alt

সারাদেশ

বিনা বিচারে ৩০ বছর, অবশেষে মুক্তি পেলেন কানু মিয়া

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট : মঙ্গলবার, ১৫ জুলাই ২০২৫

কোনো সাজা ছাড়াই হবিগঞ্জ কারাগারে ৩০ বছর কাটানোর পর মুক্তি পেলেন মানসিক ভারসাম্যহীন কানু মিয়া (৫০)। মাকে হত্যার অভিযোগে আটক হওয়ার পর দুই দশক আগে আদালত মামলার কার্যক্রম স্থগিত করলেও তিনি মুক্তি পাননি। সম্প্রতি কারাগার পরিদর্শনে গিয়ে জেলা লিগ্যাল এইড কর্মকর্তার নজরে এলে তাঁর সহায়তায় এবং আদালতের নির্দেশে মঙ্গলবার দুপুরে কারামুক্ত হন তিনি।

কানু মিয়া জেলার লাখাই উপজেলার সিংহগ্রামের বাসিন্দা। আজ দুপুরে তাঁকে কারাগার থেকে নিতে আসেন বড় দুই ভাই। এ সময় তিনি কোনো কথা বলেননি।

স্বজন, কারাগার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মানসিক রোগী কানু মিয়া ১৯৯৫ সালের ২৫ মে মাকে কোদাল দিয়ে আঘাত করে হত্যা করেন। গ্রামবাসী তাঁকে আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। তাঁর ভাই বাদী হয়ে মামলা করেন। মামলা চলাকালে তাঁর মানসিক অবস্থার আরও অবনতি হলে আদালত ২০০৩ সালে নির্দেশ দেন, সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত মামলার কার্যক্রম স্থগিত থাকবে। এরপর থেকে তিনি কারাগারেই ছিলেন। প্রথমে স্বজনেরা তাঁকে দেখতে গেলেও পরে তাঁরা যোগাযোগ বন্ধ করে দেন, ধারণা করেছিলেন তিনি আর বেঁচে নেই।

কয়েক দিন আগে জেলা লিগ্যাল এইড কর্মকর্তা মুহম্মাদ আব্বাছ উদ্দিন কারাগার পরিদর্শনে গেলে কানু মিয়ার বিষয়টি তাঁর নজরে আসে। খোঁজ নিয়ে তিনি জানতে পারেন, মামলাটি দীর্ঘদিন ধরে স্থগিত রয়েছে এবং মামলার বাদীরও কোনো খোঁজ নেই। পরে তিনি কানু মিয়ার ভাই নাসু মিয়াকে খুঁজে বের করেন এবং বিস্তারিত জেনে লিগ্যাল এইড থেকে একজন আইনজীবী নিয়োগ করা হয়।

সোমবার জেলা ও দায়রা জজ আদালতে কানু মিয়ার জামিনের আবেদন করলে বিচারক জেসমিন আরা বেগম জামিন মঞ্জুর করেন। মঙ্গলবার দুপুরে তিনি মুক্তি পান। এ সময় তাঁকে নতুন গোলাপি পাঞ্জাবি, সাদা টুপি ও প্যান্ট পরে কারাগার থেকে বের হতে দেখা যায়। তবে তিনি কোনো কথা বলেননি।

মুক্তির খবর পেয়ে বড় দুই ভাই মুনু মিয়া ও নাসু মিয়া কারা ফটকে আসেন এবং ভাইকে জড়িয়ে ধরেন। কানু মিয়া তখনও নির্বাক ছিলেন। নাসু মিয়া বলেন, ‘আমরা ভেবেছিলাম ভাই হয়তো আর বেঁচে নেই। তাই যোগাযোগ রাখিনি। ৩০ বছর পর ভাইকে ফিরে পেয়ে আমরা খুশি।’

জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য ও মানবাধিকারকর্মী মরলী ধর বলেন, ‘বিচার ছাড়াই ৩০ বছর কারাগারে থাকার ঘটনা অত্যন্ত অমানবিক। আজ লিগ্যাল এইড কর্মকর্তার কারণে তিনি মুক্তি পেলেন। কিন্তু এই ৩০ বছর কেউ ফিরিয়ে দিতে পারবে না।’

হবিগঞ্জ কারাগারের জেলার মো. মনির চৌধুরী বলেন, কানু মিয়া ৩০ বছর ২ মাস ১৬ দিন পর মুক্তি পেয়েছেন। আগে কয়েকবার বিষয়টি আদালতের নজরে আনার চেষ্টা হয়েছিল। তবে এবার লিগ্যাল এইড কর্মকর্তার নজরে আসায় কার্যক্রম দ্রুত এগিয়েছে। তিনি বলেন, ‘কানু মিয়া খুব কম কথা বলেন। আজও কিছু বলেননি। পরিবারের কাছে ফিরলে তিনি হয়তো অনেকটা সুস্থ হয়ে উঠতে পারেন।’

শরণখোলার রেঞ্জে মাছ ধরার সময় পাঁচ জেলে আটক

নারায়ণগঞ্জ শহরে গরম কমাতে ‘তাপকর্ম পরিকল্পনা’

ছবি

কক্সবাজারে জামায়াত নেতার হামলা, বিএনপি নেতা নিহত

ছবি

শায়েস্তাগঞ্জ ও অলিপুরে উচ্ছেদ শতাধিক অবৈধ স্থাপনা, উদ্বোধন হলো পুলিশ বক্স

ছবি

ঐতিহাসিক ভবন ভাঙা ঠেকাতে প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের চিঠি

ছবি

কমলনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গাইনি বিশেষজ্ঞ নেই ১০ বছর

মহেশপুর আদালত চত্বরে জাল কোর্টফিতে সয়লাব

কমলগঞ্জে চা শ্রমিকের মরদেহ উদ্ধার

মোহনগঞ্জে হারিয়ে গেছে দেশি জাতের ধান

নবাবগঞ্জে নিখোঁজ শিশুর মরদেহ উদ্ধার

মোরেলগঞ্জ ভেটেরিনারি হাসপাতালে ১১ পদের মধ্যে ৮ পদেই কেউ নেই

রংপুর চেম্বারের নির্বাচন সম্পন্ন

ছবি

৭ বছর আগের সেই মর্মান্তিক ঘটনায় চোখের জলে বুক ভাসান স্বজনরা

চাঁদপুরে অপরাধে জড়িত সন্দেহে আটক ২২

তারাগঞ্জে চাষিদের বীজ, সার ও অর্থ বিতরণ

ছবি

হরিপুর-চিলমারী সেতুর উদ্বোধন ২ আগস্ট

বিশ্ব জনসংখ্যা দিবস উপলক্ষে কলমাকান্দায় আলোচনা সভা

বাগাতিপাড়ায় সড়ক প্রকল্পে অনিয়মের অভিযোগ, দুদকের অভিযান

ভিডব্লিউবি কার্ডধারীদের কাছে ট্যাক্সের নামে টাকা আদায়

ছবি

দশমিনায় বাড়ির আঙিনায় বস্তায় আদা চাষে সাফল্য

কাঁঠালিয়ায় জিপিএ৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা

চিতলমারীতে মাদক বিক্রেতা গ্রেপ্তার

ছবি

বারবার প্রতিশ্রুতির পরও পাকাকরণ হয়নি সড়ক

পাঁচবিবি উপজেলা প্রশাসন ভবন উদ্বোধন

মা হত্যার দায়ে পুত্রের আমৃত্যু কারাদণ্ড

ছবি

মাদারগঞ্জে স্বেচ্ছাশ্রমে কাঠের সেতু পুনর্নির্মাণ

শ্রীমঙ্গলে চাঞ্চল্যকর হৃদয় হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদ্ঘাটন দুই বন্ধু গ্রেপ্তার

ভুক্তভোগী দুই নারীকে হুমকির অভিযোগ ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে

ছবি

বড়াল নদীতে মাছ ধরার উৎসব

স্বজনদের আপত্তির মুখে লাশ উত্তোলন না করেই ফিরে গেল পিবিআই টিম

মোরেলগঞ্জে মাদ্রাসাছাত্রকে কুপিয়ে জখম

ছবি

চাঁদাবাজি বন্ধে বিএনপির সমাবেশ

অটোরিকশা চালককে মারধর করায় বিএনপি নেতার পদ স্থগিত

খাগড়াছড়িতে এনসিপির নেতানেত্রীর পাল্টাপাল্টি জিডি

ছবি

দোয়ারাবাজারে সেতু না থাকায় বাঁশের সাঁকোতে পারাপার

গ্রামীণফোনের বিরুদ্ধে প্যাকেজ অফারের প্রতারণার অভিযোগ, ভোগান্তিতে গ্রাহক

tab

সারাদেশ

বিনা বিচারে ৩০ বছর, অবশেষে মুক্তি পেলেন কানু মিয়া

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট

মঙ্গলবার, ১৫ জুলাই ২০২৫

কোনো সাজা ছাড়াই হবিগঞ্জ কারাগারে ৩০ বছর কাটানোর পর মুক্তি পেলেন মানসিক ভারসাম্যহীন কানু মিয়া (৫০)। মাকে হত্যার অভিযোগে আটক হওয়ার পর দুই দশক আগে আদালত মামলার কার্যক্রম স্থগিত করলেও তিনি মুক্তি পাননি। সম্প্রতি কারাগার পরিদর্শনে গিয়ে জেলা লিগ্যাল এইড কর্মকর্তার নজরে এলে তাঁর সহায়তায় এবং আদালতের নির্দেশে মঙ্গলবার দুপুরে কারামুক্ত হন তিনি।

কানু মিয়া জেলার লাখাই উপজেলার সিংহগ্রামের বাসিন্দা। আজ দুপুরে তাঁকে কারাগার থেকে নিতে আসেন বড় দুই ভাই। এ সময় তিনি কোনো কথা বলেননি।

স্বজন, কারাগার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মানসিক রোগী কানু মিয়া ১৯৯৫ সালের ২৫ মে মাকে কোদাল দিয়ে আঘাত করে হত্যা করেন। গ্রামবাসী তাঁকে আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। তাঁর ভাই বাদী হয়ে মামলা করেন। মামলা চলাকালে তাঁর মানসিক অবস্থার আরও অবনতি হলে আদালত ২০০৩ সালে নির্দেশ দেন, সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত মামলার কার্যক্রম স্থগিত থাকবে। এরপর থেকে তিনি কারাগারেই ছিলেন। প্রথমে স্বজনেরা তাঁকে দেখতে গেলেও পরে তাঁরা যোগাযোগ বন্ধ করে দেন, ধারণা করেছিলেন তিনি আর বেঁচে নেই।

কয়েক দিন আগে জেলা লিগ্যাল এইড কর্মকর্তা মুহম্মাদ আব্বাছ উদ্দিন কারাগার পরিদর্শনে গেলে কানু মিয়ার বিষয়টি তাঁর নজরে আসে। খোঁজ নিয়ে তিনি জানতে পারেন, মামলাটি দীর্ঘদিন ধরে স্থগিত রয়েছে এবং মামলার বাদীরও কোনো খোঁজ নেই। পরে তিনি কানু মিয়ার ভাই নাসু মিয়াকে খুঁজে বের করেন এবং বিস্তারিত জেনে লিগ্যাল এইড থেকে একজন আইনজীবী নিয়োগ করা হয়।

সোমবার জেলা ও দায়রা জজ আদালতে কানু মিয়ার জামিনের আবেদন করলে বিচারক জেসমিন আরা বেগম জামিন মঞ্জুর করেন। মঙ্গলবার দুপুরে তিনি মুক্তি পান। এ সময় তাঁকে নতুন গোলাপি পাঞ্জাবি, সাদা টুপি ও প্যান্ট পরে কারাগার থেকে বের হতে দেখা যায়। তবে তিনি কোনো কথা বলেননি।

মুক্তির খবর পেয়ে বড় দুই ভাই মুনু মিয়া ও নাসু মিয়া কারা ফটকে আসেন এবং ভাইকে জড়িয়ে ধরেন। কানু মিয়া তখনও নির্বাক ছিলেন। নাসু মিয়া বলেন, ‘আমরা ভেবেছিলাম ভাই হয়তো আর বেঁচে নেই। তাই যোগাযোগ রাখিনি। ৩০ বছর পর ভাইকে ফিরে পেয়ে আমরা খুশি।’

জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য ও মানবাধিকারকর্মী মরলী ধর বলেন, ‘বিচার ছাড়াই ৩০ বছর কারাগারে থাকার ঘটনা অত্যন্ত অমানবিক। আজ লিগ্যাল এইড কর্মকর্তার কারণে তিনি মুক্তি পেলেন। কিন্তু এই ৩০ বছর কেউ ফিরিয়ে দিতে পারবে না।’

হবিগঞ্জ কারাগারের জেলার মো. মনির চৌধুরী বলেন, কানু মিয়া ৩০ বছর ২ মাস ১৬ দিন পর মুক্তি পেয়েছেন। আগে কয়েকবার বিষয়টি আদালতের নজরে আনার চেষ্টা হয়েছিল। তবে এবার লিগ্যাল এইড কর্মকর্তার নজরে আসায় কার্যক্রম দ্রুত এগিয়েছে। তিনি বলেন, ‘কানু মিয়া খুব কম কথা বলেন। আজও কিছু বলেননি। পরিবারের কাছে ফিরলে তিনি হয়তো অনেকটা সুস্থ হয়ে উঠতে পারেন।’

back to top