alt

সারাদেশ

মিঠাপানির মাছ : ৬৪ প্রজাতি বিলুপ্ত প্রায় ২৯ প্রজাতির নতুন উদ্ভাবন

বাকী বিল্লাহ : শুক্রবার, ০৯ জুন ২০২৩

জলাশয় সংকোচনসহ নানা কারণে দেশে মিঠা পানির প্রায় ৬৪ প্রজাতির মাছ বিলুপ্ত। বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিএফআরআই) কর্তৃপক্ষ বিলুপ্ত ও দেশি মাছের ওপর গবেষণা পরিচালনা করে ইতো মধ্যে ৩৯ প্রজাতির মাছের প্রজনন ও চাষাবাদ প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছে।

এর মধ্যে পাবদা, গুলশা, টেংরা, গুজি, আইর, চিতল, ফলি, মহাশোল, বৈরালী, বালচাটা, গুতুম, কুচিয়া, ভাগনা, খালিশা, গজার, রাণী ও বাতাসী ও পিয়ালী অন্যতম।

মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. ইয়াহিয়া মাহমুদের প্রতিবেদন বলা হয়েছে, দেশে মিঠা পানির ২৬০ প্রজাতির মাছের মধ্যে ১৪৩ প্রজাতির ছোট মাছ রয়েছে। প্রাচীনকাল থেকে দেশি প্রজাতির মাছ আমাদের সহজলভ্য পুষ্টিকর অন্যতম উৎস্য হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে। এর মধ্যে মলা, ঢেলা, পুঁটি, বাইম, টেংরা, খলিশা, পাবদা, শিং, মাগুর, কেচকি, চান্দা ইত্যাদি অন্যতম ছিল।

এই সব মাছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, লৌহ ও আয়োডিনের মতো দরকারি খনিজ পদার্থ রয়েছে। এ সব উপাদানে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করে তোলে। শরীরের রক্ত শূন্যতা, গলগন্ড, অন্ধত্ব প্রভৃতি রোগ প্রতিরোধে সহায়তা করে। জনসংখ্যা বৃদ্ধি, জলাশয় সংকোচন, অতি আহরণসহ নানা কারণে এই সব মাছের প্রজনন ও বিচরণক্ষেত্র নষ্ট হওয়ার কারণে প্রাকৃতিক জলাশয়ে ছোট মাছের প্রাপ্যতা পর্যায়ক্রমে কমে গেছে।

গবেষণার তথ্যমতে, বিলুপ্ত এই সব মাছের সংখ্যা ৬৪টি। এই মাছ নতুন করে কৃত্রিম প্রজনন ও চাষাবাদে নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবন করে চাষাবাদের কারণে এর প্রাপ্যতা সম্প্রতিকালে বৃদ্ধি পেয়েছে। মাছের মূল্য সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতায় মধ্যে রয়েছে। তাছাড়া নদ নদী, হাওর ও বিলে দেশীয় মাছের পোনা অবমুক্তকরণ ও মৎস্য অধিদপ্তর কর্তৃক অভয়াশ্রম প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে বিলুপ্ত প্রায় মাছের উৎপান বৃদ্ধিসহ মাছের জীববৈচিত্র্য পুনরুদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। এটা বর্তমান সরকারের একটি সাফল্য বলে গবেষকরা মনে করেন।

২০০৮-২০০৯ সালে চাষের মাধ্যমে দেশীয় ছোট মাছের উৎপাদন ছিল ৬৭,৩৪০ মেট্রিক টন, যা ২০২০-২০২১ অর্থবছরে ২ পয়েন্ট ৬১ লাখ মেট্রিক টনে উন্নীত হয়েছে। অর্থাৎ গত ১২ বছরে দেশি ছোট মাছের উৎপাদন বেড়েছে ৪ গুণ। বর্তমানে গবেষকরা দেশীয় মাছ সংরক্ষণ ও পুনরুদ্ধারের জন্য মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের গবেষণা কার্যক্রম জোরদার করেছে।

গবেষণা ইনস্টিটিউটের ময়মনসিংহের স্বাদুপানি গবেষণা কেন্দ্র থেকে বিলুপ্ত প্রায় মাছ সংরক্ষণ ও উন্নয়নে গবেষণা পরিচালনা হয়। এছাড়া বগুড়ার সান্তাহার, নীলফামারী জেলার সৈয়দপুর ও যশোর উপকেন্দ্রে বিলুপ্ত প্রায় মাছ সংরক্ষণে গবেষণা পরিচালনা করা হচ্ছে।

প্রাপ্ত তথ্যমতে, গবেষণা ইনস্টিটিউটে বিপন্ন প্রজাতির কয়েকটি মাছের কৃত্রিম প্রজননের মাধ্যমে দেশি মাছের সংরক্ষণ কৌশল উদ্ভাবন করা হয়েছে।

এর মধ্যে বিপন্ন প্রজাতির টেংরা মাছের কৃত্রিম প্রজনন : টেংরা মাছ বর্তমানে একটি বিপন্ন প্রজাতির মাছ। এ মাছটিকে বিলুপ্তির হাত থেকে রক্ষা করতে চাষের জন্য পোনার প্রাপ্যতা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের স্বাদুপানি উপকেন্দ্র সৈয়দপুরে এর কৃত্রিম প্রজনন, পোনার প্রতিপালন এবং চাষাবাদ প্রযুক্তি উদ্ভাবন করা হয়েছে। উদ্ভাবিত প্রযুক্তি মৎস্য অধিদপ্তরে ইতোমধ্যে হস্তান্তর করা হয়েছে। ফলে মাঠ পর্যায়ে এর চাষাবাদ শুরু হয়েছে।

বৈরালি মাছের জিনপুল সংরক্ষণ : বৈরালি মাছ উত্তর জনপদের একটি সুস্বাদু মাছ। বৈরালি মাছ বরালি ও খোকসা নামেও পরিচিত। খাল, বিল, পাহাড়ি ঝর্ণা ও অগভীর স্বচ্ছ নদীতে এই মাছটি পাওয়া যায়। ২০১৫ সালে এই মাছটিকে বিপন্ন ঘোষণা করা হয়েছে। বিপন্নের হাত থেকে রক্ষা করার লক্ষ্যে মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের সৈয়দপুর স্বাদুপানি উপকেন্দ্রে, রংপুরের চিকলী নদী ও দিনাজপুরের আত্রাই নদী এ মাছ সংগ্রহ করে উপকেন্দ্রের পুকুরে নিয়ন্ত্রিত পরিবেশে পালন করা হয়।

২০২০ সালে দেশে প্রথমবারের মতো বৈরালি মাছের কৃত্রিম প্রজননের সফলতা পাওয়া গেছে। ফলে এর পোনা প্রাপ্তি এখন সহজতর হয়েছে। ইতোমধ্যে উত্তরবঙ্গে এর চাষাবাদ শুরু হয়েছে। এভাবে গবেষকরা বালাচাটা মাছ, গুতুম মাছ, খালিশা মাছ, জাইত পুঁটি মাছ, গজার মাছের পোনা, ঢেলা মাছের কৃত্রিম প্রজননের মাধ্যমে পোনা উৎপাদন, পিয়ালী মাছের প্রজনন প্রযুক্তি উদ্ভাবন, রাণী মাছ সংরক্ষণ, আঙ্গুস মাছ সংরক্ষণসহ বিপন্ন প্রজাতির অনেক মাছের কৃত্রিম প্রজনের মাধ্যমে পুনরায় চাষাবাদ করার প্রক্রিয়া উদ্ভাবন করেছেন এবং সফল হয়েছে।

শুধু তাই না দেশে প্রথমবারের মতো মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিএফআরআই) দেশি মাছের লাভজীন ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করেছেন। দেশি প্রজাতির মাছ সংরক্ষণে এই লাইভজীন ব্যাংক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

গবেষকরা বলেছেন, দেশের মৎস্য উৎপাদনে দেশীয় ছোট মাছের অবদান শতকরা ৩০ থেকে ৩৫ ভাগ। দেশীয় মাছের চাষাবাদ বৃদ্ধি পাওয়ার বর্তমানে হ্যাচারিতে দেশীয় মাছের পোনা ব্যাপকভাবে উৎপাদিত হচ্ছে। পোনা পাওয়া সহজ হওয়ায় বর্তমানে মাঠ পর্যায়ে পাবদা, গুলশা, শিং, টেংরা, মাগুর, কৈ মাছ ব্যাপকভাবে চাষ হচ্ছে। ইদানীং বৈরালি, মেনি ও বাটা মাছের চাষ বৃদ্ধি পেয়েছে।

মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. ইয়াহিয়া মাহমুদ জানান, মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশে মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট গষেণা কার্যক্রম জোরদার করেছে। দেশব্যাপী ছড়িয়ে দেয়ার লক্ষ্যে গবেষণার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে বিলুপ্ত প্রজাতির সব দেশি মাছ পুনরুদ্বারে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। প্রযুক্তি উদ্ভাবন ও সম্প্রসারণের মাধ্যমে বিলুপ্ত প্রায় সব দেশীয় মাছকে পর্যায়ক্রমে খাবার টেবিলে ফিরিয়ে আনাই তাদের গবেষণার মূল উদ্দেশ্য।

মেঘটনায় তলা ফেটে ডুবল কয়লাবাহী জাহাজ

ছবি

ময়মনসিংহ বিভাগের শ্রেষ্ঠ ইন্সট্রাক্টর জামালপুরের সামছুন নাহার

ভোলায় মেঘনা নদীর বাঁধের সিসিব্লক ধসে নিহত-১আহত-৪

ছবি

চুনারুঘাটে মোটরসাইকেল আরোহী নিহত

কক্সবাজারে বিশ্ব বসতি দিবস পালিত

লালমনিরহাটে ট্রাকের ধাক্কায় পথচারী নিহত

ছবি

মায়ানমারের সন্ত্রাসী সংগঠন ‘আরসা’ প্রধানের সহকারীকে রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে গ্রেপ্তার

ছবি

বাড়ির পাশের খালে মিলল ২ মাস বয়সী সেই শিশুর মরদেহ

ছবি

চলতি মাসে ঘূর্ণিঝড়-বন্যার শঙ্কা

ছবি

নকশা বহির্ভূতভাবে নির্মিত চারতলা ভবন, ভেঙে পড়তে পারে যেকোনো মুহূর্তে

একাদশ সংসদ প্রত্যাশিত মাত্রায় কার্যকর নয় : টিআইবি

খুলনার ডিপোতে জ্বালানি তেল উত্তোলন বন্ধ, ১৫ জেলায় সংকট

ছবি

ডেঙ্গুতে মৃত্যু ৯ মাসে হাজার ছাড়ালো

ছবি

রূপগঞ্জে চালককে হত্যা করে অটোরিকশা ছিনতাই

ছবি

ফ্যাসীবাদী সরকারকে বিদায় দেয়া হবে : মঈন খান

ছবি

কক্সবাজারে পর্যটন মেলার নামে প্রতারণা

ঝাঁকুনিতে রাস্তায়ই কন্যাশিশুর জন্ম!

ছবি

ভালুকায় সওজের জমিতে অবৈধ মার্কেট হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা

ছবি

রংপুরে ভূমিহীনদের খাস জমিতে পুর্নবাসন সহ ৫ দফা দাবিতে ডিসি অফিস ঘেরাও

গৌরীপুরে হ্যান্ডকাপসহ পালাল আসামি

হবিগঞ্জে দুপক্ষের সংঘর্ষে নিহত ৩ আহত ১৫

ছবি

নবীনগরে প্রতিমা তৈরিতে ব্যস্ত মৃৎশিল্পীরা

ছবি

৩শ বিঘা ধান খেত পানির নিচে

ছবি

গণমাধ্যমে মার্কিন ভিসা নীতি: ১৯০ বিশিষ্ট নাগরিকের নিন্দা

সাগর সভাপতি, রিপন সম্পাদক

ছবি

ওসির অপকর্ম ঢাকতে অবশেষে জামায়াত নেতা মানিককে গ্রেপ্তার

সৈয়দপুরে খড়খড়িয়া নদীর শহর রক্ষা বাঁধ হুমকির মুখে

ছবি

৯৯৯-এ ফোন: গভীর সমুদ্র থেকে লাইটার জাহাজের ১৪ নাবিক উদ্ধার

ছবি

মাধবপুরে বিদ্যালয়ের সামনে মাছের আড়ৎ, দূর্গন্ধে শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগ

ছবি

ডেঙ্গুতে বছরে মোট আক্রান্তের ৪০ শতাংশই সেপ্টেম্বরে

ছবি

মেঘনায় জলদস্যুদের হামলায় গুলিবিদ্ধ আরেক জেলের মৃত্যু

ছবি

আশুলিয়ায় স্বামী-স্ত্রী ও সন্তানের গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার

সেন্টমার্টিনে আটকা পড়েছেন ২ শতাধিক পর্যটক

ছবি

ডেঙ্গুতে সেপ্টেম্বরে ৩৯৬ জনের রেকর্ড মৃত্যু

ছবি

১৭ মিনিটের ব্যবধানে মারা গেলেন দুই সংসদ সদস্য

সভাপতি ফজলুল হক সম্পাদক কাজী দুলাল

tab

সারাদেশ

মিঠাপানির মাছ : ৬৪ প্রজাতি বিলুপ্ত প্রায় ২৯ প্রজাতির নতুন উদ্ভাবন

বাকী বিল্লাহ

শুক্রবার, ০৯ জুন ২০২৩

জলাশয় সংকোচনসহ নানা কারণে দেশে মিঠা পানির প্রায় ৬৪ প্রজাতির মাছ বিলুপ্ত। বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিএফআরআই) কর্তৃপক্ষ বিলুপ্ত ও দেশি মাছের ওপর গবেষণা পরিচালনা করে ইতো মধ্যে ৩৯ প্রজাতির মাছের প্রজনন ও চাষাবাদ প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছে।

এর মধ্যে পাবদা, গুলশা, টেংরা, গুজি, আইর, চিতল, ফলি, মহাশোল, বৈরালী, বালচাটা, গুতুম, কুচিয়া, ভাগনা, খালিশা, গজার, রাণী ও বাতাসী ও পিয়ালী অন্যতম।

মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. ইয়াহিয়া মাহমুদের প্রতিবেদন বলা হয়েছে, দেশে মিঠা পানির ২৬০ প্রজাতির মাছের মধ্যে ১৪৩ প্রজাতির ছোট মাছ রয়েছে। প্রাচীনকাল থেকে দেশি প্রজাতির মাছ আমাদের সহজলভ্য পুষ্টিকর অন্যতম উৎস্য হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে। এর মধ্যে মলা, ঢেলা, পুঁটি, বাইম, টেংরা, খলিশা, পাবদা, শিং, মাগুর, কেচকি, চান্দা ইত্যাদি অন্যতম ছিল।

এই সব মাছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, লৌহ ও আয়োডিনের মতো দরকারি খনিজ পদার্থ রয়েছে। এ সব উপাদানে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করে তোলে। শরীরের রক্ত শূন্যতা, গলগন্ড, অন্ধত্ব প্রভৃতি রোগ প্রতিরোধে সহায়তা করে। জনসংখ্যা বৃদ্ধি, জলাশয় সংকোচন, অতি আহরণসহ নানা কারণে এই সব মাছের প্রজনন ও বিচরণক্ষেত্র নষ্ট হওয়ার কারণে প্রাকৃতিক জলাশয়ে ছোট মাছের প্রাপ্যতা পর্যায়ক্রমে কমে গেছে।

গবেষণার তথ্যমতে, বিলুপ্ত এই সব মাছের সংখ্যা ৬৪টি। এই মাছ নতুন করে কৃত্রিম প্রজনন ও চাষাবাদে নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবন করে চাষাবাদের কারণে এর প্রাপ্যতা সম্প্রতিকালে বৃদ্ধি পেয়েছে। মাছের মূল্য সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতায় মধ্যে রয়েছে। তাছাড়া নদ নদী, হাওর ও বিলে দেশীয় মাছের পোনা অবমুক্তকরণ ও মৎস্য অধিদপ্তর কর্তৃক অভয়াশ্রম প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে বিলুপ্ত প্রায় মাছের উৎপান বৃদ্ধিসহ মাছের জীববৈচিত্র্য পুনরুদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। এটা বর্তমান সরকারের একটি সাফল্য বলে গবেষকরা মনে করেন।

২০০৮-২০০৯ সালে চাষের মাধ্যমে দেশীয় ছোট মাছের উৎপাদন ছিল ৬৭,৩৪০ মেট্রিক টন, যা ২০২০-২০২১ অর্থবছরে ২ পয়েন্ট ৬১ লাখ মেট্রিক টনে উন্নীত হয়েছে। অর্থাৎ গত ১২ বছরে দেশি ছোট মাছের উৎপাদন বেড়েছে ৪ গুণ। বর্তমানে গবেষকরা দেশীয় মাছ সংরক্ষণ ও পুনরুদ্ধারের জন্য মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের গবেষণা কার্যক্রম জোরদার করেছে।

গবেষণা ইনস্টিটিউটের ময়মনসিংহের স্বাদুপানি গবেষণা কেন্দ্র থেকে বিলুপ্ত প্রায় মাছ সংরক্ষণ ও উন্নয়নে গবেষণা পরিচালনা হয়। এছাড়া বগুড়ার সান্তাহার, নীলফামারী জেলার সৈয়দপুর ও যশোর উপকেন্দ্রে বিলুপ্ত প্রায় মাছ সংরক্ষণে গবেষণা পরিচালনা করা হচ্ছে।

প্রাপ্ত তথ্যমতে, গবেষণা ইনস্টিটিউটে বিপন্ন প্রজাতির কয়েকটি মাছের কৃত্রিম প্রজননের মাধ্যমে দেশি মাছের সংরক্ষণ কৌশল উদ্ভাবন করা হয়েছে।

এর মধ্যে বিপন্ন প্রজাতির টেংরা মাছের কৃত্রিম প্রজনন : টেংরা মাছ বর্তমানে একটি বিপন্ন প্রজাতির মাছ। এ মাছটিকে বিলুপ্তির হাত থেকে রক্ষা করতে চাষের জন্য পোনার প্রাপ্যতা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের স্বাদুপানি উপকেন্দ্র সৈয়দপুরে এর কৃত্রিম প্রজনন, পোনার প্রতিপালন এবং চাষাবাদ প্রযুক্তি উদ্ভাবন করা হয়েছে। উদ্ভাবিত প্রযুক্তি মৎস্য অধিদপ্তরে ইতোমধ্যে হস্তান্তর করা হয়েছে। ফলে মাঠ পর্যায়ে এর চাষাবাদ শুরু হয়েছে।

বৈরালি মাছের জিনপুল সংরক্ষণ : বৈরালি মাছ উত্তর জনপদের একটি সুস্বাদু মাছ। বৈরালি মাছ বরালি ও খোকসা নামেও পরিচিত। খাল, বিল, পাহাড়ি ঝর্ণা ও অগভীর স্বচ্ছ নদীতে এই মাছটি পাওয়া যায়। ২০১৫ সালে এই মাছটিকে বিপন্ন ঘোষণা করা হয়েছে। বিপন্নের হাত থেকে রক্ষা করার লক্ষ্যে মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের সৈয়দপুর স্বাদুপানি উপকেন্দ্রে, রংপুরের চিকলী নদী ও দিনাজপুরের আত্রাই নদী এ মাছ সংগ্রহ করে উপকেন্দ্রের পুকুরে নিয়ন্ত্রিত পরিবেশে পালন করা হয়।

২০২০ সালে দেশে প্রথমবারের মতো বৈরালি মাছের কৃত্রিম প্রজননের সফলতা পাওয়া গেছে। ফলে এর পোনা প্রাপ্তি এখন সহজতর হয়েছে। ইতোমধ্যে উত্তরবঙ্গে এর চাষাবাদ শুরু হয়েছে। এভাবে গবেষকরা বালাচাটা মাছ, গুতুম মাছ, খালিশা মাছ, জাইত পুঁটি মাছ, গজার মাছের পোনা, ঢেলা মাছের কৃত্রিম প্রজননের মাধ্যমে পোনা উৎপাদন, পিয়ালী মাছের প্রজনন প্রযুক্তি উদ্ভাবন, রাণী মাছ সংরক্ষণ, আঙ্গুস মাছ সংরক্ষণসহ বিপন্ন প্রজাতির অনেক মাছের কৃত্রিম প্রজনের মাধ্যমে পুনরায় চাষাবাদ করার প্রক্রিয়া উদ্ভাবন করেছেন এবং সফল হয়েছে।

শুধু তাই না দেশে প্রথমবারের মতো মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিএফআরআই) দেশি মাছের লাভজীন ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করেছেন। দেশি প্রজাতির মাছ সংরক্ষণে এই লাইভজীন ব্যাংক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

গবেষকরা বলেছেন, দেশের মৎস্য উৎপাদনে দেশীয় ছোট মাছের অবদান শতকরা ৩০ থেকে ৩৫ ভাগ। দেশীয় মাছের চাষাবাদ বৃদ্ধি পাওয়ার বর্তমানে হ্যাচারিতে দেশীয় মাছের পোনা ব্যাপকভাবে উৎপাদিত হচ্ছে। পোনা পাওয়া সহজ হওয়ায় বর্তমানে মাঠ পর্যায়ে পাবদা, গুলশা, শিং, টেংরা, মাগুর, কৈ মাছ ব্যাপকভাবে চাষ হচ্ছে। ইদানীং বৈরালি, মেনি ও বাটা মাছের চাষ বৃদ্ধি পেয়েছে।

মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. ইয়াহিয়া মাহমুদ জানান, মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশে মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট গষেণা কার্যক্রম জোরদার করেছে। দেশব্যাপী ছড়িয়ে দেয়ার লক্ষ্যে গবেষণার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে বিলুপ্ত প্রজাতির সব দেশি মাছ পুনরুদ্বারে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। প্রযুক্তি উদ্ভাবন ও সম্প্রসারণের মাধ্যমে বিলুপ্ত প্রায় সব দেশীয় মাছকে পর্যায়ক্রমে খাবার টেবিলে ফিরিয়ে আনাই তাদের গবেষণার মূল উদ্দেশ্য।

back to top