নিহত মাহিনের মায়ের আহাজারী - নিহত মাহিন - অভিযুক্ত সমাজপতি নাজিম
চট্টগ্রামের ফটিকছড়িতে চুরির অপবাদ দিয়ে মব সৃষ্টি করে কিশোর মাহিনকে পিটিয়ে মারার নির্দেশদাতা ছিলেন সমাজপতি নাজিম উদ্দিন- এমনটাই জানান স্থানীয়রা।
অভিযুক্ত ব্যক্তি স্থানীয় জিয়াউল হক মাইজভান্ডারী উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক।
স্থানীয়রা জানান, চোর অপবাদে কিশোর মাহিন ও তার দুই বন্ধুকে স্থানীয় কয়েকজন ব্যক্তি সেদিন ধরে এনে চেঙ্গুয়া ব্রিজের রেলিংয়ের সঙ্গে বেঁধে বেধড়ক পিটুনি দিচ্ছিল। তখন সমাজপতি নাজিম মাস্টার বাড়ি থেকে এসে তাদের জানে মেরে ফেলার নির্দেশ দেন।
হামলাকারীরা সমাজপতির এমন নির্দেশ পেয়ে অধিক বেপরোয়া হয়ে লাঠিসোঁঠা দিয়ে মাহিনের শরীরে উপর্যুপরি আঘাত করতে থাকে। মূলত এর পরই মাহিন মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে।
রোববার,(২৪ আগস্ট ২০২৫) সরেজমিন ওই এলাকা ঘুরে ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী, এলাকাবাসী ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।
সমাজপতি নাজিম উদ্দিন একজন শিক্ষক হয়ে কীভাবে একজন কিশোরকে পিটিয়ে মারার নির্দেশ দিলেন তা নিয়ে উপজেলাজুড়ে সমালোচনা ও ধিক্কারের ঝড় উঠেছে।
এ নিয়ে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা হলে তারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, শিক্ষক হিসেবে আমরা নাজিম মাস্টারকে শ্রদ্ধা করতাম। কিন্তু কিশোর মাহিনকে চুরির অপবাদ দিয়ে তিনি যেভাবে পিটিয়ে মারার নির্দেশ দিয়েছেন এরপর থেকে শ্রদ্ধাবোধ উঠে গেছে। আমরা তার গ্রেপ্তারপূর্বক শাস্তির দাবি করছি।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত সমাজপতি মাস্টার নাজিম উদ্দিনের বক্তব্য জানতে তার বাড়িতে গেলেও পাওয়া যায়নি।
এ ঘটনার পর থেকে এলাকা প্রায় পুরুষশূন্য হয়ে পড়েছে।
প্রতিনিয়ত দূর-দূরান্ত থেকে নারী-পুরুষ নিহতের পরিবারকে সমবেদনা জানাতে ছুটে এসেও ঘটনার বর্ণনা শুনে অনেকেই হতভম্ব হয়ে পড়েন।
মাহিন হত্যায় এজাহারভুক্ত পাঁচ আসামির মধ্যে দুইজনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হলেও প্রধান আসামি নাজিম মাস্টারসহ অন্য আসামিরা এখনও ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়ে গেছে।
পুলিশ বলছে, ঘটনার পর থেকে আসামিরা এলাকা ছেড়ে গা-ঢাকা দিয়েছেন। একমাত্র সন্তানকে হারিয়ে পাগলপ্রায় মাহিনের বাবা-মা। তারা ঘটনাটি পূর্বপরিকল্পিত দাবি করে হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার করে ফাঁসির দাবি জানান।
মাহিনের পিতা লোকমান জানান, ঘটনার সময় আমি ছেলেকে বাঁচাতে সমাজপতি নাজিমসহ এলাকার একাধিক মানুষের কাছে গিয়ে আকুতি জানালেও কোনো সাড়া পায়নি।
তিনি সন্তান হত্যার ন্যায়বিচার না পেলে বিচারকের সামনে বিষপানে আত্মহত্যারও হুমকি দেন।
স্থানীয়রা জানান, হামলাকারীদের যারাই নিভৃত করতে চেয়েছে তাদেরই হুমকি দিয়ে চলে যেতে বাধ্য করেছেন তারা। এ ঘটনায় আহত রাহাত তানবিরের পিতা ইউসুফ বলেন, হামলাকারীরা আমার ছেলের হাত ও পা ভেঙে দিয়েছে।
আশঙ্কাজনক অবস্থায় বর্তমানে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, জন্মের পর থেকে অভাব দেখেনি আমার ছেলে। আমরা সচ্ছল পরিবার। চুরির অপবাদ দিয়ে এ ঘটনা ছিল পূর্বপরিকল্পিত। ফটিকছড়ি থানার ওসি নূর আহমদ বলেন, গ্রেপ্তারকৃত দুই আসামি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছেন। বাকি আসামির অবস্থান নিশ্চিত করে গ্রেপ্তারে পুলিশের একাধিক টিম কাজ করছে।
উল্লেখ্য, গত শুক্রবার ভোরে মাহিন, রাহাত ও মানিক নামের তিন কিশোরকে স্থানীয় কিছু ব্যক্তি চোর অপবাদে ধরে এনে ব্রিজের সঙ্গে রশি দিয়ে বেঁধে মারধর করেন।
এতে ঘটনাস্থলে মাহিনের মৃত্যু হয়। গুরুতর আহতাবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন তার দুই বন্ধু রাহাত ও মানিক।
নিহত মাহিনের মায়ের আহাজারী - নিহত মাহিন - অভিযুক্ত সমাজপতি নাজিম
রোববার, ২৪ আগস্ট ২০২৫
চট্টগ্রামের ফটিকছড়িতে চুরির অপবাদ দিয়ে মব সৃষ্টি করে কিশোর মাহিনকে পিটিয়ে মারার নির্দেশদাতা ছিলেন সমাজপতি নাজিম উদ্দিন- এমনটাই জানান স্থানীয়রা।
অভিযুক্ত ব্যক্তি স্থানীয় জিয়াউল হক মাইজভান্ডারী উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক।
স্থানীয়রা জানান, চোর অপবাদে কিশোর মাহিন ও তার দুই বন্ধুকে স্থানীয় কয়েকজন ব্যক্তি সেদিন ধরে এনে চেঙ্গুয়া ব্রিজের রেলিংয়ের সঙ্গে বেঁধে বেধড়ক পিটুনি দিচ্ছিল। তখন সমাজপতি নাজিম মাস্টার বাড়ি থেকে এসে তাদের জানে মেরে ফেলার নির্দেশ দেন।
হামলাকারীরা সমাজপতির এমন নির্দেশ পেয়ে অধিক বেপরোয়া হয়ে লাঠিসোঁঠা দিয়ে মাহিনের শরীরে উপর্যুপরি আঘাত করতে থাকে। মূলত এর পরই মাহিন মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে।
রোববার,(২৪ আগস্ট ২০২৫) সরেজমিন ওই এলাকা ঘুরে ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী, এলাকাবাসী ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।
সমাজপতি নাজিম উদ্দিন একজন শিক্ষক হয়ে কীভাবে একজন কিশোরকে পিটিয়ে মারার নির্দেশ দিলেন তা নিয়ে উপজেলাজুড়ে সমালোচনা ও ধিক্কারের ঝড় উঠেছে।
এ নিয়ে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা হলে তারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, শিক্ষক হিসেবে আমরা নাজিম মাস্টারকে শ্রদ্ধা করতাম। কিন্তু কিশোর মাহিনকে চুরির অপবাদ দিয়ে তিনি যেভাবে পিটিয়ে মারার নির্দেশ দিয়েছেন এরপর থেকে শ্রদ্ধাবোধ উঠে গেছে। আমরা তার গ্রেপ্তারপূর্বক শাস্তির দাবি করছি।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত সমাজপতি মাস্টার নাজিম উদ্দিনের বক্তব্য জানতে তার বাড়িতে গেলেও পাওয়া যায়নি।
এ ঘটনার পর থেকে এলাকা প্রায় পুরুষশূন্য হয়ে পড়েছে।
প্রতিনিয়ত দূর-দূরান্ত থেকে নারী-পুরুষ নিহতের পরিবারকে সমবেদনা জানাতে ছুটে এসেও ঘটনার বর্ণনা শুনে অনেকেই হতভম্ব হয়ে পড়েন।
মাহিন হত্যায় এজাহারভুক্ত পাঁচ আসামির মধ্যে দুইজনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হলেও প্রধান আসামি নাজিম মাস্টারসহ অন্য আসামিরা এখনও ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়ে গেছে।
পুলিশ বলছে, ঘটনার পর থেকে আসামিরা এলাকা ছেড়ে গা-ঢাকা দিয়েছেন। একমাত্র সন্তানকে হারিয়ে পাগলপ্রায় মাহিনের বাবা-মা। তারা ঘটনাটি পূর্বপরিকল্পিত দাবি করে হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার করে ফাঁসির দাবি জানান।
মাহিনের পিতা লোকমান জানান, ঘটনার সময় আমি ছেলেকে বাঁচাতে সমাজপতি নাজিমসহ এলাকার একাধিক মানুষের কাছে গিয়ে আকুতি জানালেও কোনো সাড়া পায়নি।
তিনি সন্তান হত্যার ন্যায়বিচার না পেলে বিচারকের সামনে বিষপানে আত্মহত্যারও হুমকি দেন।
স্থানীয়রা জানান, হামলাকারীদের যারাই নিভৃত করতে চেয়েছে তাদেরই হুমকি দিয়ে চলে যেতে বাধ্য করেছেন তারা। এ ঘটনায় আহত রাহাত তানবিরের পিতা ইউসুফ বলেন, হামলাকারীরা আমার ছেলের হাত ও পা ভেঙে দিয়েছে।
আশঙ্কাজনক অবস্থায় বর্তমানে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, জন্মের পর থেকে অভাব দেখেনি আমার ছেলে। আমরা সচ্ছল পরিবার। চুরির অপবাদ দিয়ে এ ঘটনা ছিল পূর্বপরিকল্পিত। ফটিকছড়ি থানার ওসি নূর আহমদ বলেন, গ্রেপ্তারকৃত দুই আসামি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছেন। বাকি আসামির অবস্থান নিশ্চিত করে গ্রেপ্তারে পুলিশের একাধিক টিম কাজ করছে।
উল্লেখ্য, গত শুক্রবার ভোরে মাহিন, রাহাত ও মানিক নামের তিন কিশোরকে স্থানীয় কিছু ব্যক্তি চোর অপবাদে ধরে এনে ব্রিজের সঙ্গে রশি দিয়ে বেঁধে মারধর করেন।
এতে ঘটনাস্থলে মাহিনের মৃত্যু হয়। গুরুতর আহতাবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন তার দুই বন্ধু রাহাত ও মানিক।