মো. আবুল হোসেন (৩৫)। শারীরিক প্রতিবন্ধকতা জয় করে শ্রমের বিনিময়ে সংসারের হাল ধরেছেন। নিজের ইচ্ছার বিরুদ্ধে কিছুদিন ভিক্ষাবৃত্তি করলেও এখন গ্রাম থেকে দুধ কিনে বাজারে বাজারে তা বিক্রি করে অন্নের সংস্থান করেছেন তিনি।
ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার ঘোষপুর ইউনিয়নের ভাড়ালিয়ার-চর গ্রামের মৃত সত্তার বিশ্বাসের ছেলে আবুল হোসেন। জন্মের এক বছর পর জ্বর হয়েছিল তার, সেই জ্বরে আক্রান্ত হয়ে দুই পা পক্ষাঘাতগ্রস্ত শক্তিহীন হয়ে পড়ে। তারপর নানা চিকিৎসা, ঔষধ, কবিরাজি করেও ভাল না হওয়ায় পরিবারের নিকট বোঝা হয়ে বড় হয় সে। পিতার মৃত্যুর পর সংসারের জোয়াল কাঁধে চাপে তার। প্রথমে ভিক্ষাবৃত্তি করে মা ও ছোট দুই ভাইসহ নিজের পেট চালিয়ে নিচ্ছিলেন। কিন্তু ভিক্ষাবৃত্তি, মানুষের কাছে হাত পেতে অনুগ্রহ নিতে ভালো লাগতো না তার। এ সময় আবুল হোসেন রিফ্রিজারেটর মেরামতের কাজ শেখেন। কিন্তু শারীরিক প্রতিবন্ধী হওয়ায় ভারি ইলেকট্রনিক জিনিস পত্র স্থানান্তর করায় সমস্যা হয় তার। তারপরও কঠিন পরিস্থিতি মোকাবিলা করে আবুল হোসেন কষ্টের সংগ্রামী জীবনযুদ্ধে টিকে ছিলো কোনো মতে। ছোট দুই ভাই বড় হয়ে যে যার মতো আলাদা সংসার পেতেছে। মা ও প্রতিবন্ধী ভাই ঠাঁই পায়নি তাদেরও অভাবের সংসারে। এ নিয়ে দুঃখ নেই আবুল হোসেনের। বর্তমানে সে গ্রামের বিভিন্ন গৃহস্থ পরিবারের থেকে দুধ কিনে বাজারে বাজারে বিক্রি করে যৎ সামান্য লাভ হয় তাই দিয়ে জীবন যাপন করেন মাকে নিয়ে।
আবুল হোসেনের সাথে কথা বলে জানা যায়, প্রতিবন্ধী ভাতার কার্ড ছাড়া সরকারি কোনো অনুদান বা আর্থিক সহায়তা তার ভাগ্যে জুটেনি। আবুল হোসেন বলেন, শুনেছি আমার মতো প্রতিবন্ধীদের সরকার হুইলচেয়ার ও সরকারি আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাড়ি, ভিজিএফ কার্ড ও টিসিবি ফ্যামেলি কার্ড দেয়। আমি শুধু একটি প্রতিবন্ধী কার্ড পেয়েছি। ভিক্ষা করা ভালো লাগেনা, কারো কাছে করুণার পাত্র হিসেবে নয় পরিশ্রম করে বেঁচে আছি, এভাবেই বেঁচে থাকতে চাই।
আবুল হোসেনের অদম্য যুদ্ধ দেখে তার পাশে এসে দাঁড়িয়েছে বোয়ালমারীর মানবতার ফেরিওয়ালা খ্যাত সুমন রাফি। সাধারণ মানুষের কষ্ট দুঃখে সব সময় ছুটে আসে সুমন রাফি। কারো রক্তের প্রয়োজন বা কারো চিকিৎসা সেবা, ওষুধ পত্র ক্রয়ে সঠিক চিকিৎসা নিতে পারছেনা এমন খবর পেলেই ছুটে আসেন সুমন।আবুল হোসেনের কষ্টের কথা যেনে তার কর্ম সংস্থানের জন্য সুমন রাফি আবুল হোসেনের হাতে তুলে দিয়েছেন দুই মন দুধ কেনার টাকা।
ভবিষ্যতে প্রয়োজনে তার পাশে দাঁড়ানোর অঙ্গিকারও করেছেন সে।
আবুল হোসেন বলেন, দুই বছর যাবত গ্রাম থেকে ১০/১৫ কেজি দুধ এনে বোয়ালমারী বাজারে বিক্রি করি, অনেকেই বাজার দরের থেকে একটু বেশি দিয়ে আমার কাছ থেকে দুধ কিনে নেয়। যা আয় হয় তাই দিয়ে মাকে নিয়ে বেঁচে আছি। সুমন রাফি ভাইকে ধন্যবাদ জানাই সে আমার পাশে দাঁড়িয়েছেন। এখন আগের থেকে আরও ভালো থাকতে পারবো।
সুমন রাফি বলেন, দীর্ঘদিন যাবত মানুষের সেবায় নিয়োজিত আছি। কোনো কিছুর প্রত্যাশায় নয়। মানুষের মুখে হাসি ফোটানোই আমার ধর্ম। আমৃত্যু আমি মানুষের সেবা করে যেতে চাই।
শুক্রবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৫
মো. আবুল হোসেন (৩৫)। শারীরিক প্রতিবন্ধকতা জয় করে শ্রমের বিনিময়ে সংসারের হাল ধরেছেন। নিজের ইচ্ছার বিরুদ্ধে কিছুদিন ভিক্ষাবৃত্তি করলেও এখন গ্রাম থেকে দুধ কিনে বাজারে বাজারে তা বিক্রি করে অন্নের সংস্থান করেছেন তিনি।
ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার ঘোষপুর ইউনিয়নের ভাড়ালিয়ার-চর গ্রামের মৃত সত্তার বিশ্বাসের ছেলে আবুল হোসেন। জন্মের এক বছর পর জ্বর হয়েছিল তার, সেই জ্বরে আক্রান্ত হয়ে দুই পা পক্ষাঘাতগ্রস্ত শক্তিহীন হয়ে পড়ে। তারপর নানা চিকিৎসা, ঔষধ, কবিরাজি করেও ভাল না হওয়ায় পরিবারের নিকট বোঝা হয়ে বড় হয় সে। পিতার মৃত্যুর পর সংসারের জোয়াল কাঁধে চাপে তার। প্রথমে ভিক্ষাবৃত্তি করে মা ও ছোট দুই ভাইসহ নিজের পেট চালিয়ে নিচ্ছিলেন। কিন্তু ভিক্ষাবৃত্তি, মানুষের কাছে হাত পেতে অনুগ্রহ নিতে ভালো লাগতো না তার। এ সময় আবুল হোসেন রিফ্রিজারেটর মেরামতের কাজ শেখেন। কিন্তু শারীরিক প্রতিবন্ধী হওয়ায় ভারি ইলেকট্রনিক জিনিস পত্র স্থানান্তর করায় সমস্যা হয় তার। তারপরও কঠিন পরিস্থিতি মোকাবিলা করে আবুল হোসেন কষ্টের সংগ্রামী জীবনযুদ্ধে টিকে ছিলো কোনো মতে। ছোট দুই ভাই বড় হয়ে যে যার মতো আলাদা সংসার পেতেছে। মা ও প্রতিবন্ধী ভাই ঠাঁই পায়নি তাদেরও অভাবের সংসারে। এ নিয়ে দুঃখ নেই আবুল হোসেনের। বর্তমানে সে গ্রামের বিভিন্ন গৃহস্থ পরিবারের থেকে দুধ কিনে বাজারে বাজারে বিক্রি করে যৎ সামান্য লাভ হয় তাই দিয়ে জীবন যাপন করেন মাকে নিয়ে।
আবুল হোসেনের সাথে কথা বলে জানা যায়, প্রতিবন্ধী ভাতার কার্ড ছাড়া সরকারি কোনো অনুদান বা আর্থিক সহায়তা তার ভাগ্যে জুটেনি। আবুল হোসেন বলেন, শুনেছি আমার মতো প্রতিবন্ধীদের সরকার হুইলচেয়ার ও সরকারি আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাড়ি, ভিজিএফ কার্ড ও টিসিবি ফ্যামেলি কার্ড দেয়। আমি শুধু একটি প্রতিবন্ধী কার্ড পেয়েছি। ভিক্ষা করা ভালো লাগেনা, কারো কাছে করুণার পাত্র হিসেবে নয় পরিশ্রম করে বেঁচে আছি, এভাবেই বেঁচে থাকতে চাই।
আবুল হোসেনের অদম্য যুদ্ধ দেখে তার পাশে এসে দাঁড়িয়েছে বোয়ালমারীর মানবতার ফেরিওয়ালা খ্যাত সুমন রাফি। সাধারণ মানুষের কষ্ট দুঃখে সব সময় ছুটে আসে সুমন রাফি। কারো রক্তের প্রয়োজন বা কারো চিকিৎসা সেবা, ওষুধ পত্র ক্রয়ে সঠিক চিকিৎসা নিতে পারছেনা এমন খবর পেলেই ছুটে আসেন সুমন।আবুল হোসেনের কষ্টের কথা যেনে তার কর্ম সংস্থানের জন্য সুমন রাফি আবুল হোসেনের হাতে তুলে দিয়েছেন দুই মন দুধ কেনার টাকা।
ভবিষ্যতে প্রয়োজনে তার পাশে দাঁড়ানোর অঙ্গিকারও করেছেন সে।
আবুল হোসেন বলেন, দুই বছর যাবত গ্রাম থেকে ১০/১৫ কেজি দুধ এনে বোয়ালমারী বাজারে বিক্রি করি, অনেকেই বাজার দরের থেকে একটু বেশি দিয়ে আমার কাছ থেকে দুধ কিনে নেয়। যা আয় হয় তাই দিয়ে মাকে নিয়ে বেঁচে আছি। সুমন রাফি ভাইকে ধন্যবাদ জানাই সে আমার পাশে দাঁড়িয়েছেন। এখন আগের থেকে আরও ভালো থাকতে পারবো।
সুমন রাফি বলেন, দীর্ঘদিন যাবত মানুষের সেবায় নিয়োজিত আছি। কোনো কিছুর প্রত্যাশায় নয়। মানুষের মুখে হাসি ফোটানোই আমার ধর্ম। আমৃত্যু আমি মানুষের সেবা করে যেতে চাই।