alt

সারাদেশ

ধানের ভালো ফলনেও হাসি নেই চাষিদের মুখে

প্রতিনিধি, নওগাঁ : বৃহস্পতিবার, ০৮ মে ২০২৫

নওগাঁয় চলতি মৌসুমে পুরোদমে শুরু হয়েছে বোরো ধান কাটা-মাড়াই। এবছর অনুকূল আবহাওয়া, রোগবালার কম থাকায় ধানের ভালো ফলনে চাষিদের চোখে মুখে ফুটে উঠেছিল হাসির ঝিলিক। তবে সেই হাসির ভাঁজে আছে দুশ্চিন্তার ছায়া। ধানের দাম কম হওয়ায় উৎপাদন খরচ হিসাব করে চাষিরা লাভবান হতে পারছে না।

জেলা কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, এ বছর জেলায় ১ লাখ ৯২ হাজার ৩৮০ হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছে বোরো ধানের। যেখান থেকে ধান প্রায় ১২ লাখ ৮৬ হাজার টন আর চাল ৮ লাখ ৭২২ হাজার ৫৩০ মেট্রিক টন উৎপাদনের আশা। সরেজমিনে বিভিন্ন মাঠে গিয়ে দেখা যায়, সোনালী ধানের শীষে ভরে উঠেছে বিস্তীর্ণ মাঠ। মাঠে মাঠে পাকা ধানে মহু মহু গন্ধ। বৈশাখের তপ্ত রোদে কষ্টের সোনালি ফসল ঘরে তোলতে চাষিদের নেই কোন ক্লান্তি। আবাহাওয়া অনুকুলে থাকায় দ্রুত ফসল ঘরে তোলার তোড়জোড় কৃষক-কৃষাণীদের। তবে ফলন ভালো হলেও হাসি নেই চাষিদের মুখে।

চাষিদের সাথে কথা বলে জানা যায়, রোপণ থেকে শুরু করে ধান ঘরে তোলা পর্যন্ত শ্রমিক, সার, কীটনাশক, সেচসহ বিভিন্ন আনুষঙ্গিক বাবদ ফসল উৎপাদনের খরচ হয়েছে বেশি। ধারদেনা আর ঋণ করে আবাদ করায় ঘরে উঠানোর আগেই বাজার বা বাড়ির উঠান থেকেই বিক্রি করতে হচ্ছে কষ্টে ফলানো ধান। আর এই সুযোগে মৌসুমি কিছু ফড়িয়া ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে ধান কিনছে। শুরুতে ধানের ভালো দাম থাকলেও বর্তমানে সরবরাহ বাড়ায় সপ্তাহের ব্যবধানে মনপ্রতি ২০০ থেকে ২৫০ টাকা কম দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। তাই ধানের ফলন ভালো হলেও শঙ্কা দেখা দিয়েছে নায্যমূল্যে পাওয়া নিয়ে। এতে করে লাভবান হতে পারছেন না চাষিরা। এজন্য ধানের নায্য মূল্য নিশ্চিতে সরকারের তদারকি বাড়ানোর দাবি কৃষকদের।

নওগাঁ সদর উপজেলার পাহাড়পুর গ্রামের আনিসুর রহমান বলেন, ‘৩ বিঘা জমিতে ধানের আবাদ করেছি। ফলন ভালো হলেও উৎপাদন খরচ হিসাব করলে ধানে লাভ হবে না। এরপরও কৃষকদের ধানের আবাদ করতে হয় তাই করি। বিঘা প্রতি ফলন হয়েছে ২২ থেকে ২৪ মণ। প্রতি মণ ধানের দাম এখন ১০৫০ থেকে ১১৫০টাকা।’

একই গ্রামের কৃষক রহমত উদ্দিন বলেন, আবহাওয়া ভালো থাকায় ফলন ভালো হয়েছে। পাশাপাশি সার ও কীটনাশকের দাম বেড়ে যাওয়ায় আবাদে খরচ বেড়েছে। প্রতি বিঘায় সব মিলে খরচ হয়েছে ১৫ থেকে ১৭ হাজার টাকা। নিজের পরিশ্রম তো আছেই। কিন্তু বাজারে বা বাড়ির উঠানে আমরা ধান বিক্রি করতে গেলে দাম পাচ্ছি না। কিছু ফড়িয়া ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে কম দামে ধানে কিনছে। আমাদের দুঃখ দুর্দশা কেউ দেখে না।’

রানীনগর উপজেলার মিরাট গ্রামের ইকবাল হোসেন বলেন, ‘এ বছর ৫ বিঘা জমি বর্গা নিয়ে কাটারি জাতের ধান আবাদ করেছি। বিঘা প্রতি ফলন হয়েছে ২৫ থেকে ২৭ মণ। শুরুতে ধানের দাম ভাল ছিলো। কাটারিভোগ ১৩৫০ টাকা মণ পর্যন্ত বিক্রি হয়েছে। সেই ধান এখন মনে ২০০-২৫০ টাকা দাম কমে বিক্রি করতে হচ্ছে। এমনিতেই বর্গা নিয়ে আবাদ করেছি, এরমধ্যে ধানের দাম এরকম থাকলে লোকসান গুনতে হবে।’

নওগাঁ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক আবুল কালাম আজাদ বলেন, অনুকূল আবহাওয়া থাকায় ধানে রোগ-বালাইয়ের পরিমাণ কম ছিল। এতে করে ধানের ফলন ভালো হয়েছে। আশা করছি কৃষকরা ধানের ভালো দাম পাবে এবং লাভবান হবে। এরইমধ্যে প্রায় ৪০ শতাংশ ধান কাটা-মাড়াই হয়েছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগের ঝুঁকি এড়াতে জমির ধান ৮০ ভাগ ধান পেকে গেলেই চাষিদের কেটে ঘরে তোলার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

মানিকছড়ি হাসপাতালে জনবল সংকটে স্বাস্থ্যসেবা ব্যাহত

যাদুকাটা নদী খুলে দেয়ার দাবিতে মানববন্ধন

খোকসা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দালালসহ দুজনকে জরিমানা

পাবনার হাট-বাজারে অপরিপক্ব টক লিচু বিক্রি হচ্ছে চড়া দামে

ছবি

ডিমলার নদ-নদীগুলো অবৈধ দখলে মরা খাল, আবাদি জমি

ঝালকাঠিতে ডাকাতি মামলায় ৯ জনের সশ্রম কারাদণ্ড

ছবি

মোরেলগঞ্জে সন্তানহারা মায়ের কান্না, গ্রামজুড়ে শোকের ছায়া

রাজশাহীতে মাদক ব্যবসায়ী আটক

মোটরসাইকেলের ধাক্কায় নারী নিহত

চাঁদপুরে পুকুর ভরাটের দায়ে জরিমানা

গৃহবধূকে শ্লীলতাহানির অভিযোগে ছাত্রদল নেতা বহিষ্কার

ছবি

সিরাজগঞ্জে যমুনার ভাঙন আতঙ্কে তীরবর্তী মানুষ

করিমগঞ্জে বজ্রপাতে ৩ গরুর মৃত্যু

ফরিদগঞ্জে পানিতে ডুবে ২ শিশুর মৃত্যু

বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে নির্মাণ শ্রমিকের মৃত্যু

৬ জেলায় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৯

ধর্মপাশায় গাছ থেকে পড়ে কিশোরের মৃত্যু

সেনবাগে বৃদ্ধকে পিটিয়ে হত্যা

দুই জেলায় বৃদ্ধ ও কিশোরীর আত্মহত্যা

রামুর বিভিন্ন এলাকায় বেড়েছে চুরি-ডাকাতি : জনমনে আতঙ্ক

কালিহাতীতে ভেটেরিনারি দোকানে জরিমানা

ছবি

যশোরে আইন উপেক্ষা করে চলছে পুকুর ভরাট

ভুয়া পশু চিকিৎসকের কারাদণ্ড

ছবি

রাস্তা খুঁড়ে লাপাত্তা ঠিকাদার দ্রুত পাকাকরণের দাবি

ছবি

রাস্তা নির্মাণে অনিয়ম, ইউএনওর কাছে অভিযোগ

রায়গঞ্জে একই দিনে দুজনের আত্মহত্যা

প্রবাসীর বাড়িতে ডাকাতি, ২০ লাখ টাকা লুট

ডিবি থেকে সরানো মল্লিক ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি

সীমান্তবর্তী ৩৩ জেলায় পুলিশের বাড়তি সতর্কতা

ফরিদপুরে স্ত্রী হত্যার দায়ে স্বামীর যাবজ্জীবন

ধর্ষণ ও হত্যার প্রতিবাদে রামগড় ও লক্ষীছড়িতে বিক্ষোভ

ছবি

নর্থ বেঙ্গল সুগার মিল শ্রমিকদের অবস্থান কর্মসূচি

ছবি

রংপুর মেডিকেলে জরুরি চিকিৎসা সরঞ্জাম অকেজো, মন্ত্রণালয়ের পরিদর্শক হতবাক

মাদারগঞ্জে অসময়ে যমুনার পানি বৃদ্ধি, নদীতে ১০ বসতভিটা বিলীন

ছবি

বিলুপ্তির পথে বুনোফল ‘আনাই’

বিনামূল্যে চক্ষু চিকিৎসা

tab

সারাদেশ

ধানের ভালো ফলনেও হাসি নেই চাষিদের মুখে

প্রতিনিধি, নওগাঁ

বৃহস্পতিবার, ০৮ মে ২০২৫

নওগাঁয় চলতি মৌসুমে পুরোদমে শুরু হয়েছে বোরো ধান কাটা-মাড়াই। এবছর অনুকূল আবহাওয়া, রোগবালার কম থাকায় ধানের ভালো ফলনে চাষিদের চোখে মুখে ফুটে উঠেছিল হাসির ঝিলিক। তবে সেই হাসির ভাঁজে আছে দুশ্চিন্তার ছায়া। ধানের দাম কম হওয়ায় উৎপাদন খরচ হিসাব করে চাষিরা লাভবান হতে পারছে না।

জেলা কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, এ বছর জেলায় ১ লাখ ৯২ হাজার ৩৮০ হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছে বোরো ধানের। যেখান থেকে ধান প্রায় ১২ লাখ ৮৬ হাজার টন আর চাল ৮ লাখ ৭২২ হাজার ৫৩০ মেট্রিক টন উৎপাদনের আশা। সরেজমিনে বিভিন্ন মাঠে গিয়ে দেখা যায়, সোনালী ধানের শীষে ভরে উঠেছে বিস্তীর্ণ মাঠ। মাঠে মাঠে পাকা ধানে মহু মহু গন্ধ। বৈশাখের তপ্ত রোদে কষ্টের সোনালি ফসল ঘরে তোলতে চাষিদের নেই কোন ক্লান্তি। আবাহাওয়া অনুকুলে থাকায় দ্রুত ফসল ঘরে তোলার তোড়জোড় কৃষক-কৃষাণীদের। তবে ফলন ভালো হলেও হাসি নেই চাষিদের মুখে।

চাষিদের সাথে কথা বলে জানা যায়, রোপণ থেকে শুরু করে ধান ঘরে তোলা পর্যন্ত শ্রমিক, সার, কীটনাশক, সেচসহ বিভিন্ন আনুষঙ্গিক বাবদ ফসল উৎপাদনের খরচ হয়েছে বেশি। ধারদেনা আর ঋণ করে আবাদ করায় ঘরে উঠানোর আগেই বাজার বা বাড়ির উঠান থেকেই বিক্রি করতে হচ্ছে কষ্টে ফলানো ধান। আর এই সুযোগে মৌসুমি কিছু ফড়িয়া ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে ধান কিনছে। শুরুতে ধানের ভালো দাম থাকলেও বর্তমানে সরবরাহ বাড়ায় সপ্তাহের ব্যবধানে মনপ্রতি ২০০ থেকে ২৫০ টাকা কম দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। তাই ধানের ফলন ভালো হলেও শঙ্কা দেখা দিয়েছে নায্যমূল্যে পাওয়া নিয়ে। এতে করে লাভবান হতে পারছেন না চাষিরা। এজন্য ধানের নায্য মূল্য নিশ্চিতে সরকারের তদারকি বাড়ানোর দাবি কৃষকদের।

নওগাঁ সদর উপজেলার পাহাড়পুর গ্রামের আনিসুর রহমান বলেন, ‘৩ বিঘা জমিতে ধানের আবাদ করেছি। ফলন ভালো হলেও উৎপাদন খরচ হিসাব করলে ধানে লাভ হবে না। এরপরও কৃষকদের ধানের আবাদ করতে হয় তাই করি। বিঘা প্রতি ফলন হয়েছে ২২ থেকে ২৪ মণ। প্রতি মণ ধানের দাম এখন ১০৫০ থেকে ১১৫০টাকা।’

একই গ্রামের কৃষক রহমত উদ্দিন বলেন, আবহাওয়া ভালো থাকায় ফলন ভালো হয়েছে। পাশাপাশি সার ও কীটনাশকের দাম বেড়ে যাওয়ায় আবাদে খরচ বেড়েছে। প্রতি বিঘায় সব মিলে খরচ হয়েছে ১৫ থেকে ১৭ হাজার টাকা। নিজের পরিশ্রম তো আছেই। কিন্তু বাজারে বা বাড়ির উঠানে আমরা ধান বিক্রি করতে গেলে দাম পাচ্ছি না। কিছু ফড়িয়া ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে কম দামে ধানে কিনছে। আমাদের দুঃখ দুর্দশা কেউ দেখে না।’

রানীনগর উপজেলার মিরাট গ্রামের ইকবাল হোসেন বলেন, ‘এ বছর ৫ বিঘা জমি বর্গা নিয়ে কাটারি জাতের ধান আবাদ করেছি। বিঘা প্রতি ফলন হয়েছে ২৫ থেকে ২৭ মণ। শুরুতে ধানের দাম ভাল ছিলো। কাটারিভোগ ১৩৫০ টাকা মণ পর্যন্ত বিক্রি হয়েছে। সেই ধান এখন মনে ২০০-২৫০ টাকা দাম কমে বিক্রি করতে হচ্ছে। এমনিতেই বর্গা নিয়ে আবাদ করেছি, এরমধ্যে ধানের দাম এরকম থাকলে লোকসান গুনতে হবে।’

নওগাঁ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক আবুল কালাম আজাদ বলেন, অনুকূল আবহাওয়া থাকায় ধানে রোগ-বালাইয়ের পরিমাণ কম ছিল। এতে করে ধানের ফলন ভালো হয়েছে। আশা করছি কৃষকরা ধানের ভালো দাম পাবে এবং লাভবান হবে। এরইমধ্যে প্রায় ৪০ শতাংশ ধান কাটা-মাড়াই হয়েছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগের ঝুঁকি এড়াতে জমির ধান ৮০ ভাগ ধান পেকে গেলেই চাষিদের কেটে ঘরে তোলার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

back to top