দেশে বাড়ছে করোনায় মৃত্যু ও সংক্রমণের সংখ্যা। এমন সময়ে বিধিনিষেধকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে ময়মনসিংহের নান্দাইল আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) নান্দইল উপজেলা চেয়ারম্যানসহ অনুগত দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে হাওর ভ্রমণে বেড়িয়েছেন। শুধু ভ্রমণে বেড়িয়েই ক্ষান্ত হননি, নিজের ফেসবুক আইডিতে এই ভ্রমণের ছবি পোস্ট দিয়ে সবাইকে জানিয়েছেনও ময়মনসিংহ-৯ (নান্দাইল) আসনের এমপি আনোয়ারুল আবেদীন খান তুহিন।
গেল শনিবার (২৪ জুলাই) ফেসবুকে ব্যক্তিগত আইডি থেকে মাইক্রোবাসে করে কিশোরগঞ্জের নিকলী হাওর ভ্রমণের তিনটি ছবি পোস্ট করেন এমপি তুহিন। যেখানে এমপি ছাড়া আর কারো মুখেই মাস্ক নেই।
সেই পোস্টের ক্যাপশনে সংসদ সদস্য তুহিন লিখেছেন, ‘আমাদের জীবনে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে আনন্দ ভ্রমণ অনেক কষ্টসাধ্য ও সময় সাপেক্ষ, তাই বাড়ির কাছে কিশোরগঞ্জের বিশাল জলরাশি উপভোগ করতে যাচ্ছি, সঙ্গে আমার পরিবার, উপজেলা চেয়ারম্যান ও তার পরিবার, যুবনেতা সোহেল, ছাত্রনেতা ফয়সাল, সালাম, রয়েল, রাজু, সাইমুন ও বিডিআর রুহুল।’
ওই পোস্টে রবিবার (২৫ জুলাই) মধ্যরাত পর্যন্ত দুই হাজারেরও বেশি রিয়েক্ট পড়ে। সমালোচনা ও শুভ কামনা জানিয়ে মন্তব্য করেছেন তিন শতাধিক ফেসবুক ব্যবহারকারী।তারমধ্যে বিরূপ মন্তব্যকারীর সংখ্যাই বেশি। অনেকেই এ ঘটনাকে কাণ্ডজ্ঞানহীন কর্ম বলেও মন্তব্য করেছেন অনেকেই।
মাহমুদুল হাসান মিশাদ নামে একজন লিখেছেন, ‘লকডাউন এবং সরকারের বিধিনিষেধ অমান্য করার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত আপনি। আপনি জনপ্রতিনিধি হয়ে যদি এমন আইন ও নিয়ম ভাঙেন, তাহলে আমরা যারা সাধারণ জনগণ তারা তো সরকারের এমন আইন ও নিয়ম কানুন না মানাটাই স্বাভাবিক।’
সজীব উর রহমান নামে আরেকজন লিখেছেন, ‘সারাদেশে ১৪ দিনের কঠোর লকডাউন দিয়েছে সরকার। এই সময় দেশের জনগণকে সচেতন করে ঘরে রাখা প্রত্যেকটা জনপ্রতিনিধির দায়িত্ব। দায়িত্বশীল যায়গায় থেকে লকডাউন পালন না করে এভাবে দল বেধে ঘুরতে যাওয়াটা খুবই দৃষ্টিকটু দেখায়। আপনার সংসদীয় আসনের সর্বস্তরের জনগণ আপনাকে ফলো করে যদি রাস্তায় বের হয়ে আসে, তাহলে তো লকডাউনের ১২টা বাজবে!’
ব্যঙ্গ করে ফারহানা নাসিম নামে আরেক ফেসবুক ব্যবহারকারী লিখেছেন, ‘বাহ্! আপনি নিজেই লকডাউন ভাঙছেন? চমৎকার। দলে দেখি সরকার দলীয় নেতাও আছে। সবাইকে এই লকডাউন ভাঙা উৎসবে সামিল হতে দেখে খুবই আনন্দিত হলাম। বেশি করে কোভিড আক্রান্ত হন, পারিবারিক সম্পত্তির ওপর চাপ কমান।’
শাহাদাত শিকদার লাবু নামে আরেকজন উপহাস করে লিখেছেন, ‘এমপি সাহেব, লকডাউনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখাতে পারার জন্য ধন্যবাদ। করোনার কারণে ভীতু ও ক্ষুধার্ত মানুষকে হতাশামুক্ত করার জন্য এমন বিনোদন খুবই প্রশংসনীয়। আপনার মত সাহসী ও জ্ঞানী এমপি/নেতা আছে বলে আওয়ামী লীগ টিকে আছে।’ এ ধরনের অনেক মন্তব্যই করেছেন ফেইসবুক ব্যাবহারকারীরা। সামজিক যোগাযোগমাধ্যম ছাড়াও সাধারণ মানুষ ও জেলা সদরের দলীয় নেতাকর্মীরাও এ ব্যাপারে প্রতিক্রিয়া জানিযেছেন সাংবাদিকদের সাথে।
ময়মনসিংহের মানবাধিকার কর্মী জনউদ্যোগের আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট নজরুল ইসলাম চুন্নু বলেন, সরকার যেখানে করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে কঠোর লকডাউনের ঘোষণা দিয়ে প্রজ্ঞাপণ জারি করে জেল জরিমানা চালিযে যাচ্ছেন। সেখানে একজন আইন প্রণেতার কাছে এ ধরনের কাণ্ডজ্ঞানহীন কর্ম আশা করা যায় না। যেখানে একজন জনপ্রতিনিধি লকডাউনে কর্মহীন অসহায় মানুষকে সহায়তা দান করার কথা। সেসময় তিনি তার দলীয় নেতা কর্মীদেও নিয়ে হাউর ভ্রমণে যাওয়ার মতো দায়িত্বহীনতার পরিচয় দিয়েছেন। এটা সাধারণ মানুষ মোটেও ভালোভাবে গ্রহণ করবে না, এটাই স্বাভাবিক।
এ বিষয়ে জানতে সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আবেদীন খান তুহিনের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে ক্ষুব্দ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেন, আমি একটি রোগী দেখতে গিয়েছিলাম। আর আপনারা এটিকে রং লাগিয়ে বড় একটা নিউজ করেছেন। এ নিউজের জন্যে আমার ফাঁসি হবে না। আমি এলাকায় ভাল কাজ করছি সেটা নিউজ হয় না।
বৃহস্পতিবার, ২৯ জুলাই ২০২১
দেশে বাড়ছে করোনায় মৃত্যু ও সংক্রমণের সংখ্যা। এমন সময়ে বিধিনিষেধকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে ময়মনসিংহের নান্দাইল আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) নান্দইল উপজেলা চেয়ারম্যানসহ অনুগত দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে হাওর ভ্রমণে বেড়িয়েছেন। শুধু ভ্রমণে বেড়িয়েই ক্ষান্ত হননি, নিজের ফেসবুক আইডিতে এই ভ্রমণের ছবি পোস্ট দিয়ে সবাইকে জানিয়েছেনও ময়মনসিংহ-৯ (নান্দাইল) আসনের এমপি আনোয়ারুল আবেদীন খান তুহিন।
গেল শনিবার (২৪ জুলাই) ফেসবুকে ব্যক্তিগত আইডি থেকে মাইক্রোবাসে করে কিশোরগঞ্জের নিকলী হাওর ভ্রমণের তিনটি ছবি পোস্ট করেন এমপি তুহিন। যেখানে এমপি ছাড়া আর কারো মুখেই মাস্ক নেই।
সেই পোস্টের ক্যাপশনে সংসদ সদস্য তুহিন লিখেছেন, ‘আমাদের জীবনে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে আনন্দ ভ্রমণ অনেক কষ্টসাধ্য ও সময় সাপেক্ষ, তাই বাড়ির কাছে কিশোরগঞ্জের বিশাল জলরাশি উপভোগ করতে যাচ্ছি, সঙ্গে আমার পরিবার, উপজেলা চেয়ারম্যান ও তার পরিবার, যুবনেতা সোহেল, ছাত্রনেতা ফয়সাল, সালাম, রয়েল, রাজু, সাইমুন ও বিডিআর রুহুল।’
ওই পোস্টে রবিবার (২৫ জুলাই) মধ্যরাত পর্যন্ত দুই হাজারেরও বেশি রিয়েক্ট পড়ে। সমালোচনা ও শুভ কামনা জানিয়ে মন্তব্য করেছেন তিন শতাধিক ফেসবুক ব্যবহারকারী।তারমধ্যে বিরূপ মন্তব্যকারীর সংখ্যাই বেশি। অনেকেই এ ঘটনাকে কাণ্ডজ্ঞানহীন কর্ম বলেও মন্তব্য করেছেন অনেকেই।
মাহমুদুল হাসান মিশাদ নামে একজন লিখেছেন, ‘লকডাউন এবং সরকারের বিধিনিষেধ অমান্য করার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত আপনি। আপনি জনপ্রতিনিধি হয়ে যদি এমন আইন ও নিয়ম ভাঙেন, তাহলে আমরা যারা সাধারণ জনগণ তারা তো সরকারের এমন আইন ও নিয়ম কানুন না মানাটাই স্বাভাবিক।’
সজীব উর রহমান নামে আরেকজন লিখেছেন, ‘সারাদেশে ১৪ দিনের কঠোর লকডাউন দিয়েছে সরকার। এই সময় দেশের জনগণকে সচেতন করে ঘরে রাখা প্রত্যেকটা জনপ্রতিনিধির দায়িত্ব। দায়িত্বশীল যায়গায় থেকে লকডাউন পালন না করে এভাবে দল বেধে ঘুরতে যাওয়াটা খুবই দৃষ্টিকটু দেখায়। আপনার সংসদীয় আসনের সর্বস্তরের জনগণ আপনাকে ফলো করে যদি রাস্তায় বের হয়ে আসে, তাহলে তো লকডাউনের ১২টা বাজবে!’
ব্যঙ্গ করে ফারহানা নাসিম নামে আরেক ফেসবুক ব্যবহারকারী লিখেছেন, ‘বাহ্! আপনি নিজেই লকডাউন ভাঙছেন? চমৎকার। দলে দেখি সরকার দলীয় নেতাও আছে। সবাইকে এই লকডাউন ভাঙা উৎসবে সামিল হতে দেখে খুবই আনন্দিত হলাম। বেশি করে কোভিড আক্রান্ত হন, পারিবারিক সম্পত্তির ওপর চাপ কমান।’
শাহাদাত শিকদার লাবু নামে আরেকজন উপহাস করে লিখেছেন, ‘এমপি সাহেব, লকডাউনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখাতে পারার জন্য ধন্যবাদ। করোনার কারণে ভীতু ও ক্ষুধার্ত মানুষকে হতাশামুক্ত করার জন্য এমন বিনোদন খুবই প্রশংসনীয়। আপনার মত সাহসী ও জ্ঞানী এমপি/নেতা আছে বলে আওয়ামী লীগ টিকে আছে।’ এ ধরনের অনেক মন্তব্যই করেছেন ফেইসবুক ব্যাবহারকারীরা। সামজিক যোগাযোগমাধ্যম ছাড়াও সাধারণ মানুষ ও জেলা সদরের দলীয় নেতাকর্মীরাও এ ব্যাপারে প্রতিক্রিয়া জানিযেছেন সাংবাদিকদের সাথে।
ময়মনসিংহের মানবাধিকার কর্মী জনউদ্যোগের আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট নজরুল ইসলাম চুন্নু বলেন, সরকার যেখানে করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে কঠোর লকডাউনের ঘোষণা দিয়ে প্রজ্ঞাপণ জারি করে জেল জরিমানা চালিযে যাচ্ছেন। সেখানে একজন আইন প্রণেতার কাছে এ ধরনের কাণ্ডজ্ঞানহীন কর্ম আশা করা যায় না। যেখানে একজন জনপ্রতিনিধি লকডাউনে কর্মহীন অসহায় মানুষকে সহায়তা দান করার কথা। সেসময় তিনি তার দলীয় নেতা কর্মীদেও নিয়ে হাউর ভ্রমণে যাওয়ার মতো দায়িত্বহীনতার পরিচয় দিয়েছেন। এটা সাধারণ মানুষ মোটেও ভালোভাবে গ্রহণ করবে না, এটাই স্বাভাবিক।
এ বিষয়ে জানতে সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আবেদীন খান তুহিনের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে ক্ষুব্দ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেন, আমি একটি রোগী দেখতে গিয়েছিলাম। আর আপনারা এটিকে রং লাগিয়ে বড় একটা নিউজ করেছেন। এ নিউজের জন্যে আমার ফাঁসি হবে না। আমি এলাকায় ভাল কাজ করছি সেটা নিউজ হয় না।