‘পুনরায় পরীক্ষা নিতে ফের অর্থ বরাদ্দ দিতে হবে’
প্রশ্নপত্র ‘ফাঁসের’ অভিযোগে বাতিল হওয়া কর্মচারী নিয়োগ পরীক্ষা নিয়ে সংকটে পড়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি)। একদিকে জনবল স্বল্পতা দিন দিন তীব্র হচ্ছে। বর্তমানে প্রায় ২৫ শতাংশ শিক্ষক-কর্মচারীর পদ ফাঁকা। অন্যদিকে নিয়োগের জন্য বরাদ্দ থাকা অর্থ চলতি অর্থবছরেই ফেরত যাচ্ছে। পুনরায় পরীক্ষা নিতে এখন নতুন অর্থবছরে এ খাতে আবারও বরাদ্দ রাখতে হবে। এই অবস্থায় মাউশির নিয়োগ কার্যক্রম পরিচালনার কাজ পেতে আবেদন করেছে ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের বিজনেস স্টাডিজ অনুষদ।
মাউশির নিয়োগ পরীক্ষার কাজ পেতে মঙ্গলবার (২৪ মে) সংস্থাটিতে ঢাবির বিজনেস স্টাডিজ অনুষদের ‘সেন্টার ফর প্রজেক্ট ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস’ (এমআইএস) এর পক্ষ থেকে আবেদন করা হয়েছে।
জানতে চাইলে মাউশির পরিচালক (কলেজ ও প্রশাসন) ও কর্মচারী নিয়োগ কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক শাহেদুল খবির চৌধুরী সংবাদকে বলেন, ‘তারা আবেদন করেছেন... করতেই পারেন। কিন্তু আমাদের আর্থিক সীমাবদ্ধতা রয়েছে; শিক্ষা এবং অর্থ মন্ত্রণালয়ের দিকনির্দেশনা অনুযায়ী তা করতে হচ্ছে।’
এখন অন্য কোন সংস্থা বা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে এই নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার সুযোগ নেই জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের এখন নির্দেশনা আছে, স্ব স্ব সংস্থাই তাদের নিয়োগ কার্যক্রম পরিচালনা করবে।’
কবে নাগাদ এই নিয়োগ পরীক্ষা পুনরায় নেয়া হতে পারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি এখন বলা মুশকিল। এই অর্থবছরে করা যাবে না। সময় লাগবে। নতুন বাজেটে অর্থ বরাদ্দ আসলে তখন করতে হবে। তবে যারা আবেদন করেছেন তারাই পরীক্ষায় অংশ নেবেন।’ এ সংক্রান্ত সময়সূচি পরবর্তীতে জানিয়ে দেয়া হবে বলে জানান অধ্যাপক শাহেদুল খবির চৌধুরী।
মাউশির সংশ্লিষ্ট একাধিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, অন্য কোন সংস্থার মাধ্যমে নিয়োগ পরীক্ষা নিতে হলে প্রতি খাতা বা আবেদনকারীপ্রতি ন্যূনতম ২০ থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত গুনতে হয়। কিন্তু স্ব স্ব সংস্থার অধীনে এই পরীক্ষা নেয়া হলে খরচ হয় অর্ধেকেরও কম।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের এক প্রতিবেদনে দেখা গেছে, এই বিভাগের অধীনে দেশের ১৭টি অধিদপ্তর ও সংস্থায় (সব সরকারি হাইস্কুল ও কলেজসহ) মোট ৪৯ হাজার ৪৫৭টি শিক্ষক-কর্মচারী ও কর্মকর্তার পদ রয়েছে। এর মধ্যে গত মার্চ পর্যন্ত মোট ১২ হাজার ৩৫৩টি পদ ফাঁকা ছিল। এ হিসাবে প্রায় ২৫ শতাংশ পদই শূন্য। জনবল স্বল্পতার কারণে শিক্ষা ও দাপ্তরিক কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে বলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
ঢাবির ‘সেন্টার ফর প্রজেক্ট ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস’-এর নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক ড. আকরাম হোসেন স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়েছে, তারা গত ১২ বছর ধরে ‘সফলতার’ সঙ্গে বেসরকারি ও সরকারি ব্যাংক, বীমাসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের নিয়োগ সংক্রান্ত সব কার্যক্রম ‘গোপনীয়তার, নিষ্ঠা ও বিশ^স্ততার সঙ্গে স্বল্প সময়ের মধ্যে সম্পন্ন করে বিভাগের সাফল্য ধরে রাখতে সক্ষম’ হয়েছেন।
ড. আকরাম হোসেন জানান, তারা ‘বড় ধরনের নিয়োগ পরীক্ষার কার্য সম্পাদনের জন্য স্বয়ংসম্পূর্ণ’। তিনি বলেন, ‘পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের বড় নিয়োগ (আট লাখ প্রার্থী) পরীক্ষা সারাদেশে আমাদের মাধ্যমে একযোগে অনুষ্ঠিত হয়েছিল।’
নিয়োগ কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ‘সেন্টার ফর প্রজেক্ট ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস’র ‘ভৌত অবকাঠামো বিদ্যমান রয়েছে’ উল্লেখ করে চিঠিতে বলা হয়, এ বিষয়ে তাদের ছয়জন সিনিয়র অধ্যাপকের নেতৃত্বে একটি কমিটি রয়েছে, যার চেয়ারম্যান ও আহ্বায়ক হলেন অধ্যাপক আকরাম হোসেন।
গত ১৩ মে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের অফিস সহকারী কাম-কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক পদে নিয়োগের জন্য ঢাকার ৬১টি কেন্দ্রে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এতে ৫১৩টি পদের বিপরীতে পরীক্ষার্থী ছিলেন এক লাখ ৮৩ হাজার।
এই নিয়োগ পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ উঠে। পরীক্ষার দিন থেকে প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগে বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের এক সদস্য, মাউশির এক কর্মচারীসহ কয়েকজন ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
এরপর প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনার প্রাথমিক তদন্তের পর নিয়োগ পরীক্ষা বাতিল চেয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে সুপারিশ পাঠায় পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ। এর আলোকেই পরীক্ষা বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয় মাউশি।
যদিও কতজন পরীক্ষার্থী ‘ফাঁস হওয়া’ প্রশ্নপত্র পেয়েছিল সে সর্ম্পকে মাউশির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা কোন তথ্য দিতে পারেননি।
২০ মে রাতে মাউশির পরিচালক (কলেজ ও প্রশাসন) অধ্যাপক শাহেদুল খবির চৌধুরী স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের জনবল নিয়োগের লক্ষ্যে গত ১৩ মে বেলা ৩টা থেকে ৪টা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক পদের লিখিত পরীক্ষা (এমসিকিউ) অনিবার্য কারণে বাতিল করা হলো।
মাউশির মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদ ঘোষণা দিয়েছেন, প্রশ্নপত্র ফাঁসের সঙ্গে মাউশির কোন চক্র জড়িত থাকলে এর উৎস খুঁজে বের করা হবে। যদিও তিনি এখন পর্যন্ত এ ঘটা তদন্তে কোন কমিটি গঠনের উদ্যোগ নেননি।
‘পুনরায় পরীক্ষা নিতে ফের অর্থ বরাদ্দ দিতে হবে’
মঙ্গলবার, ২৪ মে ২০২২
প্রশ্নপত্র ‘ফাঁসের’ অভিযোগে বাতিল হওয়া কর্মচারী নিয়োগ পরীক্ষা নিয়ে সংকটে পড়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি)। একদিকে জনবল স্বল্পতা দিন দিন তীব্র হচ্ছে। বর্তমানে প্রায় ২৫ শতাংশ শিক্ষক-কর্মচারীর পদ ফাঁকা। অন্যদিকে নিয়োগের জন্য বরাদ্দ থাকা অর্থ চলতি অর্থবছরেই ফেরত যাচ্ছে। পুনরায় পরীক্ষা নিতে এখন নতুন অর্থবছরে এ খাতে আবারও বরাদ্দ রাখতে হবে। এই অবস্থায় মাউশির নিয়োগ কার্যক্রম পরিচালনার কাজ পেতে আবেদন করেছে ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের বিজনেস স্টাডিজ অনুষদ।
মাউশির নিয়োগ পরীক্ষার কাজ পেতে মঙ্গলবার (২৪ মে) সংস্থাটিতে ঢাবির বিজনেস স্টাডিজ অনুষদের ‘সেন্টার ফর প্রজেক্ট ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস’ (এমআইএস) এর পক্ষ থেকে আবেদন করা হয়েছে।
জানতে চাইলে মাউশির পরিচালক (কলেজ ও প্রশাসন) ও কর্মচারী নিয়োগ কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক শাহেদুল খবির চৌধুরী সংবাদকে বলেন, ‘তারা আবেদন করেছেন... করতেই পারেন। কিন্তু আমাদের আর্থিক সীমাবদ্ধতা রয়েছে; শিক্ষা এবং অর্থ মন্ত্রণালয়ের দিকনির্দেশনা অনুযায়ী তা করতে হচ্ছে।’
এখন অন্য কোন সংস্থা বা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে এই নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার সুযোগ নেই জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের এখন নির্দেশনা আছে, স্ব স্ব সংস্থাই তাদের নিয়োগ কার্যক্রম পরিচালনা করবে।’
কবে নাগাদ এই নিয়োগ পরীক্ষা পুনরায় নেয়া হতে পারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি এখন বলা মুশকিল। এই অর্থবছরে করা যাবে না। সময় লাগবে। নতুন বাজেটে অর্থ বরাদ্দ আসলে তখন করতে হবে। তবে যারা আবেদন করেছেন তারাই পরীক্ষায় অংশ নেবেন।’ এ সংক্রান্ত সময়সূচি পরবর্তীতে জানিয়ে দেয়া হবে বলে জানান অধ্যাপক শাহেদুল খবির চৌধুরী।
মাউশির সংশ্লিষ্ট একাধিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, অন্য কোন সংস্থার মাধ্যমে নিয়োগ পরীক্ষা নিতে হলে প্রতি খাতা বা আবেদনকারীপ্রতি ন্যূনতম ২০ থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত গুনতে হয়। কিন্তু স্ব স্ব সংস্থার অধীনে এই পরীক্ষা নেয়া হলে খরচ হয় অর্ধেকেরও কম।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের এক প্রতিবেদনে দেখা গেছে, এই বিভাগের অধীনে দেশের ১৭টি অধিদপ্তর ও সংস্থায় (সব সরকারি হাইস্কুল ও কলেজসহ) মোট ৪৯ হাজার ৪৫৭টি শিক্ষক-কর্মচারী ও কর্মকর্তার পদ রয়েছে। এর মধ্যে গত মার্চ পর্যন্ত মোট ১২ হাজার ৩৫৩টি পদ ফাঁকা ছিল। এ হিসাবে প্রায় ২৫ শতাংশ পদই শূন্য। জনবল স্বল্পতার কারণে শিক্ষা ও দাপ্তরিক কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে বলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
ঢাবির ‘সেন্টার ফর প্রজেক্ট ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস’-এর নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক ড. আকরাম হোসেন স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়েছে, তারা গত ১২ বছর ধরে ‘সফলতার’ সঙ্গে বেসরকারি ও সরকারি ব্যাংক, বীমাসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের নিয়োগ সংক্রান্ত সব কার্যক্রম ‘গোপনীয়তার, নিষ্ঠা ও বিশ^স্ততার সঙ্গে স্বল্প সময়ের মধ্যে সম্পন্ন করে বিভাগের সাফল্য ধরে রাখতে সক্ষম’ হয়েছেন।
ড. আকরাম হোসেন জানান, তারা ‘বড় ধরনের নিয়োগ পরীক্ষার কার্য সম্পাদনের জন্য স্বয়ংসম্পূর্ণ’। তিনি বলেন, ‘পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের বড় নিয়োগ (আট লাখ প্রার্থী) পরীক্ষা সারাদেশে আমাদের মাধ্যমে একযোগে অনুষ্ঠিত হয়েছিল।’
নিয়োগ কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ‘সেন্টার ফর প্রজেক্ট ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস’র ‘ভৌত অবকাঠামো বিদ্যমান রয়েছে’ উল্লেখ করে চিঠিতে বলা হয়, এ বিষয়ে তাদের ছয়জন সিনিয়র অধ্যাপকের নেতৃত্বে একটি কমিটি রয়েছে, যার চেয়ারম্যান ও আহ্বায়ক হলেন অধ্যাপক আকরাম হোসেন।
গত ১৩ মে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের অফিস সহকারী কাম-কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক পদে নিয়োগের জন্য ঢাকার ৬১টি কেন্দ্রে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এতে ৫১৩টি পদের বিপরীতে পরীক্ষার্থী ছিলেন এক লাখ ৮৩ হাজার।
এই নিয়োগ পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ উঠে। পরীক্ষার দিন থেকে প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগে বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের এক সদস্য, মাউশির এক কর্মচারীসহ কয়েকজন ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
এরপর প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনার প্রাথমিক তদন্তের পর নিয়োগ পরীক্ষা বাতিল চেয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে সুপারিশ পাঠায় পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ। এর আলোকেই পরীক্ষা বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয় মাউশি।
যদিও কতজন পরীক্ষার্থী ‘ফাঁস হওয়া’ প্রশ্নপত্র পেয়েছিল সে সর্ম্পকে মাউশির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা কোন তথ্য দিতে পারেননি।
২০ মে রাতে মাউশির পরিচালক (কলেজ ও প্রশাসন) অধ্যাপক শাহেদুল খবির চৌধুরী স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের জনবল নিয়োগের লক্ষ্যে গত ১৩ মে বেলা ৩টা থেকে ৪টা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক পদের লিখিত পরীক্ষা (এমসিকিউ) অনিবার্য কারণে বাতিল করা হলো।
মাউশির মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদ ঘোষণা দিয়েছেন, প্রশ্নপত্র ফাঁসের সঙ্গে মাউশির কোন চক্র জড়িত থাকলে এর উৎস খুঁজে বের করা হবে। যদিও তিনি এখন পর্যন্ত এ ঘটা তদন্তে কোন কমিটি গঠনের উদ্যোগ নেননি।