধ রয়েছে। নির্মাণাধীন বিদ্যালয়ের নাম খুটিগাছা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। এদিকে নতুন ভবন নির্মাণের শুরুতে বিদ্যালয়ের খেলার মাঠ খুঁড়ে মাটি নিয়ে বিদ্যালয়ের নিচু অংশে ফেলা হয় যা এখনও ভরাট করে দেয়া হয়নি। এ নিয়ে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও খুটিগাছা গ্রামবাসীর মাঝে ক্ষোভ লক্ষ্য করা গেছে।
জানা গেছে, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন কর্মসূচি প্রকল্পের আওতায় খুটিগাছা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নতুন ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে। তিন তলা ফাউন্ডেশনের এ ভবন নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় কোটি টাকা।
খুটিগাছা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অভিভাবক শিক্ষক সমিতির (পিটিএ) সভাপতি মো. আলমগীর হোসেন বলেন, নির্মাণকাজে নিমানের ইট ও বালু ব্যবহার করা হচ্ছে। আমরা ঠিকাদার মেসার্স আনিকা টেডার্সের স্বত্বাধিকারী মো. বজলুর রহমান ও তদারকি কর্মকর্তা উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপসহকারী প্রকৌশলী বাবুল আখতারকে অভিযোগ করেছি। পরে খুটিগাছা গ্রামের সাধারণ লোকজন নির্মাণকাজে বাধা দেয়। (১০ মার্চ) সোমবার থেকে কাজ বন্ধ রয়েছে।
দেশীগ্রাম ইউনিয়নের ছোট মাঝদক্ষিণা গ্রামের রফিকুল ইসলাম ও ছাদেক আলী নামে বিদ্যালয়ের দুইজন নির্মাণ শ্রমিক বলেন, নিম্নমানের ইট দিয়ে কিছু কাজ করা হয়েছে। পরে লোকজন বাধা দিলে অবশিষ্ট ইট বিদ্যালয়ের পুরান ভবনের সামনে রেখে দেয়া হয়েছে। বালুর মানও খুব খারাপ। ঠিকাদার খারাপ বালুর উপর ভালো বালু ফেলেছে। আমারা খারাপ বালুর সঙ্গে ভালো বালু মিশিয়ে কাজ করছি।
বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, তদারকি কর্মকর্তা বাবুল আখতারের সঙ্গে যোগসাযোস করে বিদ্যালয় ভবনের যেটুকো নির্মাণকাজ করা হয়েছে, তার চেয়ে অনেক বেশি টাকা বিল তুলে নিয়েছেন ঠিকাদার মো. বজলুর রহমান। মেসার্স আনিকা টেডার্সের স্বত্বাধিকারী মো. বজলুর রহমান বলেন, নিম্নমানের ইট ও বালু ব্যবহার করা হবে না। ইতোমধ্যে ইট সরিয়ে ফেলা হয়েছে। বিদ্যালয়ের মাঠের গর্তে মাটি ভরাটের জন্য ছয় হাজার টাকা দিয়েছি মাঠ কমিটিকে।
অপরদিকে খুটিগাছা গ্রামের বাসিন্দা ও তাড়াশ পৌর বিএনপির ৭ নং ওয়ার্ডের সভাপতি রেজাউল করিম শিল্পি বলেন, ছয় হাজার টাকা দিয়েছেন। কমপক্ষে আরও ১৫ হাজার টাকা লাগবে মাটি ফেলতে। বিদ্যালয় ভবন নির্মাণে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার ও খেলার মাঠের গর্ত ভরাট করে না দেওয়ায় গ্রামবাসী চরম ক্ষোভে রয়েছেন।
তদারকি কর্মকর্তা উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপসহকারী প্রকৌশলী বাবুল আখতার বলেন, বিদ্যালয়ের নির্মাণকাজ বন্ধ রাখা হয়েছে। মাঠের গর্ত ভরাটের জন্য ঠিকাদারের ১৮ হাজার টাকা দেওয়ার কথা মাঠ কমিটিকে।
খুটিগাছা গ্রামের আইছুব আলীর ছেলে ও সিরাজগঞ্জ সরকারি কলেজের অনার্সের ছাত্র শিহাব ইসলাম বলেন, তাড়াশ পৌর এলাকার কোথাও খেলাধূলার উপযুক্ত মাঠ নেই। প্রায় সব ধরনের টুর্নামেন্টের আয়োজন করা হয় খুটিগাছা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের খেলার মাঠে। রমজানের ঈদের পরের দিন এক দিনের ফুটবল টর্তুামেন্ট অনুষ্ঠিত হবে। গর্ত ভরাট করে না দিলে খেলাধুলা করা সম্ভব না এ মাঠে।
খুটিগাছা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নিলিমা মোহন্ত বলেন, বিদ্যালয়ের নতুন ভবন নির্মাণকাজে অতি নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করা হচ্ছে। খেলার মাঠে গর্ত করে রাখা হয়েছে। ঠিকাদার ও তদারকি কর্মকর্তা কোন গুরুত্ব দিচ্ছেন না। পরে বিদ্যালয়ের পিটিএ সভাপতিকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে সব কাজ ঠিকঠাক বুঝে নেওয়ার জন্য। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মুসাব্বির হোসেন বলেন, ইটের বিষয়ে জেনেছি। আমি কথা বলার পর নিম্নমানের ইট সরিয়ে নেয়া হয়েছে।
উপজেলা প্রকৌশলী মো. ফজুলল হক বলেন, বিদ্যালয় ভবন নিমার্ণে নিম্নমানের ইট ব্যবহার করা হলে সেই অংশ ভেঙে ভালো ইট দিয়ে পুনরায় নির্মাণকাজ করা হবে।
এ প্রসঙ্গে সিরাজগঞ্জ জেলা নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ছাইফুল ইসলাম বলেন, যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার জন্য উপজেলা প্রকৌশলীকে বলে দিচ্ছি।