ভালুকা (ময়মনসিংহ) : বিষমুক্ত আম বাগানে চাষি কামাল হোসেন -সংবাদ
ভালুকার ডাকাতিয়া ইউনিয়নের আউলিয়ার চালায় আমরোপালী ও বারিফুল জাতের বিষমুক্ত আমের আবাদ করে ব্যাপক সফলতা অর্জণ করে ভগ্যের চাকা ঘুরিয়েছেন এক সময়ের ভালুকা সদরের ফল ব্যবসায়ী কামাল হোসেন। মৌসুমী ফল আমের ব্যাপক চাহিদা থাকায় বর্তমানে ভালুকার বিভিন্ন এলাকায় বানিজ্যিক ভাবে আমরোপালী আম সহ বিভিন্ন জাতের আমের আবাদ অনেক বেড়ে গেছে। ভালুকার উৎপাদিত আম স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন জেলায় রপ্তানী করে চাষীরা লাভবান হচ্ছেন।
১৪ মে রোববার সরজমিন আউলিয়ার চালা গেলে দেখাযায় কামাল হোসেনের বাগানে সারি সারি গাছে বোটায় বোটায় ঝুলছে ছোট বড় আম আর আম। দেখে নিমিষেই রসনায় পানি এসে যায়। শ্রমিকদের নিয়ে বাগান ঘুরে ঘুরে আমের পরিচর্যা করছিলেন কামাল হোসেন। তিনি জানান তার বাড়ি ভালুকা পৌর এলাকার ১ নং ওয়ার্ড ভান্ডাব গ্রামে। প্রায় ৩০ বছর যাবৎ ভালুকা বাসস্ট্যন্ড বাজারে আম, কমলা, আপেল, আঙ্গুর, সৌদি খেজুরসহ নানা মৌসুমী ফলের ব্যবসা করে কোন রকমে সংসার চালাচ্ছিলেন তিনি। প্রতি মৌসুমে রাজশাহী থেকে আম এনে ভালুকায় খুচরা বাজারে বিক্রি করে আসছিলেন। আমদানী করা আমে ফরমালিন থাকায় অনেক সময় ক্রেতাদের অভিযোগের সম্মুখীন হতে হয়েছে। ভালুকার মাটি আম কাঠাল চাষে বেশ উপযোগী। তাই তিনি নিজে আম চাষ করার পরিকল্পনা করেন। কিন্ত নিজের জমি না থাকায় উপজেলার ডাকাতিয়া ইউনিয়নের আউলিয়ার চালায় কয়েকজন মালিকের নিকট হতে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা বাৎসরিক ভাড়ার চুক্তিতে ১০ বছরের জন্য ১০ একর অনাবাদি চালা জমি ভাড়া নেন। প্রথম বছর ওই জমিতে ৩ হাজার ৫০০ আমরোপালী ও বারিফুল জাতের আমের চারা রোপন করেন। দুই বছরের মাথায় ফল আসতে শুরু করে। চারা রোপন, পারিচর্যা, সার কীটনাশক, নিরাপত্তা বেষ্টনী ও যাবতীয় কাজ কর্ম বাবদ প্রায় ৮/৯ লাখ টাকার উপরে খরচ হয়েছে। গাছ ঘন হওয়ায় এক হাজার গাছ সরিয়ে ফেলায় বর্তমানে দুই হাজার পাঁচশ গাছ রয়েছে তার বাগানে। প্রতিটি গাছেই এখন প্রচুর ফল ধরেছে।
গত বছর তিনি ১৪ লাখ টাকার আম বিক্রি করেছেন। মে মাসের শেষের দিকে আম পাঁকা শুরু হলে বিভিন্ন এলাকার পাইকাররা বাগান হতে আম কিনে নিয়ে যায়। ফরমালিন ও বিষ মুক্ত আম হওয়ায় তার বাগানের আমের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। বিশেষ করে আমরোপালী আমে কোন আঁশ না থাকায় এ আম যেমন মিষ্টি তেমনি সুস্বাদু। তিনি নিজেও ভালুকা বাসস্ট্যান্ড বাজারে তার বাগানের আম খুচরা বিক্রি করে থাকেন। টাটকা ও ফরমালিন মুক্ত হওয়ায় কামাল হোসেনের রোপালী আমের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। ১২ হাজার টাকা মাসিক বেতনে ৩ জন শ্রমিক সার্বক্ষনিক বাগান পরিচর্যায় নিয়োজিত আছে। বাগানের নিরাপত্তায় চারিদিকে জাল দিয়ে বেড়া দেওয়া আছে। পাইকারী বাজারে আমরোপালী জাতের প্রতি কেজি আম ৫০ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি হয়। এ বছর ফলন ভাল হলেও অতিরিক্ত খরার কারনে আমের আকার ছোট হওয়ায় ওজন কম হবে। তদুপরি এ বছর সব গাছে ফল আসায় ৩০ লাখ টাকা বিক্রি হবে বলে তিনি আসাবাদী। ব্যাবসার পাশাপাশি আমের আবাদ করে তিনি সংসারে স্বচ্ছলতা ফিরিয়ে এনেছেন। স্ত্রী, তিন ছেলে ও এক মেয়ে নিয়ে তার স্বচ্ছল পরিবার। ছেলে মেয়েরা লেখাপড়া করছেন। তিনি জানান ভালুকার বিভিন্ন এলাকায় এখন ব্যাপক ভাবে রোপালী আমের আবাদ হচ্ছে আর আম চাষ করে অনেকের সংসারে অর্থনৈতিক স্বচ্ছলতা ফিরে পেয়েছেন ।
ভালুকার হবিরবাড়ী, মল্লিকবাড়ী, চাঁনপুর, আউলিয়ারচালা, ডাকাতিয়া, আঙ্গারগাড়া, উথুরা, নয়নপুর, কাদিগড়, পাড়াগাঁও সহ বিভিন্ন গ্রামে আমরোপালী, বারিফুল, ফজলি, হিমসাগর. ইত্যাদি আমের ব্যাপক আবাদ হচ্ছে।
ভালুকা (ময়মনসিংহ) : বিষমুক্ত আম বাগানে চাষি কামাল হোসেন -সংবাদ
সোমবার, ১৫ মে ২০২৩
ভালুকার ডাকাতিয়া ইউনিয়নের আউলিয়ার চালায় আমরোপালী ও বারিফুল জাতের বিষমুক্ত আমের আবাদ করে ব্যাপক সফলতা অর্জণ করে ভগ্যের চাকা ঘুরিয়েছেন এক সময়ের ভালুকা সদরের ফল ব্যবসায়ী কামাল হোসেন। মৌসুমী ফল আমের ব্যাপক চাহিদা থাকায় বর্তমানে ভালুকার বিভিন্ন এলাকায় বানিজ্যিক ভাবে আমরোপালী আম সহ বিভিন্ন জাতের আমের আবাদ অনেক বেড়ে গেছে। ভালুকার উৎপাদিত আম স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন জেলায় রপ্তানী করে চাষীরা লাভবান হচ্ছেন।
১৪ মে রোববার সরজমিন আউলিয়ার চালা গেলে দেখাযায় কামাল হোসেনের বাগানে সারি সারি গাছে বোটায় বোটায় ঝুলছে ছোট বড় আম আর আম। দেখে নিমিষেই রসনায় পানি এসে যায়। শ্রমিকদের নিয়ে বাগান ঘুরে ঘুরে আমের পরিচর্যা করছিলেন কামাল হোসেন। তিনি জানান তার বাড়ি ভালুকা পৌর এলাকার ১ নং ওয়ার্ড ভান্ডাব গ্রামে। প্রায় ৩০ বছর যাবৎ ভালুকা বাসস্ট্যন্ড বাজারে আম, কমলা, আপেল, আঙ্গুর, সৌদি খেজুরসহ নানা মৌসুমী ফলের ব্যবসা করে কোন রকমে সংসার চালাচ্ছিলেন তিনি। প্রতি মৌসুমে রাজশাহী থেকে আম এনে ভালুকায় খুচরা বাজারে বিক্রি করে আসছিলেন। আমদানী করা আমে ফরমালিন থাকায় অনেক সময় ক্রেতাদের অভিযোগের সম্মুখীন হতে হয়েছে। ভালুকার মাটি আম কাঠাল চাষে বেশ উপযোগী। তাই তিনি নিজে আম চাষ করার পরিকল্পনা করেন। কিন্ত নিজের জমি না থাকায় উপজেলার ডাকাতিয়া ইউনিয়নের আউলিয়ার চালায় কয়েকজন মালিকের নিকট হতে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা বাৎসরিক ভাড়ার চুক্তিতে ১০ বছরের জন্য ১০ একর অনাবাদি চালা জমি ভাড়া নেন। প্রথম বছর ওই জমিতে ৩ হাজার ৫০০ আমরোপালী ও বারিফুল জাতের আমের চারা রোপন করেন। দুই বছরের মাথায় ফল আসতে শুরু করে। চারা রোপন, পারিচর্যা, সার কীটনাশক, নিরাপত্তা বেষ্টনী ও যাবতীয় কাজ কর্ম বাবদ প্রায় ৮/৯ লাখ টাকার উপরে খরচ হয়েছে। গাছ ঘন হওয়ায় এক হাজার গাছ সরিয়ে ফেলায় বর্তমানে দুই হাজার পাঁচশ গাছ রয়েছে তার বাগানে। প্রতিটি গাছেই এখন প্রচুর ফল ধরেছে।
গত বছর তিনি ১৪ লাখ টাকার আম বিক্রি করেছেন। মে মাসের শেষের দিকে আম পাঁকা শুরু হলে বিভিন্ন এলাকার পাইকাররা বাগান হতে আম কিনে নিয়ে যায়। ফরমালিন ও বিষ মুক্ত আম হওয়ায় তার বাগানের আমের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। বিশেষ করে আমরোপালী আমে কোন আঁশ না থাকায় এ আম যেমন মিষ্টি তেমনি সুস্বাদু। তিনি নিজেও ভালুকা বাসস্ট্যান্ড বাজারে তার বাগানের আম খুচরা বিক্রি করে থাকেন। টাটকা ও ফরমালিন মুক্ত হওয়ায় কামাল হোসেনের রোপালী আমের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। ১২ হাজার টাকা মাসিক বেতনে ৩ জন শ্রমিক সার্বক্ষনিক বাগান পরিচর্যায় নিয়োজিত আছে। বাগানের নিরাপত্তায় চারিদিকে জাল দিয়ে বেড়া দেওয়া আছে। পাইকারী বাজারে আমরোপালী জাতের প্রতি কেজি আম ৫০ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি হয়। এ বছর ফলন ভাল হলেও অতিরিক্ত খরার কারনে আমের আকার ছোট হওয়ায় ওজন কম হবে। তদুপরি এ বছর সব গাছে ফল আসায় ৩০ লাখ টাকা বিক্রি হবে বলে তিনি আসাবাদী। ব্যাবসার পাশাপাশি আমের আবাদ করে তিনি সংসারে স্বচ্ছলতা ফিরিয়ে এনেছেন। স্ত্রী, তিন ছেলে ও এক মেয়ে নিয়ে তার স্বচ্ছল পরিবার। ছেলে মেয়েরা লেখাপড়া করছেন। তিনি জানান ভালুকার বিভিন্ন এলাকায় এখন ব্যাপক ভাবে রোপালী আমের আবাদ হচ্ছে আর আম চাষ করে অনেকের সংসারে অর্থনৈতিক স্বচ্ছলতা ফিরে পেয়েছেন ।
ভালুকার হবিরবাড়ী, মল্লিকবাড়ী, চাঁনপুর, আউলিয়ারচালা, ডাকাতিয়া, আঙ্গারগাড়া, উথুরা, নয়নপুর, কাদিগড়, পাড়াগাঁও সহ বিভিন্ন গ্রামে আমরোপালী, বারিফুল, ফজলি, হিমসাগর. ইত্যাদি আমের ব্যাপক আবাদ হচ্ছে।