স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত দুই লক্ষাধিক মানুষ
লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যোগদানের পর থেকে প্রায় ১০ বছর সংযুক্তিতে রয়েছেন জুনিয়র কনসালটেন্ট (গাইনি বিশেষজ্ঞ) ডা. শমাছুন নাহার। স্বাস্থ্য বিভাগের একটি আদেশে তিনি ঢাকার কমলাপুর রেলওয়ে জেনারেল হাসপাতালে সংযুক্তিতে রয়েছেন। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের খামখেয়ালিপনার কারণে দীর্ঘদিন থেকে সেবা বঞ্চিত হচ্ছে এ উপজেলার প্রায় ২ লক্ষাধিক মানুষ। এ ছাড়াও এ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এনেসথেসিয়া ডাক্তার নাজনীন আক্তার যোগদান করে অননুমোদিত ছুটি নয়ে অনুপস্থিত রয়েছেন।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, ডা. শামছুন নাহার ২০১৫ সালের ২৯ জুন কমলনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গাইনি বিশেষজ্ঞ (জুনিয়র কনসালটেন্ট) বালটেন্ট) হিসেবে যোগদান করেন। ওই এছরের ৫ আগস্ট স্বাস্থ্য অধিদপ্তর তাকে ঢাকার কমলাপুর রেলওয়ে জেনারেল হাসপাতালে সংযুক্তিতে পাঠায়। এরই মাঝে ২০১৮ সালের ৮ জুলাই তার সংযুক্তির আদেশ বতিল হলে তিনি এ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যোগদান করেন। এরপর ২০১৯ সালে ৫ মে রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব রোকেয়া বেগমের স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে আবার ঢাকার তাকে কমলাপুর রেলওয়ে জেনারেল হাসপাতালে সংযুক্তিতে পাঠানো হয়। অদ্যাবদি তিনি ওই হাসপাতালে সংযুক্তিতে হয়েছেন।
বিষয়টি নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও জেলা সভিল সার্জন বরাবর একাধিক চিঠি চালাচালি করেও কোনো কাজ হয়নি বলে জানান স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা সব্য সাচি নাথ।
এ ছাড়াও এ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রতিদিন বহির্বিভাগে ৫শ’ থেকে ৭শ’ রোগী চিকিৎসা নেন। ৫০ শয্যার বিপরীতে ৬০ থেকে ৭০ জন পর্যন্ত ভর্তি থাকেন নিয়মিত। বিপুলসংখ্যক এই রোগীর জন্য ২১টি চকিৎসকের পদ বরাদ্দ থাকলেও বর্তমানে ৯টি রয়েছে শূন্য।
ফিল্ড টাফ ৫৩ পদের মধ্যে শূন্য রয়েছে ২২টি। এ ছাড়া নার্স মিডওয়াইফ ২৬টি পদের মধ্যে ২০টি পদ শূন্য এবং ২য়, ৩য় ও ৪র্থ শ্রেণির ২৭টি পদের মধ্যে ১৯টি শূন্য রয়েছে।
এতে রোগীদের সেবা দিতে হিমশিম খেতে হয় চিকিৎসক ও নার্সদের। প্রয়োজনীয় জনবলের অভাবে হাসপাতালের পরিচ্ছন্নতা কাজেও রয়েছে নানা বিড়ম্বনা। ৪র্থ শ্রেণির গুরুত্বপূর্ণ কুক পদটিও রয়েছে দীর্ঘদিন থেকে শূন্য। ফলে রোগীদের ধাবার তৈরি ও বিতরণে রয়েছে বিভিন্ন অনিয়ম। হাসপাতালে মারেকটি গুরুত্বপূর্ণ পদ হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ (কার্ডিওলজিস্ট)। কিন্তু দীর্ঘদিন থেকে এ পদটিও শূন্য রয়েছে এবং বর্তমানে কার্ডিওগ্রাফার ও নেই অনেকদিন থেকে।
সরেজমিন কমলনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা যায়, ওই হাসপাতালের মহিলা ওয়ার্ডে ৩০-৩৫ জন রোগী ভর্তি আছেন। এদের অধিকাংশই গাইনি রোগে আক্রান্ত। চরলরেন্স ইউনিয়নের শিউলি বেগম (৪৬) ও চর ফলকন ইউনিয়নের রোকেয়া (৫০) জানান, তলপেটের ব্যথাসহ বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে তারা এ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তাদের রোগের সঠিক কোনো চিকিৎসা তারা পাচ্ছেন না। তাদের রোগের ডাক্তার নাকি এ হাসপাতালে নাই বলে জানান তারা।
কমলনগর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সব্য সাচি যাথ বলেন, ডা. শামছুন নাহারের সংযুক্তির আদেশ বাতিলের বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও জেলা সিভিল সার্জন বরাবর একাধিকবার চিঠি দেওয়া হয়েছে।
কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা না নিলে আমারতো কিছুই করার নেই। লক্ষ্মীপুর জেলা সিভিল সার্জন মোহাম্মদ আবু হাসান শাহীন বলেন, এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত দুই লক্ষাধিক মানুষ
মঙ্গলবার, ১৫ জুলাই ২০২৫
লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যোগদানের পর থেকে প্রায় ১০ বছর সংযুক্তিতে রয়েছেন জুনিয়র কনসালটেন্ট (গাইনি বিশেষজ্ঞ) ডা. শমাছুন নাহার। স্বাস্থ্য বিভাগের একটি আদেশে তিনি ঢাকার কমলাপুর রেলওয়ে জেনারেল হাসপাতালে সংযুক্তিতে রয়েছেন। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের খামখেয়ালিপনার কারণে দীর্ঘদিন থেকে সেবা বঞ্চিত হচ্ছে এ উপজেলার প্রায় ২ লক্ষাধিক মানুষ। এ ছাড়াও এ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এনেসথেসিয়া ডাক্তার নাজনীন আক্তার যোগদান করে অননুমোদিত ছুটি নয়ে অনুপস্থিত রয়েছেন।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, ডা. শামছুন নাহার ২০১৫ সালের ২৯ জুন কমলনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গাইনি বিশেষজ্ঞ (জুনিয়র কনসালটেন্ট) বালটেন্ট) হিসেবে যোগদান করেন। ওই এছরের ৫ আগস্ট স্বাস্থ্য অধিদপ্তর তাকে ঢাকার কমলাপুর রেলওয়ে জেনারেল হাসপাতালে সংযুক্তিতে পাঠায়। এরই মাঝে ২০১৮ সালের ৮ জুলাই তার সংযুক্তির আদেশ বতিল হলে তিনি এ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যোগদান করেন। এরপর ২০১৯ সালে ৫ মে রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব রোকেয়া বেগমের স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে আবার ঢাকার তাকে কমলাপুর রেলওয়ে জেনারেল হাসপাতালে সংযুক্তিতে পাঠানো হয়। অদ্যাবদি তিনি ওই হাসপাতালে সংযুক্তিতে হয়েছেন।
বিষয়টি নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও জেলা সভিল সার্জন বরাবর একাধিক চিঠি চালাচালি করেও কোনো কাজ হয়নি বলে জানান স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা সব্য সাচি নাথ।
এ ছাড়াও এ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রতিদিন বহির্বিভাগে ৫শ’ থেকে ৭শ’ রোগী চিকিৎসা নেন। ৫০ শয্যার বিপরীতে ৬০ থেকে ৭০ জন পর্যন্ত ভর্তি থাকেন নিয়মিত। বিপুলসংখ্যক এই রোগীর জন্য ২১টি চকিৎসকের পদ বরাদ্দ থাকলেও বর্তমানে ৯টি রয়েছে শূন্য।
ফিল্ড টাফ ৫৩ পদের মধ্যে শূন্য রয়েছে ২২টি। এ ছাড়া নার্স মিডওয়াইফ ২৬টি পদের মধ্যে ২০টি পদ শূন্য এবং ২য়, ৩য় ও ৪র্থ শ্রেণির ২৭টি পদের মধ্যে ১৯টি শূন্য রয়েছে।
এতে রোগীদের সেবা দিতে হিমশিম খেতে হয় চিকিৎসক ও নার্সদের। প্রয়োজনীয় জনবলের অভাবে হাসপাতালের পরিচ্ছন্নতা কাজেও রয়েছে নানা বিড়ম্বনা। ৪র্থ শ্রেণির গুরুত্বপূর্ণ কুক পদটিও রয়েছে দীর্ঘদিন থেকে শূন্য। ফলে রোগীদের ধাবার তৈরি ও বিতরণে রয়েছে বিভিন্ন অনিয়ম। হাসপাতালে মারেকটি গুরুত্বপূর্ণ পদ হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ (কার্ডিওলজিস্ট)। কিন্তু দীর্ঘদিন থেকে এ পদটিও শূন্য রয়েছে এবং বর্তমানে কার্ডিওগ্রাফার ও নেই অনেকদিন থেকে।
সরেজমিন কমলনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা যায়, ওই হাসপাতালের মহিলা ওয়ার্ডে ৩০-৩৫ জন রোগী ভর্তি আছেন। এদের অধিকাংশই গাইনি রোগে আক্রান্ত। চরলরেন্স ইউনিয়নের শিউলি বেগম (৪৬) ও চর ফলকন ইউনিয়নের রোকেয়া (৫০) জানান, তলপেটের ব্যথাসহ বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে তারা এ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তাদের রোগের সঠিক কোনো চিকিৎসা তারা পাচ্ছেন না। তাদের রোগের ডাক্তার নাকি এ হাসপাতালে নাই বলে জানান তারা।
কমলনগর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সব্য সাচি যাথ বলেন, ডা. শামছুন নাহারের সংযুক্তির আদেশ বাতিলের বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও জেলা সিভিল সার্জন বরাবর একাধিকবার চিঠি দেওয়া হয়েছে।
কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা না নিলে আমারতো কিছুই করার নেই। লক্ষ্মীপুর জেলা সিভিল সার্জন মোহাম্মদ আবু হাসান শাহীন বলেন, এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।