লৌহজং (মুন্সীগঞ্জ) : ২৬ শতাংশ ভূমি দুই প্রভাবশালীর দখলে -সংবাদ
উপজেলার গাওদিয়া ইউনিয়নের হাড়িদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জমি দীর্ঘদিন যাবত রেজাউল ইসলাম ২৪ শতাংশ ও চঞ্চল মুন্সীর বিরুদ্ধে ২ শতাংশ জমি জোরপূর্বক দখল করার অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর বার বার চেষ্টা করেও উদ্ধার করতে পারেননি। এতে বিদ্যায়লয়ে পাঠদানের জন্য নতুন ভবন নির্মাণ ও খেলাধুলার মাঠ সংকটে পড়েছে স্কুল কর্তৃপক্ষ।
জানা যায়, ১৯৩৫ সালে বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার প্রায় ৪ বছর পরে অর্থাৎ ১৯৩৯ সালে মুন্সী আপ্তাবদ্দিন ও মুন্সী আব্দুল লতিফ ৪২১ নং দলিলে হাড়িদিয়া মৌজা সিএস ৫৮৩ নং দাগে ১৫ শতাংশ ও ৭০০, ৭০১ নং দাগে ২৪ শতাংশ জমি দান করেন। দলিল ও রেকর্ডমূলে বিদ্যালয়ের জমির পরিমাণ ৩৯ শতাংশ। সেসময়টিন কাঠের ঘর আসবাবপত্রসহ দলিল রেজিস্ট্র্রেশন হয়। বিদ্যালয়ের ভবন-মাঠসহ ১৫ শতাংশ জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত বাকি জমি বিদ্যালয়ের দক্ষিণ পাশে অবস্থিত।
বিদ্যালয় ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে ৩৯ শতাংশ জমির মধ্যে ২৬ শতাংশ জমি বেদখলে আছে। এর মধ্যে বিদ্যালয়ের নামে ২২ শতাংশ জমি আরএস রেকর্ড হয়েছে। বাকি ১৭ শতাংশ রেকর্ড হয়নি। এলাকাবাসী ও উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার সহায়তায় জমি উদ্ধারের চেষ্টা চালালেও তাতে সফল হয়নি কর্তৃপক্ষ।
হাড়িদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা সাহিদা খাতুন বলেন, কিছুদিন আগে জমিটি উদ্ধারের জন্য উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের মাধ্যমে সহকারী কমিশনার বরাবর পত্র দেয়া হয়েছে।
হাড়িদিয়া গ্রামের রতন শিকদার, চঞ্চল শিকদার, লিটন শিকদার বলেন, হাড়িদিয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়টি ঐতিহ্যবাহী বিদ্যালয়। এক সময় এটি জুনিয়র হাইস্কুল ও ছিল। তখন নুরপুর পূর্বপাড়, নওপাড়া, গোপিনপুর, কালুরগাঁও ও হাড়িদিয়া গ্রামের ছাত্রছাত্রী লেখাপড়া করতো। বিদ্যালয় মাঠে আমরা সবাই খেলাধুলা করে বড় হয়েছি। ছোটবেলায় স্কুলের দক্ষিণে পুকুর থেকে বন্ধুবান্ধব মিলে আনন্দে মাছ ধরেছি এটি ৭৬ সনের ঘটনা। সে সময় সবকিছু ঠিকঠাক ছিল। ফ্যাসিস্ট সরকার ক্ষমতা আসে, তখন থেকেই শুরু হয় গ্রামে অসাধু কুচক্রী মহলের ষড়যন্ত্র। মাঠের জমি দখল করে কেউ ভবন নির্মাণ করেছে। কেউ পুকুরের জায়গা দখল করে মাছ চাষ করছে। ২০১৭ সনে মরহুম সোফেল সেখের আহ্বানে সারা দিয়ে গ্রামবাসী একত্রিত হয়ে চাঁদা তুলে স্কুলের মাঠের জন্য পুকুরটি ভরাটের উদ্যোগ নিলে তখনই বাঁধে বিপত্তি। স্বার্থান্বেষী দুষ্টমহল থেকে আসে নানাপ্রকার হুমকি ধামকি। স্কুলে তাদের করা পকেট কমিটিও ছিল নিশ্চুপ। স্বৈরাচারের আমলে যে ন্যায়ের পক্ষে কথা বলা লোকের বড়ই অভাব সবাই বুঝে গিয়ে আর অগ্রসর হতে পারেনি। সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের পক্ষ থেকে সহযোগিতা করলে জমি উদ্ধার করা সম্ভব হবে।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবুল বাসার মো. বাহাউদ্দীন বলেন, দীর্ঘ দিন যাবত এ সমস্যার কথাটা জানি। ইউএনওর সঙ্গে কথা হয়েছে। তিনি বলেছেন, কাগজপত্র নিয়ে আসতে দ্রুত কাগজপত্র নিয়ে আসলে সহকারী কমিশনকে (ভূমি) নিয়ে তদন্তে বসবে। এবং আমাদের বিদ্যালয়ের সম্পত্তি হলে তিনি উদ্ধারের ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে আশ্বাস দেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. নেছার উদ্দিন বলেন, প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও স্কুলের প্রধান শিক্ষিকাকে কাগজপত্র নিয়ে নিকট আসতে বলা হয়েছে। তদন্ত করে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। সরকারি কোন প্রতিষ্ঠানের কোন সম্পত্তি ভোগ করার ক্ষমতা কারো নেই।
লৌহজং (মুন্সীগঞ্জ) : ২৬ শতাংশ ভূমি দুই প্রভাবশালীর দখলে -সংবাদ
শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫
উপজেলার গাওদিয়া ইউনিয়নের হাড়িদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জমি দীর্ঘদিন যাবত রেজাউল ইসলাম ২৪ শতাংশ ও চঞ্চল মুন্সীর বিরুদ্ধে ২ শতাংশ জমি জোরপূর্বক দখল করার অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর বার বার চেষ্টা করেও উদ্ধার করতে পারেননি। এতে বিদ্যায়লয়ে পাঠদানের জন্য নতুন ভবন নির্মাণ ও খেলাধুলার মাঠ সংকটে পড়েছে স্কুল কর্তৃপক্ষ।
জানা যায়, ১৯৩৫ সালে বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার প্রায় ৪ বছর পরে অর্থাৎ ১৯৩৯ সালে মুন্সী আপ্তাবদ্দিন ও মুন্সী আব্দুল লতিফ ৪২১ নং দলিলে হাড়িদিয়া মৌজা সিএস ৫৮৩ নং দাগে ১৫ শতাংশ ও ৭০০, ৭০১ নং দাগে ২৪ শতাংশ জমি দান করেন। দলিল ও রেকর্ডমূলে বিদ্যালয়ের জমির পরিমাণ ৩৯ শতাংশ। সেসময়টিন কাঠের ঘর আসবাবপত্রসহ দলিল রেজিস্ট্র্রেশন হয়। বিদ্যালয়ের ভবন-মাঠসহ ১৫ শতাংশ জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত বাকি জমি বিদ্যালয়ের দক্ষিণ পাশে অবস্থিত।
বিদ্যালয় ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে ৩৯ শতাংশ জমির মধ্যে ২৬ শতাংশ জমি বেদখলে আছে। এর মধ্যে বিদ্যালয়ের নামে ২২ শতাংশ জমি আরএস রেকর্ড হয়েছে। বাকি ১৭ শতাংশ রেকর্ড হয়নি। এলাকাবাসী ও উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার সহায়তায় জমি উদ্ধারের চেষ্টা চালালেও তাতে সফল হয়নি কর্তৃপক্ষ।
হাড়িদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা সাহিদা খাতুন বলেন, কিছুদিন আগে জমিটি উদ্ধারের জন্য উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের মাধ্যমে সহকারী কমিশনার বরাবর পত্র দেয়া হয়েছে।
হাড়িদিয়া গ্রামের রতন শিকদার, চঞ্চল শিকদার, লিটন শিকদার বলেন, হাড়িদিয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়টি ঐতিহ্যবাহী বিদ্যালয়। এক সময় এটি জুনিয়র হাইস্কুল ও ছিল। তখন নুরপুর পূর্বপাড়, নওপাড়া, গোপিনপুর, কালুরগাঁও ও হাড়িদিয়া গ্রামের ছাত্রছাত্রী লেখাপড়া করতো। বিদ্যালয় মাঠে আমরা সবাই খেলাধুলা করে বড় হয়েছি। ছোটবেলায় স্কুলের দক্ষিণে পুকুর থেকে বন্ধুবান্ধব মিলে আনন্দে মাছ ধরেছি এটি ৭৬ সনের ঘটনা। সে সময় সবকিছু ঠিকঠাক ছিল। ফ্যাসিস্ট সরকার ক্ষমতা আসে, তখন থেকেই শুরু হয় গ্রামে অসাধু কুচক্রী মহলের ষড়যন্ত্র। মাঠের জমি দখল করে কেউ ভবন নির্মাণ করেছে। কেউ পুকুরের জায়গা দখল করে মাছ চাষ করছে। ২০১৭ সনে মরহুম সোফেল সেখের আহ্বানে সারা দিয়ে গ্রামবাসী একত্রিত হয়ে চাঁদা তুলে স্কুলের মাঠের জন্য পুকুরটি ভরাটের উদ্যোগ নিলে তখনই বাঁধে বিপত্তি। স্বার্থান্বেষী দুষ্টমহল থেকে আসে নানাপ্রকার হুমকি ধামকি। স্কুলে তাদের করা পকেট কমিটিও ছিল নিশ্চুপ। স্বৈরাচারের আমলে যে ন্যায়ের পক্ষে কথা বলা লোকের বড়ই অভাব সবাই বুঝে গিয়ে আর অগ্রসর হতে পারেনি। সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের পক্ষ থেকে সহযোগিতা করলে জমি উদ্ধার করা সম্ভব হবে।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবুল বাসার মো. বাহাউদ্দীন বলেন, দীর্ঘ দিন যাবত এ সমস্যার কথাটা জানি। ইউএনওর সঙ্গে কথা হয়েছে। তিনি বলেছেন, কাগজপত্র নিয়ে আসতে দ্রুত কাগজপত্র নিয়ে আসলে সহকারী কমিশনকে (ভূমি) নিয়ে তদন্তে বসবে। এবং আমাদের বিদ্যালয়ের সম্পত্তি হলে তিনি উদ্ধারের ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে আশ্বাস দেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. নেছার উদ্দিন বলেন, প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও স্কুলের প্রধান শিক্ষিকাকে কাগজপত্র নিয়ে নিকট আসতে বলা হয়েছে। তদন্ত করে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। সরকারি কোন প্রতিষ্ঠানের কোন সম্পত্তি ভোগ করার ক্ষমতা কারো নেই।