alt

সারাদেশ

দামুড়হুদায় জলাবদ্ধতায় সুইসগেট নির্মাণ বন্ধ, ফসলি জমির ক্ষতি

প্রতিনিধি, দামুড়হুদা (চুয়াডাঙ্গা) : শনিবার, ০২ আগস্ট ২০২৫

দামুড়হুদা (চুয়াডাঙ্গা) : ভৈরব নদে পানি নিয়ন্ত্রণে সুইসগেট নির্মাণ -সংবাদ

চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার সুবলপুর গ্রামের পাশ দিয়ে প্রবাহিত ভৈরব নদের পানি ধারণক্ষমতা, প্রবাহ ও নাব্যতা বৃদ্ধির মাধ্যমে শুকনা মৌসুমে সেচ সুবিধা নিশ্চিতের লক্ষ্যে একটি প্রকল্প হাতে নেয় পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়। প্রকল্পের মেয়াদ আরেক দফা বাড়িয়ে ২০২৬ সালের জুন পর্যন্ত করা হয়েছে নির্মাণাধীন অংশ ডুবে যাওয়ায় ওই কাজ আপতত বন্ধ রয়েছে।

পাউবোর সূত্রে জানা গেছে, ২০২৩ সালের ১৫ জানুয়ারি প্রকল্পটির কাজ উদ্বোধন করেন সাবেক সংসদ সদস্য আলী আজগার টগর। যদিও ২০২১-২২ অর্থবছর শুরু হওয়া কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০২২-২৩ অর্থবছরে। প্রকল্পটির প্রাক্কলিত মূল্য ধরা হয়েছিল ৩১ কোটি ১৫ লাখ ৫৪ হাজার ২৬২ দশমিক ৪৬৫ টাকা। চুক্তি মূল্য ধরা হয়েছে ২৮ কোটি ৩ লাখ ৯৮ হাজার ৮৩৬ দশমিক ২১৯ টাকা। ২০২২ সালের ২১ জুলাই কার্যাদেশ দেয়া হলেও কাজ শুরু হয় ২০২২ সালের ২৭ জুলাই। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান তমা কনস্ট্রাকশন অ্যান্ড কোম্পানি লিমিটেড ও কুষ্টিয়ার ঠিকাদার নাসির উদ্দিন মোল্লা যৌথভাবে কাজটি করছেন।

দামুড়হুদা উপজেলার সুবলপুর গ্রামে ভৈরব নদের ভেতর ২৮ কোটি টাকা ব্যয়ে ১৪ ভেন্ট বিশিষ্ট ওয়াটার রিজার্ভার নির্মাণকাজ চলমান রয়েছে। দ্বিতীয় দফায় মেয়াদ বাড়িয়ে কাজটি ২০২৫ সালের জুনে শেষ হওয়ার কথা ছিল। পরে প্রকল্পের মেয়াদ আরেক দফা বাড়িয়ে ২০২৬ সালের জুন পর্যন্ত করা হয়েছে। কবে নাগাদ শেষ হবে, তা নিশ্চিত করে জানাতে পারেনি চুয়াডাঙ্গা পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) কর্তৃপক্ষ। পানিপ্রবাহ ঠেকাতে বাঁধ দিয়ে দীর্ঘদিন কাজ করা আইনি সম্মত কিনা এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এভাবেই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজটি প্রকল্পের আওতায় দামুড়হুদা উপজেলার সুবলপুর গ্রামে নদের মাঝে ১৪ ভেন্ট বিশিষ্ট পানি নিয়ন্ত্রণ অবকাঠামো (ওয়াটার রিজার্ভার) নির্মাণ করছে। ভৈরব নদ পুনঃখনন (দ্বিতীয় পর্যায়) নামের এ প্রকল্পের কাজ শুরু ২০২২ সালে। শুরুতেই বাঁধ দিয়ে নদের পানি প্রবাহ আটকে দেয়া হয়। ২০২৩ সালে নির্মাণকাজটি শেষ হওয়ার কথা ছিল। নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ না হওয়ায় ২০২৬ সাল পর্যন্ত প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। নির্মাণাধীন অংশ ডুবে যাওয়ায় ওই কাজ আপতত বন্ধ রয়েছে। স্থানীয় কৃষকরা বলেন, ভৈরব নদে দেয়া বাঁধের কারণে পানি নিষ্কাশনের পথ বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে ফসলি জমিতে দেখা দিয়েছে জলাবদ্ধতা। পাশাপাশি বাঁধ উপচে পড়া পানিতেও তাদের ফসল ডুবে যাচ্ছে। উপজেলার সুবলপুর, পাটাচোরা, কাঞ্চনতলা, রঘুনাথপুর, ছুটিপুর ও কাজলার চর এলাকার ফসলি জমিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। ফসল রক্ষায় কয়েকটি গ্রামের কৃষক সুবলপুরে ভৈরব নদের বাঁধ কেটে দিয়ে দিয়েছে। ফলে জমি থেকে কিছুটা পানি সরে গেছে।

সুবলপুর ও আশপাশের গ্রামের কৃষকদের একাধিক অভিযোগ, নির্মাণকাজের শুরুতেই সাবেক এমপি আলী আজগার টগরের ভাই সাবেক উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলী মনছুর বাবু ও আরিফ হোসেন ভৈরব নদের মাটি কেটে ইট ভাটায় বিক্রি করে দেওয়ার ফলে নদের পাশে কৃষকের জমি ও সুবলপুর গ্রামের চলাচলের রাস্তাটি ভাঙনের কবলে পড়েছে।

গ্রামটির বাসিন্দারা বলেন, নদের মাঝে ওয়াটার রিজার্ভার নির্মাণ শুরু হওয়ার আগেই মাটি কেটে ইটভাটায় বিক্রি শুরু করেন। দুই পাড়ের মাটি না থাকলে তার ঘরবাড়ি ভাঙনের কবলে পড়বে। এত বড় একটি প্রকল্পে দুই-পাঁচজন শ্রমিক দিয়ে কাজ করানো হচ্ছে। গত চার বছর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান খেয়াল খুশি এত কাজ করে আসছে। নদে বাঁধ দেয়ার কারণে ধান ও পাট ডুবে যাচ্ছে। ফসল বাঁচাতে এলাকার চাষিরা বাঁধ কেটে দিয়েছে। কাজের ধীরগতির কারণে ফসলের ক্ষতি হচ্ছে।

চুয়াডাঙ্গার মাথাভাঙ্গা নদী বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতি অধ্যক্ষ হামিদুল হক মুন্সী বলেন, ‘ছয়-সাতটি নদ-নদীর উৎসমুখ হচ্ছে চুয়াডাঙ্গা। এখান থেকে নদ-নদীগুলো খুলনাসহ বিভিন্ন অঞ্চলে ছড়িয়ে গেছে। এমন একটি নদ ভৈরব। কিছুদিন আগে নদটি সংস্কার করা হয়েছে। কিন্তু ব্যবস্থাপনা ত্রুটির কারণে নদ থেকে যতটা সুযোগ-সুবিধা এলাকার মানুষের পাওয়ার কথা, তা পাওয়া সম্ভব হয়নি। পানিপ্রবাহ আটকে সুবলপুর পয়েন্টে অবকাঠামো নির্মাণ করা হচ্ছে। প্রকল্পটি এমন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে দেয়া হয়েছে, যাদের এ ধরনের কাজের পূর্ব অভিজ্ঞতা নেই। নদী শাসনের কোনো যন্ত্রাংশ তাদের নেই। নদের প্রবাহ আটকে যে অবকাঠামো নির্মাণ করা হচ্ছে, তা কল্যাণের চেয়ে অকল্যাণই বেশি হবে। দীর্ঘদিন বাঁধ দিয়ে পানি প্রবাহ ঠেকিয়ে রাখার ফলে নদের তলদেশে পলি জমে নাব্যতা হারাবে। ফলে নদের পানি ধারণক্ষমতা কমে যাবে। যে অর্থ ব্যয় করে নদটি খনন করা হয়েছে। সে অর্থ পানিতেই চলে যাবে। চুয়াডাঙ্গা পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফ আহমেদ বলেন, পানি নিয়ন্ত্রণ অবকাঠামো নির্মাণকাজ ৮৭ শতাংশ শেষ হয়েছে। ওই পরিমাণ কাজে ব্যয় হয়েছে ২২ কোটি ২৮ লাখ টাকার কিছু বেশি। কাজটি পুরোপুরি শেষ হলে সুবিধা-অসুবিধা বোঝা যাবে। ভৈরব নদে বাঁধ দেয়ার কারণে ফসল নষ্ট হওয়া প্রসঙ্গে বলেন, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে সেদিকে সতর্ক থাকার জন্য বলা হয়েছে।

উপজেলা অতিরিক্ত কৃষি অফিসার অভিজিত কুমার বিশ্বাস বলেন, ভৈরব নদে শুরুতেই বাঁধ দিয়ে নদের পানিপ্রবাহ আটকে দিয়ে কাজ শুরু করে। বাঁধের কারণে ও ফসলি জমি বৃষ্টির পানিতে আমন ধান ও আউষ ধান পানিতে তলিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত ও জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। বাঁধ কেটে দিলে ফসলি জমি থেকে পানি বের হয়ে যাচ্ছে। কৃষি বিভাগ বিষয়টি নজরে রেখেছে।

ছবি

ঠাকুরগাঁওয়ে জলাতঙ্কের টিকা সংকট

ছবি

ঐতিহ্যের সাক্ষী : শ্রীমঙ্গলের কালীঘাট ডাকঘর

ছবি

কালীগঞ্জে স্লুইসগেট দিয়ে নিষ্কাশনের বদলে উল্টো মাঠে ঢুকছে পানি

বট গাছের নিচে চাপা পড়ে আহতদের পাশে আব্দুস সালাম পিন্টু বিশ্বজিৎ চক্রবর্তী

জুলাই বিপ্লবে শহীদ মাসুদ রানার পরিবারের হাতে জামায়াতের অনুদান

চকরিয়ায় যুবককে গুলি করে হত্যা

হাকিমপুর হাসপাতালের চিকিৎসককে মারধরের ঘটনায় পৌর স্বেচ্ছাসেবক দল নেতাসহ গ্রেপ্তার ১০

মিঠাপুকুরে প্রতিবন্ধী নারীকে ধর্ষণের অভিযোগ

ছবি

গ্রীষ্মকালীন তরমুজ চাষে সাফল্যের পথে কেন্দুয়ার কৃষক

সিরাজগঞ্জে অস্ত্রসহ দুই যুবক গ্রেপ্তার

ছাগল খেয়ে ফেলায় বিশাল অজগরকে পিটিয়ে হত্যা

নখোঁজের এক সপ্তাহ পর নদীতে ভেসে উঠল নারীর মরদেহ

দুমকিতে গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার

ছবি

সিরাজগঞ্জে পানি স্বল্পতায় পাটজাগে ভোগান্তি

ছবি

দুর্গাপুরে ভাঙা সেতু দিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ পারাপার

ছবি

কক্সবাজারে ট্রেন দুর্ঘটনায় প্রাণহানি, বিক্ষুব্ধ জনতার রেল অবরোধে সৈকত এক্সপ্রেস আটকে

সোনাইমুড়ীতে ছাত্রলীগ, আ’লীগ নেতা গ্রেপ্তার

ছবি

সৈয়দপুর পৌরসভা উন্নয়নের ১৬ কোটি টাকার প্রকল্প, বাড়বে নাগরিক সুবিধা

সৈয়দপুরে ইয়াসিন হত্যার বিচারের দাবিতে সড়ক অবরোধ

ছবি

জালিয়াতির অভিযোগে জামায়াত আমিরের পদ ছাড়লেন হাছেন আলী

মতলব উত্তরে মাদকসহ ৬ যুবক আটক

লোহাগড়ায় শিক্ষার্থীদের দুর্নীতিবিরোধী সমাবেশ

ছবি

মাদারীপুরে আড়িয়ালখাঁ নদ সমীক্ষা প্রকল্প কাজ আটকে আছে ৪ বছর

ছবি

চুয়াডাঙ্গার রেলগেটগুলো যেন মৃত্যু ফাঁদ

পদ্মা-যমুনায় মিলছে না কাক্সিক্ষত ইলিশ পদ্মা-যমুনায় মিলছে না কাক্সিক্ষত ইলিশ

রায়পুরায় বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার

ছবি

রায়গঞ্জে চায়না দুয়ারির ফাঁদ অস্তিত্ব সংকটে দেশীয় মাছ

গোবিন্দগঞ্জে গাঁজাসহ আটক তিন

সুনামগঞ্জ সীমন্তে ভারতীয় গরু আটক

লোহাগড়ায় যুবকের রহস্যজনক মৃত্যু, পরিবারের দাবি হত্যাকাণ্ড

ছবি

শ্রাবণ মেঘে মাঠ ভরা পানি আমন চারা রোপণে ব্যস্ত কৃষক

ছবি

ভারি বর্ষণে বেতাগী বাকেরগঞ্জ মহাসড়ক বেহাল

ফের চালু হচ্ছে ঢাকা-বরিশাল ফ্লাইট

ছবি

শাপলা বিলে ঘুরতে এসে ডুবে দুই যুবকের মৃত্যু

কলকাতায় গ্রেপ্তার বাংলাদেশি মডেল

বরিশালে ডেঙ্গু আক্রান্ত ৮ হাজার, মৃত্যু ১৭ জনের

tab

সারাদেশ

দামুড়হুদায় জলাবদ্ধতায় সুইসগেট নির্মাণ বন্ধ, ফসলি জমির ক্ষতি

প্রতিনিধি, দামুড়হুদা (চুয়াডাঙ্গা)

দামুড়হুদা (চুয়াডাঙ্গা) : ভৈরব নদে পানি নিয়ন্ত্রণে সুইসগেট নির্মাণ -সংবাদ

শনিবার, ০২ আগস্ট ২০২৫

চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার সুবলপুর গ্রামের পাশ দিয়ে প্রবাহিত ভৈরব নদের পানি ধারণক্ষমতা, প্রবাহ ও নাব্যতা বৃদ্ধির মাধ্যমে শুকনা মৌসুমে সেচ সুবিধা নিশ্চিতের লক্ষ্যে একটি প্রকল্প হাতে নেয় পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়। প্রকল্পের মেয়াদ আরেক দফা বাড়িয়ে ২০২৬ সালের জুন পর্যন্ত করা হয়েছে নির্মাণাধীন অংশ ডুবে যাওয়ায় ওই কাজ আপতত বন্ধ রয়েছে।

পাউবোর সূত্রে জানা গেছে, ২০২৩ সালের ১৫ জানুয়ারি প্রকল্পটির কাজ উদ্বোধন করেন সাবেক সংসদ সদস্য আলী আজগার টগর। যদিও ২০২১-২২ অর্থবছর শুরু হওয়া কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০২২-২৩ অর্থবছরে। প্রকল্পটির প্রাক্কলিত মূল্য ধরা হয়েছিল ৩১ কোটি ১৫ লাখ ৫৪ হাজার ২৬২ দশমিক ৪৬৫ টাকা। চুক্তি মূল্য ধরা হয়েছে ২৮ কোটি ৩ লাখ ৯৮ হাজার ৮৩৬ দশমিক ২১৯ টাকা। ২০২২ সালের ২১ জুলাই কার্যাদেশ দেয়া হলেও কাজ শুরু হয় ২০২২ সালের ২৭ জুলাই। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান তমা কনস্ট্রাকশন অ্যান্ড কোম্পানি লিমিটেড ও কুষ্টিয়ার ঠিকাদার নাসির উদ্দিন মোল্লা যৌথভাবে কাজটি করছেন।

দামুড়হুদা উপজেলার সুবলপুর গ্রামে ভৈরব নদের ভেতর ২৮ কোটি টাকা ব্যয়ে ১৪ ভেন্ট বিশিষ্ট ওয়াটার রিজার্ভার নির্মাণকাজ চলমান রয়েছে। দ্বিতীয় দফায় মেয়াদ বাড়িয়ে কাজটি ২০২৫ সালের জুনে শেষ হওয়ার কথা ছিল। পরে প্রকল্পের মেয়াদ আরেক দফা বাড়িয়ে ২০২৬ সালের জুন পর্যন্ত করা হয়েছে। কবে নাগাদ শেষ হবে, তা নিশ্চিত করে জানাতে পারেনি চুয়াডাঙ্গা পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) কর্তৃপক্ষ। পানিপ্রবাহ ঠেকাতে বাঁধ দিয়ে দীর্ঘদিন কাজ করা আইনি সম্মত কিনা এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এভাবেই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজটি প্রকল্পের আওতায় দামুড়হুদা উপজেলার সুবলপুর গ্রামে নদের মাঝে ১৪ ভেন্ট বিশিষ্ট পানি নিয়ন্ত্রণ অবকাঠামো (ওয়াটার রিজার্ভার) নির্মাণ করছে। ভৈরব নদ পুনঃখনন (দ্বিতীয় পর্যায়) নামের এ প্রকল্পের কাজ শুরু ২০২২ সালে। শুরুতেই বাঁধ দিয়ে নদের পানি প্রবাহ আটকে দেয়া হয়। ২০২৩ সালে নির্মাণকাজটি শেষ হওয়ার কথা ছিল। নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ না হওয়ায় ২০২৬ সাল পর্যন্ত প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। নির্মাণাধীন অংশ ডুবে যাওয়ায় ওই কাজ আপতত বন্ধ রয়েছে। স্থানীয় কৃষকরা বলেন, ভৈরব নদে দেয়া বাঁধের কারণে পানি নিষ্কাশনের পথ বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে ফসলি জমিতে দেখা দিয়েছে জলাবদ্ধতা। পাশাপাশি বাঁধ উপচে পড়া পানিতেও তাদের ফসল ডুবে যাচ্ছে। উপজেলার সুবলপুর, পাটাচোরা, কাঞ্চনতলা, রঘুনাথপুর, ছুটিপুর ও কাজলার চর এলাকার ফসলি জমিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। ফসল রক্ষায় কয়েকটি গ্রামের কৃষক সুবলপুরে ভৈরব নদের বাঁধ কেটে দিয়ে দিয়েছে। ফলে জমি থেকে কিছুটা পানি সরে গেছে।

সুবলপুর ও আশপাশের গ্রামের কৃষকদের একাধিক অভিযোগ, নির্মাণকাজের শুরুতেই সাবেক এমপি আলী আজগার টগরের ভাই সাবেক উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলী মনছুর বাবু ও আরিফ হোসেন ভৈরব নদের মাটি কেটে ইট ভাটায় বিক্রি করে দেওয়ার ফলে নদের পাশে কৃষকের জমি ও সুবলপুর গ্রামের চলাচলের রাস্তাটি ভাঙনের কবলে পড়েছে।

গ্রামটির বাসিন্দারা বলেন, নদের মাঝে ওয়াটার রিজার্ভার নির্মাণ শুরু হওয়ার আগেই মাটি কেটে ইটভাটায় বিক্রি শুরু করেন। দুই পাড়ের মাটি না থাকলে তার ঘরবাড়ি ভাঙনের কবলে পড়বে। এত বড় একটি প্রকল্পে দুই-পাঁচজন শ্রমিক দিয়ে কাজ করানো হচ্ছে। গত চার বছর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান খেয়াল খুশি এত কাজ করে আসছে। নদে বাঁধ দেয়ার কারণে ধান ও পাট ডুবে যাচ্ছে। ফসল বাঁচাতে এলাকার চাষিরা বাঁধ কেটে দিয়েছে। কাজের ধীরগতির কারণে ফসলের ক্ষতি হচ্ছে।

চুয়াডাঙ্গার মাথাভাঙ্গা নদী বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতি অধ্যক্ষ হামিদুল হক মুন্সী বলেন, ‘ছয়-সাতটি নদ-নদীর উৎসমুখ হচ্ছে চুয়াডাঙ্গা। এখান থেকে নদ-নদীগুলো খুলনাসহ বিভিন্ন অঞ্চলে ছড়িয়ে গেছে। এমন একটি নদ ভৈরব। কিছুদিন আগে নদটি সংস্কার করা হয়েছে। কিন্তু ব্যবস্থাপনা ত্রুটির কারণে নদ থেকে যতটা সুযোগ-সুবিধা এলাকার মানুষের পাওয়ার কথা, তা পাওয়া সম্ভব হয়নি। পানিপ্রবাহ আটকে সুবলপুর পয়েন্টে অবকাঠামো নির্মাণ করা হচ্ছে। প্রকল্পটি এমন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে দেয়া হয়েছে, যাদের এ ধরনের কাজের পূর্ব অভিজ্ঞতা নেই। নদী শাসনের কোনো যন্ত্রাংশ তাদের নেই। নদের প্রবাহ আটকে যে অবকাঠামো নির্মাণ করা হচ্ছে, তা কল্যাণের চেয়ে অকল্যাণই বেশি হবে। দীর্ঘদিন বাঁধ দিয়ে পানি প্রবাহ ঠেকিয়ে রাখার ফলে নদের তলদেশে পলি জমে নাব্যতা হারাবে। ফলে নদের পানি ধারণক্ষমতা কমে যাবে। যে অর্থ ব্যয় করে নদটি খনন করা হয়েছে। সে অর্থ পানিতেই চলে যাবে। চুয়াডাঙ্গা পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফ আহমেদ বলেন, পানি নিয়ন্ত্রণ অবকাঠামো নির্মাণকাজ ৮৭ শতাংশ শেষ হয়েছে। ওই পরিমাণ কাজে ব্যয় হয়েছে ২২ কোটি ২৮ লাখ টাকার কিছু বেশি। কাজটি পুরোপুরি শেষ হলে সুবিধা-অসুবিধা বোঝা যাবে। ভৈরব নদে বাঁধ দেয়ার কারণে ফসল নষ্ট হওয়া প্রসঙ্গে বলেন, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে সেদিকে সতর্ক থাকার জন্য বলা হয়েছে।

উপজেলা অতিরিক্ত কৃষি অফিসার অভিজিত কুমার বিশ্বাস বলেন, ভৈরব নদে শুরুতেই বাঁধ দিয়ে নদের পানিপ্রবাহ আটকে দিয়ে কাজ শুরু করে। বাঁধের কারণে ও ফসলি জমি বৃষ্টির পানিতে আমন ধান ও আউষ ধান পানিতে তলিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত ও জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। বাঁধ কেটে দিলে ফসলি জমি থেকে পানি বের হয়ে যাচ্ছে। কৃষি বিভাগ বিষয়টি নজরে রেখেছে।

back to top