কাঁদছেন ইয়াসমিনের মা, দশমাইল এলাকায় ইয়াসমিনের স্মৃতিস্তম্ভ -সংবাদ
‘মা, বাঁচাও বাঁচাও ওরা আমাকে মেরে ফেলছে’ স্বপ্নে ইয়াসমিনের চিৎকার শুনে মাঝ রাতে আমার ঘুম ভেঙে যায়। বাকি রাতটুকু ডুকরে ডুকরে কাঁদি। কিশোরী ইয়াসমিনের মা শরীফা বেগম ২৬ বছর ধরে মেয়ের কষ্ট বুকে ধরে দিন কাটাচ্ছেন। আর অভাব-অনটন আছেই। আশ্বাস দিয়েছিলেন অনেকেই তাকে চাকরি দেয়া হবে। তবে কেউ কথা রাখেনি। এখন তার চাকরির বয়স ফুরিয়ে গেছে।
মঙ্গলাবার (২৩ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে দিনাজপুর শহরের গোলাপবাগ এলাকায় শরীফা বেগমের বাড়ি গিয়ে দেখা গেল মেয়ে ইয়াসমিনের ছবি হাতে নিয়ে কাঁদছেন। মেয়ের স্মৃতি আজও ভুলতে পারেননি। ২৬ বছর আগে ১৯৯৫ সালের ২৪ আগস্ট তার কিশোরী কন্যা ইয়াসমিন ঢাকা থেকে দিনাজপুরের বাড়িতে আসার পথে কিছু বিপথগামী পুলিশ দ্বারা ধর্ষণ ও নির্মমভাবে হত্যার শিকার হয়।
শরীফা বেগমের এক শতাংশ জমির উপর ইটের দেয়াল ও টিনের চালা দুই রুম বিশিষ্ট বাড়ি। ঘর দুটিতে আসবাবপত্র তেমন কিছু নেই। দুই ঘরে দুটি চৌকি, দুটি টেবিল।
ঘরের চৌকিতে বসেই তার সঙ্গে কথা বললাম নানা বিষয়ে।
তিনি জানালেন, ইয়াসমিনের কথা এখনও ভুলতে পারিনি। প্রায় রাতেই তাকে স্বপ্নে দেখি। স্বপ্নে দেখি ইয়াসমিন চিৎকার দিয়ে বলছে, মা বাঁচাও বাঁচাও ওরা আমাকে মেরে ফেলছে’ স্বপ্নের মাঝে ঘুম ভেঙে যায় আর বাকি রাত ডুকরে ডুকরে কাঁদি।
আমি চাই আমার ইয়াসমিনের মতো এ ধরনের ঘটনায় আর যেন কোন মায়ের কোল খালি না হয়। শরীফা বেগম বলেন ইয়াসমিনের নির্মম নৃশংস হত্যাকান্ডে দিনাজপুরের সর্বস্তরের মানুষ যেভাবে প্রতিবাদে ফেটে পড়েছিল সেজন্য দিনাজপুরবাসীর কাছে কৃতজ্ঞতা জানানোর ভাষা আমার জানা নাই। তবে সর্বস্তরের মানুষ এভাবে প্রতিবাদে ফেটে না পড়লে আমার ইয়াসমিন হত্যাকারীদের বিচার হতো না। হত্যাকান্ডের সঙ্গে জড়িতদের মৃত্যুদন্ডাদেশ কার্যকর হওয়ায় তিনি খুশি।
তিনি বলেন, ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর দিনাজপুর সার্কিট হাউজে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করি। সে সময় তিনি বাড়ি তৈরি করার জন্য আর্থিক সহযোগিতা দিয়েছিলেন। প্রধানমন্ত্রীর দেয়া অর্থ দিয়েই এই দুটি ঘর তৈরি করেছি এবং তাতেই মাথাগোঁজার ঠাঁই করতে পেরেছি। তাকে (প্রধানমন্ত্রী) আমি অন্তর থেকে দোয়া করি, তিনি যেন সুস্থ থাকেন, ভালো থাকেন। তবে তিনি আক্ষেপ করে বলেন, প্রধানমন্ত্রী সে সময় স্থানীয় প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছিলেন আমাকে একটা চাকরি দেয়ার জন্য। প্রশাসনের দরজায় অনেক ঘুরেছি, কিন্তু আমার চাকরি হয়নি। আর এখন তো বয়সই ফুরিয়ে গেছে। এখন বয়সের কারণে তিনি কোন পরিশ্রমের কাজ করতে পারেন না। সংসার চলছে টানাপোড়নের মধ্যে।
প্রতি বছরই ২৪ আগস্ট তার সামর্থ্য অনুযায়ী ইয়াসমিনের জন্য বাড়িতে দোয়া-খায়ের অনুষ্ঠান করেন। এবারও বাড়িতে সকাল থেকে কোরানখানি এবং বাদ আসর দোয়া আনুষ্ঠান করবেন।
কাঁদছেন ইয়াসমিনের মা, দশমাইল এলাকায় ইয়াসমিনের স্মৃতিস্তম্ভ -সংবাদ
মঙ্গলবার, ২৩ আগস্ট ২০২২
‘মা, বাঁচাও বাঁচাও ওরা আমাকে মেরে ফেলছে’ স্বপ্নে ইয়াসমিনের চিৎকার শুনে মাঝ রাতে আমার ঘুম ভেঙে যায়। বাকি রাতটুকু ডুকরে ডুকরে কাঁদি। কিশোরী ইয়াসমিনের মা শরীফা বেগম ২৬ বছর ধরে মেয়ের কষ্ট বুকে ধরে দিন কাটাচ্ছেন। আর অভাব-অনটন আছেই। আশ্বাস দিয়েছিলেন অনেকেই তাকে চাকরি দেয়া হবে। তবে কেউ কথা রাখেনি। এখন তার চাকরির বয়স ফুরিয়ে গেছে।
মঙ্গলাবার (২৩ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে দিনাজপুর শহরের গোলাপবাগ এলাকায় শরীফা বেগমের বাড়ি গিয়ে দেখা গেল মেয়ে ইয়াসমিনের ছবি হাতে নিয়ে কাঁদছেন। মেয়ের স্মৃতি আজও ভুলতে পারেননি। ২৬ বছর আগে ১৯৯৫ সালের ২৪ আগস্ট তার কিশোরী কন্যা ইয়াসমিন ঢাকা থেকে দিনাজপুরের বাড়িতে আসার পথে কিছু বিপথগামী পুলিশ দ্বারা ধর্ষণ ও নির্মমভাবে হত্যার শিকার হয়।
শরীফা বেগমের এক শতাংশ জমির উপর ইটের দেয়াল ও টিনের চালা দুই রুম বিশিষ্ট বাড়ি। ঘর দুটিতে আসবাবপত্র তেমন কিছু নেই। দুই ঘরে দুটি চৌকি, দুটি টেবিল।
ঘরের চৌকিতে বসেই তার সঙ্গে কথা বললাম নানা বিষয়ে।
তিনি জানালেন, ইয়াসমিনের কথা এখনও ভুলতে পারিনি। প্রায় রাতেই তাকে স্বপ্নে দেখি। স্বপ্নে দেখি ইয়াসমিন চিৎকার দিয়ে বলছে, মা বাঁচাও বাঁচাও ওরা আমাকে মেরে ফেলছে’ স্বপ্নের মাঝে ঘুম ভেঙে যায় আর বাকি রাত ডুকরে ডুকরে কাঁদি।
আমি চাই আমার ইয়াসমিনের মতো এ ধরনের ঘটনায় আর যেন কোন মায়ের কোল খালি না হয়। শরীফা বেগম বলেন ইয়াসমিনের নির্মম নৃশংস হত্যাকান্ডে দিনাজপুরের সর্বস্তরের মানুষ যেভাবে প্রতিবাদে ফেটে পড়েছিল সেজন্য দিনাজপুরবাসীর কাছে কৃতজ্ঞতা জানানোর ভাষা আমার জানা নাই। তবে সর্বস্তরের মানুষ এভাবে প্রতিবাদে ফেটে না পড়লে আমার ইয়াসমিন হত্যাকারীদের বিচার হতো না। হত্যাকান্ডের সঙ্গে জড়িতদের মৃত্যুদন্ডাদেশ কার্যকর হওয়ায় তিনি খুশি।
তিনি বলেন, ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর দিনাজপুর সার্কিট হাউজে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করি। সে সময় তিনি বাড়ি তৈরি করার জন্য আর্থিক সহযোগিতা দিয়েছিলেন। প্রধানমন্ত্রীর দেয়া অর্থ দিয়েই এই দুটি ঘর তৈরি করেছি এবং তাতেই মাথাগোঁজার ঠাঁই করতে পেরেছি। তাকে (প্রধানমন্ত্রী) আমি অন্তর থেকে দোয়া করি, তিনি যেন সুস্থ থাকেন, ভালো থাকেন। তবে তিনি আক্ষেপ করে বলেন, প্রধানমন্ত্রী সে সময় স্থানীয় প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছিলেন আমাকে একটা চাকরি দেয়ার জন্য। প্রশাসনের দরজায় অনেক ঘুরেছি, কিন্তু আমার চাকরি হয়নি। আর এখন তো বয়সই ফুরিয়ে গেছে। এখন বয়সের কারণে তিনি কোন পরিশ্রমের কাজ করতে পারেন না। সংসার চলছে টানাপোড়নের মধ্যে।
প্রতি বছরই ২৪ আগস্ট তার সামর্থ্য অনুযায়ী ইয়াসমিনের জন্য বাড়িতে দোয়া-খায়ের অনুষ্ঠান করেন। এবারও বাড়িতে সকাল থেকে কোরানখানি এবং বাদ আসর দোয়া আনুষ্ঠান করবেন।