দশমিনা (পটুয়াখালী) : উপজেলার চরবোরহান ইউনিয়নে নদীর ভাঙনে কমছে ফসলি জমি -সংবাদ
পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলায় প্রতি বছর তেঁতুলিয়া ও বুড়াগৌরাঙ্গ নদীর তীব্র ভাঙন এবং জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে নিত্য নতুন নতুন বসতবাড়ি নির্মাণ করায় প্রতিনিয়ত ফসলি জমি কমে যাচ্ছে। নদীর ভাঙন রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা ও বসতবাড়ি নির্মাণে বিধি বিধান না মানায় এবং জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারনে নতুন নতুন ঘরবাড়ি নির্মাণ করায় প্রতি বছর ফসলি জমি কমে যাচ্ছে। ২০১১ সাল থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত উপজেলায় জনসংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ হয়ে গেছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার চরবোরহান, চরশাহজালাল ও চর হাদিতে জনসংখ্যা বৃদ্ধি অস্বাভাবিক এবং অব্যাহত নদী ভাঙন ও বসতবাড়ি নির্মাণের ফলে ফসলি জমি দিন দিন কমছে। জনগুরুত্বপূর্ণ এই বিষয়ে পদক্ষেপ না নিলে অদুর ভবিষ্যতে উপকূলীয় উপজেলা দশমিনাবাসী খাদ্য ও বাসস্থানের চরম সংকটে পড়বে। উপজেলার প্রধান তিনটি চরে প্রায় ২১ হাজার ৫শ বসতি রয়েছে। এই সব চরে শিক্ষা ও অসচেতনতার কারনে জনসংখ্যা বেড়েই চলেছে। চরহাদির বারেক গাজীর স্ত্রী শাহিনুরের ৬ সন্তান, হেলেনার ৫ সন্তান ও চর শাহজালালের হাসিনার ৪ সন্তান। এই সব প্রতি পরিবারে গড় লোকসংখ্যা ৬-৭ জন। জনসংখ্যা ও পরিবারের বৃদ্ধি কারণে প্রতিদিন ফসলি জমি কেটে তৈরি হচ্ছে নতুন বসতবাড়ি। উপজেলা পরিসংখ্যান অফিস সূত্রে জানা গেছে, ২০১১ সালের জরিপে দশমিনা উপজেলায় ১ লাখ ২৩ হাজার ৩৮৮ জন মানুষ গননা করা হয়। বসত বাড়িঘরের সংখ্যা ছিল ২৮ হাজার ৪৯০টি। উপজেলার স্বাস্থ্য ইপিআর জরিপ সূত্রে জানা গেছে, ২০২০ সালের জরিপে উপজেলার ৭টি ইউনিয়নে মোট লোকসংখ্যা ১ লাখ ৫৩ হাজার ১২২জন। বসত বাড়ি সংখ্যা ৪৯ হাজার। ফলে ১০ বছরে উপজেলায় মোট লোকসংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে প্রায় ২৯ হাজার ৭৩৪ জন। নতুন বসত বাড়ির সংখ্যা বেড়েছে ২১ হাজার ৫১০ টিতে। উপজেলার বুড়াগৌরাঙ্গ ও তেঁতুলিয়া নদীর তীরবর্তী এলাকার লোকজনের সাথে কথা বলে জানা যায়, গত কয়েক বছরে নদীর অব্যাহত ভাঙ্গনে উপজেলার বীজ বর্ধন খামার, বাঁশবাড়িয়ার ঢনঢনিয়া, হাজির হাট, চরহাদি ও চরবোরহানসহ মোট ১ হাজার ৭শ’ ৯৪ একর জমি নদীর গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
দেশের সর্ববৃহৎ বীজ বর্ধন খামারের আওতায় ১ হাজার ৪৪ একর জমি অধিগ্রহন করা হলেও এবছর চাষাবাদ করা হয় সাড়ে ৩শ একর জমি। নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে ৬৯৪ একর জমি। নদীর গর্ভে বিলীন হয়েছে ঢনঢনিয়া ও হাজির হাট এলাকার ৫শ একর ফসলী জমি, চরহাদির ৪শ একর এবং চরবোরহানে ২শ একর জমি।
এদিকে, উপজেলার কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, ২০১১ সালের জরিপে আবাদযোগ্য জমির পরিমান ছিল ১৮ হাজার ৮১০ হেক্টর। এক ফসলি জমি ১ হাজার ৬ হেক্টর, দুই ফসলি ১৪ হাজার ৩৪১ হেক্টর, তিন ফসলি ৩ হাজার ৪শ হেক্টর। দশমিনায় মোট খাদ্য উৎপাদন হয় ৫৮ হাজার ৩৩৪ মেট্রিক টন। ওই সালের লোকসংখ্যা অনুসারে দশমিনায় খাদ্যের চাহিদা ৭৬ হাজার ৫৬১ মেট্রিক টন। খাদ্যের ঘাটতি থাকে ১৮ হাজার ২২৭ মেট্রিক টন। অথচ ২০১৮ সালে লোকসংখ্যা অনুপাতে ৩৪ হাজার ২৭৯ মেট্রিক টন খাদ্য অতিরিক্ত থাকত।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. জাফর আহম্মেদ জানান, বর্তমান সরকার নতুন বাড়িঘর নির্মানের বিষয়ে বিধি বিধান প্রনয়ন করেছে। ফলে প্রতি বছর ভূমি জরিপ করা হলে প্রকৃত জমির সঠিক তথ্য পাওয়া যাবে।
দশমিনা (পটুয়াখালী) : উপজেলার চরবোরহান ইউনিয়নে নদীর ভাঙনে কমছে ফসলি জমি -সংবাদ
বৃহস্পতিবার, ১৯ জুন ২০২৫
পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলায় প্রতি বছর তেঁতুলিয়া ও বুড়াগৌরাঙ্গ নদীর তীব্র ভাঙন এবং জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে নিত্য নতুন নতুন বসতবাড়ি নির্মাণ করায় প্রতিনিয়ত ফসলি জমি কমে যাচ্ছে। নদীর ভাঙন রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা ও বসতবাড়ি নির্মাণে বিধি বিধান না মানায় এবং জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারনে নতুন নতুন ঘরবাড়ি নির্মাণ করায় প্রতি বছর ফসলি জমি কমে যাচ্ছে। ২০১১ সাল থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত উপজেলায় জনসংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ হয়ে গেছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার চরবোরহান, চরশাহজালাল ও চর হাদিতে জনসংখ্যা বৃদ্ধি অস্বাভাবিক এবং অব্যাহত নদী ভাঙন ও বসতবাড়ি নির্মাণের ফলে ফসলি জমি দিন দিন কমছে। জনগুরুত্বপূর্ণ এই বিষয়ে পদক্ষেপ না নিলে অদুর ভবিষ্যতে উপকূলীয় উপজেলা দশমিনাবাসী খাদ্য ও বাসস্থানের চরম সংকটে পড়বে। উপজেলার প্রধান তিনটি চরে প্রায় ২১ হাজার ৫শ বসতি রয়েছে। এই সব চরে শিক্ষা ও অসচেতনতার কারনে জনসংখ্যা বেড়েই চলেছে। চরহাদির বারেক গাজীর স্ত্রী শাহিনুরের ৬ সন্তান, হেলেনার ৫ সন্তান ও চর শাহজালালের হাসিনার ৪ সন্তান। এই সব প্রতি পরিবারে গড় লোকসংখ্যা ৬-৭ জন। জনসংখ্যা ও পরিবারের বৃদ্ধি কারণে প্রতিদিন ফসলি জমি কেটে তৈরি হচ্ছে নতুন বসতবাড়ি। উপজেলা পরিসংখ্যান অফিস সূত্রে জানা গেছে, ২০১১ সালের জরিপে দশমিনা উপজেলায় ১ লাখ ২৩ হাজার ৩৮৮ জন মানুষ গননা করা হয়। বসত বাড়িঘরের সংখ্যা ছিল ২৮ হাজার ৪৯০টি। উপজেলার স্বাস্থ্য ইপিআর জরিপ সূত্রে জানা গেছে, ২০২০ সালের জরিপে উপজেলার ৭টি ইউনিয়নে মোট লোকসংখ্যা ১ লাখ ৫৩ হাজার ১২২জন। বসত বাড়ি সংখ্যা ৪৯ হাজার। ফলে ১০ বছরে উপজেলায় মোট লোকসংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে প্রায় ২৯ হাজার ৭৩৪ জন। নতুন বসত বাড়ির সংখ্যা বেড়েছে ২১ হাজার ৫১০ টিতে। উপজেলার বুড়াগৌরাঙ্গ ও তেঁতুলিয়া নদীর তীরবর্তী এলাকার লোকজনের সাথে কথা বলে জানা যায়, গত কয়েক বছরে নদীর অব্যাহত ভাঙ্গনে উপজেলার বীজ বর্ধন খামার, বাঁশবাড়িয়ার ঢনঢনিয়া, হাজির হাট, চরহাদি ও চরবোরহানসহ মোট ১ হাজার ৭শ’ ৯৪ একর জমি নদীর গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
দেশের সর্ববৃহৎ বীজ বর্ধন খামারের আওতায় ১ হাজার ৪৪ একর জমি অধিগ্রহন করা হলেও এবছর চাষাবাদ করা হয় সাড়ে ৩শ একর জমি। নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে ৬৯৪ একর জমি। নদীর গর্ভে বিলীন হয়েছে ঢনঢনিয়া ও হাজির হাট এলাকার ৫শ একর ফসলী জমি, চরহাদির ৪শ একর এবং চরবোরহানে ২শ একর জমি।
এদিকে, উপজেলার কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, ২০১১ সালের জরিপে আবাদযোগ্য জমির পরিমান ছিল ১৮ হাজার ৮১০ হেক্টর। এক ফসলি জমি ১ হাজার ৬ হেক্টর, দুই ফসলি ১৪ হাজার ৩৪১ হেক্টর, তিন ফসলি ৩ হাজার ৪শ হেক্টর। দশমিনায় মোট খাদ্য উৎপাদন হয় ৫৮ হাজার ৩৩৪ মেট্রিক টন। ওই সালের লোকসংখ্যা অনুসারে দশমিনায় খাদ্যের চাহিদা ৭৬ হাজার ৫৬১ মেট্রিক টন। খাদ্যের ঘাটতি থাকে ১৮ হাজার ২২৭ মেট্রিক টন। অথচ ২০১৮ সালে লোকসংখ্যা অনুপাতে ৩৪ হাজার ২৭৯ মেট্রিক টন খাদ্য অতিরিক্ত থাকত।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. জাফর আহম্মেদ জানান, বর্তমান সরকার নতুন বাড়িঘর নির্মানের বিষয়ে বিধি বিধান প্রনয়ন করেছে। ফলে প্রতি বছর ভূমি জরিপ করা হলে প্রকৃত জমির সঠিক তথ্য পাওয়া যাবে।