alt

সারাদেশ

কক্সবাজারে সড়ক নির্মাণে ধীরগতি

তীব্র যানজটে জনদুর্ভোগ

প্রতিনিধি, কক্সবাজার : মঙ্গলবার, ২৫ জানুয়ারী ২০২২

পর্যটন রাজধানী কক্সবাজার শহরের প্রধান সড়কের হলিডে মোড় হতে শুরু করে রুমালিয়ারছড়া পর্যন্ত প্রায় ৩ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে চলছে খোঁড়াখুঁড়ি। এ কাজের গতিও চলছে কচ্ছপের মতো। যে কারণে তীব্র যানজটের শহরে পরিণত হয়েছে কক্সবাজার। হাসপাতাল সড়কে চলছে পৌরসভার অধীনে নালা নির্মাণের কাজ। এতে মানুষের চলাচলের পাশাপাশি যানবাহন চলাচলেও দুর্ভোগের শেষ নেই। চরম ভোগান্তিতে পড়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সাধারণ মানুষ।

সোমবার (২৩ জানুয়ারি) দুপুরে প্রতিবেদককে কক্সবাজার শহরের বিমান বন্দর সড়কের বাসিন্দা নুরুল আলম বলেন, মেইন রোডে কাজ করা হচ্ছে, কিন্তু বিকল্প সড়কগুলোতেও চলছে খোঁড়াখুঁড়ি। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছে মানুষ। অপর এক ব্যক্তিও ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, অপরিকল্পিত নির্মাণ কাজের কারণেই এই পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। পাঁচ মিনিটের রাস্তা যেতে ৩ ঘণ্টা লেগে যাচ্ছে।

বাস টার্মিনাল থেকে কলাতলী মোড় পর্যন্ত রাস্তা অঘোষিত যানবাহন পার্কিংয়ের পরিণত হয়েছে। যার প্রভাবে তীব্র যানজটে জনদুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে।

পথচারীরা বলছেন, প্রশাসনের খামখেয়ালী ও উদাসীনতার কারণে সড়কের ব্যবস্থাপনার এই দৈন্যদশা। এতে কক্সবাজার শহরে ঢোকার আগেই পর্যটকদের কাছে নেতিবাচক ধারণা তৈরি হচ্ছে।

ভুক্তভোগীরা বলেন, এখানে অবৈধভাবে অনেক গাড়ি পার্কিং করা হয়। এর কারনে এখানে যানজট লেগেই থাকে। আমরা হাঁটতে গেলেও কষ্ট হয়।

এদিকে শহরের প্রধান সড়কের কাজ করছে কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ। আর উপ-সড়কের কাজ করছে কক্সবাজার পৌরসভা। এ ব্যাপারে প্রতিষ্ঠান দুইটির সমন্বয়হীনতার কারণেই দুর্ভোগ বলছেন সচেতনমহল।

কক্সবাজার সিভিল সোসাইটির সভাপতি আবু মোর্শেদ চৌধুরী খোকা বলেন, যে উন্নয়ন জনগণের দুর্ভোগ ডেকে আনে সেই উন্নয়ন আমরা চাই না। কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ও পৌরসভার সমন্বয়হীনতার কারণেই এই জনদুর্ভোগ নেমে এসেছে।

কক্সবাজার পৌরসভা প্যানেল মেয়র হেলাল উদ্দিন কবির বলেন, আমরা চেষ্টা করছি যেন বর্ষার আগেই অন্তত কিছু সড়কের কাজ শেষ করা যায়। তাতে দুর্ভোগ কিছুটা কমবে। কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান ফোরকান আহমদ বলেন, আমরা দ্রুততম সময়ে কাজ শেষ করার চেষ্টা করছি। আমরা আশা করছি চলিত বছরের জুন মাসের দিকে এই রাস্তার কাজ শেষের দিকে চলে যাবে। সূত্র জানিয়েছে, কক্সবাজার পৌরসভা বাস্তবায়ন করছে ১৪০ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রায় ২৪ কিলোমিটার রাস্তা, ২৩ কিলোমিটার নালা ও ২৩ কিলোমিটার লাইটিংয়ের কাজ। আর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ৫ দশমিক ২ কিলোমিটার প্রধান সড়ক বাস্তবায়ন করছে প্রায় ২৫৮ কোটি টাকায়।

দরপত্রের কার্যাদেশ অনুসারে কক্সবাজার শহরের প্রধান সড়ক উন্নয়ন কাজ শেষ হবে ২০২২ সালের ডিসেম্বর মাসে। কিন্তু গত এক বছরে এখনো ড্রেনের কাজই শেষ করতে পারেনি কার্যাদেশ পাওয়া ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। দীর্ঘ সড়কে এক সঙ্গে ড্রেনের কাজ শুরু করলেও হাতেগোনা কয়েকজন শ্রমিক দিয়ে মন্থর গতিতে কাজ চলায় এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। খোঁড়া অংশ সংস্কার করার আগে নতুন জায়গায় খোঁড়াখুঁড়ি চলছে প্রতিনিয়ত। ফলে দীর্ঘায়িত হচ্ছে জনদুর্ভোগ, ঘটছে দুর্ঘটনাও। কর্তৃপক্ষের দায়িত্বশীল ভূমিকা না থাকায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান লোক দেখানো কাজ করছে বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীদের।

সূত্রমতে, এক সময়ের সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের আওতাধীন থাকা জনগুরুত্বপূর্ণ কক্সবাজার শহরের প্রধান সড়কটি প্রশস্তকরণ প্রকল্প হাতে নেয় ২০১৬ সালে যাত্রা হওয়া কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ। গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের অধীনে হলিডে মোড়-বাজারঘাটা-লারপাড়া (বাসস্ট্যান্ড) সড়ক প্রশস্তকরণ প্রকল্পে ৪ দশমিক ৬৬ কিলোমিটার সড়কের ব্যয় ধরা হয়েছে একশ ৮২ কোটি ৭২ লাখ ৩৮ হাজার ৩০৮ দশমিক ৭৮৫ টাকা। সড়ক নির্মাণ শেষে সৌন্দর্যবর্ধণ প্রকল্পসহ অন্যান্য আনুষাঙ্গিক কাজ সম্পন্ন করতে আরও ৬৬ কোটি ১০ লাখ টাকা বাড়তি বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। সব মিলিয়ে কক্সবাজার শহরের প্রধান সড়কের নতুন অবয়ব দিতে সরকার ব্যয় করছে ২৫৮ কেটি ৮২ লাখ টাকা।

২০১৯ সালের ১৬ জুলাইয়ে প্রকল্পটি একনেকে অনুমোদন পাওয়ার পর দরপত্র আহ্বান করে কউক। দু’ভাগে বিভক্ত প্রকল্পটিতে সর্বনিম্ন দরদাতা হিসেবে কাজ পেয়েছে ন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেড (এনডিই) এবং তাহের ব্রাদার্স নামে দুটি প্রতিষ্ঠান। এনডিই অনুমতি পেয়েছে হাশেমিয়া মাদ্রাসা হতে হলিডে মোড়’ ২ দশমিক ৪৫ কিলোমিটার কাজের।

কউকের নির্দেশনা অনুযায়ী ২০২২ সালের জুলাই মাসে কাজ বুঝিয়ে দেয়ার কথা তাদের। আর তাহের ব্রাদার্স পেয়েছে প্রকল্পের হাশেমিয়া মাদ্রাসা হতে বাসস্ট্যান্ড ২ দশমিক ২১০ কিলোমিটার সড়কের কাজ। তারাও কাজ বুঝিয়ে দেবে একই সময়ে।

কিন্তু ২০২০ সালের অক্টোবরের শেষ দিকে শুরু হওয়া কাজের ১৬ মাস অতিক্রম হলেও এখনো ড্রেইন তৈরির কাজও সমাপ্ত করতে পারেনি প্রতিষ্ঠান দুটি। উল্টো পরিকল্পনাহীন খোঁড়াখুঁড়ির ফলে শহরের অভ্যন্তরে সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়েছে। আদালত ও সরকারি দপ্তরবেষ্টিত এলাকা হিসেবে সবচেয়ে কাহিল অবস্থা হাশেমিয়া মাদ্রাসা হতে হলিডে মোড় সড়ক এলাকায়। কিছু কিছু স্থানে হাতে গোনা কয়েকজন শ্রমিক দিয়ে ড্রেনের কাজ করা হচ্ছে। কচ্ছপগতির কাজে ভোগান্তি বেড়েছে পৌরবাসী ও জেলা প্রশাসন অফিসে আসা সেবা প্রার্থীদের। ঘটছে দুর্ঘটনাও। সবচেয়ে বেশি ভেগান্তিতে পড়েছেন ব্যবসায়ী, শিক্ষার্থী, রোগী, গর্ভবতীরা।

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেড (এনডিই)’র প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটর প্রকৌশলী আরিফুর রহমান বলেন, সহজভাবে কাজ করতে পর্যাপ্ত সুযোগ না পাওয়ায় আমাদের ব্যয়ভার বেড়ে যাচ্ছে। তবে সময় মতো কাজ শেষ করার চেষ্টা চলছে বলে তিনি জানান।

কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম বলেন, পর্যটন মৌসুমে অতিরিক্ত যানবাহন প্রবেশ, পার্কিংয়ের জায়গার সঙ্কট এবং রাস্তার উন্নয়ন কাজ চলমান থাকায় এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। আশাকরি খুব দ্রুত এটি সমাধান হবে।

ছবি

মুরাদনগরে ধর্ষণ-নির্যাতনের ঘটনার নিন্দা, সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচারের দাবি ৩৮ বিশিষ্ট নাগরিকের

ছবি

নওগাঁয় ৯০টি খামারে তৈরি হচ্ছে কেঁচো সার

বরমচাল চা বাগানের ইতি এখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী

সিরাজগঞ্জে হত্যা মামলায় ৬ জনের যাবজ্জীবন

ছবি

তারাগঞ্জ প্রাণীসম্পদ অফিস চত্বরে ফুলের চারাগাছ রোপন

বটিয়াঘাটায় ব্যবসায়ীদের মাঝে পরিবেশ বান্ধব ব্যাগ বিতরণ

কলারোয়ায় আইসক্রিম ফ্যাক্টরিতে অভিযান

পীরগাছায় ছেলের অপরাধে মধ্যযুগীয় কায়দায় বাবার ওপর নির্যাতন

নোয়াখালীতে বিধবাকে গণধর্ষণ

কাজে ফিরেছেন হিলি কাস্টমস কর্মকর্তা-কর্মচারীরা

ছবি

প্লাস্টিকের বস্তায় চাল বাজারজাত করার জরিমানা

শিক্ষার্থীকে বস্তায় ভরে নির্যাতনের ঘটনায় শিক্ষক কারাগারে

সমিতির জমানো টাকা ফেরত না পেয়ে শোকে মৃত্যু

ছবি

নবীগঞ্জে পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় গ্রেপ্তার ১৩

কুষ্টিয়ায় সেতুর টোল আদায় বন্ধে দাবিতে মহাসড়ক অবরোধ, যানজট, ভোগান্তি

নড়াইলে এইচএসসিতে সেট পরিবর্তন কেন্দ্র সচিব ও ট্যাগ অফিসারকে অব্যাহতি

ছবি

ভৈরবে তুচ্ছ ঘটনায় সংঘর্ষ বাড়িঘর ভাঙচুর, আহত ১০

চিলমারী তেল ডিপো রক্ষায় কুড়িগ্রামে শ্রমিকদের মানববন্ধন

মোহনগঞ্জে হারিয়ে যাচ্ছে মৃৎশিল্পের জৌলুস

ছবি

চিলমারীতে অসময়ের বন্যা পাটচাষিরা চিন্তিত

ছবি

সাড়ে পাঁচ কোটি টাকার পণ্য আটক করল সুনামগঞ্জ বিজিবি

প্রেমের টানে ভারতীয় যুবক লালমনিরহাটে

মহাদেবপুরে অতিরিক্ত ধানচাল মজুদ জেল-জরিমানা, ধান কেনা বন্ধ

ছবি

৬৭০ টাকার বীজ ধান ৭’শ ৫০ টাকা বিক্রি!

সন্তান জন্ম দিয়ে পরীক্ষা দিলেন অদম্য ইশা

জেলা আ.লীগের সভাপতি নাছির দুই দিনের রিমান্ডে

ছবি

বেনাপোল বন্দরে পানি নিষ্কাশনের অভাবে ব্যাহত হচ্ছে পণ্য খালাস

চেকপোস্ট ইমিগ্রেশনে হত্যা মামলার আসামি গ্রেপ্তার

সিদ্ধিরগঞ্জে ছাদ থেকে পড়ে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে ফারিহা

ছবি

বেড়িবাঁধের দুই কিলোমিটার রাস্তাটি এখন গলার কাঁটায়

কালীগঞ্জে হোল্ডিং ট্যাক্স ইস্যুতে পৌরবাসীর সঙ্গে ইউএনওর সরাসরি সংলাপ

ছবি

এনবিআরের আন্দোলন প্রত্যাহার করে নেয়ায় বেনাপোল বন্দরে কার্যক্রম শুরু

নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে বিজিবির অভিযানে ৯,৬২০ পিস ইয়াবা উদ্ধার

চট্টগ্রামে জন্ম থেকে ১৫ মাস বয়সী শিশুদের জন্য নতুন প্রকল্প : কার্যক্রম চলবে ৬ জেলায়

রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের অভিযান আটক ৩

ছবি

নেত্রকোনায় চক্ষু চিকিৎসার নামে প্রতারণা

tab

সারাদেশ

কক্সবাজারে সড়ক নির্মাণে ধীরগতি

তীব্র যানজটে জনদুর্ভোগ

প্রতিনিধি, কক্সবাজার

মঙ্গলবার, ২৫ জানুয়ারী ২০২২

পর্যটন রাজধানী কক্সবাজার শহরের প্রধান সড়কের হলিডে মোড় হতে শুরু করে রুমালিয়ারছড়া পর্যন্ত প্রায় ৩ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে চলছে খোঁড়াখুঁড়ি। এ কাজের গতিও চলছে কচ্ছপের মতো। যে কারণে তীব্র যানজটের শহরে পরিণত হয়েছে কক্সবাজার। হাসপাতাল সড়কে চলছে পৌরসভার অধীনে নালা নির্মাণের কাজ। এতে মানুষের চলাচলের পাশাপাশি যানবাহন চলাচলেও দুর্ভোগের শেষ নেই। চরম ভোগান্তিতে পড়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সাধারণ মানুষ।

সোমবার (২৩ জানুয়ারি) দুপুরে প্রতিবেদককে কক্সবাজার শহরের বিমান বন্দর সড়কের বাসিন্দা নুরুল আলম বলেন, মেইন রোডে কাজ করা হচ্ছে, কিন্তু বিকল্প সড়কগুলোতেও চলছে খোঁড়াখুঁড়ি। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছে মানুষ। অপর এক ব্যক্তিও ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, অপরিকল্পিত নির্মাণ কাজের কারণেই এই পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। পাঁচ মিনিটের রাস্তা যেতে ৩ ঘণ্টা লেগে যাচ্ছে।

বাস টার্মিনাল থেকে কলাতলী মোড় পর্যন্ত রাস্তা অঘোষিত যানবাহন পার্কিংয়ের পরিণত হয়েছে। যার প্রভাবে তীব্র যানজটে জনদুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে।

পথচারীরা বলছেন, প্রশাসনের খামখেয়ালী ও উদাসীনতার কারণে সড়কের ব্যবস্থাপনার এই দৈন্যদশা। এতে কক্সবাজার শহরে ঢোকার আগেই পর্যটকদের কাছে নেতিবাচক ধারণা তৈরি হচ্ছে।

ভুক্তভোগীরা বলেন, এখানে অবৈধভাবে অনেক গাড়ি পার্কিং করা হয়। এর কারনে এখানে যানজট লেগেই থাকে। আমরা হাঁটতে গেলেও কষ্ট হয়।

এদিকে শহরের প্রধান সড়কের কাজ করছে কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ। আর উপ-সড়কের কাজ করছে কক্সবাজার পৌরসভা। এ ব্যাপারে প্রতিষ্ঠান দুইটির সমন্বয়হীনতার কারণেই দুর্ভোগ বলছেন সচেতনমহল।

কক্সবাজার সিভিল সোসাইটির সভাপতি আবু মোর্শেদ চৌধুরী খোকা বলেন, যে উন্নয়ন জনগণের দুর্ভোগ ডেকে আনে সেই উন্নয়ন আমরা চাই না। কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ও পৌরসভার সমন্বয়হীনতার কারণেই এই জনদুর্ভোগ নেমে এসেছে।

কক্সবাজার পৌরসভা প্যানেল মেয়র হেলাল উদ্দিন কবির বলেন, আমরা চেষ্টা করছি যেন বর্ষার আগেই অন্তত কিছু সড়কের কাজ শেষ করা যায়। তাতে দুর্ভোগ কিছুটা কমবে। কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান ফোরকান আহমদ বলেন, আমরা দ্রুততম সময়ে কাজ শেষ করার চেষ্টা করছি। আমরা আশা করছি চলিত বছরের জুন মাসের দিকে এই রাস্তার কাজ শেষের দিকে চলে যাবে। সূত্র জানিয়েছে, কক্সবাজার পৌরসভা বাস্তবায়ন করছে ১৪০ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রায় ২৪ কিলোমিটার রাস্তা, ২৩ কিলোমিটার নালা ও ২৩ কিলোমিটার লাইটিংয়ের কাজ। আর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ৫ দশমিক ২ কিলোমিটার প্রধান সড়ক বাস্তবায়ন করছে প্রায় ২৫৮ কোটি টাকায়।

দরপত্রের কার্যাদেশ অনুসারে কক্সবাজার শহরের প্রধান সড়ক উন্নয়ন কাজ শেষ হবে ২০২২ সালের ডিসেম্বর মাসে। কিন্তু গত এক বছরে এখনো ড্রেনের কাজই শেষ করতে পারেনি কার্যাদেশ পাওয়া ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। দীর্ঘ সড়কে এক সঙ্গে ড্রেনের কাজ শুরু করলেও হাতেগোনা কয়েকজন শ্রমিক দিয়ে মন্থর গতিতে কাজ চলায় এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। খোঁড়া অংশ সংস্কার করার আগে নতুন জায়গায় খোঁড়াখুঁড়ি চলছে প্রতিনিয়ত। ফলে দীর্ঘায়িত হচ্ছে জনদুর্ভোগ, ঘটছে দুর্ঘটনাও। কর্তৃপক্ষের দায়িত্বশীল ভূমিকা না থাকায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান লোক দেখানো কাজ করছে বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীদের।

সূত্রমতে, এক সময়ের সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের আওতাধীন থাকা জনগুরুত্বপূর্ণ কক্সবাজার শহরের প্রধান সড়কটি প্রশস্তকরণ প্রকল্প হাতে নেয় ২০১৬ সালে যাত্রা হওয়া কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ। গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের অধীনে হলিডে মোড়-বাজারঘাটা-লারপাড়া (বাসস্ট্যান্ড) সড়ক প্রশস্তকরণ প্রকল্পে ৪ দশমিক ৬৬ কিলোমিটার সড়কের ব্যয় ধরা হয়েছে একশ ৮২ কোটি ৭২ লাখ ৩৮ হাজার ৩০৮ দশমিক ৭৮৫ টাকা। সড়ক নির্মাণ শেষে সৌন্দর্যবর্ধণ প্রকল্পসহ অন্যান্য আনুষাঙ্গিক কাজ সম্পন্ন করতে আরও ৬৬ কোটি ১০ লাখ টাকা বাড়তি বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। সব মিলিয়ে কক্সবাজার শহরের প্রধান সড়কের নতুন অবয়ব দিতে সরকার ব্যয় করছে ২৫৮ কেটি ৮২ লাখ টাকা।

২০১৯ সালের ১৬ জুলাইয়ে প্রকল্পটি একনেকে অনুমোদন পাওয়ার পর দরপত্র আহ্বান করে কউক। দু’ভাগে বিভক্ত প্রকল্পটিতে সর্বনিম্ন দরদাতা হিসেবে কাজ পেয়েছে ন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেড (এনডিই) এবং তাহের ব্রাদার্স নামে দুটি প্রতিষ্ঠান। এনডিই অনুমতি পেয়েছে হাশেমিয়া মাদ্রাসা হতে হলিডে মোড়’ ২ দশমিক ৪৫ কিলোমিটার কাজের।

কউকের নির্দেশনা অনুযায়ী ২০২২ সালের জুলাই মাসে কাজ বুঝিয়ে দেয়ার কথা তাদের। আর তাহের ব্রাদার্স পেয়েছে প্রকল্পের হাশেমিয়া মাদ্রাসা হতে বাসস্ট্যান্ড ২ দশমিক ২১০ কিলোমিটার সড়কের কাজ। তারাও কাজ বুঝিয়ে দেবে একই সময়ে।

কিন্তু ২০২০ সালের অক্টোবরের শেষ দিকে শুরু হওয়া কাজের ১৬ মাস অতিক্রম হলেও এখনো ড্রেইন তৈরির কাজও সমাপ্ত করতে পারেনি প্রতিষ্ঠান দুটি। উল্টো পরিকল্পনাহীন খোঁড়াখুঁড়ির ফলে শহরের অভ্যন্তরে সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়েছে। আদালত ও সরকারি দপ্তরবেষ্টিত এলাকা হিসেবে সবচেয়ে কাহিল অবস্থা হাশেমিয়া মাদ্রাসা হতে হলিডে মোড় সড়ক এলাকায়। কিছু কিছু স্থানে হাতে গোনা কয়েকজন শ্রমিক দিয়ে ড্রেনের কাজ করা হচ্ছে। কচ্ছপগতির কাজে ভোগান্তি বেড়েছে পৌরবাসী ও জেলা প্রশাসন অফিসে আসা সেবা প্রার্থীদের। ঘটছে দুর্ঘটনাও। সবচেয়ে বেশি ভেগান্তিতে পড়েছেন ব্যবসায়ী, শিক্ষার্থী, রোগী, গর্ভবতীরা।

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেড (এনডিই)’র প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটর প্রকৌশলী আরিফুর রহমান বলেন, সহজভাবে কাজ করতে পর্যাপ্ত সুযোগ না পাওয়ায় আমাদের ব্যয়ভার বেড়ে যাচ্ছে। তবে সময় মতো কাজ শেষ করার চেষ্টা চলছে বলে তিনি জানান।

কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম বলেন, পর্যটন মৌসুমে অতিরিক্ত যানবাহন প্রবেশ, পার্কিংয়ের জায়গার সঙ্কট এবং রাস্তার উন্নয়ন কাজ চলমান থাকায় এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। আশাকরি খুব দ্রুত এটি সমাধান হবে।

back to top