alt

অর্থ-বাণিজ্য

সয়াবিন তেলের সরবরাহ স্বাভাবিক হয়নি, বেড়েছে ব্রয়লারের দামও

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক : শনিবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪

বোতলজাত সয়াবিন তেল নিয়ে দুই সপ্তাহ ধরে চলা অস্থিরতা এখনও কাটেনি। গত সোমবার সয়াবিন তেলের দাম প্রতি লিটারে ৮ টাকা বাড়িয়েছে সরকার। তারপরও গত চারদিনে বাজারে তেল সরবরাহ স্বাভাবিক করেনি কোম্পানিগুলো। এখনও পাড়া-মহল্লার বেশিরভাগ দোকানে পাওয়া যাচ্ছে না সয়াবিন তেল। শুক্রবার (১৩ ডিসেম্বর) রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন বাজার ঘুরে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।

রামপুরা বাজারে গিয়ে বেশ কয়েকটি দোকান ঘুরে হাতেগোনা দুটি দোকানে বোতলজাত সয়াবিন তেল বিক্রি করতে দেখা গেছে। সেখানে বিক্রেতারা বলেন, ‘কোম্পানি থেকে ১২ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার তেল দেয়ার কথা ছিল। শেষবেলায় জানিয়েছে দিতে পারবে না, শনিবার দেবে। প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে একই অবস্থা। এরমধ্যে তেলের দাম বেড়েছে।

বিভিন্ন ব্র্যান্ডের পরিবেশকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এখন পর্যন্ত একটি ছাড়া অন্য কোনো কোম্পানি নতুন দামের সয়াবিন তেলের বোতল বাজারে ছাড়েনি। এজন্য তারাও খুচরা পর্যায়ে পণ্যটি দিতে পারছেন না। বাড়তি দাম যোগ করে বাজারে এখন প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিনের দাম ১৭৫ টাকা। আর খোলা সয়াবিনের দাম ১৫৭ টাকা। তবে নতুন এ দামের তেল এখনও আসেনি। সরবরাহ সংকটের কারণে বোতলজাত সয়াবিন তেল প্রতি লিটার ১৮০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে। নতুন করে দাম বাড়ার আগে বোতলজাত সয়াবিন প্রতি লিটার ১৬৭ টাকা ও খোলা সয়াবিনের লিটার ছিল ১৪৯ টাকা।

গত সপ্তাহের চেয়ে মসুর ডালের দাম কেজিতে ৫ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে ১১৫ থেকে ১৩০ টাকায়। এছাড়া চিনি, আটা ও ময়দাসহ অন্য পণ্যাদির দাম স্থিতিশীল রয়েছে। বাজারে সুখবর আছে অন্য প্রায় অনেক পণ্যেই। আলু, পেঁয়াজ ও সবজিসহ কিছু মুদি পণ্যেরও দাম কমেছে। স্থিতিশীল রয়েছে ডিমের দামও। শুক্রবার সকালে রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এমনটিই জানা গেছে।

দীর্ঘদিন অস্থিতিশীল থাকা পেঁয়াজের বাজারেও স্বস্তি ফিরতে শুরু করেছে, কমেছে দামও। এক-দেড় মাস আগে দেশি ভালো মানের পেঁয়াজের কেজি ছিল ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা। কেজিতে ৪০ টাকার মতো কমে এখন বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১১০ টাকা। বাজারে এখন দেশি হাইব্রিড পেঁয়াজের কেজিতে ৩০ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ৯০ টাকা আর আমদানি করা পেঁয়াজের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৭৫ থেকে ৮০ টাকা দরে। এ ধরনের পেঁয়াজের কেজি মাস দেড়েক আগেও ছিল ১০০ টাকার মতো। বাজারের দোকানিরা জানান, নতুন পেঁয়াজ ওঠা শুরু করেছে, পাতা পেঁয়াজও এসেছে। ফলে আগের মজুত পেঁয়াজ বাজারে ছাড়তে শুরু করেছেন ব্যবসায়ীরা। নতুন পেঁয়াজ পুরোপুরি চলে এলে দাম আরও কমবে।

নি¤œমুখী ধারা দেখা গেছে আলুর বাজারেও। ভারত থেকে আমদানি করা নতুন আলুর দাম ১২০ টাকা থেকে কমে ৭০ টাকায় নেমেছে। এ ধরনের আলুর আধিক্যের কারণে পুরোনো আলুর দামও কেজিপ্রতি ১০ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে ৬০-৬৫ টাকায়।

অন্যদিকে শীত এলে বাজারে সবজির দাম কমে আসবে এমন প্রতিশ্রুতি দিয়ে আসছিলেন সবজি বিক্রেতারা। কিন্তু রাজধানীসহ সারাদেশে শীতের আমেজ শুরু হলেও এখনও বাজারে ৮০-১০০ টাকার ঘরেই আছে বেশিরভাগ সবজি। মুলা, মিষ্টিকুমড়া ছাড়া প্রায় সব ধরনের সবজিই বাজারে এখন সেই বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে। যদিও বিক্রেতারা বলছেন, ‘আর কিছুদিনের মধ্যেই বাজারে শীতকালীন সবজি বেশি করে আসতে শুরু করবে। তখন সবজির দাম অনেক কমে আসবে।’

শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতি কেজি নতুন আলু বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকায়, টমেটো ১২০ টাকা, বিচিওয়ালা শিম প্রতি কেজি ১০০, করোলা ১০০ টাকা, শসা কেজি ৮০ টাকা, গাজর ৮০ টাকা, মুলা কেজি ৩০ টাকা, পেঁয়াজের পাতা প্রতি কেজি ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া বাজারে বরবটি প্রতি কেজি ১০০ টাকা, গোল বেগুন ৮০ টাকা, লম্বা বেগুন ৬০ টাকা, মাঝারি সাইজের ফুলকপি প্রতি পিস ৫০ টাকা, বাঁধা কপি প্রতি পিস ৫০ টাকা, পেঁপে প্রতি কেজি ৫০ টাকা, ঢেঁড়স ৮০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া প্রতি কেজি ৪০ টাকা, সাধারণ শিম কেজি ৫০ টাকা, শালগম ৫০ টাকা এবং পেঁয়াজের ফুল প্রতি মুঠো ৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে কিছুদিন আগেও আকাশছোঁয়া কাঁচামরিচের দাম কমেছে। বাজারে এখন প্রতি কেজি কাঁচামরিচ বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৮০ টাকায়। গত দুই সপ্তাহ ধরে এ দামেই বিক্রি হচ্ছে কাঁচামরিচ।

সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগির দাম বেড়েছে ১০ থেকে ১৫ টাকা পর্যন্ত। ফলে শুক্রবারের বাজারে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হয়েছে কেজি ১৯০ থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত, যা আগের সপ্তাহে ছিল ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা। তবে মুরগি-গরু-খাসির মাংসের তুলনায় কিছুটা স্বস্তি ছিল মাছের বাজারে।

সরেজমিনে আরও দেখা গেছে, শুক্রবারের বাজারে গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৫০ থেকে ৭৮০ টাকা পর্যন্ত। প্রতি কেজি খাসির মাংস এক হাজার ৫০ টাকা থেকে এক হাজার ২০০ টাকা ও ছাগলের মাংস বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার টাকায়। দেশি মুরগি কেজি ৬৫০-৭০০ টাকা, সাদা লেয়ার ২৫০ টাকা ও লাল লেয়ার বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকায় এবং প্রতি কেজি সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৩০০-৩২০ টাকায়।

মাছের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতি কেজি পাঙাশ বিক্রি ১৭০-১৮০ টাকা, তেলাপিয়া ২০০-২২০ টাকা, কার্প মাছ ২২০-২৫০ টাকা, রুই মাছ ২৬০-৩০০ টাকা, মলা মাছ ২৮০, চাষের কই ২০০ টাকা এবং দেশি কই ৬৫০-৭০০ টাকা কেজি বিক্রি হয়েছে। বড় চিংড়ি মাছ বিক্রি হয়েছে কেজিপ্রতি ৬০০ থেকে ৬৫০ টাকায়, যেখানে গত সপ্তাহেও ছিলো ৭০০ টাকা পর্যন্ত। শিং মাছ বিক্রি হয়েছে ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা। তবে সপ্তাহ ব্যবধানে পাবদা মাছের দাম কিছুটা বেড়েছে। গত সপ্তাহে যেখানে পাবদা মাছ ছিল ৩০০ থেকে সর্বোচ্চ ৩৫০ টাকা, শুক্রবারের বাজারে বিক্রি হয়েছে ৪০০ টাকা পর্যন্ত। এছাড়াও বাজারে শোল মাছ ৬০০-৭০০ টাকা, টাকি মাছ ৩৫০ টাকা এবং সরপুঁটি মাছ ২০০ কেজিতে বিক্রি হয়েছে।

বিক্রেতারা বলছেন, ‘বাজারে নিম্ন আয়সহ সাধারণ ক্রেতাদের মাংসের চাহিদা মেটাতে সবচেয়ে বেশি বিক্রি হয় ব্রয়লার মুরগি। তবে মাঝেমধ্যেই হুটহাট করে দাম বেড়ে যায়, তখন আবার বিক্রিও কিছুটা কমে যায়। তবে নদী ও সামুদ্রিক মাছের সরবরাহ ভালো থাকায় গত সপ্তাহের তুলনায় এ সপ্তাহে মাছের দাম কিছুটা কমেছে।’

ছবি

‘শাটডাউন’ এর মধ্যে কাস্টমস চাকরিকে অত্যাবশ্যক ঘোষণা করল সরকার

ছবি

স্বচ্ছতার সঙ্গে কাজ করলে তদন্তে ভয় নেই’— এনবিআর ইস্যুতে অর্থ উপদেষ্টার মন্তব্য

ছবি

বিমানবন্দরের ১৬ বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানকে কার্যক্রম গুটাতে বলল কর্তৃপক্ষ

ছবি

অর্থবছরের শেষ দিন শেয়ারবাজারে পতন

ছবি

বাংলাদেশে বিশ্বব্যাংকের নতুন ডিভিশন ডিরেক্টর জ্যঁ পেম

ছবি

রাজস্ব আদায় গতবারের চেয়ে বেশি হবে এটা নিশ্চিত: এনবিআর চেয়ারম্যান

রাজস্ব আহরণ বৃদ্ধি ও ভর্তুকি কমানোর পরামর্শ আইএমএফের

মঙ্গলবার ব্যাংক হলিডে, লেনদেন বন্ধ থাকবে

পুঁজিবাজার ঘুরে দাঁড়াবে: ডিবিএ সভাপতি

ছবি

দাম কমেছে অপো এ৩এক্স স্মার্টফোনের

ছবি

দুদক পরিচয়ে চাঁদাবাজি, গ্রেপ্তার বেড়ে ৫

ছবি

রাজস্ব আদায়ে জোর, ভর্তুকি কমানোর পরামর্শ আইএমএফের

ছবি

বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৩১.৩১ বিলিয়ন ডলার: বাংলাদেশ ব্যাংক

ছবি

রিজার্ভের নতুন হিসাব প্রকাশ: নিট রিজার্ভে উল্লেখযোগ্য উল্লম্ফন

স্টার্লিংয়ের এফডিআরের টাকা ফেরত দেয়নি ফারইস্ট ফাইন্যান্স, তদন্তে বিএসইসি

ট্রাম্পের পাল্টা শুল্কে পোশাকের দাম বাড়ছে: এইচঅ্যান্ডএম সিইও

ছবি

আলোচনার আশা ভেঙে সচিবালয় থেকে ফিরে গেলেন এনবিআর আন্দোলনকারীরা

লজিস্টিক পলিসির বাস্তবায়নে সমন্বিত মাস্টারপ্ল্যান অপরিহার্য: ঢাকা চেম্বার

পরপর পাঁচ কার্যদিবস উত্থানে শেয়ারবাজার

ছবি

জাপান ও ভারতে তৈরি পোশাক রপ্তানি বাড়ছে

ছবি

‘মার্চ টু এনবিআর’ কর্মসূচিতে কাস্টমস কার্যক্রমে অচলাবস্থা

ছবি

‘শর্ত ছাড়া আন্দোলন প্রত্যাহার করুন’—ব্যবসায়ী সংগঠনগুলোর অনুরোধ

ছবি

বিদেশিদের হস্তান্তরের আগপর্যন্ত এনসিটি পরিচালনায় আলোচনায় নৌবাহিনী

ব্যাংকিং খাত বর্তমানে সংকটময় অবস্থায় দাঁড়িয়ে আছে: ডিসিসিআই

বাংলাদেশের কাপড়-পাট-সুতার পণ্য আমদানিতে ভারতের নিষেধাজ্ঞা

বিনিয়োগকারীদের জন্য নতুন ওয়েবসাইট চালু করলো বিডা

ছবি

কৃষি যন্ত্রপাতি আমদানিতে হয়রানি দূর করার দাবি

ছবি

বাজার মূলধনে যোগ হলো ১১ হাজার কোটি টাকা

ছবি

এনবিআর চেয়ারম্যানের অপসারণ কাম্য নয়, হয়রানিমুক্ত এনবিআর চান ব্যবসায়ীরা

ছবি

যুক্তরাষ্ট্রের ফাউন্ডেশনের ‘কৃষি খাদ্যের অগ্রদূত’ তালিকায় আবদুল আউয়ালমিন্টু

ছবি

‘মার্চ টু এনবিআর’ কর্মসূচি প্রত্যাহারের আহ্বান অর্থ মন্ত্রণালয়ের

ছবি

নগদের বোর্ড পুনর্গঠন, চেয়ারম্যান কাইজার আহমেদ চৌধুরী

ছবি

ব্যাংকের সীমাতিরিক্ত টাকা পরিশোধ বাধ্যতামূলক করলো বাংলাদেশ ব্যাংক

ওয়ার্ল্ড ফুড প্রাইজ অ্যাওয়ার্ড পাচ্ছেন আবদুল আউয়াল মিন্টু

ট্রাম্পের শুল্কনীতি পোশাক শিল্পের জন্য মরণফাঁদ: শ্রমিক ফেডারেশন

স্বল্প আয়ের প্রায় ৬০ শতাংশই মানুষ সকালের খাবার খায় না: জরিপ

tab

অর্থ-বাণিজ্য

সয়াবিন তেলের সরবরাহ স্বাভাবিক হয়নি, বেড়েছে ব্রয়লারের দামও

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক

শনিবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪

বোতলজাত সয়াবিন তেল নিয়ে দুই সপ্তাহ ধরে চলা অস্থিরতা এখনও কাটেনি। গত সোমবার সয়াবিন তেলের দাম প্রতি লিটারে ৮ টাকা বাড়িয়েছে সরকার। তারপরও গত চারদিনে বাজারে তেল সরবরাহ স্বাভাবিক করেনি কোম্পানিগুলো। এখনও পাড়া-মহল্লার বেশিরভাগ দোকানে পাওয়া যাচ্ছে না সয়াবিন তেল। শুক্রবার (১৩ ডিসেম্বর) রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন বাজার ঘুরে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।

রামপুরা বাজারে গিয়ে বেশ কয়েকটি দোকান ঘুরে হাতেগোনা দুটি দোকানে বোতলজাত সয়াবিন তেল বিক্রি করতে দেখা গেছে। সেখানে বিক্রেতারা বলেন, ‘কোম্পানি থেকে ১২ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার তেল দেয়ার কথা ছিল। শেষবেলায় জানিয়েছে দিতে পারবে না, শনিবার দেবে। প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে একই অবস্থা। এরমধ্যে তেলের দাম বেড়েছে।

বিভিন্ন ব্র্যান্ডের পরিবেশকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এখন পর্যন্ত একটি ছাড়া অন্য কোনো কোম্পানি নতুন দামের সয়াবিন তেলের বোতল বাজারে ছাড়েনি। এজন্য তারাও খুচরা পর্যায়ে পণ্যটি দিতে পারছেন না। বাড়তি দাম যোগ করে বাজারে এখন প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিনের দাম ১৭৫ টাকা। আর খোলা সয়াবিনের দাম ১৫৭ টাকা। তবে নতুন এ দামের তেল এখনও আসেনি। সরবরাহ সংকটের কারণে বোতলজাত সয়াবিন তেল প্রতি লিটার ১৮০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে। নতুন করে দাম বাড়ার আগে বোতলজাত সয়াবিন প্রতি লিটার ১৬৭ টাকা ও খোলা সয়াবিনের লিটার ছিল ১৪৯ টাকা।

গত সপ্তাহের চেয়ে মসুর ডালের দাম কেজিতে ৫ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে ১১৫ থেকে ১৩০ টাকায়। এছাড়া চিনি, আটা ও ময়দাসহ অন্য পণ্যাদির দাম স্থিতিশীল রয়েছে। বাজারে সুখবর আছে অন্য প্রায় অনেক পণ্যেই। আলু, পেঁয়াজ ও সবজিসহ কিছু মুদি পণ্যেরও দাম কমেছে। স্থিতিশীল রয়েছে ডিমের দামও। শুক্রবার সকালে রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এমনটিই জানা গেছে।

দীর্ঘদিন অস্থিতিশীল থাকা পেঁয়াজের বাজারেও স্বস্তি ফিরতে শুরু করেছে, কমেছে দামও। এক-দেড় মাস আগে দেশি ভালো মানের পেঁয়াজের কেজি ছিল ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা। কেজিতে ৪০ টাকার মতো কমে এখন বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১১০ টাকা। বাজারে এখন দেশি হাইব্রিড পেঁয়াজের কেজিতে ৩০ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ৯০ টাকা আর আমদানি করা পেঁয়াজের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৭৫ থেকে ৮০ টাকা দরে। এ ধরনের পেঁয়াজের কেজি মাস দেড়েক আগেও ছিল ১০০ টাকার মতো। বাজারের দোকানিরা জানান, নতুন পেঁয়াজ ওঠা শুরু করেছে, পাতা পেঁয়াজও এসেছে। ফলে আগের মজুত পেঁয়াজ বাজারে ছাড়তে শুরু করেছেন ব্যবসায়ীরা। নতুন পেঁয়াজ পুরোপুরি চলে এলে দাম আরও কমবে।

নি¤œমুখী ধারা দেখা গেছে আলুর বাজারেও। ভারত থেকে আমদানি করা নতুন আলুর দাম ১২০ টাকা থেকে কমে ৭০ টাকায় নেমেছে। এ ধরনের আলুর আধিক্যের কারণে পুরোনো আলুর দামও কেজিপ্রতি ১০ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে ৬০-৬৫ টাকায়।

অন্যদিকে শীত এলে বাজারে সবজির দাম কমে আসবে এমন প্রতিশ্রুতি দিয়ে আসছিলেন সবজি বিক্রেতারা। কিন্তু রাজধানীসহ সারাদেশে শীতের আমেজ শুরু হলেও এখনও বাজারে ৮০-১০০ টাকার ঘরেই আছে বেশিরভাগ সবজি। মুলা, মিষ্টিকুমড়া ছাড়া প্রায় সব ধরনের সবজিই বাজারে এখন সেই বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে। যদিও বিক্রেতারা বলছেন, ‘আর কিছুদিনের মধ্যেই বাজারে শীতকালীন সবজি বেশি করে আসতে শুরু করবে। তখন সবজির দাম অনেক কমে আসবে।’

শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতি কেজি নতুন আলু বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকায়, টমেটো ১২০ টাকা, বিচিওয়ালা শিম প্রতি কেজি ১০০, করোলা ১০০ টাকা, শসা কেজি ৮০ টাকা, গাজর ৮০ টাকা, মুলা কেজি ৩০ টাকা, পেঁয়াজের পাতা প্রতি কেজি ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া বাজারে বরবটি প্রতি কেজি ১০০ টাকা, গোল বেগুন ৮০ টাকা, লম্বা বেগুন ৬০ টাকা, মাঝারি সাইজের ফুলকপি প্রতি পিস ৫০ টাকা, বাঁধা কপি প্রতি পিস ৫০ টাকা, পেঁপে প্রতি কেজি ৫০ টাকা, ঢেঁড়স ৮০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া প্রতি কেজি ৪০ টাকা, সাধারণ শিম কেজি ৫০ টাকা, শালগম ৫০ টাকা এবং পেঁয়াজের ফুল প্রতি মুঠো ৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে কিছুদিন আগেও আকাশছোঁয়া কাঁচামরিচের দাম কমেছে। বাজারে এখন প্রতি কেজি কাঁচামরিচ বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৮০ টাকায়। গত দুই সপ্তাহ ধরে এ দামেই বিক্রি হচ্ছে কাঁচামরিচ।

সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগির দাম বেড়েছে ১০ থেকে ১৫ টাকা পর্যন্ত। ফলে শুক্রবারের বাজারে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হয়েছে কেজি ১৯০ থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত, যা আগের সপ্তাহে ছিল ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা। তবে মুরগি-গরু-খাসির মাংসের তুলনায় কিছুটা স্বস্তি ছিল মাছের বাজারে।

সরেজমিনে আরও দেখা গেছে, শুক্রবারের বাজারে গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৫০ থেকে ৭৮০ টাকা পর্যন্ত। প্রতি কেজি খাসির মাংস এক হাজার ৫০ টাকা থেকে এক হাজার ২০০ টাকা ও ছাগলের মাংস বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার টাকায়। দেশি মুরগি কেজি ৬৫০-৭০০ টাকা, সাদা লেয়ার ২৫০ টাকা ও লাল লেয়ার বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকায় এবং প্রতি কেজি সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৩০০-৩২০ টাকায়।

মাছের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতি কেজি পাঙাশ বিক্রি ১৭০-১৮০ টাকা, তেলাপিয়া ২০০-২২০ টাকা, কার্প মাছ ২২০-২৫০ টাকা, রুই মাছ ২৬০-৩০০ টাকা, মলা মাছ ২৮০, চাষের কই ২০০ টাকা এবং দেশি কই ৬৫০-৭০০ টাকা কেজি বিক্রি হয়েছে। বড় চিংড়ি মাছ বিক্রি হয়েছে কেজিপ্রতি ৬০০ থেকে ৬৫০ টাকায়, যেখানে গত সপ্তাহেও ছিলো ৭০০ টাকা পর্যন্ত। শিং মাছ বিক্রি হয়েছে ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা। তবে সপ্তাহ ব্যবধানে পাবদা মাছের দাম কিছুটা বেড়েছে। গত সপ্তাহে যেখানে পাবদা মাছ ছিল ৩০০ থেকে সর্বোচ্চ ৩৫০ টাকা, শুক্রবারের বাজারে বিক্রি হয়েছে ৪০০ টাকা পর্যন্ত। এছাড়াও বাজারে শোল মাছ ৬০০-৭০০ টাকা, টাকি মাছ ৩৫০ টাকা এবং সরপুঁটি মাছ ২০০ কেজিতে বিক্রি হয়েছে।

বিক্রেতারা বলছেন, ‘বাজারে নিম্ন আয়সহ সাধারণ ক্রেতাদের মাংসের চাহিদা মেটাতে সবচেয়ে বেশি বিক্রি হয় ব্রয়লার মুরগি। তবে মাঝেমধ্যেই হুটহাট করে দাম বেড়ে যায়, তখন আবার বিক্রিও কিছুটা কমে যায়। তবে নদী ও সামুদ্রিক মাছের সরবরাহ ভালো থাকায় গত সপ্তাহের তুলনায় এ সপ্তাহে মাছের দাম কিছুটা কমেছে।’

back to top