চিতলমারী (বাগেরহাট) : বীরাঙ্গনা মুক্তিযোদ্ধা মানদা রায় মানবেতর জীবনে -সংবাদ
স্বাধীনতার বছর পরও সরকারি সুবিধা থেকে বঞ্চিত রয়েছেন বীরাঙ্গনা মানদা রায়। বীরাঙ্গনা মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতির জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত আবেদন করলেও নেই তদন্তের অগ্রগতি। স্বামী হারানোর শোক এবং পাকবাহিনী ও রাজাকারদের অত্যাচারের যন্ত্রণা আজও বয়ে বেড়াচ্ছেন তিনি। বীরাঙ্গনা মানদা রায় চিতলমারী উপজেলার চরবানিয়ারী ইউনিয়নের খলিশাখালী গ্রামের নির্মল চন্দ্র রায়ের স্ত্রী দুই কন্যার জননী। বর্তমানে তিনি চর-খলিশাখলী গ্রামের মেয়ে লিপিকার বাড়িতে থাকেন।
মানদা রায় জানান, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় আষাঢ়ের পাঁচ তারিখ রোববার বাবুগঞ্জ বাজার থেকে পাকবাহিনী আক্রমণ চালিয়ে খলিশাখালী গ্রামের দিকে আসে। অন্যদিকে চিতলমারী বাজারের দিকে থেকে রাজাকার বাহিনী আক্রমণ চালিয়ে গ্রামের দিকে আসতে থাকে। তাদের ভয়ে আমরা কয়েক গ্রামের হাজার হাজার লোক মাঠের পাট ও ধান খেত এবং হোগলা বনের ভেতর লুকাই। আমি কোলে মেয়ে নিয়ে ছিলাম পাট খেতের মধ্যে। এ সময় আমাকে দেখে দুই রাজাকার মুচকি হাসতে থাকে। আমি দৌড়ে পালাতে গেলে ওরা আমার দেড় মাস বয়সি মেয়েকে ছুড়ে ফেলে দিয়ে আমার কাপড় টেনে ধরে। এরপর আরও কিছু রাজাকার এসে আমাকে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। তখন আমার চিৎকার শুনে আমার স্বামী নির্মল চন্দ্র রায় ছুটে এলে ওরা তাকে গুলি করে হত্যা করে। এরপর আমার সঙ্গে কী হয়েছে বলতে পারব না, বলে কান্নায় ভেঙে পড়েন মানদা রায়। তিনি আরও বলেন, ওইদিন শত শত লোককে হত্যা করা হয়েছে, মানুষের ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। আর কত মা-বোনদের নির্যাতন করা হয়েছে তার ঠিক নেই।
স্থানীয় বীর মুক্তিযোদ্ধা বিপুল কান্তি মন্ডল, প্রমথ নাথ রায়, মৃম্ময় মন্ডল, শান্তি রঞ্জন মন্ডল, নির্মল চন্দ্র বিশ্বাস, মুকন্দ হীরা, হরবিলাস পোদ্দার ও যোগেন্দ্র নাথ রায় বলেন, মানদা রায় একজন প্রকৃত বীরাঙ্গনা মুক্তিযোদ্ধা। আমরা চাই তিনি মৃত্যুর আগে সরকারি স্বীকৃতি এবং সুযোগ-সুবিধা পান।
চিতলমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইয়েদা ফয়জুন্নেসা জানান, মানদা রায়ের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তদন্ত চলছে। তদন্তে সত্যতা মিললে তাকে রাষ্ট্রীয়ভাবে স্বীকৃতি দেয়ার জন্য মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন পাঠানো হবে।
চিতলমারী (বাগেরহাট) : বীরাঙ্গনা মুক্তিযোদ্ধা মানদা রায় মানবেতর জীবনে -সংবাদ
বৃহস্পতিবার, ০৮ ডিসেম্বর ২০২২
স্বাধীনতার বছর পরও সরকারি সুবিধা থেকে বঞ্চিত রয়েছেন বীরাঙ্গনা মানদা রায়। বীরাঙ্গনা মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতির জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত আবেদন করলেও নেই তদন্তের অগ্রগতি। স্বামী হারানোর শোক এবং পাকবাহিনী ও রাজাকারদের অত্যাচারের যন্ত্রণা আজও বয়ে বেড়াচ্ছেন তিনি। বীরাঙ্গনা মানদা রায় চিতলমারী উপজেলার চরবানিয়ারী ইউনিয়নের খলিশাখালী গ্রামের নির্মল চন্দ্র রায়ের স্ত্রী দুই কন্যার জননী। বর্তমানে তিনি চর-খলিশাখলী গ্রামের মেয়ে লিপিকার বাড়িতে থাকেন।
মানদা রায় জানান, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় আষাঢ়ের পাঁচ তারিখ রোববার বাবুগঞ্জ বাজার থেকে পাকবাহিনী আক্রমণ চালিয়ে খলিশাখালী গ্রামের দিকে আসে। অন্যদিকে চিতলমারী বাজারের দিকে থেকে রাজাকার বাহিনী আক্রমণ চালিয়ে গ্রামের দিকে আসতে থাকে। তাদের ভয়ে আমরা কয়েক গ্রামের হাজার হাজার লোক মাঠের পাট ও ধান খেত এবং হোগলা বনের ভেতর লুকাই। আমি কোলে মেয়ে নিয়ে ছিলাম পাট খেতের মধ্যে। এ সময় আমাকে দেখে দুই রাজাকার মুচকি হাসতে থাকে। আমি দৌড়ে পালাতে গেলে ওরা আমার দেড় মাস বয়সি মেয়েকে ছুড়ে ফেলে দিয়ে আমার কাপড় টেনে ধরে। এরপর আরও কিছু রাজাকার এসে আমাকে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। তখন আমার চিৎকার শুনে আমার স্বামী নির্মল চন্দ্র রায় ছুটে এলে ওরা তাকে গুলি করে হত্যা করে। এরপর আমার সঙ্গে কী হয়েছে বলতে পারব না, বলে কান্নায় ভেঙে পড়েন মানদা রায়। তিনি আরও বলেন, ওইদিন শত শত লোককে হত্যা করা হয়েছে, মানুষের ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। আর কত মা-বোনদের নির্যাতন করা হয়েছে তার ঠিক নেই।
স্থানীয় বীর মুক্তিযোদ্ধা বিপুল কান্তি মন্ডল, প্রমথ নাথ রায়, মৃম্ময় মন্ডল, শান্তি রঞ্জন মন্ডল, নির্মল চন্দ্র বিশ্বাস, মুকন্দ হীরা, হরবিলাস পোদ্দার ও যোগেন্দ্র নাথ রায় বলেন, মানদা রায় একজন প্রকৃত বীরাঙ্গনা মুক্তিযোদ্ধা। আমরা চাই তিনি মৃত্যুর আগে সরকারি স্বীকৃতি এবং সুযোগ-সুবিধা পান।
চিতলমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইয়েদা ফয়জুন্নেসা জানান, মানদা রায়ের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তদন্ত চলছে। তদন্তে সত্যতা মিললে তাকে রাষ্ট্রীয়ভাবে স্বীকৃতি দেয়ার জন্য মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন পাঠানো হবে।