alt

অর্থ-বাণিজ্য

তিন পণ্যে বেঁধে দেয়া দাম

তৃতীয় দিনেও প্রভাব পড়েনি বাজারে

আমিরুল মোমিনিন সাগর : শনিবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩

সরকারের বেঁধে দেয়া দামে কোথাও পাওয়া যাচ্ছে না ডিম, আলু ও পেঁয়াজ। তৃতীয় দিনেও প্রভাব পড়েনি বাজারে। আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে পণ্য তিনটি। বাজারে আসা ক্রেতারা বলছেন, বড় ব্যবসায়ীদের কারসাজির কারণে নির্ধারিত দামের পণ্য সঠিক দামে কিনতে পারছি না। ব্যবসায়ী বলছেন, বেঁধে দেয়া দামের নিদের্শনা এখনও হাতে পাইনি। শনিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর কয়েকটি বাজার, অলি-গলির বেশকিছু দোকান ও বাজারে আসা ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এসব চিত্রই পাওয়া গেছে।

বাজার ঘুরে দেখা যায়, এক হালি ফার্মের মুরগির লাল ডিম বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৫৫ টাকায়। আর ডজন বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ১৫৫ টাকায়। পাশাপাশি দেশি হাঁস-মুরগির ডিমের ডজন বিক্রি হচ্ছে ২২০ টাকায়। এছাড়া আলু বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৫৫ টাকা কেজি দরে। বাজার ও মানভেদে দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে, কেজি ৮০ থেকে ৯৫ টাকায় আর আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকায়। পাশাপাশি মানভেদে দেশি রসুন বিক্রি হচ্ছে ২৪০ টাকা আর আমদানি করা রসুন ২২০ টাকায়।

রাজধানীর পল্টন এলাকার অলি-গলি ফুটপাতে ভ্যানে করে ডিম, আলু, পেঁয়াজ ও সবজি বিক্রি করেন কাওসার মিয়া। ডিম ও আলুর দাম জানতে চাইলে তিনি সংবাদকে জানান, ‘ডিম হালি ৫৪ টাকা, ডজন ১৬০ টাকা আর আলু বিক্রি করছে কেজি ৫০ থেকে ৫২ টাকায়।’

ডিম, পেঁয়াজ, আলুর দাম তো বেঁধে দিয়েছে, বেঁধে দেয়া দামে বিক্রি করছেন না কেন আমার প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, ‘সরকারের টাকা দিয়ে মানুষ ব্যবসা করে নাকি? আমরা তো প্রতিদিন মাল (পণ্য) কিনি। কম কিনতে না পাইলে কম বেচমু কেমনে। আমরা যেমন কিনি তেমন বেচি।’

শান্তিনগর কাঁচাবাজার থেকে ডিম কিনে অন্য পণ্য কেনার জন্য বাজারে হাঁটছেন বেসরকারি চাকরিজীবী শাহনাজ পারভিন। ডিমের দামের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি সংবাদকে বলেন, ‘আরে ভাই ডিমের দাম শুনে কি করবেন? ডিম নিলাম দেড়শ’ টাকা ডজন।’

সরকারের বেঁধে দেয়া দামের বিষয়ে তিনি আরও বলেন, ‘এখানে সিন্ডিকেটের শেষ আছে, দুই নম্বরের শেষ আছে? সরকার তো কিছু করতে পারছে না। আমাদের মতো কি করবে। যারা সিন্ডিকেট করছে মজুদ করছে তাদেরকে ধরতে না পারলে দাম কখনো কমবে না?’

ডিমের দরদামের বিষয়ে জানতে চাইলে শান্তিনগর কাঁচাবাজারের ডিম ব্যবসায়ী ইলিয়াস মিয়া সংবাদকে বলেন, ‘ডিমের হালি বিক্রি করছি ৫০ টাকা আর ডজন ১৫০ টাকা।’

সরকারের বেঁধে দেয়া দামে বিক্রি করছেন না কেন এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি আরও বলেন, ‘আজকে (শনিবার) তেজগাঁও সমিতিতে ডিম কিনতে পড়েছে ১১ টাকা ৭০ পয়সা করে। এরপর ভ্যান ভাড়া দিয়ে নিয়ে আসতে হয়। আসতে আবার কিছু ডিম ভেঙে যায়, কিছু পচা ডিম থাকে। আমরা সমিতিতে সরকারের বেঁধে দেয়া দামের বিষয়ে বললে তারা বলেন, নিলে নেন না নিলে না নেন। তাড়াতাড়ি কন রিসিট কাটবো কি না। সরকারের বাইরে ক্ষমতা কারো নেই। যারা আইন বানায় দেশ চালায় সমাজ চালায় তারাই দেশটা উল্ট দিকে নিয়ে যাচ্ছে।’

আলু, পেঁয়াজের দামের বিষয়ে জানতে চাইলে ওই বাজারের ব্যবসায়ী ইসমাইল হোসেন সংবাদকে বলেন, ‘দেশি পেঁয়াজ বিক্রি করছি কেজি ৮৫ টাকা থেকে ৯৫ টাকা।’

সরকারের বেঁধে দেয়া দামে বিক্রি করছেন না কেন এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি আরো বলেন, ‘আমাদের দেশি পেঁয়াজ কিনতে পড়েছে ৭৫ থেকে ৭৮ টাকা ৪৫ থেকে ৪৬ টাকা। আমরা কম দামে কিনতে না পারলে নির্ধারিত দামি বেচমু কেমনে।’

সরকারের বেঁধে দেয়া দামে বিক্রি করছেন না কেন এ বিষয়ে জানতে চাইলে রাজধানীর শান্তিনগর কাঁচাবাজারের বিক্রেতা সোহাগ বলেন, ‘সরকার নির্ধারিত দামের মাল আমরা এখনো হাত পাইনি। কমদামের মাল হাতে পেলে কম দামে বিক্রি করবো করব।’

সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) শনিবারের প্রতিবেদনে দেখা যায়, ফার্মের মুরগির ডিমের হালি ৫০ থেকে ৫২ টাকা। দেশি পেঁয়াজ কেজি ৭০ থেকে ৮০ টাকা, আমদানি পেঁয়াজ ৬০ থেকে ৭০ টাকা। আর আলুর কেজি ৪৩ থেকে ৫০ টাকা দেখানো হয়েছে।

গত বৃহস্পতিবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয় পেঁয়াজ, আলু ও ডিমের সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য বেঁধে দেন। তাতে খুচরা পর্যায়ে প্রতিটি ডিমের দাম সর্বোচ্চ ১২ টাকা, প্রতি কেজি আলু ৩৫ থেকে ৩৬ টাকা এবং দেশি পেঁয়াজ ৬৪ থেকে ৬৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়।

গত শুক্রবার রংপুরে টিপু মুনশি বলেন, ‘দেশে উৎপাদিত ডিম ও আলুর দাম নির্ধারণ নিয়ে তিনি বলেন, ‘যখন যে পণ্যের মজুদ কমে যায়, তখন সেই পণ্যের দাম নির্ধারণ করে সরকার। সেটা দেশি বা বিদেশি পণ্য হতে পারে।’

তার কয়েকদিন আগে নিত্যপণ্যের দামের বিষয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুন্সি বলেছেন, ‘বর্তমান সরকারের সময়োচিত ব্যবস্থা গ্রহণের ফলে দ্রব্যমূল্য স্থিতিশীল রাখা সম্ভব হয়েছে।’

বিপিআইসিসির তথ্যানুযায়ী, দেশে সাধারণত ডিমের উৎপাদন দিনে ৪ কোটির ওপরে থাকে। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের হিসেবে তা আরেকটু বেশি। আবহাওয়ার কারণে সাম্প্রতিক সময়ে দেশের ডিমের উৎপাদন কিছুটা কমেছে। বড় খামার পর্যায়ে এখন ডিমের উৎপাদন দিনে ৬০ লাখের মতো। আর ছোট খামারি পর্যায়ে ৩ কোটি ৩৩ লাখ।

সব মিলিয়ে ডিমের উৎপাদন এখন ৪ কোটির নিচে। কিন্তু বাজারে চাহিদা বেশি। একই সঙ্গে মাছ ও মাংসের চড়া দামের কারণে সাধারণ মানুষ ডিমের প্রতি ঝুঁকছে।

এর আগে ডিমের বাজারের সার্বিক বিষয়ে ভোক্তা অধিকার সংগঠন কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমান বলেন, ‘পরিকল্পিত ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা না গেলে ধরেবেঁধে বাজার নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়।’

ছবি

অক্টোবরেও বাড়ছে ঋণের সুদহার

ছবি

ফ্রিল্যান্সারদের রেমিট্যান্সের ওপর কর আরোপ করা হয়নি : এনবিআর

বাংলাদেশের বিরুদ্ধে নকল পোশাক বিক্রির অভিযোগ, বিজিএমইএ’-এর নাকচ

ফ্রিল্যান্সারদের রেমিট্যান্সে ১০ শতাংশ করের তথ্য সঠিক নয় : বাংলাদেশ ব্যাংক

মাতারবাড়ী বিদ্যুৎ প্রকল্পে ১৫০০ মিলিয়ন ডলার ঋণ দেবে জাপান

ছবি

পোশাকের দাম বাড়াতে যুক্তরাষ্ট্রের ক্রেতাদের প্রতি অনুরোধ

লেনদেন অর্ধেকে নেমেছে শেয়ারবাজারে

ছবি

পোশাকের দাম বাড়াতে এএএফএ ক্রেতাদের অনুরোধ বিজিএমইএর

ছবি

নিয়ন্ত্রণ নেই বাজারে, বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে ডিম-আলু-পেঁয়াজ

ছবি

বড় কোম্পানি মুড়ি-চানাচুর তৈরি করলে ছোটরা কি করবে, প্রশ্ন শিল্পমন্ত্রীর

জিআইআই সূচকে তিন ধাপ পেছালো বাংলাদেশ

বাংলাদেশে হালাল মাংস রপ্তানিতে আগ্রহী মেক্সিকো

ছবি

তিন মাসের বকেয়া বেতনের দাবিতে পোশাক শ্রমিকদের মানববন্ধন

ফ্রিল্যান্সারদেরও দিতে হবে ১০ শতাংশ কর

বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম বেড়েই চলেছে

ছবি

বাজারে আগাম শীতকালীন সবজি, চড়া দামে ক্রেতাদের অস্বস্তি

ছবি

রিজার্ভ কমে দাঁড়ালো ২১ দশমিক ১৫ বিলিয়ন ডলার

এমএফএসের ২২ হাজার অ্যাকাউন্ট বন্ধ করেছে বিএফআইইউ

যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা : আকু সচিবালয়ের চিঠির অপেক্ষায় বাংলাদেশ ব্যাংক

নামমাত্র উত্থান শেয়ারবাজারে

জাপানিজ অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনে ব্যয় বাড়লো ২৭০ কোটি টাকা

ছবি

জরিমানা নয়, নিরাপদ খাবার নিশ্চিত করা আমাদের প্রধান কাজ : নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ

ছবি

পোশাক রপ্তানিতে ভিসানীতির প্রভাব পড়বে না : বিজিএমইএ সভাপতি

ছবি

বাংলাদেশের ঋণমান ‘স্থিতিশীল’ থেকে ‘নেতিবাচক’-এ নামলো

ডিম আমদানি বন্ধের দাবি পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশনের

সূচক ও লেনদেনে নামমাত্র উত্থান শেয়ারবাজারে

ছবি

বিটিএমএর সভাপতি মোহাম্মদ আলী খোকন ও সহসভাপতি মো. ফায়জুর রহমান ভূঁইয়া নির্বাচিত

ছবি

আতঙ্ক কাটিয়ে বিমায় ভর করে ঘুরে দাঁড়িয়েছে শেয়ারবাজার

ছবি

ইউনিলিভার বাংলাদেশ এর নতুন এইচআর ডিরেক্টর সৈয়দা দুরদানা কবির

ছবি

সঞ্চয়পত্রে নতুন আইন, গুরুত্ব পাচ্ছেন নারীরা

ছবি

২২ দিনে রেমিট্যান্স এলো ১০৫ কোটি ডলার

ছবি

রাশিয়ার মুদ্রা বাজারে লেনদেন করতে পারবে বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠান

বড় দরপতনে সপ্তাহ শুরু শেয়ারবাজারে

কারখানার উন্নয়নে ১৫১ কোটি টাকা বিনিয়োগ করবে বিএটিবিসি

সুপারভিশন চার্জের নামে কেটে নেয়া টাকা ফেরত চায় দোকান মালিক সমিতি

ছবি

সূচকের ওঠানামায় পুঁজিবাজারে লেনদেন চলছে

tab

অর্থ-বাণিজ্য

তিন পণ্যে বেঁধে দেয়া দাম

তৃতীয় দিনেও প্রভাব পড়েনি বাজারে

আমিরুল মোমিনিন সাগর

শনিবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩

সরকারের বেঁধে দেয়া দামে কোথাও পাওয়া যাচ্ছে না ডিম, আলু ও পেঁয়াজ। তৃতীয় দিনেও প্রভাব পড়েনি বাজারে। আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে পণ্য তিনটি। বাজারে আসা ক্রেতারা বলছেন, বড় ব্যবসায়ীদের কারসাজির কারণে নির্ধারিত দামের পণ্য সঠিক দামে কিনতে পারছি না। ব্যবসায়ী বলছেন, বেঁধে দেয়া দামের নিদের্শনা এখনও হাতে পাইনি। শনিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর কয়েকটি বাজার, অলি-গলির বেশকিছু দোকান ও বাজারে আসা ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এসব চিত্রই পাওয়া গেছে।

বাজার ঘুরে দেখা যায়, এক হালি ফার্মের মুরগির লাল ডিম বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৫৫ টাকায়। আর ডজন বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ১৫৫ টাকায়। পাশাপাশি দেশি হাঁস-মুরগির ডিমের ডজন বিক্রি হচ্ছে ২২০ টাকায়। এছাড়া আলু বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৫৫ টাকা কেজি দরে। বাজার ও মানভেদে দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে, কেজি ৮০ থেকে ৯৫ টাকায় আর আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকায়। পাশাপাশি মানভেদে দেশি রসুন বিক্রি হচ্ছে ২৪০ টাকা আর আমদানি করা রসুন ২২০ টাকায়।

রাজধানীর পল্টন এলাকার অলি-গলি ফুটপাতে ভ্যানে করে ডিম, আলু, পেঁয়াজ ও সবজি বিক্রি করেন কাওসার মিয়া। ডিম ও আলুর দাম জানতে চাইলে তিনি সংবাদকে জানান, ‘ডিম হালি ৫৪ টাকা, ডজন ১৬০ টাকা আর আলু বিক্রি করছে কেজি ৫০ থেকে ৫২ টাকায়।’

ডিম, পেঁয়াজ, আলুর দাম তো বেঁধে দিয়েছে, বেঁধে দেয়া দামে বিক্রি করছেন না কেন আমার প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, ‘সরকারের টাকা দিয়ে মানুষ ব্যবসা করে নাকি? আমরা তো প্রতিদিন মাল (পণ্য) কিনি। কম কিনতে না পাইলে কম বেচমু কেমনে। আমরা যেমন কিনি তেমন বেচি।’

শান্তিনগর কাঁচাবাজার থেকে ডিম কিনে অন্য পণ্য কেনার জন্য বাজারে হাঁটছেন বেসরকারি চাকরিজীবী শাহনাজ পারভিন। ডিমের দামের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি সংবাদকে বলেন, ‘আরে ভাই ডিমের দাম শুনে কি করবেন? ডিম নিলাম দেড়শ’ টাকা ডজন।’

সরকারের বেঁধে দেয়া দামের বিষয়ে তিনি আরও বলেন, ‘এখানে সিন্ডিকেটের শেষ আছে, দুই নম্বরের শেষ আছে? সরকার তো কিছু করতে পারছে না। আমাদের মতো কি করবে। যারা সিন্ডিকেট করছে মজুদ করছে তাদেরকে ধরতে না পারলে দাম কখনো কমবে না?’

ডিমের দরদামের বিষয়ে জানতে চাইলে শান্তিনগর কাঁচাবাজারের ডিম ব্যবসায়ী ইলিয়াস মিয়া সংবাদকে বলেন, ‘ডিমের হালি বিক্রি করছি ৫০ টাকা আর ডজন ১৫০ টাকা।’

সরকারের বেঁধে দেয়া দামে বিক্রি করছেন না কেন এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি আরও বলেন, ‘আজকে (শনিবার) তেজগাঁও সমিতিতে ডিম কিনতে পড়েছে ১১ টাকা ৭০ পয়সা করে। এরপর ভ্যান ভাড়া দিয়ে নিয়ে আসতে হয়। আসতে আবার কিছু ডিম ভেঙে যায়, কিছু পচা ডিম থাকে। আমরা সমিতিতে সরকারের বেঁধে দেয়া দামের বিষয়ে বললে তারা বলেন, নিলে নেন না নিলে না নেন। তাড়াতাড়ি কন রিসিট কাটবো কি না। সরকারের বাইরে ক্ষমতা কারো নেই। যারা আইন বানায় দেশ চালায় সমাজ চালায় তারাই দেশটা উল্ট দিকে নিয়ে যাচ্ছে।’

আলু, পেঁয়াজের দামের বিষয়ে জানতে চাইলে ওই বাজারের ব্যবসায়ী ইসমাইল হোসেন সংবাদকে বলেন, ‘দেশি পেঁয়াজ বিক্রি করছি কেজি ৮৫ টাকা থেকে ৯৫ টাকা।’

সরকারের বেঁধে দেয়া দামে বিক্রি করছেন না কেন এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি আরো বলেন, ‘আমাদের দেশি পেঁয়াজ কিনতে পড়েছে ৭৫ থেকে ৭৮ টাকা ৪৫ থেকে ৪৬ টাকা। আমরা কম দামে কিনতে না পারলে নির্ধারিত দামি বেচমু কেমনে।’

সরকারের বেঁধে দেয়া দামে বিক্রি করছেন না কেন এ বিষয়ে জানতে চাইলে রাজধানীর শান্তিনগর কাঁচাবাজারের বিক্রেতা সোহাগ বলেন, ‘সরকার নির্ধারিত দামের মাল আমরা এখনো হাত পাইনি। কমদামের মাল হাতে পেলে কম দামে বিক্রি করবো করব।’

সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) শনিবারের প্রতিবেদনে দেখা যায়, ফার্মের মুরগির ডিমের হালি ৫০ থেকে ৫২ টাকা। দেশি পেঁয়াজ কেজি ৭০ থেকে ৮০ টাকা, আমদানি পেঁয়াজ ৬০ থেকে ৭০ টাকা। আর আলুর কেজি ৪৩ থেকে ৫০ টাকা দেখানো হয়েছে।

গত বৃহস্পতিবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয় পেঁয়াজ, আলু ও ডিমের সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য বেঁধে দেন। তাতে খুচরা পর্যায়ে প্রতিটি ডিমের দাম সর্বোচ্চ ১২ টাকা, প্রতি কেজি আলু ৩৫ থেকে ৩৬ টাকা এবং দেশি পেঁয়াজ ৬৪ থেকে ৬৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়।

গত শুক্রবার রংপুরে টিপু মুনশি বলেন, ‘দেশে উৎপাদিত ডিম ও আলুর দাম নির্ধারণ নিয়ে তিনি বলেন, ‘যখন যে পণ্যের মজুদ কমে যায়, তখন সেই পণ্যের দাম নির্ধারণ করে সরকার। সেটা দেশি বা বিদেশি পণ্য হতে পারে।’

তার কয়েকদিন আগে নিত্যপণ্যের দামের বিষয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুন্সি বলেছেন, ‘বর্তমান সরকারের সময়োচিত ব্যবস্থা গ্রহণের ফলে দ্রব্যমূল্য স্থিতিশীল রাখা সম্ভব হয়েছে।’

বিপিআইসিসির তথ্যানুযায়ী, দেশে সাধারণত ডিমের উৎপাদন দিনে ৪ কোটির ওপরে থাকে। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের হিসেবে তা আরেকটু বেশি। আবহাওয়ার কারণে সাম্প্রতিক সময়ে দেশের ডিমের উৎপাদন কিছুটা কমেছে। বড় খামার পর্যায়ে এখন ডিমের উৎপাদন দিনে ৬০ লাখের মতো। আর ছোট খামারি পর্যায়ে ৩ কোটি ৩৩ লাখ।

সব মিলিয়ে ডিমের উৎপাদন এখন ৪ কোটির নিচে। কিন্তু বাজারে চাহিদা বেশি। একই সঙ্গে মাছ ও মাংসের চড়া দামের কারণে সাধারণ মানুষ ডিমের প্রতি ঝুঁকছে।

এর আগে ডিমের বাজারের সার্বিক বিষয়ে ভোক্তা অধিকার সংগঠন কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমান বলেন, ‘পরিকল্পিত ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা না গেলে ধরেবেঁধে বাজার নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়।’

back to top