alt

সারাদেশ

২৬ বছর মেয়ের কষ্ট বুকে নিয়ে দিন কাটান মা

চিত্ত ঘোষ, দিনাজপুর : মঙ্গলবার, ২৩ আগস্ট ২০২২

কাঁদছেন ইয়াসমিনের মা, দশমাইল এলাকায় ইয়াসমিনের স্মৃতিস্তম্ভ -সংবাদ

‘মা, বাঁচাও বাঁচাও ওরা আমাকে মেরে ফেলছে’ স্বপ্নে ইয়াসমিনের চিৎকার শুনে মাঝ রাতে আমার ঘুম ভেঙে যায়। বাকি রাতটুকু ডুকরে ডুকরে কাঁদি। কিশোরী ইয়াসমিনের মা শরীফা বেগম ২৬ বছর ধরে মেয়ের কষ্ট বুকে ধরে দিন কাটাচ্ছেন। আর অভাব-অনটন আছেই। আশ্বাস দিয়েছিলেন অনেকেই তাকে চাকরি দেয়া হবে। তবে কেউ কথা রাখেনি। এখন তার চাকরির বয়স ফুরিয়ে গেছে।

মঙ্গলাবার (২৩ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে দিনাজপুর শহরের গোলাপবাগ এলাকায় শরীফা বেগমের বাড়ি গিয়ে দেখা গেল মেয়ে ইয়াসমিনের ছবি হাতে নিয়ে কাঁদছেন। মেয়ের স্মৃতি আজও ভুলতে পারেননি। ২৬ বছর আগে ১৯৯৫ সালের ২৪ আগস্ট তার কিশোরী কন্যা ইয়াসমিন ঢাকা থেকে দিনাজপুরের বাড়িতে আসার পথে কিছু বিপথগামী পুলিশ দ্বারা ধর্ষণ ও নির্মমভাবে হত্যার শিকার হয়।

শরীফা বেগমের এক শতাংশ জমির উপর ইটের দেয়াল ও টিনের চালা দুই রুম বিশিষ্ট বাড়ি। ঘর দুটিতে আসবাবপত্র তেমন কিছু নেই। দুই ঘরে দুটি চৌকি, দুটি টেবিল।

ঘরের চৌকিতে বসেই তার সঙ্গে কথা বললাম নানা বিষয়ে।

তিনি জানালেন, ইয়াসমিনের কথা এখনও ভুলতে পারিনি। প্রায় রাতেই তাকে স্বপ্নে দেখি। স্বপ্নে দেখি ইয়াসমিন চিৎকার দিয়ে বলছে, মা বাঁচাও বাঁচাও ওরা আমাকে মেরে ফেলছে’ স্বপ্নের মাঝে ঘুম ভেঙে যায় আর বাকি রাত ডুকরে ডুকরে কাঁদি।

আমি চাই আমার ইয়াসমিনের মতো এ ধরনের ঘটনায় আর যেন কোন মায়ের কোল খালি না হয়। শরীফা বেগম বলেন ইয়াসমিনের নির্মম নৃশংস হত্যাকান্ডে দিনাজপুরের সর্বস্তরের মানুষ যেভাবে প্রতিবাদে ফেটে পড়েছিল সেজন্য দিনাজপুরবাসীর কাছে কৃতজ্ঞতা জানানোর ভাষা আমার জানা নাই। তবে সর্বস্তরের মানুষ এভাবে প্রতিবাদে ফেটে না পড়লে আমার ইয়াসমিন হত্যাকারীদের বিচার হতো না। হত্যাকান্ডের সঙ্গে জড়িতদের মৃত্যুদন্ডাদেশ কার্যকর হওয়ায় তিনি খুশি।

তিনি বলেন, ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর দিনাজপুর সার্কিট হাউজে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করি। সে সময় তিনি বাড়ি তৈরি করার জন্য আর্থিক সহযোগিতা দিয়েছিলেন। প্রধানমন্ত্রীর দেয়া অর্থ দিয়েই এই দুটি ঘর তৈরি করেছি এবং তাতেই মাথাগোঁজার ঠাঁই করতে পেরেছি। তাকে (প্রধানমন্ত্রী) আমি অন্তর থেকে দোয়া করি, তিনি যেন সুস্থ থাকেন, ভালো থাকেন। তবে তিনি আক্ষেপ করে বলেন, প্রধানমন্ত্রী সে সময় স্থানীয় প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছিলেন আমাকে একটা চাকরি দেয়ার জন্য। প্রশাসনের দরজায় অনেক ঘুরেছি, কিন্তু আমার চাকরি হয়নি। আর এখন তো বয়সই ফুরিয়ে গেছে। এখন বয়সের কারণে তিনি কোন পরিশ্রমের কাজ করতে পারেন না। সংসার চলছে টানাপোড়নের মধ্যে।

প্রতি বছরই ২৪ আগস্ট তার সামর্থ্য অনুযায়ী ইয়াসমিনের জন্য বাড়িতে দোয়া-খায়ের অনুষ্ঠান করেন। এবারও বাড়িতে সকাল থেকে কোরানখানি এবং বাদ আসর দোয়া আনুষ্ঠান করবেন।

বগুড়ায় বিষাক্ত মদ খেয়ে ২ জনের মৃত্যৃ, অসুস্থ্য ২

ছবি

গফরগাঁওয়ে সংঘর্ষের আশঙ্কায় ঈদগাহ মাঠে ১৪৪ ধারা

জামালপুরে সরকারি পুকুর থেকে মাছ চুরি, বিএনপি নেতার নামে মামলা, দল থেকে অব্যাহতি

ছবি

বরগুনায় শেখ হাসিনার নামে ঈদসামগ্রী বিতরণ, বিএনপির বিক্ষোভ

সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে দেশের বিভিন্ন জেলায় ঈদ উদ্‌যাপন

ছবি

ময়মনসিংহে বাস চাপায় একই পরিবারের ৪ জনের মৃত্যু

সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে জামালপুরের ১৬ গ্রামে ঈদ উদ্‌যাপন

সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জে বৌলাই নদীতে নৌকাডুবি নিহত-৪ আহত-১০

ছবি

চট্টগ্রামে প্রাইভেট কার থামিয়ে গুলি: নিহত ২, আহত ২

ছবি

সাইকেলে চরে শরণখোলায় এলেন নেদারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত

ছবি

পলাশে ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের মাঝে ঈদ উপহার বিতরণ

ছবি

ঈদের টানা ছুটিতে পর্যটক-দর্শনার্থীদের বরণে প্রস্তুত ডুলাহাজারা সাফারি পার্ক

নোয়াখালীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের বিরুদ্ধে মামলা

নাসিরনগরে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে অটোচালকের মৃত্যু

ছবি

মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায় ৩৯.৮ ডিগ্রি, বইছে মাঝারি তাপপ্রবাহ

দোহারে দুস্থ অসহায় পরিবারে মাঝে ঈদ উপহার বিতরণ

ঈদে মিলল না রসিকের অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারী ফরিদ আহাম্মেদের গ্রাচুয়িটিসহ অন্য পাওনা

ঈদে বান্দরবানে ৮০ শতাংশ হোটেল বুকিংসম্পন্ন, হতাশ থানচি-রুমার ব্যবসায়ীরা

মেহেন্দিগঞ্জে নোঙর করা লঞ্চে আগুন

চট্টগ্রামে সাবেক এমপিপুত্র গ্রেপ্তার

ঈদ উপলক্ষে বরিশালমুখি জনস্রোত শুরু হলেও গুটিয়ে রয়েছে রাষ্ট্রীয় পরিবহন সংস্থাগুলো

ছবি

বীরগঞ্জে ঈদের ছুটিতেও বেচাকেনা জমজমাট, ভিড় বাড়ছে ফুটপাতে

জুলাই-আগস্টে শহীদ ও আহত পরিবারের মাঝে চেক প্রদান

ঘোড়াঘাটে ভ্রাম্যমাণ আদালতে বালু ব্যবসায়ী দণ্ডিত

ছবি

মীরসরাইয়ে ২০ কৃষকের সূর্যমুখী চাষে সফলতা

ট্রেনে-বাসে চট্টগ্রাম নগরী ছাড়ছে মানুষ

ছবি

ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে যানবাহনের চাপ থাকলেও যানজট নেই

ছবি

গাজীপুরের সড়কে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে পুলিশের সঙ্গী শিক্ষার্থীরা

তরুলতা রক্তদান সংগঠনের ইফতার সামগ্রী বিতরণ

স্বেচ্ছাসেবক দলের ২ নেতার বিরুদ্ধে ছিনতাইয়ের অভিযোগ

ছুটির দিনে বেতন উত্তোলন করতে পেরে খুশি শিক্ষকরা

গৌরীপুরে চলন্ত ট্রেনে পাথর নিক্ষেপ, চালক আহত

টানা ৪০ দিন জামাতে নামাজ আদায় করে পুরস্কার পেল ২১ কিশোর-তরুণ

নন্দীগ্রামে বাস চাপায় শিক্ষিকা নিহত

মসজিদের ছাদ থেকে পক্ষাঘাত রোগীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার

শিবগঞ্জে প্রথম স্ত্রীকে হত্যা, দ্বিতীয় স্ত্রীসহ স্বামী গ্রেপ্তার

tab

সারাদেশ

২৬ বছর মেয়ের কষ্ট বুকে নিয়ে দিন কাটান মা

চিত্ত ঘোষ, দিনাজপুর

কাঁদছেন ইয়াসমিনের মা, দশমাইল এলাকায় ইয়াসমিনের স্মৃতিস্তম্ভ -সংবাদ

মঙ্গলবার, ২৩ আগস্ট ২০২২

‘মা, বাঁচাও বাঁচাও ওরা আমাকে মেরে ফেলছে’ স্বপ্নে ইয়াসমিনের চিৎকার শুনে মাঝ রাতে আমার ঘুম ভেঙে যায়। বাকি রাতটুকু ডুকরে ডুকরে কাঁদি। কিশোরী ইয়াসমিনের মা শরীফা বেগম ২৬ বছর ধরে মেয়ের কষ্ট বুকে ধরে দিন কাটাচ্ছেন। আর অভাব-অনটন আছেই। আশ্বাস দিয়েছিলেন অনেকেই তাকে চাকরি দেয়া হবে। তবে কেউ কথা রাখেনি। এখন তার চাকরির বয়স ফুরিয়ে গেছে।

মঙ্গলাবার (২৩ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে দিনাজপুর শহরের গোলাপবাগ এলাকায় শরীফা বেগমের বাড়ি গিয়ে দেখা গেল মেয়ে ইয়াসমিনের ছবি হাতে নিয়ে কাঁদছেন। মেয়ের স্মৃতি আজও ভুলতে পারেননি। ২৬ বছর আগে ১৯৯৫ সালের ২৪ আগস্ট তার কিশোরী কন্যা ইয়াসমিন ঢাকা থেকে দিনাজপুরের বাড়িতে আসার পথে কিছু বিপথগামী পুলিশ দ্বারা ধর্ষণ ও নির্মমভাবে হত্যার শিকার হয়।

শরীফা বেগমের এক শতাংশ জমির উপর ইটের দেয়াল ও টিনের চালা দুই রুম বিশিষ্ট বাড়ি। ঘর দুটিতে আসবাবপত্র তেমন কিছু নেই। দুই ঘরে দুটি চৌকি, দুটি টেবিল।

ঘরের চৌকিতে বসেই তার সঙ্গে কথা বললাম নানা বিষয়ে।

তিনি জানালেন, ইয়াসমিনের কথা এখনও ভুলতে পারিনি। প্রায় রাতেই তাকে স্বপ্নে দেখি। স্বপ্নে দেখি ইয়াসমিন চিৎকার দিয়ে বলছে, মা বাঁচাও বাঁচাও ওরা আমাকে মেরে ফেলছে’ স্বপ্নের মাঝে ঘুম ভেঙে যায় আর বাকি রাত ডুকরে ডুকরে কাঁদি।

আমি চাই আমার ইয়াসমিনের মতো এ ধরনের ঘটনায় আর যেন কোন মায়ের কোল খালি না হয়। শরীফা বেগম বলেন ইয়াসমিনের নির্মম নৃশংস হত্যাকান্ডে দিনাজপুরের সর্বস্তরের মানুষ যেভাবে প্রতিবাদে ফেটে পড়েছিল সেজন্য দিনাজপুরবাসীর কাছে কৃতজ্ঞতা জানানোর ভাষা আমার জানা নাই। তবে সর্বস্তরের মানুষ এভাবে প্রতিবাদে ফেটে না পড়লে আমার ইয়াসমিন হত্যাকারীদের বিচার হতো না। হত্যাকান্ডের সঙ্গে জড়িতদের মৃত্যুদন্ডাদেশ কার্যকর হওয়ায় তিনি খুশি।

তিনি বলেন, ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর দিনাজপুর সার্কিট হাউজে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করি। সে সময় তিনি বাড়ি তৈরি করার জন্য আর্থিক সহযোগিতা দিয়েছিলেন। প্রধানমন্ত্রীর দেয়া অর্থ দিয়েই এই দুটি ঘর তৈরি করেছি এবং তাতেই মাথাগোঁজার ঠাঁই করতে পেরেছি। তাকে (প্রধানমন্ত্রী) আমি অন্তর থেকে দোয়া করি, তিনি যেন সুস্থ থাকেন, ভালো থাকেন। তবে তিনি আক্ষেপ করে বলেন, প্রধানমন্ত্রী সে সময় স্থানীয় প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছিলেন আমাকে একটা চাকরি দেয়ার জন্য। প্রশাসনের দরজায় অনেক ঘুরেছি, কিন্তু আমার চাকরি হয়নি। আর এখন তো বয়সই ফুরিয়ে গেছে। এখন বয়সের কারণে তিনি কোন পরিশ্রমের কাজ করতে পারেন না। সংসার চলছে টানাপোড়নের মধ্যে।

প্রতি বছরই ২৪ আগস্ট তার সামর্থ্য অনুযায়ী ইয়াসমিনের জন্য বাড়িতে দোয়া-খায়ের অনুষ্ঠান করেন। এবারও বাড়িতে সকাল থেকে কোরানখানি এবং বাদ আসর দোয়া আনুষ্ঠান করবেন।

back to top