(গাইবান্ধা) : ৪০ বছর ধরে এই সাঁকো দিয়েই পারাপার হচ্ছেন এলাকাবাসী -সংবাদ
আজ ৪০ বছর ধরে সাঁকোর ওপর দিয়ে পারাপার করছি। এখন পর্যন্ত তারাপুর ইউনিয়নের মধ্যে অবস্থিত তিস্তার শাখা নদী বুড়াইল নালার ওপর ব্রিজ নির্মাণ হয়নি। যে সরকার আসে তারাই উন্নয়নের কথা বলে। কোথায় উন্নয়ন হয়, তা জানিনা। কিন্তু আমার চরে কোন উন্নয়ন হয় নাই। আবেগ ভরা মন নিয়ে কথাগুলো বলেন উপজেলার তারাপুর ইউনিয়নের খোদ্দা চরের বাসিন্দা আলম মিয়া। তার দাবি সরকার ইচ্ছা করলে ব্রিজ করে দিতে পারে। কেন দেয় না, সেটা তার জানা নাই। চরের মানুষের এই দুর্ভোগ আরও কতকাল চলবে তা আল্লাহ ছাড়া কেউ বলতে পারে না।
প্রতিবছর বন্যা আসার আগে ইউনিয়নের চেয়ারম্যান, নেম্বার, ধনীলোকসহ স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় চরের মধ্যে নালা ও শাখা নদীর ওপর সাঁকো বা বাঁশের টার নির্মাণ করে, তার ওপর দিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে।
একই কথা বলেন, হরিপুর ইউনিয়নের ডাঙ্গার চরের সোলেমান মিয়া। তার ভাষ্য হরিপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন চরে কমপক্ষে ৫০টি স্থানে সাঁকো ও বাশের টার রয়েছে। হাট-বাজার থেকে শুরু করে এক গ্রাম থেকে অন্য গ্রামে এমনকি জেলা এবং উপজেলা শহরের যাতায়াত করতে হলে সাঁকো বা টার পার না হলে যাওয়া যাবে না। চরবাসির এই কষ্ট কি? কোন দিন দুর হবে না।
কাপাসিয়া ইউনিয়নের ব্যবসায়ী আনছার আলী বলেন, বর্ষাকালে নৌকা এবং
গ্রীস্মকালে ঘোড়ার গাড়ি বা পায়ে হেটে ব্যবসার মালামাল আনা নেয়া ছাড়া আর কোন পথ নাই। জীবনের সাথে এভাবে যুদ্ধ করে ২৫ বছর ধরে বাদামের চরে ব্যবসা করে আসছি।
সুন্দরগঞ্জ উপজেলার তারাপুর, বেলকা, শান্তিরাম, কঞ্চিবাড়ি, হরিপুর, চন্ডিপুর, শ্রীপুর ও কাপাসিয়া ওপর দিয়ে প্রবাহিত তিস্তা নদী। ড্রেজিং, খনন না করার কারণে উজানের পলি জমে গভীর ভরা তিস্তা এখন মরায় পরিনত হয়েছে। তিস্তার গতিপথ পরিবর্তন হয়ে অসংখ্য শাখানদী বা নালায় রুপ নিয়ে। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয় ও ইউনিয়ন পরিষদ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় কমপক্ষে ২০০টি স্থানে এখনো সাঁকো বা টার দিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে চরের বাসিন্দাদের। এই সাঁকো বিড়ম্বনা যেন চরবাসির জন্য কষ্টের অপর নাম।
হরিপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি মো. মোজাহারুল ইসলাম বলেন, তিনি ১০ বছর ধরে তিনি চেয়ারম্যান। চরবাসির চলাচলের জন্য এরমধ্যে তার ইউনিয়নে কতটা সাঁকো নির্মাণ করে দিয়েছেন, সেটি তার মনে নাই। তবে প্রতিবছর পুনমেরামত বা নতুন তৈরি করে দিতে হচ্ছে। তার ইউনিয়নে কমপক্ষে ৫০টি স্থানে সাঁকো রয়েছে। কোনটি শাখা নদী বা নালার ওপর সারা বছর আবার কোনটির ওপর দিয়ে ছয়মাস সাঁকো দিয়ে পারাপার করতে হয়।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মশিয়ার রহমান বলেন, চরের কিছু কিছু
স্থানে দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রাণালয় হতে ব্রিজ নির্মাণ করে দেয়া হয়েছে। অনেক স্থানে ব্রিজ নির্মাণ করা সম্ভাব নয়। তারপরও বিভিন্ন ভাবে সাঁকো নির্মাণ করে দেয়া হয় প্রতিবছর।
উপজেলা নিবার্হী অফিসার রাজ কুমার বিশ্বাস বলেন, চরে সমস্যার শেষ নাই। বরাদ্দ না থাকলেও জনস্বার্থে কিছু কিছু কাজ করতে হচ্ছে। সাঁকো বিড়ম্বনার কারণে চরবাসির অনেক কষ্ট হচ্ছে এটি সত্য।
(গাইবান্ধা) : ৪০ বছর ধরে এই সাঁকো দিয়েই পারাপার হচ্ছেন এলাকাবাসী -সংবাদ
শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫
আজ ৪০ বছর ধরে সাঁকোর ওপর দিয়ে পারাপার করছি। এখন পর্যন্ত তারাপুর ইউনিয়নের মধ্যে অবস্থিত তিস্তার শাখা নদী বুড়াইল নালার ওপর ব্রিজ নির্মাণ হয়নি। যে সরকার আসে তারাই উন্নয়নের কথা বলে। কোথায় উন্নয়ন হয়, তা জানিনা। কিন্তু আমার চরে কোন উন্নয়ন হয় নাই। আবেগ ভরা মন নিয়ে কথাগুলো বলেন উপজেলার তারাপুর ইউনিয়নের খোদ্দা চরের বাসিন্দা আলম মিয়া। তার দাবি সরকার ইচ্ছা করলে ব্রিজ করে দিতে পারে। কেন দেয় না, সেটা তার জানা নাই। চরের মানুষের এই দুর্ভোগ আরও কতকাল চলবে তা আল্লাহ ছাড়া কেউ বলতে পারে না।
প্রতিবছর বন্যা আসার আগে ইউনিয়নের চেয়ারম্যান, নেম্বার, ধনীলোকসহ স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় চরের মধ্যে নালা ও শাখা নদীর ওপর সাঁকো বা বাঁশের টার নির্মাণ করে, তার ওপর দিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে।
একই কথা বলেন, হরিপুর ইউনিয়নের ডাঙ্গার চরের সোলেমান মিয়া। তার ভাষ্য হরিপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন চরে কমপক্ষে ৫০টি স্থানে সাঁকো ও বাশের টার রয়েছে। হাট-বাজার থেকে শুরু করে এক গ্রাম থেকে অন্য গ্রামে এমনকি জেলা এবং উপজেলা শহরের যাতায়াত করতে হলে সাঁকো বা টার পার না হলে যাওয়া যাবে না। চরবাসির এই কষ্ট কি? কোন দিন দুর হবে না।
কাপাসিয়া ইউনিয়নের ব্যবসায়ী আনছার আলী বলেন, বর্ষাকালে নৌকা এবং
গ্রীস্মকালে ঘোড়ার গাড়ি বা পায়ে হেটে ব্যবসার মালামাল আনা নেয়া ছাড়া আর কোন পথ নাই। জীবনের সাথে এভাবে যুদ্ধ করে ২৫ বছর ধরে বাদামের চরে ব্যবসা করে আসছি।
সুন্দরগঞ্জ উপজেলার তারাপুর, বেলকা, শান্তিরাম, কঞ্চিবাড়ি, হরিপুর, চন্ডিপুর, শ্রীপুর ও কাপাসিয়া ওপর দিয়ে প্রবাহিত তিস্তা নদী। ড্রেজিং, খনন না করার কারণে উজানের পলি জমে গভীর ভরা তিস্তা এখন মরায় পরিনত হয়েছে। তিস্তার গতিপথ পরিবর্তন হয়ে অসংখ্য শাখানদী বা নালায় রুপ নিয়ে। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয় ও ইউনিয়ন পরিষদ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় কমপক্ষে ২০০টি স্থানে এখনো সাঁকো বা টার দিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে চরের বাসিন্দাদের। এই সাঁকো বিড়ম্বনা যেন চরবাসির জন্য কষ্টের অপর নাম।
হরিপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি মো. মোজাহারুল ইসলাম বলেন, তিনি ১০ বছর ধরে তিনি চেয়ারম্যান। চরবাসির চলাচলের জন্য এরমধ্যে তার ইউনিয়নে কতটা সাঁকো নির্মাণ করে দিয়েছেন, সেটি তার মনে নাই। তবে প্রতিবছর পুনমেরামত বা নতুন তৈরি করে দিতে হচ্ছে। তার ইউনিয়নে কমপক্ষে ৫০টি স্থানে সাঁকো রয়েছে। কোনটি শাখা নদী বা নালার ওপর সারা বছর আবার কোনটির ওপর দিয়ে ছয়মাস সাঁকো দিয়ে পারাপার করতে হয়।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মশিয়ার রহমান বলেন, চরের কিছু কিছু
স্থানে দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রাণালয় হতে ব্রিজ নির্মাণ করে দেয়া হয়েছে। অনেক স্থানে ব্রিজ নির্মাণ করা সম্ভাব নয়। তারপরও বিভিন্ন ভাবে সাঁকো নির্মাণ করে দেয়া হয় প্রতিবছর।
উপজেলা নিবার্হী অফিসার রাজ কুমার বিশ্বাস বলেন, চরে সমস্যার শেষ নাই। বরাদ্দ না থাকলেও জনস্বার্থে কিছু কিছু কাজ করতে হচ্ছে। সাঁকো বিড়ম্বনার কারণে চরবাসির অনেক কষ্ট হচ্ছে এটি সত্য।