দক্ষিণাঞ্চলের ৭৮ হাজার একর জমির ফসল ক্ষতি
নিজস্ব বার্তা পরিবেশক, বরিশাল
নিম্নচাপ জাওয়াদের প্রভাবে অসময়ে বৃষ্টিপাতের কারণে বরিশাল কৃষি অঞ্চলের প্রায় ৫ লাখ ১৬ হাজার হেক্টর জমির রোপা আমন ছাড়াও বিভিন্ন ধরনের ফসলের ৭৮ হাজার হেক্টর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মাঠ পর্যায় থেকে প্রাথমিক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত জমির মধ্যে রোপা আমন প্রায় ৪০ হাজার হেক্টর এবং খেসারির ডাল ২৬ হাজার হেক্টর। এছাড়াও শীতকালীন সবজি সাড়ে ৭ হাজার হেক্টর, সরিষা ২ হাজার ১৫৬ হেক্টর, মুসুর ডাল ৫৭৩ হেক্টর, গোল আলু ৩৮৮ হেক্টর, বোরো বীজতলা ২৩৫ হেক্টর, গম ২০৩ হেক্টর এবং ১০৫ হেক্টরের মরিচ ছাড়াও কিছু বোরো বীজতলাসহ অন্যান্য ফসল রয়েছে।
তবে এসব ফসলের ঠিক কতভাগ আংশিক বা সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তা এখনও চূড়ান্তভাবে হিসাব করা যায়নি। এজন্য আরও কয়েকদিন অপেক্ষা করতে হবে। কারণ জাওয়াদে ভর করে এই অঞ্চলে জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পায়নি। বৃষ্টিপাতের পরিমাণও ছিল ১শ’ মিলিমিটারের মতো। উপরন্তু মঙ্গলবার সকালের পর থেকে বরিশাল অঞ্চলে তেমন কোন বৃষ্টি হয়নি। তবে যেসব ফসলি জমিতে এখনও পানি জমে আছে, বিশেষ করে শাক সবজির ক্ষয়ক্ষতির মাত্রা বাড়বে বলে আশঙ্কা করা হয়েছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের দায়িত্বশীল সূত্রের মতে, পাকা আমন ধানের জমির কিছু ফসল মাটিয়ে নুয়ে পড়ছে। অনেক ধান কাটাই যাবে না। আবার যেসব জমির আমনের থোর বের হয়েছে সেসব জমির ধান চিটা হতে পারে। তবে জমিতে পানি আটকে থাকায় আমনের সাথি ফসল খেসারি ডালের কিছু সমস্যা হতে পারে। এছাড়া শীতকালীন বিভিন্ন ধরনের সবজি ও গোল আলুসহ অনেক শীতকালীন শাক সবজি মাটিতে মিশে যাওয়ায় তাদের ক্ষতি হবে বেশি।
টুঙ্গিপাড়ায় আমনের ব্যাপক ক্ষতি
নিজস্ব বার্তা পরিবেশক, গোপালগঞ্জ
গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় অসময়ের বৃষ্টিতে আমন ধান, শীতকালীন সবজি ও রবি জাতীয় ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। জলাবদ্ধতার কারণে রোপণ করা বীজ ও ফসলে পচন ধরে বেশিরভাগ নষ্ট হয়ে গেছে। প্রায় ৫০০ হেক্টর জমির আমন ধান পানির নিচে থাকায় কৃষকেরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। এছাড়া চাষকৃত রবি শস্য ও শীতকালীন সবজির প্রায় ৬০% ক্ষতি হয়েছে। ধানী জমিসহ সব ফসলের মাঠে এখন পানি আর পানি। শনিবার (৪ ডিসেম্বর) থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত বৃষ্টি হওয়ায় ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। উপজেলার কৃষকেরা বর্তমানে চোখে মুখে অন্ধকার দেখছেন।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা কাজী রাকিব জোবায়ের জানান, চলতি মৌসুমে প্রায় ২ হাজার হেক্টর জমিতে আমন ধানের চাষাবাদ হয়েছিল। ধানের ফলনও ভালো হয়েছিল কিন্তু কৃষক সম্পূর্ণ ধান ঘরে উঠাতে পারেনি। অসময়ের বৃষ্টিতে মাঠ জলাবদ্ধ থাকায় বর্তমানে প্রায় ৫শ’ হেক্টর আমন ধান পানির নিচে রয়েছে। ২০৫ হেক্টর জমির বোরো বীজতলা নষ্ট হয়েছে। এতে কৃষকদের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এছাড়া উৎপাদিত খেসারী, মসুর, মোটর, সবজি, গম, পেঁয়াজ, রসুন, সরিষা, গোল আলু, মিষ্টি আলু, সূর্যমুখী, মাসকলাই, ভুট্টা ও ধনিয়া ৬০% নষ্ট হয়েছে। এতে সব মিলিয়ে উপজেলার কৃষকদের আনুমানিক প্রায় ১০ কোটি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
টুঙ্গিপাড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ জামাল উদ্দিন বলেন, অনাকাক্সিক্ষত বৃষ্টির কারণে পানিতে নিমজ্জিত হয়ে প্রায় ৬০ শতাংশ রবিশস্য ও শীতকালীন সবজির ক্ষতি হয়েছে। এছাড়া সম্পূর্ণ আমন ধান কেটে ঘরে নিতে পারেনি কৃষক। প্রায় ৫শ’ হেক্টর জমির ধান পানির নিচে রয়েছে। তাই কৃষকেরা পানি সড়াতে কাজ করে যাচ্ছে। তবে হঠাৎ বৃষ্টিতে যে পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে সেটা পুষিয়ে নেয়া কৃষকের জন্য খুব কঠিন হবে। কৃষকদের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে কৃষি অফিস থেকে অন্য ফসল আবাদ করার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। এছাড়া মন্ত্রণালয়ে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানানো হয়েছে। যদি সরকার প্রণোদনা দেয় তাহলে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের অনেক উপকার হবে।
সীতাকুন্ডে আমনের ব্যাপক ক্ষতি
প্রতিনিধি, সীতাকুন্ড (চট্টগ্রাম)
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদের প্রভাবে সীতাকুন্ডে বৃষ্টির সঙ্গে দমকা বাতাসে আমন ধান গাছগুলো হেলে পড়েছে। বৈরী আবহাওয়ার কারণে উপজেলার আমন ধান ও শীতকালীন ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে টানা বৃষ্টি ও দমকা বাতাসে আমন ধানগাছগুলো মাটিতে নুয়ে পড়েছে। নুয়ে পড়া গাছগুলোর নিচেই বৃষ্টির পানি জমে আছে। উপজেলা কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরে উপজেলার একটি পৌরসভা ও ৯টি ইউনিয়নের ৬ হাজার ২৬৫ হেক্টর জমিতে আমন ধানের চাষ হয়েছে। উপজেলার অন্তত ৭ হাজার ৫০০ কৃষক এই ধানের চাষ করেছেন। এ ছাড়া প্রায় ২ হাজার হেক্টর জমিতে শীতকালীন শিম, টমেটো, ফুলকপি, বাঁধাকপি, ভুট্টাসহ বিভিন্ন প্রজাতির সবজির আবাদ হয়েছে। সীতাকুন্ড উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. হাবিবুল্লাহ বলেন, অসময়ের বৃষ্টিতে জমিতে কেটে রাখা আমন ধান ভিজে গেছে। এতে কিছুটা ক্ষতির মুখে পড়েছেন কৃষকেরা। এ ছাড়াও ক্ষতি হয়েছে শীতকালীন ফুলকপি, বাঁধাকপি, মুলা, বেগুন, ধনেপাতাসহ বিভিন্ন প্রজাতির সবজির। উপজেলার বাড়বকুন্ডের কৃষক মোহাম্মদ ইউসুফ বলেন, টানা বৃষ্টির পানিতে তার জমিতে কেটে রাখা পাকা আমন ধান তলিয়ে গেছে। এছাড়া পানি জমেছে তার টমেটো ও ফুলকপির খেতে। একই কারণে জমির আইলে লাগানো শিমের ফুল ঝরে পড়েছে। তিনি ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন।
তাম্বুলখানা বীজখামারে ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা
প্রতিনিধি, ফরিদপুর
ভালো মানের বীজ উৎপাদনে দেশের মধ্যে শীর্ষস্থানে আছে ফরিদপুরে বিএডিসির তাম্বুলখানা বীজ উৎপাদন খামার। উৎকৃষ্টমানের বীজ উৎপাদন করে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের চাষিদের চাহিদা পূরণ করে থাকে তাম্বুলখানা বীজ উৎপাদন খামার। চলতি বোরো মৌসুমেও বীজ উৎপাদনের লক্ষ্যে প্রায় ১১ হেক্টর জমিতে উন্নত জাতের বীজ আলু, গম, বিজেআরআই তোষা পাট- ৮ (রবি-১) বীজ ও গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ আবাদ করা হয়েছিল।
হঠাৎকরে ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদের প্রভাবে অতিভারি বৃষ্টিতে পানি জমে গেছে আলু, গম ও পেঁয়াজ বীজ ফসলের মাঠে এবং বোরো ধানের বীজতলায়। অতিভারী বৃষ্টিপাত ও দমকা হাওয়ার প্রভাবে মাঠে দন্ডায়মান সমস্ত পাট ফসল মাটিতে শুয়ে পড়েছে। আলু, গম, পেঁয়াজ ও পাট বীজ ফসলের জমি এবং বোরো ধানের বীজতলা থেকে পানি সরাতে দিন-রাত পরিশ্রম করেযাচ্ছে খামারের কর্মকর্তা, কর্মচারী ও শ্রমিকেরা। একটানা অতিভারী বৃষ্টিপাতের (৯৭ মি.মি.) কারণে পানি নিষ্কাশনের সর্বাত্মক প্রচেষ্টা সত্ত্বেও আলু ও গম বীজ ফসলের মাঠ সম্পূর্ণরুপে পানিতে তলিয়ে যায়।
দ্রুত পানি নিষ্কাশন করতে না পারলে ক্ষতির পরিমাণ বাড়ার আশঙ্কা করছেন তারা। চলতি মৌসুমে ৭৫ মে. টন আলুবীজ, ১৪.৪০০ মে. টন গম বীজ, ০.৮০০ মে. টন পাট বীজ ও ০.০৮১ মে. টন পেঁয়াজ বীজ উৎপাদনের র্টাগেট নিয়ে চাষাবাদ করা হয়ে হয়েছে বলে জানিয়েছেন খামারের কর্মকর্তা। হঠাৎ করে অতিভারী বর্ষনে(৯৭ মিঃমিঃ বৃষ্টি পাতে) বীজ ফসলের মাঠ পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় মাটির নিচে থাকা আলু ও গমের ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা করছেন তারা।
বৃহস্পতিবার, ০৯ ডিসেম্বর ২০২১
দক্ষিণাঞ্চলের ৭৮ হাজার একর জমির ফসল ক্ষতি
নিজস্ব বার্তা পরিবেশক, বরিশাল
নিম্নচাপ জাওয়াদের প্রভাবে অসময়ে বৃষ্টিপাতের কারণে বরিশাল কৃষি অঞ্চলের প্রায় ৫ লাখ ১৬ হাজার হেক্টর জমির রোপা আমন ছাড়াও বিভিন্ন ধরনের ফসলের ৭৮ হাজার হেক্টর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মাঠ পর্যায় থেকে প্রাথমিক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত জমির মধ্যে রোপা আমন প্রায় ৪০ হাজার হেক্টর এবং খেসারির ডাল ২৬ হাজার হেক্টর। এছাড়াও শীতকালীন সবজি সাড়ে ৭ হাজার হেক্টর, সরিষা ২ হাজার ১৫৬ হেক্টর, মুসুর ডাল ৫৭৩ হেক্টর, গোল আলু ৩৮৮ হেক্টর, বোরো বীজতলা ২৩৫ হেক্টর, গম ২০৩ হেক্টর এবং ১০৫ হেক্টরের মরিচ ছাড়াও কিছু বোরো বীজতলাসহ অন্যান্য ফসল রয়েছে।
তবে এসব ফসলের ঠিক কতভাগ আংশিক বা সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তা এখনও চূড়ান্তভাবে হিসাব করা যায়নি। এজন্য আরও কয়েকদিন অপেক্ষা করতে হবে। কারণ জাওয়াদে ভর করে এই অঞ্চলে জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পায়নি। বৃষ্টিপাতের পরিমাণও ছিল ১শ’ মিলিমিটারের মতো। উপরন্তু মঙ্গলবার সকালের পর থেকে বরিশাল অঞ্চলে তেমন কোন বৃষ্টি হয়নি। তবে যেসব ফসলি জমিতে এখনও পানি জমে আছে, বিশেষ করে শাক সবজির ক্ষয়ক্ষতির মাত্রা বাড়বে বলে আশঙ্কা করা হয়েছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের দায়িত্বশীল সূত্রের মতে, পাকা আমন ধানের জমির কিছু ফসল মাটিয়ে নুয়ে পড়ছে। অনেক ধান কাটাই যাবে না। আবার যেসব জমির আমনের থোর বের হয়েছে সেসব জমির ধান চিটা হতে পারে। তবে জমিতে পানি আটকে থাকায় আমনের সাথি ফসল খেসারি ডালের কিছু সমস্যা হতে পারে। এছাড়া শীতকালীন বিভিন্ন ধরনের সবজি ও গোল আলুসহ অনেক শীতকালীন শাক সবজি মাটিতে মিশে যাওয়ায় তাদের ক্ষতি হবে বেশি।
টুঙ্গিপাড়ায় আমনের ব্যাপক ক্ষতি
নিজস্ব বার্তা পরিবেশক, গোপালগঞ্জ
গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় অসময়ের বৃষ্টিতে আমন ধান, শীতকালীন সবজি ও রবি জাতীয় ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। জলাবদ্ধতার কারণে রোপণ করা বীজ ও ফসলে পচন ধরে বেশিরভাগ নষ্ট হয়ে গেছে। প্রায় ৫০০ হেক্টর জমির আমন ধান পানির নিচে থাকায় কৃষকেরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। এছাড়া চাষকৃত রবি শস্য ও শীতকালীন সবজির প্রায় ৬০% ক্ষতি হয়েছে। ধানী জমিসহ সব ফসলের মাঠে এখন পানি আর পানি। শনিবার (৪ ডিসেম্বর) থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত বৃষ্টি হওয়ায় ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। উপজেলার কৃষকেরা বর্তমানে চোখে মুখে অন্ধকার দেখছেন।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা কাজী রাকিব জোবায়ের জানান, চলতি মৌসুমে প্রায় ২ হাজার হেক্টর জমিতে আমন ধানের চাষাবাদ হয়েছিল। ধানের ফলনও ভালো হয়েছিল কিন্তু কৃষক সম্পূর্ণ ধান ঘরে উঠাতে পারেনি। অসময়ের বৃষ্টিতে মাঠ জলাবদ্ধ থাকায় বর্তমানে প্রায় ৫শ’ হেক্টর আমন ধান পানির নিচে রয়েছে। ২০৫ হেক্টর জমির বোরো বীজতলা নষ্ট হয়েছে। এতে কৃষকদের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এছাড়া উৎপাদিত খেসারী, মসুর, মোটর, সবজি, গম, পেঁয়াজ, রসুন, সরিষা, গোল আলু, মিষ্টি আলু, সূর্যমুখী, মাসকলাই, ভুট্টা ও ধনিয়া ৬০% নষ্ট হয়েছে। এতে সব মিলিয়ে উপজেলার কৃষকদের আনুমানিক প্রায় ১০ কোটি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
টুঙ্গিপাড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ জামাল উদ্দিন বলেন, অনাকাক্সিক্ষত বৃষ্টির কারণে পানিতে নিমজ্জিত হয়ে প্রায় ৬০ শতাংশ রবিশস্য ও শীতকালীন সবজির ক্ষতি হয়েছে। এছাড়া সম্পূর্ণ আমন ধান কেটে ঘরে নিতে পারেনি কৃষক। প্রায় ৫শ’ হেক্টর জমির ধান পানির নিচে রয়েছে। তাই কৃষকেরা পানি সড়াতে কাজ করে যাচ্ছে। তবে হঠাৎ বৃষ্টিতে যে পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে সেটা পুষিয়ে নেয়া কৃষকের জন্য খুব কঠিন হবে। কৃষকদের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে কৃষি অফিস থেকে অন্য ফসল আবাদ করার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। এছাড়া মন্ত্রণালয়ে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানানো হয়েছে। যদি সরকার প্রণোদনা দেয় তাহলে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের অনেক উপকার হবে।
সীতাকুন্ডে আমনের ব্যাপক ক্ষতি
প্রতিনিধি, সীতাকুন্ড (চট্টগ্রাম)
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদের প্রভাবে সীতাকুন্ডে বৃষ্টির সঙ্গে দমকা বাতাসে আমন ধান গাছগুলো হেলে পড়েছে। বৈরী আবহাওয়ার কারণে উপজেলার আমন ধান ও শীতকালীন ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে টানা বৃষ্টি ও দমকা বাতাসে আমন ধানগাছগুলো মাটিতে নুয়ে পড়েছে। নুয়ে পড়া গাছগুলোর নিচেই বৃষ্টির পানি জমে আছে। উপজেলা কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরে উপজেলার একটি পৌরসভা ও ৯টি ইউনিয়নের ৬ হাজার ২৬৫ হেক্টর জমিতে আমন ধানের চাষ হয়েছে। উপজেলার অন্তত ৭ হাজার ৫০০ কৃষক এই ধানের চাষ করেছেন। এ ছাড়া প্রায় ২ হাজার হেক্টর জমিতে শীতকালীন শিম, টমেটো, ফুলকপি, বাঁধাকপি, ভুট্টাসহ বিভিন্ন প্রজাতির সবজির আবাদ হয়েছে। সীতাকুন্ড উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. হাবিবুল্লাহ বলেন, অসময়ের বৃষ্টিতে জমিতে কেটে রাখা আমন ধান ভিজে গেছে। এতে কিছুটা ক্ষতির মুখে পড়েছেন কৃষকেরা। এ ছাড়াও ক্ষতি হয়েছে শীতকালীন ফুলকপি, বাঁধাকপি, মুলা, বেগুন, ধনেপাতাসহ বিভিন্ন প্রজাতির সবজির। উপজেলার বাড়বকুন্ডের কৃষক মোহাম্মদ ইউসুফ বলেন, টানা বৃষ্টির পানিতে তার জমিতে কেটে রাখা পাকা আমন ধান তলিয়ে গেছে। এছাড়া পানি জমেছে তার টমেটো ও ফুলকপির খেতে। একই কারণে জমির আইলে লাগানো শিমের ফুল ঝরে পড়েছে। তিনি ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন।
তাম্বুলখানা বীজখামারে ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা
প্রতিনিধি, ফরিদপুর
ভালো মানের বীজ উৎপাদনে দেশের মধ্যে শীর্ষস্থানে আছে ফরিদপুরে বিএডিসির তাম্বুলখানা বীজ উৎপাদন খামার। উৎকৃষ্টমানের বীজ উৎপাদন করে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের চাষিদের চাহিদা পূরণ করে থাকে তাম্বুলখানা বীজ উৎপাদন খামার। চলতি বোরো মৌসুমেও বীজ উৎপাদনের লক্ষ্যে প্রায় ১১ হেক্টর জমিতে উন্নত জাতের বীজ আলু, গম, বিজেআরআই তোষা পাট- ৮ (রবি-১) বীজ ও গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ আবাদ করা হয়েছিল।
হঠাৎকরে ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদের প্রভাবে অতিভারি বৃষ্টিতে পানি জমে গেছে আলু, গম ও পেঁয়াজ বীজ ফসলের মাঠে এবং বোরো ধানের বীজতলায়। অতিভারী বৃষ্টিপাত ও দমকা হাওয়ার প্রভাবে মাঠে দন্ডায়মান সমস্ত পাট ফসল মাটিতে শুয়ে পড়েছে। আলু, গম, পেঁয়াজ ও পাট বীজ ফসলের জমি এবং বোরো ধানের বীজতলা থেকে পানি সরাতে দিন-রাত পরিশ্রম করেযাচ্ছে খামারের কর্মকর্তা, কর্মচারী ও শ্রমিকেরা। একটানা অতিভারী বৃষ্টিপাতের (৯৭ মি.মি.) কারণে পানি নিষ্কাশনের সর্বাত্মক প্রচেষ্টা সত্ত্বেও আলু ও গম বীজ ফসলের মাঠ সম্পূর্ণরুপে পানিতে তলিয়ে যায়।
দ্রুত পানি নিষ্কাশন করতে না পারলে ক্ষতির পরিমাণ বাড়ার আশঙ্কা করছেন তারা। চলতি মৌসুমে ৭৫ মে. টন আলুবীজ, ১৪.৪০০ মে. টন গম বীজ, ০.৮০০ মে. টন পাট বীজ ও ০.০৮১ মে. টন পেঁয়াজ বীজ উৎপাদনের র্টাগেট নিয়ে চাষাবাদ করা হয়ে হয়েছে বলে জানিয়েছেন খামারের কর্মকর্তা। হঠাৎ করে অতিভারী বর্ষনে(৯৭ মিঃমিঃ বৃষ্টি পাতে) বীজ ফসলের মাঠ পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় মাটির নিচে থাকা আলু ও গমের ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা করছেন তারা।