বিচার কাজে অচলাবস্থা
ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
রংপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনাল ১ এর আদালতে ৪দিন ধরে অনুপস্থিত বিশেষ পিপি ও জাতীয়তাবাদি আইনজীবী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক শফি কামাল । ফলে ওই আদালতে বিচার কাজে অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এতে বিচারপ্রার্থী ও আইনজীবীদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
তবে এ ব্যাপারে তিনি বলেছেন, অভিমান করে যাচ্ছেননা। রংপুর নারী শিশু নির্যাতন দমন আদালত ১ এর বিচারপ্রার্থী ও আইনজীবীরা জানিয়েছেন ওই আদালতের বিচারক হচ্ছেন হেলাল উদ্দিন। তিনি বিচারক হিসেবে যোগদান করার পর থেকে ওই আদালতে ১৫ থেকে ২০ বছরেরও বেশী দিন ধরে বিচার না হওয়া অনেক মামলা পড়ে আছে। মামলার বাদী ও আসামীরা দিনের পর দিন বছরের পর বছর ধরে আদালতে আসছেন আর ফিরে যাচ্ছেন। বিচারক পুরাতন ঝুলে থাকা মামলাগুলো নিস্পত্তির পদক্ষেপ নিচ্ছেন।
আইনজীবী সালেকুর রহমান অভিযোগ করেন, ২০০৬ সালের একটি নারী নির্যাতন মামলার তার মক্কেল দীর্ঘ ১৯ বছর ধরে আদালতে আসছেন । বিচার হচ্ছেনা। আসামীরা অত্যান্ত গরীব তাদের বিরুদ্ধে যে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা হয়েছে। সেখানে ডাক্তারের সার্টিফিকেটেও ধর্ষণের আলামত পাওয়া যায়নি। এর আগে সাক্ষীরা আসলেও রাষ্ট্রপক্ষের অসহযোগীতার জন্য সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়নি। কয়েকদিন আগে বাদী পক্ষে বেশ কয়েকজন সাক্ষী এসেছেন আদালতে সাক্ষ্য দিতে। সাক্ষীরা রংপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালতের বিশেষ পিপি শফি কামালের সাথে দেখা করে তাদের সাক্ষ্য দেবার ব্যাবস্থা করার অনুরোধ জানান। কিন্তু পিপি শফি কামাল সাক্ষীদের হাজিরা আদালতে দাখিল করেননি। মামলার শুনানী শুরু হলে আমি আসামী পক্ষের আইনজীবী হিসেবে মামলায় কয়েকজন সাক্ষী এসেছে বলে বিচারককে অবহিত করেন। এ সময় বিচারক হেলাল উদ্দিন পিপিকে সাক্ষীদের হাজিরা দিতে বলেন । এক ঘন্টা অপেক্ষা করেও সাক্ষীদের হাজিরা পিপি না দেয়ায় আদালত সাক্ষীদেরকেই হাজিরা দেবার আদেশ দেন। এরপর সাক্ষীরা আদালতে নিজেরাই হাজিরা দিলে তাদের সাক্ষ্য গ্রহণ করে আদালত।
এ ঘটনা জানতে পেরে বিশেষ পিপি শফি কামাল সাক্ষীদের হাজিরা না দেবার পরেও সাক্ষীদের কাছ থেকে হাজিরা নিয়ে সাক্ষ্য কেন গ্রহণ করা হলো এতে চরম ভাবে ক্ষুব্ধ হন। এরপর সোমবার থেকে বৃহস্পতিবার পর পর ৪ দিন ওই আদালতে তিনি আসেননা । তার এই অঘোষিত আদালত বর্জনের কারণে মামলার বিচারপ্রার্থী ও বাদী ও আসামীরা বিপাকে পড়ে যান। আদালতে বিচার কাজ বন্ধ হবার উপক্রম হয়। এ ঘটনায় বিচারক নিজে পিপি না আসায় বাদী ও সাক্ষীদের বক্তব্য এবং আসামী পক্ষের আইনজীবীর বক্তব্য শুনে বিচার কার্য অব্যাহত রেখেছেন। বিষয়টি জানাজানি হলে আদালত পাড়ায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়।
এ ব্যাপারে আসামী পক্ষের আইনজীবী সালেকুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন আওয়ামী সরকারের সময়ের মতো এখনো আগের কায়দায় সাক্ষী আসলেও ম্যানেজ না করলে সাক্ষ্য নেয়া হয়না। যেহেতু ১৯ বছরের পুরাতন মামলা বিষয়টি আদালতকে অবহিত করলে বিচারক আমার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সাক্ষ্য গ্রহণ করার আদেশ দেন। পিপির দায়িত্ব আদালতকে সহায়তা করা ন্যায় বিচার নিশ্চিত করা কিন্তু সাক্ষী আসার পরেও তাদের হাজিরা প্রদান না করা ন্যায় বিচারের পরিপন্থি।
সার্বিক ব্যাপারে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালত ১ এর বিশেষ পিপি ও জাতীয়তাবাদি আইনজিবী ফোরামের সাধারন সম্পাদক শফি কামাল এ্যাডভোকেটের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ প্রতিনিধিকে বলেন নিয়ম অনুযায়ী কোন মামলায় সাক্ষী আসলে পিপি হিসেবে তাকেই সাক্ষীর হাজিরা দিতে হয় তার দেয়া হাজিরা ছাড়া কারও সাক্ষ্য নেয়া ঠিক না। কিন্তু বিচারক তাকে না জানিয়ে সাক্ষীদের নিজেদেরকে হাজিরা নিয়ে সাক্ষ্য নেয়ায় তিনি ক্ষুব্ধ হন। এ কারনে অভিমান করে কয়েকদিন আদালতে যান নাই বলে স্বীকার করেন। রংপুর আইনজীবী সমিতির সভাপতি শাহেদ ইবনে খতিব কামাল এ্যাডভোকেটের সাথে যোগাযোগ করা হলে এ ধরনের কথা শুনছেন বিষয়টি তিনি খতিয়ে দেখবেন।
বিচার কাজে অচলাবস্থা
ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
শনিবার, ৩০ আগস্ট ২০২৫
রংপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনাল ১ এর আদালতে ৪দিন ধরে অনুপস্থিত বিশেষ পিপি ও জাতীয়তাবাদি আইনজীবী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক শফি কামাল । ফলে ওই আদালতে বিচার কাজে অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এতে বিচারপ্রার্থী ও আইনজীবীদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
তবে এ ব্যাপারে তিনি বলেছেন, অভিমান করে যাচ্ছেননা। রংপুর নারী শিশু নির্যাতন দমন আদালত ১ এর বিচারপ্রার্থী ও আইনজীবীরা জানিয়েছেন ওই আদালতের বিচারক হচ্ছেন হেলাল উদ্দিন। তিনি বিচারক হিসেবে যোগদান করার পর থেকে ওই আদালতে ১৫ থেকে ২০ বছরেরও বেশী দিন ধরে বিচার না হওয়া অনেক মামলা পড়ে আছে। মামলার বাদী ও আসামীরা দিনের পর দিন বছরের পর বছর ধরে আদালতে আসছেন আর ফিরে যাচ্ছেন। বিচারক পুরাতন ঝুলে থাকা মামলাগুলো নিস্পত্তির পদক্ষেপ নিচ্ছেন।
আইনজীবী সালেকুর রহমান অভিযোগ করেন, ২০০৬ সালের একটি নারী নির্যাতন মামলার তার মক্কেল দীর্ঘ ১৯ বছর ধরে আদালতে আসছেন । বিচার হচ্ছেনা। আসামীরা অত্যান্ত গরীব তাদের বিরুদ্ধে যে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা হয়েছে। সেখানে ডাক্তারের সার্টিফিকেটেও ধর্ষণের আলামত পাওয়া যায়নি। এর আগে সাক্ষীরা আসলেও রাষ্ট্রপক্ষের অসহযোগীতার জন্য সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়নি। কয়েকদিন আগে বাদী পক্ষে বেশ কয়েকজন সাক্ষী এসেছেন আদালতে সাক্ষ্য দিতে। সাক্ষীরা রংপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালতের বিশেষ পিপি শফি কামালের সাথে দেখা করে তাদের সাক্ষ্য দেবার ব্যাবস্থা করার অনুরোধ জানান। কিন্তু পিপি শফি কামাল সাক্ষীদের হাজিরা আদালতে দাখিল করেননি। মামলার শুনানী শুরু হলে আমি আসামী পক্ষের আইনজীবী হিসেবে মামলায় কয়েকজন সাক্ষী এসেছে বলে বিচারককে অবহিত করেন। এ সময় বিচারক হেলাল উদ্দিন পিপিকে সাক্ষীদের হাজিরা দিতে বলেন । এক ঘন্টা অপেক্ষা করেও সাক্ষীদের হাজিরা পিপি না দেয়ায় আদালত সাক্ষীদেরকেই হাজিরা দেবার আদেশ দেন। এরপর সাক্ষীরা আদালতে নিজেরাই হাজিরা দিলে তাদের সাক্ষ্য গ্রহণ করে আদালত।
এ ঘটনা জানতে পেরে বিশেষ পিপি শফি কামাল সাক্ষীদের হাজিরা না দেবার পরেও সাক্ষীদের কাছ থেকে হাজিরা নিয়ে সাক্ষ্য কেন গ্রহণ করা হলো এতে চরম ভাবে ক্ষুব্ধ হন। এরপর সোমবার থেকে বৃহস্পতিবার পর পর ৪ দিন ওই আদালতে তিনি আসেননা । তার এই অঘোষিত আদালত বর্জনের কারণে মামলার বিচারপ্রার্থী ও বাদী ও আসামীরা বিপাকে পড়ে যান। আদালতে বিচার কাজ বন্ধ হবার উপক্রম হয়। এ ঘটনায় বিচারক নিজে পিপি না আসায় বাদী ও সাক্ষীদের বক্তব্য এবং আসামী পক্ষের আইনজীবীর বক্তব্য শুনে বিচার কার্য অব্যাহত রেখেছেন। বিষয়টি জানাজানি হলে আদালত পাড়ায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়।
এ ব্যাপারে আসামী পক্ষের আইনজীবী সালেকুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন আওয়ামী সরকারের সময়ের মতো এখনো আগের কায়দায় সাক্ষী আসলেও ম্যানেজ না করলে সাক্ষ্য নেয়া হয়না। যেহেতু ১৯ বছরের পুরাতন মামলা বিষয়টি আদালতকে অবহিত করলে বিচারক আমার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সাক্ষ্য গ্রহণ করার আদেশ দেন। পিপির দায়িত্ব আদালতকে সহায়তা করা ন্যায় বিচার নিশ্চিত করা কিন্তু সাক্ষী আসার পরেও তাদের হাজিরা প্রদান না করা ন্যায় বিচারের পরিপন্থি।
সার্বিক ব্যাপারে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালত ১ এর বিশেষ পিপি ও জাতীয়তাবাদি আইনজিবী ফোরামের সাধারন সম্পাদক শফি কামাল এ্যাডভোকেটের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ প্রতিনিধিকে বলেন নিয়ম অনুযায়ী কোন মামলায় সাক্ষী আসলে পিপি হিসেবে তাকেই সাক্ষীর হাজিরা দিতে হয় তার দেয়া হাজিরা ছাড়া কারও সাক্ষ্য নেয়া ঠিক না। কিন্তু বিচারক তাকে না জানিয়ে সাক্ষীদের নিজেদেরকে হাজিরা নিয়ে সাক্ষ্য নেয়ায় তিনি ক্ষুব্ধ হন। এ কারনে অভিমান করে কয়েকদিন আদালতে যান নাই বলে স্বীকার করেন। রংপুর আইনজীবী সমিতির সভাপতি শাহেদ ইবনে খতিব কামাল এ্যাডভোকেটের সাথে যোগাযোগ করা হলে এ ধরনের কথা শুনছেন বিষয়টি তিনি খতিয়ে দেখবেন।