alt

সারাদেশ

ঈদ সামনে রেখে অন্তহীন ব্যস্ততায় চান্দিনার কামারপাড়া

মাসুমুর রহমান মাসুদ, চান্দিনা (কুমিল্লা) : বুধবার, ০৪ জুন ২০২৫

ঈদ ঘিরে ব্যস্ত এক কর্মকার। ছবিটি মঙ্গলবার কুমিল্লার চান্দিনা বাজার কামারপল্লী থেকে তোলা-সংবাদ

দরজায় কড়া নাড়ছে ঈদুল আজহা। ঈদের নামাজের পর পশু কোরবানির মধ্য দিয়েই শুরু হয় এই ঈদের তাৎপর্য। আর পশু কোরবানির অন্যতম অনুষঙ্গ কোরবানির কাজে ব্যবহৃত চাপাতি, দা, বঁটি, ছুরি, কাঁচির খোঁজ পড়ে এ সময়ই। এসব হাতিয়ার নিয়ে লোকজন ছুটে চলেন কামার বাড়িতে। কেউ যান শান দিতে, কেউবা যান নতুন করে তৈরি করতে। তাই ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত কামারপাড়ায় চলে লোহা-লক্কড়ের টুং-টাং শব্দ।

সারাবছর তেমন ব্যবহার না হলেও ঈদের দিনে এসব যন্ত্রের বেশি প্রয়োজন হয়ে পড়ে। তাই তো কোরবানিকে সামনে রেখে কামারপাড়ায় ভিড় বাড়তে শুরু করেছে। সরেজমিনে কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলা সদরের কামারপল্লীসহ বিভিন্ন স্থান ঘুরে দেখা গেছে, প্রতিটি কামার দোকানে দা, ছুরি, চাপাতি তৈরিতে দিন রাত কাজ করছে কামাররা। লোহার টুকরা আগুনে পুড়িয়ে সেগুলো পিটিয়ে দা, ছেনিসহ বিভিন্ন লোহার সরঞ্জাম তৈরির টুং-টাং শব্দে মুখরিত কামারপল্লী। কামারপল্লীতে কেউ চুলায় ভাঁপি (বাতাস দেয়ার বিশেষ যন্ত্র) টানছে, কেউ লোহা পিটছে, কেউবা শান দিচ্ছে। অনেক কামার দোকানে ঈদ উপলক্ষে অতিরিক্ত শ্রমিক নিয়োগ দিয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কুমিল্লা মহানগরীসহ ১৭টি উপজেলায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে অন্তত তিন শতাধিক কামার দোকান রয়েছে। ওইসব দোকানে সহ¯্রাধিক শ্রমিক কর্মচারী কাজ করে। কোরবানি এলেই প্রতিটি দোকানে বাড়ে কর্ম ব্যস্ততা। ঈদের অন্তত এক মাস আগ থেকেই প্রস্তুতি নিয়ে কাজ চালায় শ্রমিক-কারিগররা। মৌসুম শুরুর দিকে নতুন সরঞ্জাম বেশি তৈরি করলেও ঈদের এক সপ্তাহ আগ থেকে পুরাতন দা, ছেনি, ছুরি ও চাপাতির শান দিতেই বেশি দেখা যায়।

দা ও চাপাতি শান দিতে চান্দিনা বাজারের কামারপল্লীতে আসা নজরুল ইসলাম জানান, সারা বছর সংসারে দা ব্যবহার হলেও ছুরি ও চাপাতিগুলো কোরবানির পর অযতœ-অবহেলায় পড়ে থাকে। এক বছর সেগুলো ব্যবহার না করায় মরিচা ধরে থাকে। তাই কোরবানি এলেই এগুলো ধারালো করতে হয়।

তবে এ সুযোগে কামাররা টাকা বেশি নিচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছেন গ্রাহকরা। তারা বলেন, অন্য সময় ২০ টাকায় দা শান দেয়া যায়, কিন্তু কোরবানির সময় ৩০-৪০ টাকার নিচে শান দেয়া যায় না। টাকা বেশি দিয়েও যখন তখন পাওয়া যায় না, ২/৩ দিন পর এসে নিতে হয়।

চাপাতি কিনতে আসে ক্রেতা মফিজুল ইসলাম জানান, গত ঈদেও চাপাতি কিনেছিলাম। কিন্তু এক দিন ব্যবহারের পর সেগুলো কোথায় আছে খুঁজেও পাই না। ঘরে একটি পেয়েছি তাও মাটিতে নষ্ট হয়ে গেছে। তাই এ বছর আবারও কিনতে এসেছি। তবে গত বছরের তুলনায় এ বছর দামও অনেক বেশি। দাউদকান্দি উপজেলার ইলিয়টগঞ্জ বাজারের নান্টু কর্মকার বলেন, লোহার দাম বেশি, কয়লারও দাম বেড়েছে। এছাড়া বছরের এগারো মাসই তেমন কাজ থাকে না। কোরবানির সময় অতিরিক্ত শ্রমিক বেশি টাকা বেতনে কাজে লাগাতে হয়। তাই কোরবানির সময় অন্য সময়ের তুলনায় লোহার সরঞ্জামের দাম একটু বেশি থাকে। শান দেয়ার টাকা বেশি নেয়া সম্পর্কে তিনি আরও বলেন, নতুন তৈরি করেই তো সময় পাই না। পুরাতন জিনিসে শান দিব কখন। রাত জেগে কাজ করে শ্রমিকরা, তাই এই মৌসুমে শান দেয়ার টাকা বেশি নেয় সব কারিগররা।

চান্দিনা বাজারের ব্যবসায়ী কামার মাখন কর্মকার জানান, আগে শুধু কামার সম্প্রদায়ই এ পেশায় নিয়োজিত ছিল। অনেক পরিশ্রম এ পেশায়, তাই প্রকৃত কামারদের অধিকাংশই এ পেশা ছেড়ে দিয়েছে। অন্য শ্রেণী পেশার মানুষকে অতিরিক্ত বেতন দিয়ে এ কাজ করানো হচ্ছে। অন্য সময় দাম তেমন বেশি থাকে না, কিন্তু ঈদের মৌসুমে সবাই ২/৪ পয়সা পাওয়ার জন্য কিছুটা বেশি নেয়। দা, ছুরি, চাপাতি শান দিয়ে অনেকে খুশি হয়েও ১০-২০ টাকা বেশি দিয়ে যান।

ছবি

বিএসএফের পুশইনের প্রতিবাদে কড়া অবস্থানে বিজিবি

ছবি

হাটে গরুর নাম ‘শামীম ওসমান’, দাম ১২ লাখ

ছবি

শৈলকুপায় সড়কে ঝরল বাবা-মা ও শিশুপুত্রের প্রাণ

ছবি

কক্সবাজারের শীর্ষ ডাকাত শাহীন সেনাবাহিনীর হাতে গ্রেফতার, অস্ত্র উদ্ধার

ছবি

শূন্যরেখা অতিক্রমে বিছনাকান্দিতে উত্তেজনা, বিএসএফ ছুড়ল সাউন্ড গ্রেনেড

ছবি

গ্রাহকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে চালু হয়েছে হাইওয়ে পুলিশের Hello HP অ্যাপ

ছবি

চরশাহীতে পানিতে ডুবে প্রাণ গেল চাচাতো ভাই-বোনের

খালেদা জিয়াকে উপহার, ‘কালো মানিক’কে নিয়ে ঢাকার পথে কৃষক সোহাগ

ছবি

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বাস-অটোরিকশার সংঘর্ষে ৩ জন নিহত

ছবি

যমুনা সেতু এলাকায় ২৫ কিলোমিটার যানজট

ঈদের দশ দিনের ছুটি শুরু আজ

ছবি

বাস টার্মিনাল, রেলস্টেশন, লঞ্চঘাট ও পশুর হাটে বাড়তি নিরাপত্তা

প্রতিদিন আদালতে হাজিরার শর্তে আকাশ চৌধুরীর জামিন মঞ্জুর

ছবি

চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্তে অনুপ্রবেশ, বিএসএফ সদস্যকে আটক করে বিজিবির কাছে হস্তান্তর

ছবি

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় গ্যাস সিলিন্ডারবোঝাই ট্রাক উল্টে ভয়াবহ বিস্ফোরণ

ছবি

ফরিদপুরে বাস-মাহিন্দ্রা সংঘর্ষে ৫ জনের মৃত্যু, আহত ৪

জগন্নাথপুর সীমান্তে ভারতীয় ভূ-খণ্ডে মাকে শেষ দেখা

ছবি

তাহিরপুরে যুবলীগ নেতাকে চুরির অভিযোগে বেঁধে নির্যাতন, ভিডিও ভাইরাল

৯৯৯-এ ফোন পেয়ে উদ্ধার, গ্রেপ্তার মোটরসাইকেলচালক

ছবি

নাইক্ষ্যংছড়িতে বিজিবির জব্দ ১৮ গরু ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায় গোলাগুলি, আহত ৪

ছবি

প্যারোল মেলেনি, জেলগেটেই শেষবার মায়ের মুখ দেখলেন সাবেক এমপি আসাদুজ্জামান

ঈশ্বরদী ইপিজেডে শত শত শ্রমিক ডায়রিয়ায় আক্রান্ত, এক নারী শ্রমিকের মৃত্যু

ছবি

মাগুরা-ঝিনাইদহ সড়কে মুখোমুখি সংঘর্ষে যুবক নিহত

ছবি

রাঙামাটিতে পাহাড় ধস-জলাবদ্ধতা, আশ্রয়কেন্দ্রে শত শত মানুষ

ছবি

গাজীপুরে পোশাক কারখানায় পানির কারণে শ্রমিক অসুস্থতা, তদন্তে কর্তৃপক্ষ

ছবি

সংস্কারের তিন বছর না যেতেই লামা-সুয়ালক সড়ক বেহাল

লাউয়াছড়া পাহাড়ি সড়কে ডাকাতি

শরণখোলায় বজ্রপাতে মাছ ব্যবসায়ীর মৃত্যু

পানিবন্দী আমতলীর লাখো মানুষ

ছবি

মানিকগঞ্জে অস্বাস্থ্যকর ও নোংরা পরিবেশে তৈরি হচ্ছে শিশু খাবার

চুয়াডাঙ্গায় আকাশ হত্যার বিচারের দাবিতে ট্রেন আটকে মানববন্ধন

রাণীনগরে দুই রাতে ১৩ গরু ছাগল চুরি

হিলিতে পার্টনার কংগ্রেস অনুষ্ঠিত

বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস পালিত

দুর্গাপুরে ৫ম শ্রেণীর ছাত্রীর শ্লীলতাহানির অভিযোগে প্রধান শিক্ষক বরখাস্ত

পরিবারের সঙ্গে ঈদ করতে এসে সড়কে ঝরল জাপান প্রবাসীর প্রাণ

tab

সারাদেশ

ঈদ সামনে রেখে অন্তহীন ব্যস্ততায় চান্দিনার কামারপাড়া

মাসুমুর রহমান মাসুদ, চান্দিনা (কুমিল্লা)

ঈদ ঘিরে ব্যস্ত এক কর্মকার। ছবিটি মঙ্গলবার কুমিল্লার চান্দিনা বাজার কামারপল্লী থেকে তোলা-সংবাদ

বুধবার, ০৪ জুন ২০২৫

দরজায় কড়া নাড়ছে ঈদুল আজহা। ঈদের নামাজের পর পশু কোরবানির মধ্য দিয়েই শুরু হয় এই ঈদের তাৎপর্য। আর পশু কোরবানির অন্যতম অনুষঙ্গ কোরবানির কাজে ব্যবহৃত চাপাতি, দা, বঁটি, ছুরি, কাঁচির খোঁজ পড়ে এ সময়ই। এসব হাতিয়ার নিয়ে লোকজন ছুটে চলেন কামার বাড়িতে। কেউ যান শান দিতে, কেউবা যান নতুন করে তৈরি করতে। তাই ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত কামারপাড়ায় চলে লোহা-লক্কড়ের টুং-টাং শব্দ।

সারাবছর তেমন ব্যবহার না হলেও ঈদের দিনে এসব যন্ত্রের বেশি প্রয়োজন হয়ে পড়ে। তাই তো কোরবানিকে সামনে রেখে কামারপাড়ায় ভিড় বাড়তে শুরু করেছে। সরেজমিনে কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলা সদরের কামারপল্লীসহ বিভিন্ন স্থান ঘুরে দেখা গেছে, প্রতিটি কামার দোকানে দা, ছুরি, চাপাতি তৈরিতে দিন রাত কাজ করছে কামাররা। লোহার টুকরা আগুনে পুড়িয়ে সেগুলো পিটিয়ে দা, ছেনিসহ বিভিন্ন লোহার সরঞ্জাম তৈরির টুং-টাং শব্দে মুখরিত কামারপল্লী। কামারপল্লীতে কেউ চুলায় ভাঁপি (বাতাস দেয়ার বিশেষ যন্ত্র) টানছে, কেউ লোহা পিটছে, কেউবা শান দিচ্ছে। অনেক কামার দোকানে ঈদ উপলক্ষে অতিরিক্ত শ্রমিক নিয়োগ দিয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কুমিল্লা মহানগরীসহ ১৭টি উপজেলায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে অন্তত তিন শতাধিক কামার দোকান রয়েছে। ওইসব দোকানে সহ¯্রাধিক শ্রমিক কর্মচারী কাজ করে। কোরবানি এলেই প্রতিটি দোকানে বাড়ে কর্ম ব্যস্ততা। ঈদের অন্তত এক মাস আগ থেকেই প্রস্তুতি নিয়ে কাজ চালায় শ্রমিক-কারিগররা। মৌসুম শুরুর দিকে নতুন সরঞ্জাম বেশি তৈরি করলেও ঈদের এক সপ্তাহ আগ থেকে পুরাতন দা, ছেনি, ছুরি ও চাপাতির শান দিতেই বেশি দেখা যায়।

দা ও চাপাতি শান দিতে চান্দিনা বাজারের কামারপল্লীতে আসা নজরুল ইসলাম জানান, সারা বছর সংসারে দা ব্যবহার হলেও ছুরি ও চাপাতিগুলো কোরবানির পর অযতœ-অবহেলায় পড়ে থাকে। এক বছর সেগুলো ব্যবহার না করায় মরিচা ধরে থাকে। তাই কোরবানি এলেই এগুলো ধারালো করতে হয়।

তবে এ সুযোগে কামাররা টাকা বেশি নিচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছেন গ্রাহকরা। তারা বলেন, অন্য সময় ২০ টাকায় দা শান দেয়া যায়, কিন্তু কোরবানির সময় ৩০-৪০ টাকার নিচে শান দেয়া যায় না। টাকা বেশি দিয়েও যখন তখন পাওয়া যায় না, ২/৩ দিন পর এসে নিতে হয়।

চাপাতি কিনতে আসে ক্রেতা মফিজুল ইসলাম জানান, গত ঈদেও চাপাতি কিনেছিলাম। কিন্তু এক দিন ব্যবহারের পর সেগুলো কোথায় আছে খুঁজেও পাই না। ঘরে একটি পেয়েছি তাও মাটিতে নষ্ট হয়ে গেছে। তাই এ বছর আবারও কিনতে এসেছি। তবে গত বছরের তুলনায় এ বছর দামও অনেক বেশি। দাউদকান্দি উপজেলার ইলিয়টগঞ্জ বাজারের নান্টু কর্মকার বলেন, লোহার দাম বেশি, কয়লারও দাম বেড়েছে। এছাড়া বছরের এগারো মাসই তেমন কাজ থাকে না। কোরবানির সময় অতিরিক্ত শ্রমিক বেশি টাকা বেতনে কাজে লাগাতে হয়। তাই কোরবানির সময় অন্য সময়ের তুলনায় লোহার সরঞ্জামের দাম একটু বেশি থাকে। শান দেয়ার টাকা বেশি নেয়া সম্পর্কে তিনি আরও বলেন, নতুন তৈরি করেই তো সময় পাই না। পুরাতন জিনিসে শান দিব কখন। রাত জেগে কাজ করে শ্রমিকরা, তাই এই মৌসুমে শান দেয়ার টাকা বেশি নেয় সব কারিগররা।

চান্দিনা বাজারের ব্যবসায়ী কামার মাখন কর্মকার জানান, আগে শুধু কামার সম্প্রদায়ই এ পেশায় নিয়োজিত ছিল। অনেক পরিশ্রম এ পেশায়, তাই প্রকৃত কামারদের অধিকাংশই এ পেশা ছেড়ে দিয়েছে। অন্য শ্রেণী পেশার মানুষকে অতিরিক্ত বেতন দিয়ে এ কাজ করানো হচ্ছে। অন্য সময় দাম তেমন বেশি থাকে না, কিন্তু ঈদের মৌসুমে সবাই ২/৪ পয়সা পাওয়ার জন্য কিছুটা বেশি নেয়। দা, ছুরি, চাপাতি শান দিয়ে অনেকে খুশি হয়েও ১০-২০ টাকা বেশি দিয়ে যান।

back to top