১১ জন দুই চোখ চিরতরে হারিয়েছেন, ২৮ জন দুই চোখের দৃষ্টি স্বল্পতায় ভুগছেন, আর ৪৭ জন এক চোখে দৃষ্টিস্বল্পতায় ভুগছেন
ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
জুলাই গণঅভ্যুত্থানে অংশ নিয়ে আহতদের মধ্যে যারা রাজধানীর জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে চিকিৎসা নেয়া ৪৯৩ জন একটি চোখ চিরতরে হারিয়েছেন, ১১ জন দুই চোখ চিরতরে হারিয়েছেন, ২৮ জন দুই চোখের দৃষ্টি স্বল্পতায় ভুগছেন, আর ৪৭ জন এক চোখে দৃষ্টিস্বল্পতায় ভুগছেন।
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাক্ষ্য দেয়ার সময় ট্রাইব্যুনালে জবানবন্দীতে এসব কথা বলেন ওই হাসপাতালের রেটিনা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. জাকিয়া সুলতানা নীলা।
সোমবার,(২৫ আগস্ট ২০২৫) বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়। মামলায় শেখ হাসিনা ছাড়া এ মামলার অন্য দুই আসামি হলেন- সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন। এ মামলায় শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামাল পলাতক। আর পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন এই মামলায় রাজসাক্ষী হয়েছেন।
শুনানির সময় ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত ছিলেন- চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন। সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে সাক্ষীদের জেরা করেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী আমির হোসেন। ডা. জাকিয়া সুলতানা নীলা জবানবন্দীতে দাবি করেন, গত বছর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ১৭ জুলাই থেকে আমাদের হাসপাতালে রোগী আসা শুরু হয়। ওই দিন আমরা পিলেটবিদ্ধ পাঁচজন রোগী পেয়েছিলাম। ১৮ জুলাই ছিল একটি রক্তস্নাত দিন। ওই দিন দুপুরের দিকে আমার কাছে খবর আসে হাসপাতালে অনেক আহত রোগী এসেছে। ওই দিন প্রায় একশ’ রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়। এর বাইরে আনুমানিক আরও একশ’ রোগীকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়। পরে আমি জরুরি বিভাগে এসে একটি ভয়াবহ চিত্র দেখতে পাই।
তিনি বলেন, ‘যারা হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে এসেছিল তাদের বয়স ১৪-২৫ এর মধ্যে। তাদের কেউ কেউ এক হাত দিয়ে এক চোখ, দুই হাত দিয়ে দুই চোখ ধরে ছিল। ওই দিন রাত ৯টায় আমরা দশটা টেবিলে অপারেশন করতে থাকি। ১৯ জুলাই প্রায় একই চিত্র দেখতে পাই। ওই দিন সকাল ৮টা থেকে রাত ১০ পর্যন্ত দশটা টেবিলে অস্ত্রোপচার চলতে থাকে।’ ‘আমাদের হাসপাতালে যারা চিকিৎসার জন্য এসেছিলেন তাদের অধিকাংশ পিলেট ও বুলেট দ্বারা আহত হন। অধিকাংশ রোগীর কর্নিয়া ছিদ্র হয়ে গেছে, তাদের চোখের ভেতরের সাদা অংশ ছিদ্র হয়ে গেছে, অনেকের চোখ ফেটে গিয়েছিল। চোখের রেটিনায় আঘাত প্রাপ্ত হওয়ায় রক্তক্ষরণ হচ্ছিল। ৪, ৫ ও ৬ আগস্ট আমরা অসংখ্য রোগী গ্রহণ করি, তাদের চোখে অপারেশন করা হয়’, বলেন তিনি। ডা. জাকিয়া সুলতানা নীলা বলেন, ‘ওই সময় রোগীরা ভীত সন্ত্রস্ত ছিল। নিরাপত্তার কারণে অনেক রোগী তাদের নাম ঠিকানা গোপন করে ছদ্মনাম দিয়েছে। মোবাইল নম্বর ভুল দিয়েছে, তাদের পরিচয় ভুল দিয়েছে।’
১১ জন দুই চোখ চিরতরে হারিয়েছেন, ২৮ জন দুই চোখের দৃষ্টি স্বল্পতায় ভুগছেন, আর ৪৭ জন এক চোখে দৃষ্টিস্বল্পতায় ভুগছেন
ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
সোমবার, ২৫ আগস্ট ২০২৫
জুলাই গণঅভ্যুত্থানে অংশ নিয়ে আহতদের মধ্যে যারা রাজধানীর জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে চিকিৎসা নেয়া ৪৯৩ জন একটি চোখ চিরতরে হারিয়েছেন, ১১ জন দুই চোখ চিরতরে হারিয়েছেন, ২৮ জন দুই চোখের দৃষ্টি স্বল্পতায় ভুগছেন, আর ৪৭ জন এক চোখে দৃষ্টিস্বল্পতায় ভুগছেন।
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাক্ষ্য দেয়ার সময় ট্রাইব্যুনালে জবানবন্দীতে এসব কথা বলেন ওই হাসপাতালের রেটিনা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. জাকিয়া সুলতানা নীলা।
সোমবার,(২৫ আগস্ট ২০২৫) বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়। মামলায় শেখ হাসিনা ছাড়া এ মামলার অন্য দুই আসামি হলেন- সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন। এ মামলায় শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামাল পলাতক। আর পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন এই মামলায় রাজসাক্ষী হয়েছেন।
শুনানির সময় ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত ছিলেন- চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন। সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে সাক্ষীদের জেরা করেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী আমির হোসেন। ডা. জাকিয়া সুলতানা নীলা জবানবন্দীতে দাবি করেন, গত বছর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ১৭ জুলাই থেকে আমাদের হাসপাতালে রোগী আসা শুরু হয়। ওই দিন আমরা পিলেটবিদ্ধ পাঁচজন রোগী পেয়েছিলাম। ১৮ জুলাই ছিল একটি রক্তস্নাত দিন। ওই দিন দুপুরের দিকে আমার কাছে খবর আসে হাসপাতালে অনেক আহত রোগী এসেছে। ওই দিন প্রায় একশ’ রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়। এর বাইরে আনুমানিক আরও একশ’ রোগীকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়। পরে আমি জরুরি বিভাগে এসে একটি ভয়াবহ চিত্র দেখতে পাই।
তিনি বলেন, ‘যারা হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে এসেছিল তাদের বয়স ১৪-২৫ এর মধ্যে। তাদের কেউ কেউ এক হাত দিয়ে এক চোখ, দুই হাত দিয়ে দুই চোখ ধরে ছিল। ওই দিন রাত ৯টায় আমরা দশটা টেবিলে অপারেশন করতে থাকি। ১৯ জুলাই প্রায় একই চিত্র দেখতে পাই। ওই দিন সকাল ৮টা থেকে রাত ১০ পর্যন্ত দশটা টেবিলে অস্ত্রোপচার চলতে থাকে।’ ‘আমাদের হাসপাতালে যারা চিকিৎসার জন্য এসেছিলেন তাদের অধিকাংশ পিলেট ও বুলেট দ্বারা আহত হন। অধিকাংশ রোগীর কর্নিয়া ছিদ্র হয়ে গেছে, তাদের চোখের ভেতরের সাদা অংশ ছিদ্র হয়ে গেছে, অনেকের চোখ ফেটে গিয়েছিল। চোখের রেটিনায় আঘাত প্রাপ্ত হওয়ায় রক্তক্ষরণ হচ্ছিল। ৪, ৫ ও ৬ আগস্ট আমরা অসংখ্য রোগী গ্রহণ করি, তাদের চোখে অপারেশন করা হয়’, বলেন তিনি। ডা. জাকিয়া সুলতানা নীলা বলেন, ‘ওই সময় রোগীরা ভীত সন্ত্রস্ত ছিল। নিরাপত্তার কারণে অনেক রোগী তাদের নাম ঠিকানা গোপন করে ছদ্মনাম দিয়েছে। মোবাইল নম্বর ভুল দিয়েছে, তাদের পরিচয় ভুল দিয়েছে।’