alt

সারাদেশ

নাব্য-সংকটে তিস্তা ও যমুনা নদীতে হাঁটুপানি

প্রতিনিধি, গাইবান্ধা : রোববার, ২৩ মার্চ ২০২৫

গাইবান্ধা : হাঁটুপানিতে নদী পারাপার হচ্ছে মানুষ -সংবাদ

তিস্তা-যুমনা নদীতের ক্রমাগত নাব্যসংকটে বেশির ভাগ এলাকা শুকিয়ে গিয়েছে। মূল নদীর বেশির স্থানেই হাঁটু পানি। এতে করে নৌপথগুলো বন্ধ হওয়ায় চরম দুর্ভোগে পড়েছে নদীকেন্দ্রিক লাখো মানুষ। জলবাছুর বিরুপ প্রভাবে ক্রমাগত নাব্য সংকটে প্রতিবছরেই নদীগুলো হারিয়ে ফেলেছে স্বাভাবিক গতিপ্রকৃতি।

উত্তরের জেলা গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট ও রংপুর জেলার উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া তিস্তা, ব্রহ্মছেলে-যমুনার চরাঞ্চল ও দুপাড়ে অন্ততপক্ষে ১৬লাখ মানুষের বসবাস। বসবাসকারী এসব মানুষের জীবনযাত্রাও নদীকেন্দ্রীক। কিন্তু গত এক দশক ধরে নদীতে ক্রমাগত বালু ও তলানীতে মাটি ও বালু জমেভরাট হয়ে যাচ্ছে। এতে করে বছরের বেশির ভাগ সময়ই নাব্য সংকটে নৌযান চলাচল বন্ধ থাকছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড এর তথ্য অনুযায়ী রংপুর বিভাগের চার জেলার উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া নদীতে ছোটবড় ৪শতাধিক নৌঘাট রয়েছে। এসব ঘাট দিয়ে মানুষজন তাদের দৈনন্দিন পণ্য পরিবহন ও যাতায়াত করে থাকে। কিন্ত নদীগুলোতে পানি না থাকায় সবগুলো নদীর অস্তিত্ব হারিয়ে ফেলেছে।

গাইবান্ধা ফুলছড়ি উপজেলার ফজলুপুর চরের আবু সাঈদ জানান, চলতি মৌসুমে নভেম্বর মাসেই পানির সংকটে নদীতে নৌচলাচল বন্ধ হয়েছে। একারণে মেইন ল্যাল্ডের হাট ফুলছড়ি ও বালাসীঘাটে যেতে ১৫ থেকে ১৬ কিলোমিটার দূর্গম বালু চরে পায়ে হেটে চলাচল করতে হয়।

বন্যার পরেই নৌঘাটগুলো মেইনল্যান্ড থেকে কমপক্ষে ৫ কিলোমিটার দুরে সরে যাওয়ায় চরম ভোগান্তি পড়ে চরাঞ্চলের মানুষজন। এমন পরিস্থিতিতে মানুষজন বিকল্প হিসাবে পায়ে হেটে, ঘোড়ার গাড়ি আবার কখনও অটোবাইকে, কাকড়া (ট্রাক্টর) চরে ৫ থেকে ১০ কিলোমিটার অতিক্রম করে প্রয়োজনের তাগিদে নৌঘাটে পৌঁছাঁতে হচ্ছে। এতে গুণতে হচ্ছে অতিরিক্ত ভাড়াও।

সুন্দরগঞ্জ উপজেলার কাপাসিয়া চরের রাজা মিয়া বলেন, চরাঞ্চলের ভুট্টা মরিচ বাদাম চাষাবাদ হলেও যাতায়াত সমস্যায় ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছি। কেননা এগুলো হাটে নিয়ে বিক্রি করতে বেশ অর্থ ব্যয়। আবার সময়মতো পরিবহনও পাওয়া যায় না।

নদীগবেষক ও গণউন্নয়ন কেন্দ্রের নির্বাহী প্রধান এম. আবদুস্ সালাম জানান, পরিবর্তনজনিত জলবাছুর প্রভাবে এমন অবস্থা তৈরি হয়েছে। আর এতে করে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে নদী ও চরাকেন্দ্রীক মানুষজন। এজন্য তিনি জলবাছুর প্রভাব মোকাবেলায় মানুষজনের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে পদক্ষেপ নেয়া প্রায়োজন বলে জানান।

গাইবান্ধা জেলা প্রশাসক চৌধুরী মোয়াজ্জম আহমদ জানান, উত্তরাঞ্চলের মানুষের সঙ্গে জামালপুর, শেরপুর, ময়মিনসিংহ সহ ঢাকার নৌ যোগাযোগ সবসময় সচল রাখতে নদী খনন করা হচ্ছে। তবে, সারাবছর নদী চালু রাখতে মহা পরিকল্পনার প্রয়োজন আছে বলে তিনি জানান।

জলবাছু বিশেষজ্ঞ ড. আইনুন নিশাত জানান, নদীগুলো জীবিত রাখতে হবে। কেননা নদী না থাকলে মানুষসহ জৈববৈচিত্র্যও হারিয়ে যাবে. আর এর প্রভাব পড়বে সার্বিক অর্থনীতিতে। একারণে তিনি সরকারকে পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানান।

গাইবান্ধ এদিকে, দু’বছরে বিআইডব্লিউটিএ প্রায় আড়াইশ কোটি টাকা খরচ করে নদী খনন করলেও কোন দৃশ্যত কোন কাজ হয়নি। একারণে পরিকল্পিতভাবে নদী ড্রেজিং এর মাধ্যমে নৌপথগুলো সচল করে মানুষজনের জীবনমানের উন্নয়ন এবং যোগাযোগ দুর্ভোগ দুর করতে সরকার পদক্ষেপ নিবে এমনটাই দাবি এই অঞ্চলের মানুষজনের।

ছবি

মোটরসাইকেল না পেয়ে বাবার বাড়িতে আগুন, পুড়ল খামার ও রান্নাঘর

ছবি

ঘুমধুম সীমান্তে ২০ হাজার ইয়াবা উদ্ধার

ছবি

রংপুর রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানি অভিযোগ, কুশপুত্তলিকায় দাহ

সিলেট থেকে কাজের সন্ধানে কক্সবাজার গিয়ে একই গ্রামের ৬জন নিখোঁজ

মুন্সীগঞ্জে খালে কাপড় ধুতে গিয়ে গৃহবধূর মৃত্যু

পশ্চিম শিকলবাহা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকরা আসেন ইচ্ছামতো

ছবি

চুনারুঘাটে মডেল মসজিদে আরেক দফা ফাটল, কেনা হয়নি আসবাব

গাইবান্ধায় দ্রুত রাস্তা সংস্কারের দাবি

জয়পুরহাট পৌরসভার দোকানের ভাড়া বৃদ্ধির প্রতিবাদে মানববন্ধন

নাশকতা মামলায় ইউপি চেয়ারম্যান গ্রেপ্তার

ছবি

কুড়িয়ে পাওয়া নবজাতক পেল মায়ের কোল

খোকসায় দুই পদে চাকরি করছেন এক ব্যক্তি

সিরাজগঞ্জে মামা-মামি হত্যায় ভাগ্নের মৃত্যুদণ্ড

ছবি

ভেড়ামারার গোড়েশাহ মাজারে মাদকবিরোধী অভিযানে গিয়ে হামলার শিকার ম্যাজিস্ট্রেট

মুন্সীগঞ্জে বাল্কহেড থেকে নদীতে পড়ে শ্রমিক নিখোঁজ

নোয়াখালীতে ভারি বৃষ্টিপাতে বোরো জমি জলাবদ্ধ, বিপাকে কৃষক

ছবি

উত্তর জনপদের মানুষের জীবনযাত্রার উন্নয়নে অন্যতম অন্তরায় নদীভাঙন

জিয়া মঞ্চের সভাপতির পদ বাগিয়ে নিলেন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক

দুই জেলায় স্বামী-স্ত্রীসহ ৩ ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার

জগন্নাথপুরে পৃথক সংঘর্ষে আহত ৭

রাঙ্গুনিয়ায় ছাগলে খেত খাওয়া নিয়ে সংঘর্ষে আহত ৪

বদরখালীতে রাতের আঁধারে পুকুরে বিষ ঢেলে ৩০ লাখ টাকার মাছ নিধন

মাছ ধরতে গিয়ে ভারতে ৭ জেলে আটক

ছবি

লবণাক্ততা বৃদ্ধি পাওয়ায় চট্টগ্রাম ওয়াসায় পানি সরবরাহ কমেছে দৈনিক ৫ কোটি লিটার

সরকারি জায়গায় নির্মিত মার্কেট ভেঙে দিল প্রশাসন

দুই জেলায় সড়কে ও রেলে স্কুলছাত্রীসহ ২ জনের মৃত্যু

মেয়াদোত্তীর্ণের তারিখ ছাড়া আইসক্রিম-দই তৈরি, জরিমানা

সদরপুরে সরকারি জায়গা দখলমুক্ত

পরিত্যক্ত অবস্থায় ওয়ান শুটার গান উদ্ধার

ছবি

নেতাই নদীতে নেই স্থায়ী বেড়িবাঁধ জমি-ঘরবাড়ি ভাঙার শঙ্কায় কৃষক

পৌরসভার টোল আদায় বন্ধের দাবিতে সিএনজিচালকদের বিক্ষোভ

‘দুর্নীতির’ মামলায় রাজউকের সাবেক কর্মচারীর ৭ বছরের সাজা

ফকিরাপুলে ‘গ্যাসের আগুনে’ একই পরিবারের তিনজন দগ্ধ

ছবি

বেতাগীর উন্নয়নকাজে প্রশংসায় পঞ্চমুখ পৌর প্রশাসক

স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের নাম পরিবর্তন ও গ্রাম আদালত বিলুপ্তির সুপারিশ

ছবি

নারায়ণগঞ্জে ট্রাক স্ট্যান্ড না করার দাবিতে স্থানীয়দের বিক্ষোভ

tab

সারাদেশ

নাব্য-সংকটে তিস্তা ও যমুনা নদীতে হাঁটুপানি

প্রতিনিধি, গাইবান্ধা

গাইবান্ধা : হাঁটুপানিতে নদী পারাপার হচ্ছে মানুষ -সংবাদ

রোববার, ২৩ মার্চ ২০২৫

তিস্তা-যুমনা নদীতের ক্রমাগত নাব্যসংকটে বেশির ভাগ এলাকা শুকিয়ে গিয়েছে। মূল নদীর বেশির স্থানেই হাঁটু পানি। এতে করে নৌপথগুলো বন্ধ হওয়ায় চরম দুর্ভোগে পড়েছে নদীকেন্দ্রিক লাখো মানুষ। জলবাছুর বিরুপ প্রভাবে ক্রমাগত নাব্য সংকটে প্রতিবছরেই নদীগুলো হারিয়ে ফেলেছে স্বাভাবিক গতিপ্রকৃতি।

উত্তরের জেলা গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট ও রংপুর জেলার উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া তিস্তা, ব্রহ্মছেলে-যমুনার চরাঞ্চল ও দুপাড়ে অন্ততপক্ষে ১৬লাখ মানুষের বসবাস। বসবাসকারী এসব মানুষের জীবনযাত্রাও নদীকেন্দ্রীক। কিন্তু গত এক দশক ধরে নদীতে ক্রমাগত বালু ও তলানীতে মাটি ও বালু জমেভরাট হয়ে যাচ্ছে। এতে করে বছরের বেশির ভাগ সময়ই নাব্য সংকটে নৌযান চলাচল বন্ধ থাকছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড এর তথ্য অনুযায়ী রংপুর বিভাগের চার জেলার উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া নদীতে ছোটবড় ৪শতাধিক নৌঘাট রয়েছে। এসব ঘাট দিয়ে মানুষজন তাদের দৈনন্দিন পণ্য পরিবহন ও যাতায়াত করে থাকে। কিন্ত নদীগুলোতে পানি না থাকায় সবগুলো নদীর অস্তিত্ব হারিয়ে ফেলেছে।

গাইবান্ধা ফুলছড়ি উপজেলার ফজলুপুর চরের আবু সাঈদ জানান, চলতি মৌসুমে নভেম্বর মাসেই পানির সংকটে নদীতে নৌচলাচল বন্ধ হয়েছে। একারণে মেইন ল্যাল্ডের হাট ফুলছড়ি ও বালাসীঘাটে যেতে ১৫ থেকে ১৬ কিলোমিটার দূর্গম বালু চরে পায়ে হেটে চলাচল করতে হয়।

বন্যার পরেই নৌঘাটগুলো মেইনল্যান্ড থেকে কমপক্ষে ৫ কিলোমিটার দুরে সরে যাওয়ায় চরম ভোগান্তি পড়ে চরাঞ্চলের মানুষজন। এমন পরিস্থিতিতে মানুষজন বিকল্প হিসাবে পায়ে হেটে, ঘোড়ার গাড়ি আবার কখনও অটোবাইকে, কাকড়া (ট্রাক্টর) চরে ৫ থেকে ১০ কিলোমিটার অতিক্রম করে প্রয়োজনের তাগিদে নৌঘাটে পৌঁছাঁতে হচ্ছে। এতে গুণতে হচ্ছে অতিরিক্ত ভাড়াও।

সুন্দরগঞ্জ উপজেলার কাপাসিয়া চরের রাজা মিয়া বলেন, চরাঞ্চলের ভুট্টা মরিচ বাদাম চাষাবাদ হলেও যাতায়াত সমস্যায় ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছি। কেননা এগুলো হাটে নিয়ে বিক্রি করতে বেশ অর্থ ব্যয়। আবার সময়মতো পরিবহনও পাওয়া যায় না।

নদীগবেষক ও গণউন্নয়ন কেন্দ্রের নির্বাহী প্রধান এম. আবদুস্ সালাম জানান, পরিবর্তনজনিত জলবাছুর প্রভাবে এমন অবস্থা তৈরি হয়েছে। আর এতে করে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে নদী ও চরাকেন্দ্রীক মানুষজন। এজন্য তিনি জলবাছুর প্রভাব মোকাবেলায় মানুষজনের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে পদক্ষেপ নেয়া প্রায়োজন বলে জানান।

গাইবান্ধা জেলা প্রশাসক চৌধুরী মোয়াজ্জম আহমদ জানান, উত্তরাঞ্চলের মানুষের সঙ্গে জামালপুর, শেরপুর, ময়মিনসিংহ সহ ঢাকার নৌ যোগাযোগ সবসময় সচল রাখতে নদী খনন করা হচ্ছে। তবে, সারাবছর নদী চালু রাখতে মহা পরিকল্পনার প্রয়োজন আছে বলে তিনি জানান।

জলবাছু বিশেষজ্ঞ ড. আইনুন নিশাত জানান, নদীগুলো জীবিত রাখতে হবে। কেননা নদী না থাকলে মানুষসহ জৈববৈচিত্র্যও হারিয়ে যাবে. আর এর প্রভাব পড়বে সার্বিক অর্থনীতিতে। একারণে তিনি সরকারকে পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানান।

গাইবান্ধ এদিকে, দু’বছরে বিআইডব্লিউটিএ প্রায় আড়াইশ কোটি টাকা খরচ করে নদী খনন করলেও কোন দৃশ্যত কোন কাজ হয়নি। একারণে পরিকল্পিতভাবে নদী ড্রেজিং এর মাধ্যমে নৌপথগুলো সচল করে মানুষজনের জীবনমানের উন্নয়ন এবং যোগাযোগ দুর্ভোগ দুর করতে সরকার পদক্ষেপ নিবে এমনটাই দাবি এই অঞ্চলের মানুষজনের।

back to top