মাগুরা : লিচু মেলায় ঐতিহ্যবাহী হাজরাপুরি প্রদর্শন -সংবাদ
সদ্য ভৌগোলিক নির্দেশক- জিআই স্বীকৃতি পাওয়া মাগুরার হাজরাপুরি লিচু সংগ্রহ অনুষ্ঠান ও ২ দিনব্যাপী লিচু মেলা সোমবার (১২ মে ২০২৫)সম্পন্ন হয়েছে। তবে এ সময় লিচু চাষে বিভিন্ন সমস্যা উল্লেখ করে প্রয়োজনীয় সরকারি সহায়তার অভাবের কথা তুলে ধরেন কৃষকরা।
গতকাল রোববার সকালে হাজরাপুর পুরাতন বাজার এলাকায় একটি বাগানে লিচু সংগ্রহের মাধ্যমে বছরের প্রথম লিচু সংগ্রহ শুরু হয়। পরে হাজরাপুর ইউনিয়ন পরিষদের সামনে ২ দিনব্যাপী লিচু মেলা উদ্বোধন করা হয়। মাগুরা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. হাসিবুল হাসানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন মাগুরার জেলা প্রশাসক মো.অহিদুল ইসলাম। বিশেষ অতিথি ছিলেন মাগুরার পুলিশ সুপার মিনা মাহমুদা, জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক মো.তাজুল ইসলাম, কৃষি উন্নয়ন উদ্যোক্তা মিজ জেনিস ফারজানা। প্রতিবছর লিচুর মৌসুমে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা পাইকারি ব্যবসায়ীরা বাগান থেকে উন্নতমানের হাজরাপুরি জাতের লিচু সংগ্রহ করেন। এ বছর ৬৫০ হেক্টর জমিতে লিচুর চাষ হয়েছে এবং প্রায় ৮ হাজার মেট্রিক টন লিচু সংগ্রহ করা যাবে। লিচু ধরার সময় থেকে এ অঞ্চলের প্রায় ২৫ হাজার নারী-পুরুষ বাগানে কাজ করে প্রতিদিন কমপক্ষে ৭০০ টাকা আয় করেন। এই অঞ্চলের ৩০টি গ্রামের অর্থনীতির প্রধান চালিকাশক্তি লিচু চাষ। প্রতিবছর এই এলাকা থেকে কমপক্ষে ৩০-৪০ কোটি টাকা মূল্যের লিচু দেশের বিভিন্ন বাজারে পাঠানো হয়।
জি আই স্বীকৃতি প্রাপ্তিতে এ এলাকার লিচু আগামী বছরগুলোতে আন্তর্জাতিক বাজারেও পাঠানো হবে বলে আশা করেন সংশ্লিষ্টরা। তবে এবছর তীব্র গরম ও প্রয়োজনের সময় লিচু গাছে উপযুক্ত কীটনাশক ও প্রয়োজনীয় ঔষধ স্প্রে করতে না পারায় এবার লিচু চাষীদের ফলন বিপর্যয়ের ক্ষতিতে পড়তে হয়েছে। স্থানীয় লিচু চাষী ফরহাদ হোসেন, আমিরুল খন্দকারসহ একাধিক কৃষক জানান, এ এলাকার হাজরাপুর, হাজীপুর, রাঘবদাইড়সহ আশপাশের কয়েকটি ইউনিয়নের অন্তত ত্রিশটি গ্রামের প্রধান অর্থকরী ফসল লিচু। কিন্তু সরকারিভাবে লিচুর ফলন ও সুরক্ষায় কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে তেমন কোনো সহযোগিতাই পাওয়া যায় না। এর ফলে ফলন কম হয় অন্যান্য বছর যে বাগান ১০ লাখ টাকার বিক্রি করা হয়েছে এ বছর সেখানে তিন লাখ টাকার লিচু বিক্রি করা সম্ভব হচ্ছে না। অথচ ভালো ফলন হলে এই এলাকার কৃষকরা তথা অর্থনীতিতে ব্যাপক ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে পারে। এজন্যে তারা কৃষি বিভাগকে আরো বেশি সক্রিয় হওয়ার দাবি জানান। এছাড়া সরকারের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় সার, কীটনাশক ও স্প্রে মেশিন সরবরাহের দাবি জানান তারা।
মাগুরার জেলা প্রশাসক মো. অহিদুল ইসলাম জানান, ২০২৩ সালের আগস্ট মাসে সরকারের কাছে বিভিন্ন তথ্য উপাত্যসহ জিআই স্বীকৃতির জন্য আবেদন করে মাগুরা জেলা প্রশাসন। দীর্ঘ বাছাই প্রক্রিয়ার পর গত ২৪ এপ্রিল ২০২৫ তারিখে শিল্প মন্ত্রণালয়ের পেটেন্ট শিল্প-নকশা ও ট্রেডমার্ক অধিদপ্তর থেকে ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) সনদ প্রদান করা হয়। এটি মাগুরাবাসীর জন্য গর্বের বিষয় এবং কৃষকদের জন্য একটি সম্ভাবনাময় মাইল ফলক। এ সময় তিনি ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে সরকারিভাবে পর্যাপ্ত স্প্রে মেশিন ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা প্রদানের আশ্বাস দেন।
মাগুরা : লিচু মেলায় ঐতিহ্যবাহী হাজরাপুরি প্রদর্শন -সংবাদ
সোমবার, ১২ মে ২০২৫
সদ্য ভৌগোলিক নির্দেশক- জিআই স্বীকৃতি পাওয়া মাগুরার হাজরাপুরি লিচু সংগ্রহ অনুষ্ঠান ও ২ দিনব্যাপী লিচু মেলা সোমবার (১২ মে ২০২৫)সম্পন্ন হয়েছে। তবে এ সময় লিচু চাষে বিভিন্ন সমস্যা উল্লেখ করে প্রয়োজনীয় সরকারি সহায়তার অভাবের কথা তুলে ধরেন কৃষকরা।
গতকাল রোববার সকালে হাজরাপুর পুরাতন বাজার এলাকায় একটি বাগানে লিচু সংগ্রহের মাধ্যমে বছরের প্রথম লিচু সংগ্রহ শুরু হয়। পরে হাজরাপুর ইউনিয়ন পরিষদের সামনে ২ দিনব্যাপী লিচু মেলা উদ্বোধন করা হয়। মাগুরা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. হাসিবুল হাসানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন মাগুরার জেলা প্রশাসক মো.অহিদুল ইসলাম। বিশেষ অতিথি ছিলেন মাগুরার পুলিশ সুপার মিনা মাহমুদা, জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক মো.তাজুল ইসলাম, কৃষি উন্নয়ন উদ্যোক্তা মিজ জেনিস ফারজানা। প্রতিবছর লিচুর মৌসুমে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা পাইকারি ব্যবসায়ীরা বাগান থেকে উন্নতমানের হাজরাপুরি জাতের লিচু সংগ্রহ করেন। এ বছর ৬৫০ হেক্টর জমিতে লিচুর চাষ হয়েছে এবং প্রায় ৮ হাজার মেট্রিক টন লিচু সংগ্রহ করা যাবে। লিচু ধরার সময় থেকে এ অঞ্চলের প্রায় ২৫ হাজার নারী-পুরুষ বাগানে কাজ করে প্রতিদিন কমপক্ষে ৭০০ টাকা আয় করেন। এই অঞ্চলের ৩০টি গ্রামের অর্থনীতির প্রধান চালিকাশক্তি লিচু চাষ। প্রতিবছর এই এলাকা থেকে কমপক্ষে ৩০-৪০ কোটি টাকা মূল্যের লিচু দেশের বিভিন্ন বাজারে পাঠানো হয়।
জি আই স্বীকৃতি প্রাপ্তিতে এ এলাকার লিচু আগামী বছরগুলোতে আন্তর্জাতিক বাজারেও পাঠানো হবে বলে আশা করেন সংশ্লিষ্টরা। তবে এবছর তীব্র গরম ও প্রয়োজনের সময় লিচু গাছে উপযুক্ত কীটনাশক ও প্রয়োজনীয় ঔষধ স্প্রে করতে না পারায় এবার লিচু চাষীদের ফলন বিপর্যয়ের ক্ষতিতে পড়তে হয়েছে। স্থানীয় লিচু চাষী ফরহাদ হোসেন, আমিরুল খন্দকারসহ একাধিক কৃষক জানান, এ এলাকার হাজরাপুর, হাজীপুর, রাঘবদাইড়সহ আশপাশের কয়েকটি ইউনিয়নের অন্তত ত্রিশটি গ্রামের প্রধান অর্থকরী ফসল লিচু। কিন্তু সরকারিভাবে লিচুর ফলন ও সুরক্ষায় কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে তেমন কোনো সহযোগিতাই পাওয়া যায় না। এর ফলে ফলন কম হয় অন্যান্য বছর যে বাগান ১০ লাখ টাকার বিক্রি করা হয়েছে এ বছর সেখানে তিন লাখ টাকার লিচু বিক্রি করা সম্ভব হচ্ছে না। অথচ ভালো ফলন হলে এই এলাকার কৃষকরা তথা অর্থনীতিতে ব্যাপক ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে পারে। এজন্যে তারা কৃষি বিভাগকে আরো বেশি সক্রিয় হওয়ার দাবি জানান। এছাড়া সরকারের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় সার, কীটনাশক ও স্প্রে মেশিন সরবরাহের দাবি জানান তারা।
মাগুরার জেলা প্রশাসক মো. অহিদুল ইসলাম জানান, ২০২৩ সালের আগস্ট মাসে সরকারের কাছে বিভিন্ন তথ্য উপাত্যসহ জিআই স্বীকৃতির জন্য আবেদন করে মাগুরা জেলা প্রশাসন। দীর্ঘ বাছাই প্রক্রিয়ার পর গত ২৪ এপ্রিল ২০২৫ তারিখে শিল্প মন্ত্রণালয়ের পেটেন্ট শিল্প-নকশা ও ট্রেডমার্ক অধিদপ্তর থেকে ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) সনদ প্রদান করা হয়। এটি মাগুরাবাসীর জন্য গর্বের বিষয় এবং কৃষকদের জন্য একটি সম্ভাবনাময় মাইল ফলক। এ সময় তিনি ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে সরকারিভাবে পর্যাপ্ত স্প্রে মেশিন ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা প্রদানের আশ্বাস দেন।