alt

সারাদেশ

নিষেধাজ্ঞাকে দুষছেন ব্যবসায়ীরা

বদরগঞ্জে হাড়িভাঙ্গা আমে ক্রেতা নেই লোকসানের মুখে বাগান মালিকরা

প্রতিনিধি, বদরগঞ্জ (রংপুর) : শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫

রংপুরের বদরগঞ্জে ক্রেতাশূন্য আমের দোকান। ছবিটি পৌরশহরের স্টেশনরোড থেকে তোলা -সংবাদ

রংপুরের বদরগঞ্জে এবার হাড়িভাঙ্গা আমে তেমন আগ্রহ নেই। ফলে লোকসানের মুখে পড়েছেন বাগান মালিকরা। আর এর জন্য নিষেধাজ্ঞাকে দুষছেন ব্যবসায়ীরা।

উপজেলা কৃষি অফিস সুত্রে জানা যায়, হাড়িভাঙ্গা আমের জন্মস্থান মিঠাপুকুর হলেও এটি বদরগঞ্জ উপজেলার মানুষের জন্য সবচেয়ে জনপ্রিয় ও অর্থ উপার্জনকারী অন্যতম মৌসুমী ফল। কারণ মিঠাপুকুর উপজেলার মাত্র চারটি উপজেলায় হাড়িভাঙ্গা আমের বাগান পরিলক্ষিত হলেও বদরগঞ্জ উপজেলার ১০ ইউনিয়নসহ একটি পৌরসভার আনাচে-কানাচে ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে আছে। উপসহকারী কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান বলেন, বদরগঞ্জ উপজেলার মোট ৮৫৮ হেক্টর জমিতে হাড়িভাঙ্গা আমের বাগান রয়েছে। এবারে আমের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১১হাজার ৭৭২ মেট্রিক টন।

সরেজমিন বিভিন্ন এলাকা ঘুরে জানা গেছে, চাষীরা শুরু থেকে দু’বছর আগেও হাড়িভাঙ্গা আমে ব্যাপক লাভবান হয়েছেন। কিন্তু গতবছর থেকে চাষীদের লোকসানের পাল্লা ভারি হতে শুরু করেছে। কারণ গতবছর থেকে আবহাওয়ার ব্যাপক তারতম্যের কারণে আগেভাগেই আম পাকছে। কিন্তু সরকারি নিষেধাজ্ঞা থাকায় চাষীরা তা’ নির্দিষ্ট সময়ের আগে বাজারজাত করতে পারছেননা। ফলে শত শত মণ পাকা আম বিক্রির অভাবে পঁচে নষ্ট হয়ে যায়। আবার যখন নিষেধাজ্ঞা উঠে যায় তখন ব্যাপকভাবে আম পাকা শুরু হয়। তখন পাকা আমের তুলনায় ক্রেতা পাওয়া যায়না। এ অবস্থায়ও শত শত মণ আম নষ্ট হয়ে যায়। একারণে হাড়িভাঙ্গা আমে আর ঝুঁকি নিতে চাইছেননা কোন কোন চাষী। কথা হয় উপজেলার রামনাথপুর ইউনিয়নের কিসমত ঘাটাবিল এলাকার আমচাষী আব্দুল মতিনের সাথে। তিনি বলেন, হাড়িভাঙ্গা আম এমন একটি আম যা পেকে গাছ থেকে মাটিতে পড়লে আর খাওয়া যায়না। তিনি বলেন, ১৫জুন পর্যন্ত হাড়িভাঙ্গা আম বাজারজাত করার উপরে নিষেধাজ্ঞা ছিল। অথচ বাগানে আম পাকছে মে মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে। কিন্তু নিষেধাজ্ঞার কারণে সেটি বাজারজাত করা সম্ভব হয়নি। আবার যখন নিষেধাজ্ঞা উঠে গেছে তখন ব্যাপকহারে আম পাকা শুরু হয়েছে। সে তুলনায় বাজারে ক্রেতা পাওয়া যাচ্ছেনা। ফলে শত শত মণ আম পঁচে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। একই এলাকার আমচাষী আব্দুল মজিদ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, তিন একরের আম বাগান পরিচর্যায় দু’লাখ টাকা খরচ হয়েছে। শ্রমিকদের প্রতিদিন চার হাজার টাকা মজুরি দিতে হচ্ছে। তিনি বলেন, আমি ভেবেছিলাম ১৫ লাখ টাকার আম বিক্রি করতে পারব। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে পরিচর্যার খরচও উঠবেনা। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, রংপুরের চাষীরা যাতে লাভবান হতে না পারেন সেজন্য পরিকল্পিতভাবে নির্দিষ্ট দিনের আগে আম বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়ে থাকে। দামোরপুর ইউনিয়নের মোস্তফাপুর এলাকার বাগান মালিক হেলালুর রহমান বলেন, হাড়িভাঙ্গা আম নিয়ে যদি এ অবস্থা চলতে থাকে তাহলে বাগান তুলে ফেলা ছাড়া আর উপায় থাকবেনা। কারণ আম গাছ পরিচর্যায় বিরাট অঙ্কের অর্থ ব্যয় করতে হয়। একজন চাষী লোকসান গুণে কতদিন আর টিকে থাকতে পারে।

এদিকে বাজার ঘুরে দেখা গেছে বাজারে চাষীরা ৭শ’-৮শ’ টাকা মণ দরে পাকা আম এবং ১ হাজার থেকে ১২শ’ টাকা মণ দরে কাঁচা বিক্রি করছেন। আর খুচরা বাজারে পাকা আম বিক্রি হচ্ছে ৩০টাকা কেজি দরে এবং কাঁচা আম ৫০টাকা কেজি দরে। ব্যবসায়ী নূরুজ্জামান বলেন, এবারে আমের ব্যাপক ফলন হয়েছে। সে তুলনায় ক্রেতা বাড়েনি। বরং ক্রেতা কমে গেছে। একারণে দামও কমে গেছে। ব্যবসায়ী শফিকুল ইসলাম বলেন, শুধুমাত্র নিষেধাজ্ঞার কারণেই হাড়িভাঙ্গা আমের বাজারে এমন ধ্বস দেখা দিয়েছে।

এব্যাপারে জানতে চাইলে উপজেলা কৃষি অফিসার সেলিনা আফরোজ বলেন, নিষেধাজ্ঞা দেয়া বা তুলে নেয়ার ক্ষমতা তো কৃষি অফিসের নেই- এটা প্রশাসনের ব্যাপার। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি শুধু বলেন, বাজারদর কমলে লোকসান হবে- এটাই স্বাভাবিক।

ছবি

মোহনগঞ্জে গৃহস্থালি ও দোকানের বর্জ্যে শিয়ালজানি খাল ময়লার ভাগাড়

পলাশে চাঁদা না পেয়ে সিমেন্ট কারখানায় হামলা-ভাঙচুর, আহত ৭

ছবি

গাড়িতে গাড়িতে বই বিক্রি করে চলছে আয়াতুল্লাহ সংসার

সড়ক দুর্ঘটনায় চেয়ারম্যানপুত্রসহ নিহত ৩

ছবি

শিবগঞ্জে সড়কের অনিয়মের অভিযোগে এলাকাবাসীর বাধায় কাজ বন্ধ

রাজশাহীতে সালিশে গুলি বর্ষণের ঘটনায় গ্রেপ্তার ৩

চালের বাজারে অস্থিরতায় অভিযোগে ৩ চালকলকে জরিমানা

ছবি

দশমিনায় বিলুপ্তিপ্রায় দেশি প্রজাতির মাছ

মহিপুরে অজ্ঞাত ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার

ঝিকরগাছায় বিয়ের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান, এসিড নিক্ষেপ দগ্ধ ৩

সাভারে পরিত্যক্ত স্থানে মিলল বৃদ্ধার রশি পেঁচানো মরদেহ

ছবি

সরকার আসে সরকার যায়, ব্রিজ নির্মাণ হয় না সুন্দরগঞ্জের চরে

ছবি

২০টি বাংলাদেশি পাসপোর্টসহ ভারতীয় ট্রাকচালক আটক

গণঅভ্যুত্থান স্মরণে ভোলা বিএনপির রক্তদান কর্মসূচি

ছবি

চান্দিনায় নকল ও নিম্নমানের শিশু খাদ্য জব্দ

মোহনগঞ্জ যানজট নিরসন জরুরি

চকরিয়ায় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ২, আহত ৪

ছবি

সখীপুরে কাঁঠালের জমজমাট বাজার

নরসিংদীতে অর্ধশতাধিক দোকান পুড়ে ছাই

ঠাকুরগাঁওয়ে পানিতে ডুবে দুই ভাইয়ের মৃত্যু

ছবি

চেলা নদীর তীর কেটে প্রকাশ্যে বালু লুট, প্রশাসন নির্বিকার

কেশবপুরে হনুমানের কামড়ে আহত ৪

ঘিওরে অগ্নিকাণ্ডে ১৪ দোকান ভস্মীভূত

অবৈধভাবে একের পর এক পুশইন করা হচ্ছে : নাহিদ

ছবি

মোরেলগঞ্জে শ্মশানের জমি দখলের প্রতিবাদে ফুঁসে উঠেছে এলাকাবাসী

রাজশাহীর এমকেএস স্পোর্টস ব্যাট রপ্তানি হচ্ছে ১৪ দেশে

চট্টগ্রামে বায়েজিদ থেকে কুয়াইশ সড়ক ছয় লেনে উন্নীত, নির্মিত হবে উড়ালসেতুও

উখিয়ায় খুন ডাকাতির ঘটনায় অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার

আত্রাইয়ে মাদকদ্রব্যসহ পৃথক অভিযানে গ্রেপ্তার তিনজন

কাঁঠালিয়ার শৌলজালিয়া ইউপি চেয়ারম্যান ও প্যানেল চেয়ারম্যান মারধরের শিকার

ছবি

পাগলা মসজিদের ওয়েবসাইট উদ্বোধন

মহেশপুর সীমান্তে অবৈধভাবে পারাপারের সময় আটক ১০

চাঁদপুর মেঘনা নদী থেকে তরুণীর মরদেহ উদ্ধার

হবিগঞ্জে পুকুরে ডুবে দুই শিশুর মৃত্যু

চুরির অপবাদে যুবককে গাছে বেঁধে অমানবিক নির্যাতন

রাজবাড়ীতে স্ত্রী হত্যায় দ্বিতীয় স্বামীর যাবজ্জীবন

tab

সারাদেশ

নিষেধাজ্ঞাকে দুষছেন ব্যবসায়ীরা

বদরগঞ্জে হাড়িভাঙ্গা আমে ক্রেতা নেই লোকসানের মুখে বাগান মালিকরা

প্রতিনিধি, বদরগঞ্জ (রংপুর)

রংপুরের বদরগঞ্জে ক্রেতাশূন্য আমের দোকান। ছবিটি পৌরশহরের স্টেশনরোড থেকে তোলা -সংবাদ

শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫

রংপুরের বদরগঞ্জে এবার হাড়িভাঙ্গা আমে তেমন আগ্রহ নেই। ফলে লোকসানের মুখে পড়েছেন বাগান মালিকরা। আর এর জন্য নিষেধাজ্ঞাকে দুষছেন ব্যবসায়ীরা।

উপজেলা কৃষি অফিস সুত্রে জানা যায়, হাড়িভাঙ্গা আমের জন্মস্থান মিঠাপুকুর হলেও এটি বদরগঞ্জ উপজেলার মানুষের জন্য সবচেয়ে জনপ্রিয় ও অর্থ উপার্জনকারী অন্যতম মৌসুমী ফল। কারণ মিঠাপুকুর উপজেলার মাত্র চারটি উপজেলায় হাড়িভাঙ্গা আমের বাগান পরিলক্ষিত হলেও বদরগঞ্জ উপজেলার ১০ ইউনিয়নসহ একটি পৌরসভার আনাচে-কানাচে ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে আছে। উপসহকারী কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান বলেন, বদরগঞ্জ উপজেলার মোট ৮৫৮ হেক্টর জমিতে হাড়িভাঙ্গা আমের বাগান রয়েছে। এবারে আমের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১১হাজার ৭৭২ মেট্রিক টন।

সরেজমিন বিভিন্ন এলাকা ঘুরে জানা গেছে, চাষীরা শুরু থেকে দু’বছর আগেও হাড়িভাঙ্গা আমে ব্যাপক লাভবান হয়েছেন। কিন্তু গতবছর থেকে চাষীদের লোকসানের পাল্লা ভারি হতে শুরু করেছে। কারণ গতবছর থেকে আবহাওয়ার ব্যাপক তারতম্যের কারণে আগেভাগেই আম পাকছে। কিন্তু সরকারি নিষেধাজ্ঞা থাকায় চাষীরা তা’ নির্দিষ্ট সময়ের আগে বাজারজাত করতে পারছেননা। ফলে শত শত মণ পাকা আম বিক্রির অভাবে পঁচে নষ্ট হয়ে যায়। আবার যখন নিষেধাজ্ঞা উঠে যায় তখন ব্যাপকভাবে আম পাকা শুরু হয়। তখন পাকা আমের তুলনায় ক্রেতা পাওয়া যায়না। এ অবস্থায়ও শত শত মণ আম নষ্ট হয়ে যায়। একারণে হাড়িভাঙ্গা আমে আর ঝুঁকি নিতে চাইছেননা কোন কোন চাষী। কথা হয় উপজেলার রামনাথপুর ইউনিয়নের কিসমত ঘাটাবিল এলাকার আমচাষী আব্দুল মতিনের সাথে। তিনি বলেন, হাড়িভাঙ্গা আম এমন একটি আম যা পেকে গাছ থেকে মাটিতে পড়লে আর খাওয়া যায়না। তিনি বলেন, ১৫জুন পর্যন্ত হাড়িভাঙ্গা আম বাজারজাত করার উপরে নিষেধাজ্ঞা ছিল। অথচ বাগানে আম পাকছে মে মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে। কিন্তু নিষেধাজ্ঞার কারণে সেটি বাজারজাত করা সম্ভব হয়নি। আবার যখন নিষেধাজ্ঞা উঠে গেছে তখন ব্যাপকহারে আম পাকা শুরু হয়েছে। সে তুলনায় বাজারে ক্রেতা পাওয়া যাচ্ছেনা। ফলে শত শত মণ আম পঁচে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। একই এলাকার আমচাষী আব্দুল মজিদ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, তিন একরের আম বাগান পরিচর্যায় দু’লাখ টাকা খরচ হয়েছে। শ্রমিকদের প্রতিদিন চার হাজার টাকা মজুরি দিতে হচ্ছে। তিনি বলেন, আমি ভেবেছিলাম ১৫ লাখ টাকার আম বিক্রি করতে পারব। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে পরিচর্যার খরচও উঠবেনা। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, রংপুরের চাষীরা যাতে লাভবান হতে না পারেন সেজন্য পরিকল্পিতভাবে নির্দিষ্ট দিনের আগে আম বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়ে থাকে। দামোরপুর ইউনিয়নের মোস্তফাপুর এলাকার বাগান মালিক হেলালুর রহমান বলেন, হাড়িভাঙ্গা আম নিয়ে যদি এ অবস্থা চলতে থাকে তাহলে বাগান তুলে ফেলা ছাড়া আর উপায় থাকবেনা। কারণ আম গাছ পরিচর্যায় বিরাট অঙ্কের অর্থ ব্যয় করতে হয়। একজন চাষী লোকসান গুণে কতদিন আর টিকে থাকতে পারে।

এদিকে বাজার ঘুরে দেখা গেছে বাজারে চাষীরা ৭শ’-৮শ’ টাকা মণ দরে পাকা আম এবং ১ হাজার থেকে ১২শ’ টাকা মণ দরে কাঁচা বিক্রি করছেন। আর খুচরা বাজারে পাকা আম বিক্রি হচ্ছে ৩০টাকা কেজি দরে এবং কাঁচা আম ৫০টাকা কেজি দরে। ব্যবসায়ী নূরুজ্জামান বলেন, এবারে আমের ব্যাপক ফলন হয়েছে। সে তুলনায় ক্রেতা বাড়েনি। বরং ক্রেতা কমে গেছে। একারণে দামও কমে গেছে। ব্যবসায়ী শফিকুল ইসলাম বলেন, শুধুমাত্র নিষেধাজ্ঞার কারণেই হাড়িভাঙ্গা আমের বাজারে এমন ধ্বস দেখা দিয়েছে।

এব্যাপারে জানতে চাইলে উপজেলা কৃষি অফিসার সেলিনা আফরোজ বলেন, নিষেধাজ্ঞা দেয়া বা তুলে নেয়ার ক্ষমতা তো কৃষি অফিসের নেই- এটা প্রশাসনের ব্যাপার। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি শুধু বলেন, বাজারদর কমলে লোকসান হবে- এটাই স্বাভাবিক।

back to top