alt

চিঠিপত্র

ছাগলে চাটে বাঘের গাল

: শনিবার, ০৪ জানুয়ারী ২০২৫

মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নন

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি সচিত্র সংবাদ বিবৃতি নজরে পড়লো। সংবাদটি অবশ্যই স্পর্শকাতর বলা যায়। কারণ বিবৃতিদাতা এক ধাক্কায় ইতিহাস পাল্টে দিতে চাইছেন। এমন ঘটনা বাংলাদেশে এর আগে কেউ করে দেখানোর হিম্মত রাখেননি। এ অবস্থায় অতি কষ্টের বাংলা প্রবাদ ‘দেশে এলো কলিকাল, ছাগলে চাটে বাঘের গাল’ বড় বেশি মনে পড়ছে।

জামায়াতের আমিরে আজম ঘোষণা করেছেন, ‘দেশে পরীক্ষিত দেশপ্রেমিক শক্তি দু’টি; একটি সেনাবাহিনী, আরেকটি জামায়াত।’ দুর্ভাগ্য যে, এমন ধৃষ্টতার পর কেউ টুঁ শব্দও করছেন না; যা এই বিজয়ের মাস ডিসেম্বরে খুবই বিস্ময়কর বলা যায়।

সে যাই হোক, বাংলাদেশ সেনাবহিনী তথা সশস্ত্র বাহিনীর উদ্ভব হয়েছিল একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের রণাঙ্গণে; দখলদার পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বিরূদ্ধে লড়াই করে মাতৃভূমির স্বাধীনতা অর্থাৎ বাংলাদেশ নামে নতুন জাতিরাষ্ট্রের জন্ম দিতে। মুক্তিযুদ্ধকালে এই বাহিনীর সম্মিলিত নাম ছিল মুক্তিবাহিনী; যা বাংলাদেশের প্রবাসী সরকারের নিয়ন্ত্রণে সার্থকভাবে জাতীয় সেনাবাহিনীর ভূমিকা পালন করেছিল।

মুক্তিযুদ্ধের পর গণসমাজের কাতার থেকে উঠে আসা মুক্তিবাহিনীর সুবৃহৎ অংশ বেসামরিক মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে যা কিছুই করা হয়ে থাকুক না কেন, তারা সবাই ছিলেন মুক্তিযুদ্ধকালীন জাতীয় সেনাবাহনীর অংশীজন। এই সত্য অস্বীকার করা যাবে না। ওই বাহিনীর প্রতিটি সদস্য দেশপ্রেমের চূড়ান্ত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছিলেন বলে গোটা বাহিনীই দেশপ্রেমিক। এর ধারেকাছে আর কারও উপস্থিতি নেই।

পক্ষান্তরে একাত্তরে সংগঠন হিসেবে জামায়াতে ইসলামী ছিল মুক্তিযুদ্ধের ঘোর বিরোধী, দখলদার পাকিস্তান সেনাবাহিনীর এ দেশীয় সহযোগী। তারা বাংলাদেশ নামের স্বাধীন দেশ দেখতেই চায়নি। একাত্তরে জামায়াতের সদস্যরা পাকিস্তানি সেনাদের সাথে থেকে মুক্তিবাহিনীর বিরূদ্ধে যুদ্ধ করেছে, মুক্তিবাহিনীর সদস্যদের নিজেরা হত্যা করেছে, পাকিস্তানি শত্রুবাহিনীর হাতে মুক্তিসংগ্রামীদের ধরিয়ে দিয়েছে, মুক্তিকামী নিরীহ দেশবাসীর বাড়িঘর শত্রুবাহিনীকে চিনিয়ে দিয়ে লুটপাট ও আগুনে পুড়িয়ে ধ্বংস করেছে, স্নেহশীলা নিরপরাধ বাঙালি রমণীদের জোর করে পাকিস্তানি সেনাদের সামরিক হেরেমে তুলে দিয়েছে, বাছবিচারহীন গণহত্যায় আন্তরিকতার সাথে সহযোগী হয়েছে।

এখন সেই জামায়াতের আমির দাবি করছেন, ‘দেশে পরীক্ষিত দেশপ্রেমিক শক্তি দু’টি; একটি সেনাবাহিনী, আরেকটি জামায়াত।’ দুর্ভাগ্যজনকভাবে, এমন ধৃষ্টতাপূর্ণ, মিথ্যা এবং অপমানজনক উক্তির মুখে আমাদের গর্বিত সেনাবাহিনী অথবা সরকারের পক্ষ থেকে কোন প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করা হয়নি। একাত্তরের পরাজিত শক্তি স্বজাতিবিদ্বেষী অত্যাচারী জামায়াতে ইসলামী যদি এখন বাংলাদেশের গর্বিত দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনীর সমান্তরালে ‘পরীক্ষিত দেশপ্রেমিক শক্তি’ হয় তাহলে দেশপ্রেমিকের সংজ্ঞাই তো পাল্টে দিতে হবে। একাত্তরের দেশ-জাতিবিদ্বেষী জামায়াতের এই চরম ধৃষ্টতার উপযুক্ত প্রতিবিধান এখনো কেন করা হলো না?

বিগত ৫৩ বছরে এই জামায়াত সংগঠন হিসেব একাত্তরে তাদের কৃতকর্মের জন্য সামান্যতম অনুশোচনা প্রকাশ করেনি। একটি রাজনৈতিক অপশক্তি হিসেবে জামায়াত অতীতেও ভূমিকা রেখে এসেছে। যে কারণে তাদের রাজনৈতিক নিবন্ধন বাতিল হয়েছিল। দেশে চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে জামায়াত অতীতের মতোই অপশক্তির ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে চাইছে। তারই অংশ হিসেবে জামায়াত এই জাতির শেষ ভরসাস্থল দেশপ্রেমিক জাতীয় সেনাবাহিনীর কাতারে নিজেদের অবস্থান তুলে ধরতে অপচেষ্টার লিপ্ত হয়েছে।

একত্তরের চরম দুর্দিনে জাতির বিরুদ্ধে যুদ্ধে লিপ্ত হওয়া জামায়াতে ইসলামীর এই অপচেষ্টার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। দাবি জানাই, আমাদের জাতীয় সেনাবাহিনীর দেশপ্রেমিক মর্যাদা সমুন্নত রাখার বৃহত্তর স্বার্থে উল্লিখিত উক্তির জন্য জামায়াত আমিরকে অবিলম্বে ক্ষমা চাইতে বাধ্য করা হোক। সংগঠন হিসেবে জামায়াতের রাজনৈতিক নিবন্ধন স্থগিত রাখা হোক। জামায়াতের রাজনৈতিক এবং সামাজিক সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ করা হোক।

বশীর আহমেদ

মুক্তিযোদ্ধা

টিকিটের দাম আকাশচুম্বী

জকিগঞ্জে গ্রামীণ সড়কের দুরবস্থা

রেলে দুর্নীতি

নবায়নযোগ্য শক্তির বিকল্প নেই

পথশিশুদের ভয়ঙ্কর নেশাদ্রব্য থেকে রক্ষা করুন

ঢাকা-ময়মনসিংহ ননস্টপ ট্রেন ও ডাবল লাইন নির্মাণের দাবি

শিশুদের প্রতি প্রতিহিংসা বন্ধ করুন

চরবাসীর নদী পারাপারে নিরাপত্তার প্রয়োজন

জন্মনিবন্ধন সেবায় অতিরিক্ত অর্থ আদায় : ব্যবস্থা নিন

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে স্পিডব্রেকার চাই

উন্নয়নের জন্য একটি অপরিহার্য উপাদান কারিগরি শিক্ষা

পোস্তগোলায় নিম্নমানের ড্রেন নির্মাণ

দিনমজুর সংকটে কৃষি উৎপাদন ব্যাহত

পানাম সেতু : ঐতিহ্য রক্ষায় অবহেলা নয়

যাত্রাবাড়ীর চৌরাস্তা থেকে ধোলাইখাল বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত রাস্তার দুরবস্থা

মহেশখালী-কক্সবাজার নৌপথে সেতু চাই

পাঠ্যবই খোলাবাজারে কেন?

বিএনপি ও জামায়াতের সম্পর্ক : একটি অদৃশ্য প্রভাবের রাজনীতি

সাইবার সিকিউরিটি ও ব্যক্তিগত গোপনীয়তা

শহরের সবুজায়ন : টিকে থাকার লড়াই

ইজতেমার ঐক্য ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নিশ্চিত হোক

নারী ফুটবল ও সামাজিক সংকীর্ণতা

প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের সংগ্রাম

জলাশয় রক্ষা করুন

ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণ করুন

ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর এলাকার খালপাড় সড়কটি সংস্কার করুন

পুকুর ভরাট ও অপরিকল্পিত ব্যবহার

পর্যটন কেন্দ্রে খাবারের অস্বাভাবিক মূল্য

নদী বাঁচলে , বাঁচবে দেশ

ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়াচ্ছে

পানি দূষণ

রাজবাড়ী হাসপাতাল রোড সংষ্কার চাই

মাটির বাড়ি থেকে জিআই পণ্য : ঐতিহ্যের গল্প কলাইয়ের রুটি

ভাঙা হতে ফরিদপুর সদর সড়ক সংস্কার করুন

১০ম গ্রেড মেডিকেল টেকনোলজিস্ট-ফার্মাসিস্টদের ন্যায্য অধিকার

টিসিবির কার্যক্রম

tab

চিঠিপত্র

ছাগলে চাটে বাঘের গাল

মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নন

শনিবার, ০৪ জানুয়ারী ২০২৫

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি সচিত্র সংবাদ বিবৃতি নজরে পড়লো। সংবাদটি অবশ্যই স্পর্শকাতর বলা যায়। কারণ বিবৃতিদাতা এক ধাক্কায় ইতিহাস পাল্টে দিতে চাইছেন। এমন ঘটনা বাংলাদেশে এর আগে কেউ করে দেখানোর হিম্মত রাখেননি। এ অবস্থায় অতি কষ্টের বাংলা প্রবাদ ‘দেশে এলো কলিকাল, ছাগলে চাটে বাঘের গাল’ বড় বেশি মনে পড়ছে।

জামায়াতের আমিরে আজম ঘোষণা করেছেন, ‘দেশে পরীক্ষিত দেশপ্রেমিক শক্তি দু’টি; একটি সেনাবাহিনী, আরেকটি জামায়াত।’ দুর্ভাগ্য যে, এমন ধৃষ্টতার পর কেউ টুঁ শব্দও করছেন না; যা এই বিজয়ের মাস ডিসেম্বরে খুবই বিস্ময়কর বলা যায়।

সে যাই হোক, বাংলাদেশ সেনাবহিনী তথা সশস্ত্র বাহিনীর উদ্ভব হয়েছিল একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের রণাঙ্গণে; দখলদার পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বিরূদ্ধে লড়াই করে মাতৃভূমির স্বাধীনতা অর্থাৎ বাংলাদেশ নামে নতুন জাতিরাষ্ট্রের জন্ম দিতে। মুক্তিযুদ্ধকালে এই বাহিনীর সম্মিলিত নাম ছিল মুক্তিবাহিনী; যা বাংলাদেশের প্রবাসী সরকারের নিয়ন্ত্রণে সার্থকভাবে জাতীয় সেনাবাহিনীর ভূমিকা পালন করেছিল।

মুক্তিযুদ্ধের পর গণসমাজের কাতার থেকে উঠে আসা মুক্তিবাহিনীর সুবৃহৎ অংশ বেসামরিক মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে যা কিছুই করা হয়ে থাকুক না কেন, তারা সবাই ছিলেন মুক্তিযুদ্ধকালীন জাতীয় সেনাবাহনীর অংশীজন। এই সত্য অস্বীকার করা যাবে না। ওই বাহিনীর প্রতিটি সদস্য দেশপ্রেমের চূড়ান্ত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছিলেন বলে গোটা বাহিনীই দেশপ্রেমিক। এর ধারেকাছে আর কারও উপস্থিতি নেই।

পক্ষান্তরে একাত্তরে সংগঠন হিসেবে জামায়াতে ইসলামী ছিল মুক্তিযুদ্ধের ঘোর বিরোধী, দখলদার পাকিস্তান সেনাবাহিনীর এ দেশীয় সহযোগী। তারা বাংলাদেশ নামের স্বাধীন দেশ দেখতেই চায়নি। একাত্তরে জামায়াতের সদস্যরা পাকিস্তানি সেনাদের সাথে থেকে মুক্তিবাহিনীর বিরূদ্ধে যুদ্ধ করেছে, মুক্তিবাহিনীর সদস্যদের নিজেরা হত্যা করেছে, পাকিস্তানি শত্রুবাহিনীর হাতে মুক্তিসংগ্রামীদের ধরিয়ে দিয়েছে, মুক্তিকামী নিরীহ দেশবাসীর বাড়িঘর শত্রুবাহিনীকে চিনিয়ে দিয়ে লুটপাট ও আগুনে পুড়িয়ে ধ্বংস করেছে, স্নেহশীলা নিরপরাধ বাঙালি রমণীদের জোর করে পাকিস্তানি সেনাদের সামরিক হেরেমে তুলে দিয়েছে, বাছবিচারহীন গণহত্যায় আন্তরিকতার সাথে সহযোগী হয়েছে।

এখন সেই জামায়াতের আমির দাবি করছেন, ‘দেশে পরীক্ষিত দেশপ্রেমিক শক্তি দু’টি; একটি সেনাবাহিনী, আরেকটি জামায়াত।’ দুর্ভাগ্যজনকভাবে, এমন ধৃষ্টতাপূর্ণ, মিথ্যা এবং অপমানজনক উক্তির মুখে আমাদের গর্বিত সেনাবাহিনী অথবা সরকারের পক্ষ থেকে কোন প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করা হয়নি। একাত্তরের পরাজিত শক্তি স্বজাতিবিদ্বেষী অত্যাচারী জামায়াতে ইসলামী যদি এখন বাংলাদেশের গর্বিত দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনীর সমান্তরালে ‘পরীক্ষিত দেশপ্রেমিক শক্তি’ হয় তাহলে দেশপ্রেমিকের সংজ্ঞাই তো পাল্টে দিতে হবে। একাত্তরের দেশ-জাতিবিদ্বেষী জামায়াতের এই চরম ধৃষ্টতার উপযুক্ত প্রতিবিধান এখনো কেন করা হলো না?

বিগত ৫৩ বছরে এই জামায়াত সংগঠন হিসেব একাত্তরে তাদের কৃতকর্মের জন্য সামান্যতম অনুশোচনা প্রকাশ করেনি। একটি রাজনৈতিক অপশক্তি হিসেবে জামায়াত অতীতেও ভূমিকা রেখে এসেছে। যে কারণে তাদের রাজনৈতিক নিবন্ধন বাতিল হয়েছিল। দেশে চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে জামায়াত অতীতের মতোই অপশক্তির ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে চাইছে। তারই অংশ হিসেবে জামায়াত এই জাতির শেষ ভরসাস্থল দেশপ্রেমিক জাতীয় সেনাবাহিনীর কাতারে নিজেদের অবস্থান তুলে ধরতে অপচেষ্টার লিপ্ত হয়েছে।

একত্তরের চরম দুর্দিনে জাতির বিরুদ্ধে যুদ্ধে লিপ্ত হওয়া জামায়াতে ইসলামীর এই অপচেষ্টার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। দাবি জানাই, আমাদের জাতীয় সেনাবাহিনীর দেশপ্রেমিক মর্যাদা সমুন্নত রাখার বৃহত্তর স্বার্থে উল্লিখিত উক্তির জন্য জামায়াত আমিরকে অবিলম্বে ক্ষমা চাইতে বাধ্য করা হোক। সংগঠন হিসেবে জামায়াতের রাজনৈতিক নিবন্ধন স্থগিত রাখা হোক। জামায়াতের রাজনৈতিক এবং সামাজিক সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ করা হোক।

বশীর আহমেদ

মুক্তিযোদ্ধা

back to top