alt

সারাদেশ

মাদারগঞ্জে শহিদ-এর স্মৃতি নিয়ে বেঁচে আছে বিধবা মা

প্রতিনিধি, মাদারগঞ্জ (জামালপুর) : সোমবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৫

জামালপুরের মাদারগঞ্জে সিধুলীর মদনগোপাল মৃত আব্দুর রহমানের স্ত্রীকে রাতে দুই রাকাত নফল নামাজ পড়ে দোয়া করার জন্য বলেছিলেন ছেলে মোহাম্মদ শহীদ হোসেন। মাদারগঞ্জে শহিদ এর স্মৃতি নিয়ে বেঁচে আছে এক বিধবা মা। সে দিন বলেছিল। সকালে আবার কথা হবে। এ কথাও বলেছিল। সকাল ঠিকই হয়েছে কিন্তু ছেলের সঙ্গে আর কথা হয়নি মা সুন্দরী বেগমের। তিনি আর শোনেননি প্রিয় ছেলের কণ্ঠ। যদিও সকালে ছেলের নম্বর থেকে একটি কল এসেছিল। রিসিভ করার পর অপরিচিত একটি কণ্ঠ তাকে জানায়, তার ছেলে শহিদ আর নেই। জুলাই-আগস্ট ছাত্র জনতার বিপ্লবে শাহাদতবরণকারী মোহাম্মদ শহীদের মা কথাগুলো বলতে বলতে কান্নায় ভেঙে পড়েন।

জানা যায়, জামালপুরের মাদারগঞ্জ উপজেলার ৭ নং সিধুলী ইউনিয়নের মদন গোপাল পশ্চিমপাড়া এলাকার মৃত আব্দুর রহমানের ছেলে শহিদ। বয়স হয়েছিল ২৫ বছর। মা সুন্দরী বেগম গৃহিণী। তিন ভাইবোনের মধ্যে তিনি ছিলেন বড়। পড়াশোনায় ভালো হওয়ায় তিনি ছিলেন পরিবারের একমাত্র আশা-ভরসা। তিনি ঢাকার অদূরে মুন্সীগঞ্জের সরকারি হরগঙ্গা কলেজে সমাজকর্ম বিভাগে মাস্টার্সে পড়তেন।

জানা যায়, জুলাই-আগস্ট ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনে সম্মুখসারিতে ছিলেন মোহাম্মদ শহীদ।

স্বপ্ন ছিল লেখাপড়া শেষ করে পুলিশে চাকরি করবেন। কিন্তু পুলিশের হাতেই তার স্বপ্ন ভাঙল। গত বছরের ২৭ জুলাই বন্ধুদের সঙ্গে ঢাকার বিমানবন্দরে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে সম্মুখসারিতে অংশ নেন তিনি। সেদিন ছাত্র-জনতার ওপর ব্যাপক লাঠিচার্জ, গুলি,টিয়ারশেল ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে পুলিশ।

পুলিশের লাঠিচার্জে গুরুতর আহত হন তিনি। সহপাঠীরা তাকে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার পঞ্চবটি এলাকায় বাসায় নেওয়ার পরই তার মৃত্যু হয়। পরদিন ২৮ জুলাই পবিরারে সদস্যরা তার লাশ গ্রামের বাড়ি নিয়ে দাফন করেন। ছেলে শহিদ এর মৃত্যু নির্বাক করে দিয়েছে বিধাব সুন্দরী বেগমকে। মোহাম্মদ শহীদের বিষয়ে কথা তুলতেই হাউমাউ করে কান্নাজুড়ে দেন। বিলাপ করতে করতে বলেন, ‘২০০৬ সালে শহীদের বাবা মারা গেছে। অনেক কষ্ট করে লেখাপাড়া করাইছি ছেলেরে। অনেক আশা ছিল ছেলে একদিন বড় কিছু হবে। আমার ছেলেরও স্বপ্ন ছিল পুলিশের এসআই হবে। পরিবারের হাল ধরবে।

মৃত্যুর আগের দিন ফোন করে শহীদ বলেছিল। মা তোমাকে সুখ দিতে যা করা লাগবে, তাই করব। ২৭ জুলাই দিনের বেলায় ঢাকার বিমানবন্দরে আন্দোলন করে, সেদিন রাতেই সে মারা যায়। শহীদের পুরো শরীরে আঘাতের চিহ্ন ছিল। বাম পাশের শরীর পুড়ে গিয়েছিল, গ্যাসে পেট ফুলে গিয়েছিল। ’

সুন্দরী বেগম আরও বলেন, ‘ছেলের কথা মনে হলেই বুকটা হাহাকার করে ওঠে। অনেকে সান্তনা দেন, পাশে দাঁড়ানোর আশ্বাসও দেন। সরকার অর্থনৈতিক সাহায্যের পাশাপাশি আমার আরেক ছেলেকে যদি সরকারি চাকরির ব্যবস্থা করে দেয়, তাহলে আমাদের সংসারে সচ্ছলতা ফিরবে..? নাকি এভাবেই সারাটি জীবন বুকে কষ্ট নিয়ে বেঁচে থাকতে হবে..?

ছবি

সাপাহারে প্রচণ্ড তাপদাহে ঝরছে গাছের আম, লোকসানের আশঙ্কা

ছবি

কালের বিবর্তনে ঢেঁকিছাটা চাল এখন শুধুই স্মৃতি

শাহজাদপুরে গৃহবধূকে শ্বাসরোধে হত্যার অভিযোগ, স্বামী পলাতক

সিরাজদিখানে জরায়ু বিষয়ক ফ্রি ক্যাম্প

ছবি

গাইবান্ধায় কাষ্ঠকালী মন্দিরে জমে উঠছে মনোবাসনা পূরণের মেলা

চাঁদা ও দখলবাজির অভিযোগে বিএনপির ৭ নেতাকে বহিষ্কারের দাবি

বজ্রপাতে প্রাণ গেল মাদ্রাসা শিক্ষকের

ছবি

ব্রি হাইব্রিড ধানে খাদ্য নিরাপত্তার হাতছানি

এসএসসি পরীক্ষায় প্রক্সি দিতে এসে শিক্ষক-ছাত্র গ্রেপ্তার

ঈশ্বরগঞ্জে শ্মশান মন্দির ভাঙচুর প্রতিবাদে সনাতনীদের বিক্ষোভ

মানবিক কাজে প্রশংসায় ভাসছে সাটুরিয়া পুলিশ

ছবি

পর্যটন কেন্দ্র বারেকের টিলা চোরাচালানের নিরাপদ রুট

মোরেলগঞ্জে যুবকের মরদেহ উদ্ধার

চট্টগ্রামে অপহৃত কিশোরী হাটহাজারীতে উদ্ধার

ছবি

ফসলি জমির মাটি কেটে বিক্রি বাধা দেয়ায় মারধরের অভিযোগ বিএনপির নেতার বিরুদ্ধে

দিনাজপুরে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ১৮০ বস্তা চাল জব্দ

শেরপুরে বাণিজ্যিকভাবে হাইব্রিড ধান বীজ উৎপাদন শুরু

বীমা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গ্রাহকের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

চুনারুঘাটে গাঁজাসহ দুই যুবক গ্রেপ্তার

ছবি

রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় গ্রন্থাগারে বই পুড়িয়ে দিল শিক্ষার্থীরা

অষ্টগ্রামে বজ্রপাতে একজনের মৃত্যু

চাটখিলে দোকানঘর দখলের চেষ্টা, চাঁদা দাবির অভিযোগ

শাহজাদপুরে শিশু ধর্ষণ চেষ্টা, অভিযুক্ত গ্রেপ্তার

পাকুন্দিয়ায় প্রশ্নপত্রের ছবি তোলায় সুপারের কারাদণ্ড

ছবি

কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত বাস টার্মিনাল দেড় দশক ধরে পরিত্যক্ত

ছবি

কলাপাড়ায় কয়লাভিত্তিক তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের স্ক্র্যাপ শেডে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড

দায়িত্ব-বহির্ভূত কার্যক্রম সিলেটের ডিসিকে কারণ দর্শানোর নির্দেশ আদালতের

শ্রীনগর উপজেলার মাসিক আইনশৃঙ্খলা ও সাধারণ সভা

ছবি

জেলা বার্তা পরিবেশক, সিরাজগঞ্জ

নদীভাঙন রোধে দ্রুত ব্যবস্থার দাবিতে মানববন্ধন

অবরোধে খুশি রাঙ্গাবালীর জেলেরা

বামনায় কৃষকদের মাঝে বীজ ও সার বিতরণ

মুন্সীগঞ্জে চোরাই তেলসহ লরি ও ট্রলার জব্দ

ছবি

উলিপুরে জন্মনিবন্ধন ও বিয়ে রেজিস্ট্রেশন বিষয়ক ক্যাম্পেইন

সিরাজগঞ্জে গুঁড়িয়ে দেয়া হলো ৯ অবৈধ ইটভাটা

মাগুরায় লিগ্যাল এইড দিবস পালিত

tab

সারাদেশ

মাদারগঞ্জে শহিদ-এর স্মৃতি নিয়ে বেঁচে আছে বিধবা মা

প্রতিনিধি, মাদারগঞ্জ (জামালপুর)

সোমবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৫

জামালপুরের মাদারগঞ্জে সিধুলীর মদনগোপাল মৃত আব্দুর রহমানের স্ত্রীকে রাতে দুই রাকাত নফল নামাজ পড়ে দোয়া করার জন্য বলেছিলেন ছেলে মোহাম্মদ শহীদ হোসেন। মাদারগঞ্জে শহিদ এর স্মৃতি নিয়ে বেঁচে আছে এক বিধবা মা। সে দিন বলেছিল। সকালে আবার কথা হবে। এ কথাও বলেছিল। সকাল ঠিকই হয়েছে কিন্তু ছেলের সঙ্গে আর কথা হয়নি মা সুন্দরী বেগমের। তিনি আর শোনেননি প্রিয় ছেলের কণ্ঠ। যদিও সকালে ছেলের নম্বর থেকে একটি কল এসেছিল। রিসিভ করার পর অপরিচিত একটি কণ্ঠ তাকে জানায়, তার ছেলে শহিদ আর নেই। জুলাই-আগস্ট ছাত্র জনতার বিপ্লবে শাহাদতবরণকারী মোহাম্মদ শহীদের মা কথাগুলো বলতে বলতে কান্নায় ভেঙে পড়েন।

জানা যায়, জামালপুরের মাদারগঞ্জ উপজেলার ৭ নং সিধুলী ইউনিয়নের মদন গোপাল পশ্চিমপাড়া এলাকার মৃত আব্দুর রহমানের ছেলে শহিদ। বয়স হয়েছিল ২৫ বছর। মা সুন্দরী বেগম গৃহিণী। তিন ভাইবোনের মধ্যে তিনি ছিলেন বড়। পড়াশোনায় ভালো হওয়ায় তিনি ছিলেন পরিবারের একমাত্র আশা-ভরসা। তিনি ঢাকার অদূরে মুন্সীগঞ্জের সরকারি হরগঙ্গা কলেজে সমাজকর্ম বিভাগে মাস্টার্সে পড়তেন।

জানা যায়, জুলাই-আগস্ট ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনে সম্মুখসারিতে ছিলেন মোহাম্মদ শহীদ।

স্বপ্ন ছিল লেখাপড়া শেষ করে পুলিশে চাকরি করবেন। কিন্তু পুলিশের হাতেই তার স্বপ্ন ভাঙল। গত বছরের ২৭ জুলাই বন্ধুদের সঙ্গে ঢাকার বিমানবন্দরে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে সম্মুখসারিতে অংশ নেন তিনি। সেদিন ছাত্র-জনতার ওপর ব্যাপক লাঠিচার্জ, গুলি,টিয়ারশেল ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে পুলিশ।

পুলিশের লাঠিচার্জে গুরুতর আহত হন তিনি। সহপাঠীরা তাকে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার পঞ্চবটি এলাকায় বাসায় নেওয়ার পরই তার মৃত্যু হয়। পরদিন ২৮ জুলাই পবিরারে সদস্যরা তার লাশ গ্রামের বাড়ি নিয়ে দাফন করেন। ছেলে শহিদ এর মৃত্যু নির্বাক করে দিয়েছে বিধাব সুন্দরী বেগমকে। মোহাম্মদ শহীদের বিষয়ে কথা তুলতেই হাউমাউ করে কান্নাজুড়ে দেন। বিলাপ করতে করতে বলেন, ‘২০০৬ সালে শহীদের বাবা মারা গেছে। অনেক কষ্ট করে লেখাপাড়া করাইছি ছেলেরে। অনেক আশা ছিল ছেলে একদিন বড় কিছু হবে। আমার ছেলেরও স্বপ্ন ছিল পুলিশের এসআই হবে। পরিবারের হাল ধরবে।

মৃত্যুর আগের দিন ফোন করে শহীদ বলেছিল। মা তোমাকে সুখ দিতে যা করা লাগবে, তাই করব। ২৭ জুলাই দিনের বেলায় ঢাকার বিমানবন্দরে আন্দোলন করে, সেদিন রাতেই সে মারা যায়। শহীদের পুরো শরীরে আঘাতের চিহ্ন ছিল। বাম পাশের শরীর পুড়ে গিয়েছিল, গ্যাসে পেট ফুলে গিয়েছিল। ’

সুন্দরী বেগম আরও বলেন, ‘ছেলের কথা মনে হলেই বুকটা হাহাকার করে ওঠে। অনেকে সান্তনা দেন, পাশে দাঁড়ানোর আশ্বাসও দেন। সরকার অর্থনৈতিক সাহায্যের পাশাপাশি আমার আরেক ছেলেকে যদি সরকারি চাকরির ব্যবস্থা করে দেয়, তাহলে আমাদের সংসারে সচ্ছলতা ফিরবে..? নাকি এভাবেই সারাটি জীবন বুকে কষ্ট নিয়ে বেঁচে থাকতে হবে..?

back to top