মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া উপজেলার বরমচাল চা বাগানের চা শ্রমিক সম্প্রদায়ের কন্যা ইতি গৌড় শত বাধা বিপত্তি ও অভাব অনটন পেরিয়ে কষ্ট করে এইচএসসি পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করে ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ায় তাকে নিয়ে সামাজিক মাধ্যমসহ ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ায় বিভিন্ন খবর ছড়িয়ে পড়ার কারণে তার সুনাম চতুর্দিকে ছড়িয়ে পড়ে। এসব দেখে মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক পুলিশ সুপার তাকে আমন্ত্রণ করে নিয়ে শুভেচ্ছা জানিয়ে পৃথকভাবে আর্থিক সহায়তা প্রদান করেন। এ ছাড়াও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান তাকে আর্থিক সহযোগিতার কথা বলেছে বলে জানা গেছে।
চা বাগানের জীবন মানেই সীমাহীন পরিশ্রম, অভাব অনটন আর সীমাবদ্ধতা। কিন্তু সেই জীবন থেকেও কেউ কেউ স্বপ্ন বুনে যান আকাশছোঁয়ার। তেমনই এক অনন্য দৃষ্টান্ত বরমচাল চা বাগানের এক শ্রমজীবী পরিবারের সর্বকনিষ্ঠ কন্যা ইতি গৌড়
চা বাগানের জীবন মানেই সীমাহীন পরিশ্রম, অভাব অনটন আর সীমাবদ্ধতা। কিন্তু সেই জীবন থেকেও কেউ কেউ স্বপ্ন বুনে যান আকাশছোঁয়ার। তেমনই এক অনন্য দৃষ্টান্ত বরমচাল চা বাগানের এক শ্রমজীবী পরিবারের সর্বকনিষ্ঠ কন্যা ইতি গৌড়। তিনি সব বাধা-বিপত্তিকে জয় করে জায়গা করে নিয়েছেন দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে।
ইতির জন্ম এই চা বাগানে। চা বাগানের রাস্তার পাশে ছোট একটি টিলার ওপর তাদের ঘর। সেখানে ইতি, তার বাবা শংকর গৌড় ও মাসি ষষ্ঠী গৌড় থাকেন।
ইতির মা সুমিত্রা গৌড় ছিলেন চা শ্রমিক। প্রায় দুই বছর আগে অসুস্থ হয়ে মারা যান। বাবা শংকর গৌড় বাপেক্সের স্থানীয় গ্যাসক্ষেত্রে নিরাপত্তাকর্মীর কাজ করতেন। মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণজনিত রোগে আক্রান্ত হলে ২০১৮ সালে চাকরি ছাড়তে হয় তাকে। বর্তমানে তিনিও অসুস্থ।
তিন বোনের মধ্যে সে সবচেয়ে ছোট। ছোটবেলায় বাবার অসুস্থতা এবং দশম শ্রেডুতে পড়ার সময় মায়ের মৃত্যু তার জীবনকে কঠিন করে তোলে। পরিবারিক দুর্দশায় তার শিক্ষাজীবন প্রায় থেমে যাওয়ার উপক্রম হয়। এ সময় পাশে দাঁড়ান তার মাসি। যিনি নিজেও একজন চা শ্রমিক। স্বপ্ন দেখা থেকে যেন পিছিয়ে না পড়ে। তাই সবকিছু সয়ে নিয়ে এগিয়ে চলার সাহস জুগিয়েছেন তিনি।
বড় বোন স্মৃতি গৌড়ের বিয়ে হয়ে গেছে। স্মৃতির স্বামী ঢাকায় একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক। মেজ বোন সুইটি গৌড় ঢাকার মিরপুরে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে নার্সিং কোর্সে ভর্তি হয়েছেন। মা সুমিত্রা গৌড়ের নামে থাকা দুই বিঘা জমি ১ লাখ ৪০ হাজার টাকায় বিক্রি করে বাবার চিকিৎসা, সুইটির পড়াশোনা ও ভর্তির খরচ চালানো হয়।
ইতির শিক্ষাজীবন শুরু হয় বরমচাল চার্চ অব গড মিশন স্কুলে। সেখানে ইতি পায় প্রাথমিক শিক্ষার আলো ও শিক্ষা সহায়তা। এরপর বরমচাল উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ থেকে এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ ৪.৬৭ এবং এম এ ইউসুফ গণি কলেজ থেকে এইচএসসিতে জিপিএ ৪.৮৩ অর্জন করে সে। ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে পড়ালেখা করা এই মেধাবী শিক্ষার্থী কোনো প্রাইভেট বা কোচিংয়ের সুযোগ না পেলেও আত্মপ্রত্যয় ও অধ্যবসায়ের মাধ্যমে নিজেকে তৈরি করে তোলে।
এইচএসসির পর বড় বোনের উৎসাহে ঢাকায় গিয়ে ভর্তি হয় ‘বর্ণ কোচিং’-এ। সেখানে তিন মাসের পূর্ণ স্কলারশিপ পায় ইতি। সেখান থেকেই বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতি নেয়া শুরু। আর এরপরই আসে একের পর এক সাফল্যের খবর।
১৮ মে ২০২৫ এ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ লাভ, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবিপ্রবি) ব্যবসায় শিক্ষা ইউনিটে ৪০তম স্থান, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়েও ভর্তি পরিক্ষায় উত্তীর্ণ।
ইতির বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার সুযোগের খবর পেয়ে স্থানীয় কিছু শিক্ষানুরাগী পাশে দাঁড়িয়েছেন। কেউ কেউ তার ভর্তির খরচ দিয়েছেন। চা বাগানের শিক্ষার্থীদের সংগঠনগুলোও সহায়তার আশ্বাস দিয়েছে।
গত ২৯ জন মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক তার ভেরিফাইড ফেসবুক পোস্টে বলেন যে, মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া উপজেলার বরমচাল চা-বাগানে বেড়ে ওঠা মেধাবী ছাত্রী ইতি গৌড় এবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স বিভাগে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন। চা বাগানটি থেকে এই প্রথম কোনো শিক্ষার্থী কোনো পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেলেন। বিষয়টি জেলা প্রশাসকের নজরে আসলে তাৎক্ষণিকভাবে সহায়তা প্রদানের উদ্যোগ নেয়া হয়। গত ২৯ জুন ২০২৫ তারিখ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পাওয়া ইতি গৌড়কে খবর দিয়ে ডেকে এনে জেলা প্রশাসক জেলা প্রশাসনের পক্ষ হতে আর্থিক সহায়তা হিসেবে বিশ হাজার টাকার চেক প্রদান করেন।
এদিকে জেলা পুলিশ প্রশাসনের ভেরিফাইড ফেসবুক পোস্টে জানা গেছে যে গত ২৯ জন জেলা পুলিশের পুলিশ সুপার তাকে আমন্ত্রণ জানিয়ে এনে মিষ্টিমুখ করিয়ে শুভেচ্ছা জানান এবং তাকে জেলা পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে আর্থিক সহায়তা প্রদান করেন।
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার কথা জানিয়ে ইতি গণমাধ্যম কর্মীদের বলেন, ‘আগে ভালোভাবে লেখাপড়া শেষ করতে চাই। ভালো রেজাল্ট হলে চাকরি পাওয়া কঠিন হবে না। ফিন্যান্সের পড়া শেষ করে চাটার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট বিষয়ে পড়ার ইচ্ছা আছে।’
কন্যার সাফল্যে খুশি বাবা শংকর গৌড়। তিনি বলেন, ‘বাপেক্সে চাকরি করার সময় বড় বড় স্যার আসতেন, যারা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েছেন। তখন ভাবতাম, যদি আমাদের কোনো মেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে পারত! ঈশ্বর সেই ইচ্ছা পূরণ করেছেন। সুমিত্রা (স্ত্রী) নিশ্চয়ই অনন্তলোক থেকে মেয়েদের জন্য আশীর্বাদ করছেন।’
একটি চা-বাগান পাড়ার মেয়ের এই সাফল্য শুধু তার একার নয় বরং গোটা সমাজ, বিশেষ করে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর জন্য এক অনুপ্রেরণার নাম হয়ে উঠেছে ইতি গৌড়।
ইতি আজ রাজধানীর বুকে যখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী, তখন তার পেছনে লুকিয়ে আছে অদম্য মনোবল, সীমাহীন ত্যাগ আর এক পরিবারের সংগ্রামের গল্প। সমাজের সুবিধাবঞ্চিত পরিবার থেকে উঠে আসা এই কন্যা প্রমাণ করেছে স্বপ্ন যদি সত্যি করতে হয়, তবে প্রয়োজন অটল সংকল্প, মেধা এবং সৎ সাহস।
ইতি গৌড় এখন কেবল একটি নাম নয় এটি হয়ে উঠেছে এক সংগ্রামী জীবনের অনুপ্রেরণার প্রতীক।
সোমবার, ৩০ জুন ২০২৫
মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া উপজেলার বরমচাল চা বাগানের চা শ্রমিক সম্প্রদায়ের কন্যা ইতি গৌড় শত বাধা বিপত্তি ও অভাব অনটন পেরিয়ে কষ্ট করে এইচএসসি পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করে ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ায় তাকে নিয়ে সামাজিক মাধ্যমসহ ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ায় বিভিন্ন খবর ছড়িয়ে পড়ার কারণে তার সুনাম চতুর্দিকে ছড়িয়ে পড়ে। এসব দেখে মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক পুলিশ সুপার তাকে আমন্ত্রণ করে নিয়ে শুভেচ্ছা জানিয়ে পৃথকভাবে আর্থিক সহায়তা প্রদান করেন। এ ছাড়াও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান তাকে আর্থিক সহযোগিতার কথা বলেছে বলে জানা গেছে।
চা বাগানের জীবন মানেই সীমাহীন পরিশ্রম, অভাব অনটন আর সীমাবদ্ধতা। কিন্তু সেই জীবন থেকেও কেউ কেউ স্বপ্ন বুনে যান আকাশছোঁয়ার। তেমনই এক অনন্য দৃষ্টান্ত বরমচাল চা বাগানের এক শ্রমজীবী পরিবারের সর্বকনিষ্ঠ কন্যা ইতি গৌড়
চা বাগানের জীবন মানেই সীমাহীন পরিশ্রম, অভাব অনটন আর সীমাবদ্ধতা। কিন্তু সেই জীবন থেকেও কেউ কেউ স্বপ্ন বুনে যান আকাশছোঁয়ার। তেমনই এক অনন্য দৃষ্টান্ত বরমচাল চা বাগানের এক শ্রমজীবী পরিবারের সর্বকনিষ্ঠ কন্যা ইতি গৌড়। তিনি সব বাধা-বিপত্তিকে জয় করে জায়গা করে নিয়েছেন দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে।
ইতির জন্ম এই চা বাগানে। চা বাগানের রাস্তার পাশে ছোট একটি টিলার ওপর তাদের ঘর। সেখানে ইতি, তার বাবা শংকর গৌড় ও মাসি ষষ্ঠী গৌড় থাকেন।
ইতির মা সুমিত্রা গৌড় ছিলেন চা শ্রমিক। প্রায় দুই বছর আগে অসুস্থ হয়ে মারা যান। বাবা শংকর গৌড় বাপেক্সের স্থানীয় গ্যাসক্ষেত্রে নিরাপত্তাকর্মীর কাজ করতেন। মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণজনিত রোগে আক্রান্ত হলে ২০১৮ সালে চাকরি ছাড়তে হয় তাকে। বর্তমানে তিনিও অসুস্থ।
তিন বোনের মধ্যে সে সবচেয়ে ছোট। ছোটবেলায় বাবার অসুস্থতা এবং দশম শ্রেডুতে পড়ার সময় মায়ের মৃত্যু তার জীবনকে কঠিন করে তোলে। পরিবারিক দুর্দশায় তার শিক্ষাজীবন প্রায় থেমে যাওয়ার উপক্রম হয়। এ সময় পাশে দাঁড়ান তার মাসি। যিনি নিজেও একজন চা শ্রমিক। স্বপ্ন দেখা থেকে যেন পিছিয়ে না পড়ে। তাই সবকিছু সয়ে নিয়ে এগিয়ে চলার সাহস জুগিয়েছেন তিনি।
বড় বোন স্মৃতি গৌড়ের বিয়ে হয়ে গেছে। স্মৃতির স্বামী ঢাকায় একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক। মেজ বোন সুইটি গৌড় ঢাকার মিরপুরে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে নার্সিং কোর্সে ভর্তি হয়েছেন। মা সুমিত্রা গৌড়ের নামে থাকা দুই বিঘা জমি ১ লাখ ৪০ হাজার টাকায় বিক্রি করে বাবার চিকিৎসা, সুইটির পড়াশোনা ও ভর্তির খরচ চালানো হয়।
ইতির শিক্ষাজীবন শুরু হয় বরমচাল চার্চ অব গড মিশন স্কুলে। সেখানে ইতি পায় প্রাথমিক শিক্ষার আলো ও শিক্ষা সহায়তা। এরপর বরমচাল উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ থেকে এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ ৪.৬৭ এবং এম এ ইউসুফ গণি কলেজ থেকে এইচএসসিতে জিপিএ ৪.৮৩ অর্জন করে সে। ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে পড়ালেখা করা এই মেধাবী শিক্ষার্থী কোনো প্রাইভেট বা কোচিংয়ের সুযোগ না পেলেও আত্মপ্রত্যয় ও অধ্যবসায়ের মাধ্যমে নিজেকে তৈরি করে তোলে।
এইচএসসির পর বড় বোনের উৎসাহে ঢাকায় গিয়ে ভর্তি হয় ‘বর্ণ কোচিং’-এ। সেখানে তিন মাসের পূর্ণ স্কলারশিপ পায় ইতি। সেখান থেকেই বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতি নেয়া শুরু। আর এরপরই আসে একের পর এক সাফল্যের খবর।
১৮ মে ২০২৫ এ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ লাভ, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবিপ্রবি) ব্যবসায় শিক্ষা ইউনিটে ৪০তম স্থান, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়েও ভর্তি পরিক্ষায় উত্তীর্ণ।
ইতির বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার সুযোগের খবর পেয়ে স্থানীয় কিছু শিক্ষানুরাগী পাশে দাঁড়িয়েছেন। কেউ কেউ তার ভর্তির খরচ দিয়েছেন। চা বাগানের শিক্ষার্থীদের সংগঠনগুলোও সহায়তার আশ্বাস দিয়েছে।
গত ২৯ জন মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক তার ভেরিফাইড ফেসবুক পোস্টে বলেন যে, মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া উপজেলার বরমচাল চা-বাগানে বেড়ে ওঠা মেধাবী ছাত্রী ইতি গৌড় এবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স বিভাগে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন। চা বাগানটি থেকে এই প্রথম কোনো শিক্ষার্থী কোনো পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেলেন। বিষয়টি জেলা প্রশাসকের নজরে আসলে তাৎক্ষণিকভাবে সহায়তা প্রদানের উদ্যোগ নেয়া হয়। গত ২৯ জুন ২০২৫ তারিখ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পাওয়া ইতি গৌড়কে খবর দিয়ে ডেকে এনে জেলা প্রশাসক জেলা প্রশাসনের পক্ষ হতে আর্থিক সহায়তা হিসেবে বিশ হাজার টাকার চেক প্রদান করেন।
এদিকে জেলা পুলিশ প্রশাসনের ভেরিফাইড ফেসবুক পোস্টে জানা গেছে যে গত ২৯ জন জেলা পুলিশের পুলিশ সুপার তাকে আমন্ত্রণ জানিয়ে এনে মিষ্টিমুখ করিয়ে শুভেচ্ছা জানান এবং তাকে জেলা পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে আর্থিক সহায়তা প্রদান করেন।
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার কথা জানিয়ে ইতি গণমাধ্যম কর্মীদের বলেন, ‘আগে ভালোভাবে লেখাপড়া শেষ করতে চাই। ভালো রেজাল্ট হলে চাকরি পাওয়া কঠিন হবে না। ফিন্যান্সের পড়া শেষ করে চাটার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট বিষয়ে পড়ার ইচ্ছা আছে।’
কন্যার সাফল্যে খুশি বাবা শংকর গৌড়। তিনি বলেন, ‘বাপেক্সে চাকরি করার সময় বড় বড় স্যার আসতেন, যারা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েছেন। তখন ভাবতাম, যদি আমাদের কোনো মেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে পারত! ঈশ্বর সেই ইচ্ছা পূরণ করেছেন। সুমিত্রা (স্ত্রী) নিশ্চয়ই অনন্তলোক থেকে মেয়েদের জন্য আশীর্বাদ করছেন।’
একটি চা-বাগান পাড়ার মেয়ের এই সাফল্য শুধু তার একার নয় বরং গোটা সমাজ, বিশেষ করে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর জন্য এক অনুপ্রেরণার নাম হয়ে উঠেছে ইতি গৌড়।
ইতি আজ রাজধানীর বুকে যখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী, তখন তার পেছনে লুকিয়ে আছে অদম্য মনোবল, সীমাহীন ত্যাগ আর এক পরিবারের সংগ্রামের গল্প। সমাজের সুবিধাবঞ্চিত পরিবার থেকে উঠে আসা এই কন্যা প্রমাণ করেছে স্বপ্ন যদি সত্যি করতে হয়, তবে প্রয়োজন অটল সংকল্প, মেধা এবং সৎ সাহস।
ইতি গৌড় এখন কেবল একটি নাম নয় এটি হয়ে উঠেছে এক সংগ্রামী জীবনের অনুপ্রেরণার প্রতীক।