alt

অর্থ-বাণিজ্য

ইআরএফ’র সংবাদ সম্মেলন

সাংবাদিক প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে ভুল তথ্য দিচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক : সোমবার, ২০ মে ২০২৪

সাংবাদিক প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে ভুল তথ্য দিচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলে অভিযোগ করেছে অর্থনৈতিক সাংবাদিকদের সংগঠন ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ)। সোমবার (২০ মে) ইআরএফ কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানায় সংগঠনটি।

এসময় উপস্থিত ছিলেন সংগঠনটির সভাপতি রেফায়েত উল্লাহ মীরধা, সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেমসহ কার্যনির্বাহী সদস্য ও সংবাদ কর্মীরা।

সংবাদ সম্মেলনে ইআরএফ জানায়, বর্তমান সরকার অবাধ তথ্য প্রবাহ নিশ্চিত করার কথা বলে আসছে। অথচ ৫৩ বছরের প্রথা ভেঙে হঠাৎ করে বাংলাদেশ ব্যাংক সাংবাদিক প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যা সরকারের অবস্থানের বিপরীত। গত ২১ মার্চ থেকে বাংলাদেশ ব্যাংক অলিখিতভাবে সাংবাদিক প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। এ বিষয়ে সমাধান চেয়ে ইআরএফের পক্ষ থেকে এরই মধ্যে গভর্নরের সঙ্গে সাক্ষাৎ করা হয়েছে এবং দু’দফা চিঠিসহ বিভিন্নভাবে অনুরোধ জানানো হয়েছে। নিষেধাজ্ঞা আরোপের প্রায় দু’মাস হলেও সমস্যার সমাধান না করে এখন বিভিন্ন ভুল তথ্য ছড়ানো হচ্ছে। এরকম বাস্তবতায় আজকের এই সংবাদ সম্মেলন ডাকা হয়েছে। এখানে আমি একটি বিষয় পরিষ্কার করতে চাই। সাংবাদিকরা এর আগে নিজের কার্ড প্রদর্শন করে বাংলাদেশ ব্যাংকে প্রবেশ করতে পারতেন। এখন তা বন্ধ করা হয়েছে। হঠাৎ করে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় নানা গুজব ডাল-পালা মেলার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকে বড় কোনো দুর্ঘটনা ঘটেছে কি না সে প্রশ্ন উঠছে।

সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, সাংবাদিকদের লেখনির মাধ্যমে পাঠক, গবেষক, সরকারের নীতি নির্ধারণী পর্যায়ে প্রকৃত তথ্য জানার সুযোগ তৈরি হয়। সাংবাদিকরা অর্থনীতির বিভিন্ন সূচক পর্যালোচনার মাধ্যমে সরকারের নীতি নির্ধারণে সহায়ক ভূমিকা রাখেন। বিশেষ করে কৃষি উৎপাদন, খাদ্য মজুদ ও আমদানি পরিস্থিতি, বাজার ব্যবস্থাপনা, মূল্যস্ফীতি, রিজার্ভের প্রকৃত অবস্থা, সুদহার, রাজস্ব পরিস্থি, সরকারি–বেসরকারি খাতের বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থানসহ বিভিন্ন তথ্যভিত্তিক বিশ্লেষণ তুলে ধরেন। আবার খেলাপি ঋণ পরিস্থিতি, ব্যাংক খাতের অনিয়ম-দুর্নীতি, অর্থপাচারসহ বিভিন্ন সমস্যার তথ্য তুলে ধরলে সরকার তাতে উপকৃত হয়। নিতে পারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা। এসব ক্ষেত্রে বেশিরভাগ তথ্যের উৎস কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এখন হঠাৎ করে তথ্য প্রবাহ বন্ধ করার ফলে ভুল তথ্য, অর্ধ সত্য তথ্য ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। আবার একটি তথ্য পাওয়ার পর ডেস্ক অফিসারের মাধ্যমে বুঝে প্রকৃত তুলে ধরার সুযোগ সীমিত হয়ে আসছে।

ইআরএফ সভাপতি রেফায়েত উল্লাহ মীরধা বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকে সাংবাদিক প্রবেশ করতে পারে কি না তা নিয়ে কেউ কেউ প্রশ্ন তুলেছেন। এর আগে জানতে হবে অন্য দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকে সাংবাদিক প্রবেশের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে কি না। যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভ, ব্যাংক অব ইংল্যান্ড, রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়াসহ বিভিন্ন দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ওয়েবসাইট অনেক সমৃদ্ধ। সেখানে অর্থনীতির সব সূচকের নিয়মিত আপডেট ছাড়াও বোর্ড মিটিংয়ের কার্য বিবরণী, বিভিন্ন ব্যাংকের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থাসহ সব ধরনের তথ্য প্রকাশ করা হয়। কোনো সাংবাদিক প্রশ্ন করলে দ্রুত রেসপন্স করা হয়। আবার এসব দেশের আর্থিক খাতের সুশাসনের মাত্রা অনেক উঁচুতে। পদ্ধতিগত কারণে সেখানে কোনো অনিয়ম-দুর্নীতির তথ্য আড়াল করা কঠিন। এছাড়া বেনামি ঋণ, ঋণখেলাপি, অর্থপাচারকারী বা অনিয়ম-দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত কেউ কোনো দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকে প্রবেশ করতে পারে বলে আমাদের জানা নেই। এখন বাংলাদেশে সবার জন্য উন্মুক্ত রেখে কেবল সাংবাদিক প্রবেশে নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমে আসলে কি তথ্য আড়াল করার চেষ্টা হচ্ছে আমরা সে প্রশ্ন রাখতে চাই।

বাংলাদেশ ব্যাংকের স্বায়ত্বশাসন হারানোর কারণে আর্থিক খাতের দূরাবস্থার কথা বিভিন্ন অর্থনীতিবিদ, গবেষকদের বক্তব্যে উঠে এসেছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতা, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ব্যবস্থাপনায় দূর্বলতা, তদারকি ব্যবস্থার ভঙ্গুরতা, বিভিন্ন গোষ্টির চাপে নীতির ধারাবাহিকতা রাখতে না পারার বিষয়টি সবার জানা। ব্যাংক একীভূতকরণ নিয়ে তড়িঘড়ির কারণে অস্থিরতা, ব্যাংক খাতের বর্তমান তারল্য সঙ্কটের বিষয়টি সবার জানা। এসব সমস্যার সমাধান না করে সাংবাদিক প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে জনমণে আতঙ্ক আরও বাড়বে। তথ্য প্রবাহ আটকানোর চেষ্টা দেশের জন্য বড় কোনো বিপদ ডেকে আনতে পারে। কারও জন্য যা কাম্য নয়।

সম্পাদক আবুল কাশেম বলেন, বাংলাদেশের বাস্তবতায় নিয়ন্ত্রক সংস্থা চাইলেও অনেক সময় কঠিণ সিদ্ধান্ত নিতে পারে না। এসব ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. মোহাম্মদ ফরাসউদ্দীন, ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ ও ড. আতিউর রহমান অনিয়ম দুর্নীতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য কিভাবে গণমাধ্যমের সহায়তা নিয়ে সফল হয়েছে তাদের সাম্প্রতিক বিভিন্ন আনুষ্ঠানিক, অনানুষ্ঠানিক বক্তব্যে তা উঠে এসেছে। বর্তমান গভর্নর কার স্বার্থে কেবল গণমাধ্যমের কাছে তথ্য আড়াল করার চেষ্টা করছেন তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। কোনো ভুল নীতির কারণে অর্থনীতিতে আরও বড় চাপ তৈরি হলে তার দায়ভার আমাদের সবার ওপর পড়বে। এরকম অবস্থায় আমাদের একমাত্র প্রত্যাশা আগের মতোই অবাধ তথ্য প্রবাহ নিশ্চিত হোক। এ জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকে সাংবাদিক প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার জোর দাবি জানাচ্ছি।

ছবি

‘শাটডাউন’ এর মধ্যে কাস্টমস চাকরিকে অত্যাবশ্যক ঘোষণা করল সরকার

ছবি

স্বচ্ছতার সঙ্গে কাজ করলে তদন্তে ভয় নেই’— এনবিআর ইস্যুতে অর্থ উপদেষ্টার মন্তব্য

ছবি

বিমানবন্দরের ১৬ বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানকে কার্যক্রম গুটাতে বলল কর্তৃপক্ষ

ছবি

অর্থবছরের শেষ দিন শেয়ারবাজারে পতন

ছবি

বাংলাদেশে বিশ্বব্যাংকের নতুন ডিভিশন ডিরেক্টর জ্যঁ পেম

ছবি

রাজস্ব আদায় গতবারের চেয়ে বেশি হবে এটা নিশ্চিত: এনবিআর চেয়ারম্যান

রাজস্ব আহরণ বৃদ্ধি ও ভর্তুকি কমানোর পরামর্শ আইএমএফের

মঙ্গলবার ব্যাংক হলিডে, লেনদেন বন্ধ থাকবে

পুঁজিবাজার ঘুরে দাঁড়াবে: ডিবিএ সভাপতি

ছবি

দাম কমেছে অপো এ৩এক্স স্মার্টফোনের

ছবি

দুদক পরিচয়ে চাঁদাবাজি, গ্রেপ্তার বেড়ে ৫

ছবি

রাজস্ব আদায়ে জোর, ভর্তুকি কমানোর পরামর্শ আইএমএফের

ছবি

বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৩১.৩১ বিলিয়ন ডলার: বাংলাদেশ ব্যাংক

ছবি

রিজার্ভের নতুন হিসাব প্রকাশ: নিট রিজার্ভে উল্লেখযোগ্য উল্লম্ফন

স্টার্লিংয়ের এফডিআরের টাকা ফেরত দেয়নি ফারইস্ট ফাইন্যান্স, তদন্তে বিএসইসি

ট্রাম্পের পাল্টা শুল্কে পোশাকের দাম বাড়ছে: এইচঅ্যান্ডএম সিইও

ছবি

আলোচনার আশা ভেঙে সচিবালয় থেকে ফিরে গেলেন এনবিআর আন্দোলনকারীরা

লজিস্টিক পলিসির বাস্তবায়নে সমন্বিত মাস্টারপ্ল্যান অপরিহার্য: ঢাকা চেম্বার

পরপর পাঁচ কার্যদিবস উত্থানে শেয়ারবাজার

ছবি

জাপান ও ভারতে তৈরি পোশাক রপ্তানি বাড়ছে

ছবি

‘মার্চ টু এনবিআর’ কর্মসূচিতে কাস্টমস কার্যক্রমে অচলাবস্থা

ছবি

‘শর্ত ছাড়া আন্দোলন প্রত্যাহার করুন’—ব্যবসায়ী সংগঠনগুলোর অনুরোধ

ছবি

বিদেশিদের হস্তান্তরের আগপর্যন্ত এনসিটি পরিচালনায় আলোচনায় নৌবাহিনী

ব্যাংকিং খাত বর্তমানে সংকটময় অবস্থায় দাঁড়িয়ে আছে: ডিসিসিআই

বাংলাদেশের কাপড়-পাট-সুতার পণ্য আমদানিতে ভারতের নিষেধাজ্ঞা

বিনিয়োগকারীদের জন্য নতুন ওয়েবসাইট চালু করলো বিডা

ছবি

কৃষি যন্ত্রপাতি আমদানিতে হয়রানি দূর করার দাবি

ছবি

বাজার মূলধনে যোগ হলো ১১ হাজার কোটি টাকা

ছবি

এনবিআর চেয়ারম্যানের অপসারণ কাম্য নয়, হয়রানিমুক্ত এনবিআর চান ব্যবসায়ীরা

ছবি

যুক্তরাষ্ট্রের ফাউন্ডেশনের ‘কৃষি খাদ্যের অগ্রদূত’ তালিকায় আবদুল আউয়ালমিন্টু

ছবি

‘মার্চ টু এনবিআর’ কর্মসূচি প্রত্যাহারের আহ্বান অর্থ মন্ত্রণালয়ের

ছবি

নগদের বোর্ড পুনর্গঠন, চেয়ারম্যান কাইজার আহমেদ চৌধুরী

ছবি

ব্যাংকের সীমাতিরিক্ত টাকা পরিশোধ বাধ্যতামূলক করলো বাংলাদেশ ব্যাংক

ওয়ার্ল্ড ফুড প্রাইজ অ্যাওয়ার্ড পাচ্ছেন আবদুল আউয়াল মিন্টু

ট্রাম্পের শুল্কনীতি পোশাক শিল্পের জন্য মরণফাঁদ: শ্রমিক ফেডারেশন

স্বল্প আয়ের প্রায় ৬০ শতাংশই মানুষ সকালের খাবার খায় না: জরিপ

tab

অর্থ-বাণিজ্য

ইআরএফ’র সংবাদ সম্মেলন

সাংবাদিক প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে ভুল তথ্য দিচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক

সোমবার, ২০ মে ২০২৪

সাংবাদিক প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে ভুল তথ্য দিচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলে অভিযোগ করেছে অর্থনৈতিক সাংবাদিকদের সংগঠন ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ)। সোমবার (২০ মে) ইআরএফ কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানায় সংগঠনটি।

এসময় উপস্থিত ছিলেন সংগঠনটির সভাপতি রেফায়েত উল্লাহ মীরধা, সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেমসহ কার্যনির্বাহী সদস্য ও সংবাদ কর্মীরা।

সংবাদ সম্মেলনে ইআরএফ জানায়, বর্তমান সরকার অবাধ তথ্য প্রবাহ নিশ্চিত করার কথা বলে আসছে। অথচ ৫৩ বছরের প্রথা ভেঙে হঠাৎ করে বাংলাদেশ ব্যাংক সাংবাদিক প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যা সরকারের অবস্থানের বিপরীত। গত ২১ মার্চ থেকে বাংলাদেশ ব্যাংক অলিখিতভাবে সাংবাদিক প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। এ বিষয়ে সমাধান চেয়ে ইআরএফের পক্ষ থেকে এরই মধ্যে গভর্নরের সঙ্গে সাক্ষাৎ করা হয়েছে এবং দু’দফা চিঠিসহ বিভিন্নভাবে অনুরোধ জানানো হয়েছে। নিষেধাজ্ঞা আরোপের প্রায় দু’মাস হলেও সমস্যার সমাধান না করে এখন বিভিন্ন ভুল তথ্য ছড়ানো হচ্ছে। এরকম বাস্তবতায় আজকের এই সংবাদ সম্মেলন ডাকা হয়েছে। এখানে আমি একটি বিষয় পরিষ্কার করতে চাই। সাংবাদিকরা এর আগে নিজের কার্ড প্রদর্শন করে বাংলাদেশ ব্যাংকে প্রবেশ করতে পারতেন। এখন তা বন্ধ করা হয়েছে। হঠাৎ করে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় নানা গুজব ডাল-পালা মেলার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকে বড় কোনো দুর্ঘটনা ঘটেছে কি না সে প্রশ্ন উঠছে।

সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, সাংবাদিকদের লেখনির মাধ্যমে পাঠক, গবেষক, সরকারের নীতি নির্ধারণী পর্যায়ে প্রকৃত তথ্য জানার সুযোগ তৈরি হয়। সাংবাদিকরা অর্থনীতির বিভিন্ন সূচক পর্যালোচনার মাধ্যমে সরকারের নীতি নির্ধারণে সহায়ক ভূমিকা রাখেন। বিশেষ করে কৃষি উৎপাদন, খাদ্য মজুদ ও আমদানি পরিস্থিতি, বাজার ব্যবস্থাপনা, মূল্যস্ফীতি, রিজার্ভের প্রকৃত অবস্থা, সুদহার, রাজস্ব পরিস্থি, সরকারি–বেসরকারি খাতের বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থানসহ বিভিন্ন তথ্যভিত্তিক বিশ্লেষণ তুলে ধরেন। আবার খেলাপি ঋণ পরিস্থিতি, ব্যাংক খাতের অনিয়ম-দুর্নীতি, অর্থপাচারসহ বিভিন্ন সমস্যার তথ্য তুলে ধরলে সরকার তাতে উপকৃত হয়। নিতে পারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা। এসব ক্ষেত্রে বেশিরভাগ তথ্যের উৎস কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এখন হঠাৎ করে তথ্য প্রবাহ বন্ধ করার ফলে ভুল তথ্য, অর্ধ সত্য তথ্য ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। আবার একটি তথ্য পাওয়ার পর ডেস্ক অফিসারের মাধ্যমে বুঝে প্রকৃত তুলে ধরার সুযোগ সীমিত হয়ে আসছে।

ইআরএফ সভাপতি রেফায়েত উল্লাহ মীরধা বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকে সাংবাদিক প্রবেশ করতে পারে কি না তা নিয়ে কেউ কেউ প্রশ্ন তুলেছেন। এর আগে জানতে হবে অন্য দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকে সাংবাদিক প্রবেশের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে কি না। যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভ, ব্যাংক অব ইংল্যান্ড, রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়াসহ বিভিন্ন দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ওয়েবসাইট অনেক সমৃদ্ধ। সেখানে অর্থনীতির সব সূচকের নিয়মিত আপডেট ছাড়াও বোর্ড মিটিংয়ের কার্য বিবরণী, বিভিন্ন ব্যাংকের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থাসহ সব ধরনের তথ্য প্রকাশ করা হয়। কোনো সাংবাদিক প্রশ্ন করলে দ্রুত রেসপন্স করা হয়। আবার এসব দেশের আর্থিক খাতের সুশাসনের মাত্রা অনেক উঁচুতে। পদ্ধতিগত কারণে সেখানে কোনো অনিয়ম-দুর্নীতির তথ্য আড়াল করা কঠিন। এছাড়া বেনামি ঋণ, ঋণখেলাপি, অর্থপাচারকারী বা অনিয়ম-দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত কেউ কোনো দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকে প্রবেশ করতে পারে বলে আমাদের জানা নেই। এখন বাংলাদেশে সবার জন্য উন্মুক্ত রেখে কেবল সাংবাদিক প্রবেশে নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমে আসলে কি তথ্য আড়াল করার চেষ্টা হচ্ছে আমরা সে প্রশ্ন রাখতে চাই।

বাংলাদেশ ব্যাংকের স্বায়ত্বশাসন হারানোর কারণে আর্থিক খাতের দূরাবস্থার কথা বিভিন্ন অর্থনীতিবিদ, গবেষকদের বক্তব্যে উঠে এসেছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতা, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ব্যবস্থাপনায় দূর্বলতা, তদারকি ব্যবস্থার ভঙ্গুরতা, বিভিন্ন গোষ্টির চাপে নীতির ধারাবাহিকতা রাখতে না পারার বিষয়টি সবার জানা। ব্যাংক একীভূতকরণ নিয়ে তড়িঘড়ির কারণে অস্থিরতা, ব্যাংক খাতের বর্তমান তারল্য সঙ্কটের বিষয়টি সবার জানা। এসব সমস্যার সমাধান না করে সাংবাদিক প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে জনমণে আতঙ্ক আরও বাড়বে। তথ্য প্রবাহ আটকানোর চেষ্টা দেশের জন্য বড় কোনো বিপদ ডেকে আনতে পারে। কারও জন্য যা কাম্য নয়।

সম্পাদক আবুল কাশেম বলেন, বাংলাদেশের বাস্তবতায় নিয়ন্ত্রক সংস্থা চাইলেও অনেক সময় কঠিণ সিদ্ধান্ত নিতে পারে না। এসব ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. মোহাম্মদ ফরাসউদ্দীন, ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ ও ড. আতিউর রহমান অনিয়ম দুর্নীতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য কিভাবে গণমাধ্যমের সহায়তা নিয়ে সফল হয়েছে তাদের সাম্প্রতিক বিভিন্ন আনুষ্ঠানিক, অনানুষ্ঠানিক বক্তব্যে তা উঠে এসেছে। বর্তমান গভর্নর কার স্বার্থে কেবল গণমাধ্যমের কাছে তথ্য আড়াল করার চেষ্টা করছেন তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। কোনো ভুল নীতির কারণে অর্থনীতিতে আরও বড় চাপ তৈরি হলে তার দায়ভার আমাদের সবার ওপর পড়বে। এরকম অবস্থায় আমাদের একমাত্র প্রত্যাশা আগের মতোই অবাধ তথ্য প্রবাহ নিশ্চিত হোক। এ জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকে সাংবাদিক প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার জোর দাবি জানাচ্ছি।

back to top