দাম ও ওজনে অসন্তোষ কৃষকের
সাপাহার (নওগাঁ) : বিক্রির জন্য আনা আম -সংবাদ
চলতি মৌসুমে দেশের বৃহত্তর আমের হাট নওগাঁর সাপাহার ইতোমধ্যে ক্রেতা ও বিক্রেতার পদচারণার সরগরম হয়ে উঠছে। যদি ও ঈদের আগেই এই হাটে আমের বেচাকেনা শুরু হয়েছে, তবে ঈদের পরেই দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আমের পাইকারদের এই হাটে পুরোদমে দেখা গেছে। আবহাওয়া জনিত কারণে এবার ম্যাংগো ক্যালেন্ডারের সূচি ছাড়াই সব জাতের আম পাকতে শুরু করে, ফলে এই হাটে সব জাতের আমের উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে।
ম্যাংগো ক্যালেন্ডার অনুযায়ী ২২ মে গুটি জাতের আমের মধ্যে দিয়ে আম পাড়া কার্যক্রম শুরু হয় তবে ধারাবাহিকভাবে গোপালভোগ, ক্ষীরসাপাত, নাক ফজলি, ল্যাংড়া, হাঁড়িভাঙ্গা চলমান থাকলেও সময়ের আগেই দেখা মেলেছে আম্রপালি, বারি-৪ ও ব্যানানা ম্যাংগো আমের। গত কয়েক দিন ধরে প্রচণ্ড তাপদাহ ও ভ্যাপসা গরমের কারণে বাগানে আম পাকতে শুরু করছে বলে জানিয়েছেন অনেকে। আর একই কারণে সব জাতের আম একসঙ্গে বাজারে আসায় চাহিদা কমেছে সঙ্গে দামও কমেছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। চলতি মৌসুমে বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে আয়োজিত বৈঠকে সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কেজিতে আম ক্রয়-বিক্রয়ের নির্দেশনা দেয়া হলেও এর বাস্তবায়ন এখনো লক্ষনীয় হয়নি।
সরেজমিনে রাজশাহী বিভাগের বড় বড় আমের হাট রোহনপুর, ভোলাহাট, কানসাটের বাজারে কোথাও কেজিতে আম ক্রয়ের কোন বাস্তবায়নের চিত্র দেখা যায়নি। কোথাও ৫২ কেজিতে আবার কোথাও ৫৪ এবং ৫৫ কেজিতেও মন হিসেবে আম কেনা হচ্ছে। বর্তমানে আমের দাম এবং ওজন ও বাজার ব্যবস্থাপনা নিয়ে ক্রেতা এবং বিক্রেতাদের রয়েছে চরম অসন্তোষ।
গত সোমবার সাপাহার আমের হাট ঘুরে দেখা গেছে, প্রতি মণ হিমসাগর ১৪০০-১৬০০ টাকা, নাক ফজলি ১৩০০-১৮০০ টাকা, ল্যাংড়া ১২০০-১৫০০ টাকা, ব্যানানা ম্যাংগো ৩৫০০-৪২০০ টাকা, হাড়িভাঙ্গা ১৫০০-২৫০০ টাকা এবং আম্রপালি ১৮০০-৩৫০০ টাকা মণ হিসেবে বিক্রি হচ্ছে।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য মতে, এ বছর ৯ হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে আমের চাষ হয়েছে এবং উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ১ লাখ ৪৫ হাজার মেট্রিক টন নির্ধারণ করা হয়েছে।
আমের হাটে আম বিক্রি করতে আসা উপজেলার ওড়নপুর গ্রামের আমচাষি মামুন বলেন, এবছর আমের দাম অনেক কম। গত বছর যে আম ৪০০০-৪৫০০ টাকায় বিক্রি করেছি সে আম এ বছর ২২০০-২৫০০ টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে। এ দামে আম বিক্রি করে কীটনাশক খরচ ই উঠবে না। এভাবে চলতে থাকলে লোকসান গুনতে হবে।
রহনপুরের আম ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলাম বলেন, কৃষকদের সঙ্গে আলোচনা করেই আমের দাম ও ওজন নির্ধারণ করা হয়। সব ওজনের ক্ষেত্রে ক্যারেট সহ মোট ওজন ধরা হয়। সেক্ষেত্রে ৫০ কেজি ৫২ কেজি মনি হিসেবে কেনা হচ্ছে সাপাহারের বাজারে।
সাপাহার উপজেলা আম আড়তদার সমবায় সমিতি লিমিটেডের সহ সভাপতি জয়নাল আবেদীন বলেন, তুলনামূলকভাবে এ বছর আমের ফলন কম হলেও আমের সাইজ অনেক ভালো হয়েছে। ইতোমধ্যে আমের বেপারীরা কেনা বেচা শুরু করে দিয়েছে। ওজন বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, পাশ্ববর্তী রোহনপুর, ভোলাহাট, চাঁপাইনবাবগঞ্জ এবং কানসাটের ব্যবসায়ীরা ৫০ থেকে ৫২ কেজিতেই মণ হিসেবে আম ক্রয় করছেন যার কারণে এ বাজারে আম ক্রয় করতে আসা অন্য ব্যবসায়ীরা লোকসানের মুখে পড়ছেন। তাই ওজনের বিষয়টি যদি সারাদেশে একই রকম রাখা হয়, তাহলে আম চাষি ও আড়ৎদারের সুবিধা হবে। বাজার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করা হচ্ছে বলে তিনি জানান।
দাম ও ওজনে অসন্তোষ কৃষকের
সাপাহার (নওগাঁ) : বিক্রির জন্য আনা আম -সংবাদ
সোমবার, ১৬ জুন ২০২৫
চলতি মৌসুমে দেশের বৃহত্তর আমের হাট নওগাঁর সাপাহার ইতোমধ্যে ক্রেতা ও বিক্রেতার পদচারণার সরগরম হয়ে উঠছে। যদি ও ঈদের আগেই এই হাটে আমের বেচাকেনা শুরু হয়েছে, তবে ঈদের পরেই দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আমের পাইকারদের এই হাটে পুরোদমে দেখা গেছে। আবহাওয়া জনিত কারণে এবার ম্যাংগো ক্যালেন্ডারের সূচি ছাড়াই সব জাতের আম পাকতে শুরু করে, ফলে এই হাটে সব জাতের আমের উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে।
ম্যাংগো ক্যালেন্ডার অনুযায়ী ২২ মে গুটি জাতের আমের মধ্যে দিয়ে আম পাড়া কার্যক্রম শুরু হয় তবে ধারাবাহিকভাবে গোপালভোগ, ক্ষীরসাপাত, নাক ফজলি, ল্যাংড়া, হাঁড়িভাঙ্গা চলমান থাকলেও সময়ের আগেই দেখা মেলেছে আম্রপালি, বারি-৪ ও ব্যানানা ম্যাংগো আমের। গত কয়েক দিন ধরে প্রচণ্ড তাপদাহ ও ভ্যাপসা গরমের কারণে বাগানে আম পাকতে শুরু করছে বলে জানিয়েছেন অনেকে। আর একই কারণে সব জাতের আম একসঙ্গে বাজারে আসায় চাহিদা কমেছে সঙ্গে দামও কমেছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। চলতি মৌসুমে বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে আয়োজিত বৈঠকে সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কেজিতে আম ক্রয়-বিক্রয়ের নির্দেশনা দেয়া হলেও এর বাস্তবায়ন এখনো লক্ষনীয় হয়নি।
সরেজমিনে রাজশাহী বিভাগের বড় বড় আমের হাট রোহনপুর, ভোলাহাট, কানসাটের বাজারে কোথাও কেজিতে আম ক্রয়ের কোন বাস্তবায়নের চিত্র দেখা যায়নি। কোথাও ৫২ কেজিতে আবার কোথাও ৫৪ এবং ৫৫ কেজিতেও মন হিসেবে আম কেনা হচ্ছে। বর্তমানে আমের দাম এবং ওজন ও বাজার ব্যবস্থাপনা নিয়ে ক্রেতা এবং বিক্রেতাদের রয়েছে চরম অসন্তোষ।
গত সোমবার সাপাহার আমের হাট ঘুরে দেখা গেছে, প্রতি মণ হিমসাগর ১৪০০-১৬০০ টাকা, নাক ফজলি ১৩০০-১৮০০ টাকা, ল্যাংড়া ১২০০-১৫০০ টাকা, ব্যানানা ম্যাংগো ৩৫০০-৪২০০ টাকা, হাড়িভাঙ্গা ১৫০০-২৫০০ টাকা এবং আম্রপালি ১৮০০-৩৫০০ টাকা মণ হিসেবে বিক্রি হচ্ছে।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য মতে, এ বছর ৯ হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে আমের চাষ হয়েছে এবং উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ১ লাখ ৪৫ হাজার মেট্রিক টন নির্ধারণ করা হয়েছে।
আমের হাটে আম বিক্রি করতে আসা উপজেলার ওড়নপুর গ্রামের আমচাষি মামুন বলেন, এবছর আমের দাম অনেক কম। গত বছর যে আম ৪০০০-৪৫০০ টাকায় বিক্রি করেছি সে আম এ বছর ২২০০-২৫০০ টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে। এ দামে আম বিক্রি করে কীটনাশক খরচ ই উঠবে না। এভাবে চলতে থাকলে লোকসান গুনতে হবে।
রহনপুরের আম ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলাম বলেন, কৃষকদের সঙ্গে আলোচনা করেই আমের দাম ও ওজন নির্ধারণ করা হয়। সব ওজনের ক্ষেত্রে ক্যারেট সহ মোট ওজন ধরা হয়। সেক্ষেত্রে ৫০ কেজি ৫২ কেজি মনি হিসেবে কেনা হচ্ছে সাপাহারের বাজারে।
সাপাহার উপজেলা আম আড়তদার সমবায় সমিতি লিমিটেডের সহ সভাপতি জয়নাল আবেদীন বলেন, তুলনামূলকভাবে এ বছর আমের ফলন কম হলেও আমের সাইজ অনেক ভালো হয়েছে। ইতোমধ্যে আমের বেপারীরা কেনা বেচা শুরু করে দিয়েছে। ওজন বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, পাশ্ববর্তী রোহনপুর, ভোলাহাট, চাঁপাইনবাবগঞ্জ এবং কানসাটের ব্যবসায়ীরা ৫০ থেকে ৫২ কেজিতেই মণ হিসেবে আম ক্রয় করছেন যার কারণে এ বাজারে আম ক্রয় করতে আসা অন্য ব্যবসায়ীরা লোকসানের মুখে পড়ছেন। তাই ওজনের বিষয়টি যদি সারাদেশে একই রকম রাখা হয়, তাহলে আম চাষি ও আড়ৎদারের সুবিধা হবে। বাজার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করা হচ্ছে বলে তিনি জানান।