বিশ্ব বাজারের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে দেশের বাজারেও স্বর্ণের দাম লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। রেকর্ডের পর রেকর্ড হচ্ছে। বৃহস্পতিবার ০৬ ফেব্রুয়ারি সবচেয়ে ভালো মানের (২২ ক্যারেট) প্রতিভরি স্বর্ণ ১ লাখ ৪৭ হাজার ৮১৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতি ভরিতে বেড়েছে প্রায় তিন হাজার টাকা। দেশের বাজারে এর আগে কখনও এত উচ্চতায় ওঠেনি মূল্যবান এই ধাতুর দাম। তিন দিন আগে ২ ফেব্রুয়ারি এই মানের স্বর্ণের দাম ২ হাজার ১০০ টাকা বাড়ানোয় ভরি উঠেছিল ১ লাখ ৪৪ হাজার ৮৯০ টাকায় যা ছিল অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি।
বুধবার আরও ২ হাজার ৯২৮ টাকা বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের সংগঠন বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস)। বৃহস্পতিবার থেকে ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণ কিনতে প্রায় ১ লাখ ৪৮ হাজার টাকা খরচ করতে হবে। গত বছরের ৩১ অক্টোবর এই মানের স্বর্ণের দাম ১ লাখ ৪৩ হাজার ৪২৪ টাকায় উঠেছিল। এরপর তা নিম্মমূখী হয়, ১ লাখ ৩৮ হাজার থেকে ১ লাখ ৪২ হাজার টাকা মধ্যে ওঠানামা করে।
বাজুসের নতুন ঘোষণা অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার থেকে দেশের বাজারে এক গ্রাম ২২ ক্যারেট স্বর্ণ কিনতে ১২ হাজার ৬৭৩ টাকা খরচ হচ্ছে। ১১ দশমিক ৬৬৪ গ্রামে এক ভরি হিসাবে প্রতিভরি কিনতে খরচ হচ্ছে ১ লাখ ৪৭ হাজার ৮১৮ টাকা। ২১ ক্যারেটের প্রতিভরি স্বর্ণ কিনতে খরচ হচ্ছে ১ লাখ ৪১ হাজার ৯৯ টাকা। ১৮ ক্যারেটে খরচ হচ্ছে ১ লাখ ২০ হাজার ৯৪৪ টাকা। আর সনাতন পদ্ধতির এক ভরি স্বর্ণ বিক্রি হবে ৯৯ হাজার ৫২৯টাকায়।
বুধবার পর্যন্ত এক গ্রাম ২২ ক্যারেট স্বর্ণ কিনতে ১২ হাজার ৪২২ টাকা খরচ হয়েছে। প্রতিভরি কিনতে খরচ হয়েছে ১ লাখ ৪৪ হাজার ৮৯০ টাকা। ২১ ক্যারেটের প্রতিভরি স্বর্ণ কিনতে লেগেছে ১ লাখ ৩৮ হাজার ৩০০ টাকা। ১৮ ক্যারেটে লেগেছে ১ লাখ ১৮ হাজার ৫৪১ টাকা। সনাতন পদ্ধতির এক ভরি স্বর্ণ বিক্রি হয়েছে ৯৭ হাজার ৪৭৬ টাকায়।
পরিসংখ্যানে দেখা যায়, তিন দিনের ব্যবধানে প্রতিভরি ২২ ক্যারেট স্বর্ণের দাম বেড়েছে ২ হাজার ৯২৮ টাকা। ২১ ক্যারেটের দাম বেড়েছে ২ হাজার ৭৯৯ টাকা। ১৮ ক্যারেটের বেড়েছে ২ হাজার ৪০৩ টাকা। সনাতন পদ্ধতির প্রতিভরির দাম বেড়েছে ২ হাজার ৫২ টাকা। এ নিয়ে টানা পাঁচ দফায় প্রতিভরি স্বর্ণের দাম বেড়েছে ৯ হাজার ৫৩১ টাকা। গত বছরের ৩০ ডিসেম্বর এই মানের স্বর্ণের দাম ভরিতে ১ হাজার ৫০ টাকা কমানো হয়েছিল। ২৩ ডিসেম্বর কমানো হয় ১ হাজার ২৪৮ টাকা। ১৯ ডিসেম্বর ২ হাজার ৮৮ টাকা বাড়ানো হয়েছিল। ১৫ ডিসেম্বর ১ হাজার ৭৭৩ টাকা কমানো হয়েছিল। ১২ ডিসেম্বর বাড়ানো হয় ১ হাজার ৮৭৮ টাকা।
এভাবে ওঠানামার মধ্যে দিয়েই শেষ হয়েছিল ২০২৪ সাল। গত বছরে মূল্যবান এই ধাতুর দর ৩৫ বার বেড়েছিল। কমেছিল ২৭ বার। তবে ২০২৫ সালের প্রথম মাস জানুয়ারিতে টানা বেড়েছে। দ্বিতীয় মাস ফেব্রুয়ারিও সেই বাড়ার মধ্য দিয়েই শুরু হয়েছে।
বুধবার রাতে বাজুসের মূল্য নির্ধারণ ও মূল্য পর্যবেক্ষণ স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমানের সই করা সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে স্বর্ণের দাম বাড়ানোর ঘোষণা দিয়ে বলা হয়, স্থানীয় বাজারে তেজাবি স্বর্ণের (পিওর গোল্ড) মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে স্বর্ণের নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার থেকে নতুন দর কার্যকর হবে বলে জানিয়েছে বাজুস।
বাজুসের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, ২০২৪ সালের ১৮ জানুয়ারি এক ভরি ২২ ক্যারেট স্বর্ণের দাম ছিল ১ লাখ ১০ হাজার ৬৯১ টাকা। বৃহস্পতিবার থেকে এই স্বর্ণ ১ লাখ ৪৭ হাজার ৮১৮ টাকায় বিক্রি হবে। এক বছরে এই মানের স্বর্ণের দাম ভরিতে ৩৭ হাজার ১২৭ টাকা বেড়েছে। শতাংশ হিসাবে বেড়েছে ৩৩ দমিক ৫৪ শতাংশ।
বিশ্ব বাজারেও স্বর্ণের দাম রেকর্ডের পর রেকর্ড গড়ছে। ১ ফেব্রুয়ারি প্রথম এক আউন্স স্বর্ণের দাম ২ হাজার ৮০০ ডলার স্পর্শ করেছে। চড়তে চড়তে গত বছরের অক্টোবরের শেষের দিকে প্রতিআউন্স (৩১.১০৩৪৭৬৮ গ্রাম) স্বর্ণের দাম প্রায় ২ হাজার ৮০০ ডলারে উঠে গিয়েছিল। সেই দর কমতে কমতে গত ১৫ নভেম্বর ২ হাজার ৫৫০ ডলারে নেমে এসেছিল। মাঝে কিছু দিন টানা বেড়ে ২ হাজার ৭০০ ডলার ছাড়িয়ে গিয়েছিল। তবে সেই স্বর্ণের দর ফের নিম্নমুখী হয়। গত কয়েক দিন ধরে আবার ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে।
বুধবার রাত সাড়ে ৯টায় বিশ্ব বাজারে প্রতিআউন্স স্বর্ণের দাম ৩৩ ডলার ১৭ সেন্ট বেড়ে ২ হাজার ৮৭৫ ডলার ৯৭ সেন্টে উঠেছে। শতাংশ হিসাবে বেড়েছে ১ দশমিক ১৭ শতাংশ। ১ ফেব্রুয়ারি রাতে বাজুস যখন দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম বাড়ানোর ঘোষণা দেয়, তখন আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিআউন্স স্বর্ণের দাম ছিল ২ হাজার ৭৯৮ ডলার ৪৯ সেন্ট। এক বছরের ব্যবধানে বিশ্ব বাজারে প্রতিআউন্স স্বর্ণের দর ৮০৭ ডলার ৫২ সেন্ট বেড়েছে। শতাংশ হিসাবে বেড়েছে প্রায় ৪০ শতাংশ।
বিশ্বে যে কোনও অনিশ্চয়তা দেখা দিলেই স্বর্ণের দাম চড়তে থাকে। বিশ্ববাজারের প্রভাব তখন স্থানীয় বাজারেও পড়ে। কোভিড মহামারির পর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হলে স্বর্ণের দাম বাড়লেও পরে স্থিতিশীল হয়েছিল। গত বছরের ফেব্রুয়ারি মাসের মাঝামাঝি সময়ে বিশ্ব বাজারে প্রতিআউন্স স্বর্ণের দাম কমতে কমতে ২ হাজার ডলারের নিচে নেমে গিয়েছিল।
চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বাণিজ্যযুদ্ধকে কেন্দ্র করে বিশ্ববাজারে এখন স্বর্ণের দাম বাড়ছে বলে জানিয়েছে রয়টার্স। মূলত যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের পাল্টাপাল্টি শুল্কারোপের পর বিশ্ববাণিজ্যে অস্থিরতার কারণে স্বর্ণের দাম বাড়ছে।
ক্ষমতায় বসার পরপরই চীন থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর বাড়তি শুল্ক আরোপ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। নানা কৌশলে পাল্টা জবাবের ঘোষণা দিয়েছে বেইজিংও। পাল্টাপাল্টি এই পদক্ষেপের মধ্য দিয়ে বিশ্বের সবচেয়ে বড় অর্থনীতির দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যিক যুদ্ধ আরও জোরদার হয়েছে।
পাল্টা জবাবের অংশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর বাড়তি শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছে বেইজিং। পাশাপাশি আরও কিছু পদক্ষেপ নেবে তারা। ১০ ফেব্রুয়ারি থেকে এসব পদক্ষেপ কার্যকর হওয়ার কথা। এর আগে চীন থেকে আমদানি করা সব পণ্যের ওপর ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেয় যুক্তরাষ্ট্র। এরই মধ্যে মঙ্গলবার থেকে তা কার্যকর হয়েছে। রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বর্তমান বাণিজ্য পরিস্থিতির কারণে স্বর্ণের দাম বাড়ছে। নিরাপদ বিনিয়োগের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে স্বর্ণের চাহিদা বেড়ে গেছে। সে কারণেই দাম বাড়ছে।
বৃহস্পতিবার, ০৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
বিশ্ব বাজারের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে দেশের বাজারেও স্বর্ণের দাম লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। রেকর্ডের পর রেকর্ড হচ্ছে। বৃহস্পতিবার ০৬ ফেব্রুয়ারি সবচেয়ে ভালো মানের (২২ ক্যারেট) প্রতিভরি স্বর্ণ ১ লাখ ৪৭ হাজার ৮১৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতি ভরিতে বেড়েছে প্রায় তিন হাজার টাকা। দেশের বাজারে এর আগে কখনও এত উচ্চতায় ওঠেনি মূল্যবান এই ধাতুর দাম। তিন দিন আগে ২ ফেব্রুয়ারি এই মানের স্বর্ণের দাম ২ হাজার ১০০ টাকা বাড়ানোয় ভরি উঠেছিল ১ লাখ ৪৪ হাজার ৮৯০ টাকায় যা ছিল অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি।
বুধবার আরও ২ হাজার ৯২৮ টাকা বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের সংগঠন বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস)। বৃহস্পতিবার থেকে ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণ কিনতে প্রায় ১ লাখ ৪৮ হাজার টাকা খরচ করতে হবে। গত বছরের ৩১ অক্টোবর এই মানের স্বর্ণের দাম ১ লাখ ৪৩ হাজার ৪২৪ টাকায় উঠেছিল। এরপর তা নিম্মমূখী হয়, ১ লাখ ৩৮ হাজার থেকে ১ লাখ ৪২ হাজার টাকা মধ্যে ওঠানামা করে।
বাজুসের নতুন ঘোষণা অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার থেকে দেশের বাজারে এক গ্রাম ২২ ক্যারেট স্বর্ণ কিনতে ১২ হাজার ৬৭৩ টাকা খরচ হচ্ছে। ১১ দশমিক ৬৬৪ গ্রামে এক ভরি হিসাবে প্রতিভরি কিনতে খরচ হচ্ছে ১ লাখ ৪৭ হাজার ৮১৮ টাকা। ২১ ক্যারেটের প্রতিভরি স্বর্ণ কিনতে খরচ হচ্ছে ১ লাখ ৪১ হাজার ৯৯ টাকা। ১৮ ক্যারেটে খরচ হচ্ছে ১ লাখ ২০ হাজার ৯৪৪ টাকা। আর সনাতন পদ্ধতির এক ভরি স্বর্ণ বিক্রি হবে ৯৯ হাজার ৫২৯টাকায়।
বুধবার পর্যন্ত এক গ্রাম ২২ ক্যারেট স্বর্ণ কিনতে ১২ হাজার ৪২২ টাকা খরচ হয়েছে। প্রতিভরি কিনতে খরচ হয়েছে ১ লাখ ৪৪ হাজার ৮৯০ টাকা। ২১ ক্যারেটের প্রতিভরি স্বর্ণ কিনতে লেগেছে ১ লাখ ৩৮ হাজার ৩০০ টাকা। ১৮ ক্যারেটে লেগেছে ১ লাখ ১৮ হাজার ৫৪১ টাকা। সনাতন পদ্ধতির এক ভরি স্বর্ণ বিক্রি হয়েছে ৯৭ হাজার ৪৭৬ টাকায়।
পরিসংখ্যানে দেখা যায়, তিন দিনের ব্যবধানে প্রতিভরি ২২ ক্যারেট স্বর্ণের দাম বেড়েছে ২ হাজার ৯২৮ টাকা। ২১ ক্যারেটের দাম বেড়েছে ২ হাজার ৭৯৯ টাকা। ১৮ ক্যারেটের বেড়েছে ২ হাজার ৪০৩ টাকা। সনাতন পদ্ধতির প্রতিভরির দাম বেড়েছে ২ হাজার ৫২ টাকা। এ নিয়ে টানা পাঁচ দফায় প্রতিভরি স্বর্ণের দাম বেড়েছে ৯ হাজার ৫৩১ টাকা। গত বছরের ৩০ ডিসেম্বর এই মানের স্বর্ণের দাম ভরিতে ১ হাজার ৫০ টাকা কমানো হয়েছিল। ২৩ ডিসেম্বর কমানো হয় ১ হাজার ২৪৮ টাকা। ১৯ ডিসেম্বর ২ হাজার ৮৮ টাকা বাড়ানো হয়েছিল। ১৫ ডিসেম্বর ১ হাজার ৭৭৩ টাকা কমানো হয়েছিল। ১২ ডিসেম্বর বাড়ানো হয় ১ হাজার ৮৭৮ টাকা।
এভাবে ওঠানামার মধ্যে দিয়েই শেষ হয়েছিল ২০২৪ সাল। গত বছরে মূল্যবান এই ধাতুর দর ৩৫ বার বেড়েছিল। কমেছিল ২৭ বার। তবে ২০২৫ সালের প্রথম মাস জানুয়ারিতে টানা বেড়েছে। দ্বিতীয় মাস ফেব্রুয়ারিও সেই বাড়ার মধ্য দিয়েই শুরু হয়েছে।
বুধবার রাতে বাজুসের মূল্য নির্ধারণ ও মূল্য পর্যবেক্ষণ স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমানের সই করা সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে স্বর্ণের দাম বাড়ানোর ঘোষণা দিয়ে বলা হয়, স্থানীয় বাজারে তেজাবি স্বর্ণের (পিওর গোল্ড) মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে স্বর্ণের নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার থেকে নতুন দর কার্যকর হবে বলে জানিয়েছে বাজুস।
বাজুসের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, ২০২৪ সালের ১৮ জানুয়ারি এক ভরি ২২ ক্যারেট স্বর্ণের দাম ছিল ১ লাখ ১০ হাজার ৬৯১ টাকা। বৃহস্পতিবার থেকে এই স্বর্ণ ১ লাখ ৪৭ হাজার ৮১৮ টাকায় বিক্রি হবে। এক বছরে এই মানের স্বর্ণের দাম ভরিতে ৩৭ হাজার ১২৭ টাকা বেড়েছে। শতাংশ হিসাবে বেড়েছে ৩৩ দমিক ৫৪ শতাংশ।
বিশ্ব বাজারেও স্বর্ণের দাম রেকর্ডের পর রেকর্ড গড়ছে। ১ ফেব্রুয়ারি প্রথম এক আউন্স স্বর্ণের দাম ২ হাজার ৮০০ ডলার স্পর্শ করেছে। চড়তে চড়তে গত বছরের অক্টোবরের শেষের দিকে প্রতিআউন্স (৩১.১০৩৪৭৬৮ গ্রাম) স্বর্ণের দাম প্রায় ২ হাজার ৮০০ ডলারে উঠে গিয়েছিল। সেই দর কমতে কমতে গত ১৫ নভেম্বর ২ হাজার ৫৫০ ডলারে নেমে এসেছিল। মাঝে কিছু দিন টানা বেড়ে ২ হাজার ৭০০ ডলার ছাড়িয়ে গিয়েছিল। তবে সেই স্বর্ণের দর ফের নিম্নমুখী হয়। গত কয়েক দিন ধরে আবার ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে।
বুধবার রাত সাড়ে ৯টায় বিশ্ব বাজারে প্রতিআউন্স স্বর্ণের দাম ৩৩ ডলার ১৭ সেন্ট বেড়ে ২ হাজার ৮৭৫ ডলার ৯৭ সেন্টে উঠেছে। শতাংশ হিসাবে বেড়েছে ১ দশমিক ১৭ শতাংশ। ১ ফেব্রুয়ারি রাতে বাজুস যখন দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম বাড়ানোর ঘোষণা দেয়, তখন আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিআউন্স স্বর্ণের দাম ছিল ২ হাজার ৭৯৮ ডলার ৪৯ সেন্ট। এক বছরের ব্যবধানে বিশ্ব বাজারে প্রতিআউন্স স্বর্ণের দর ৮০৭ ডলার ৫২ সেন্ট বেড়েছে। শতাংশ হিসাবে বেড়েছে প্রায় ৪০ শতাংশ।
বিশ্বে যে কোনও অনিশ্চয়তা দেখা দিলেই স্বর্ণের দাম চড়তে থাকে। বিশ্ববাজারের প্রভাব তখন স্থানীয় বাজারেও পড়ে। কোভিড মহামারির পর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হলে স্বর্ণের দাম বাড়লেও পরে স্থিতিশীল হয়েছিল। গত বছরের ফেব্রুয়ারি মাসের মাঝামাঝি সময়ে বিশ্ব বাজারে প্রতিআউন্স স্বর্ণের দাম কমতে কমতে ২ হাজার ডলারের নিচে নেমে গিয়েছিল।
চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বাণিজ্যযুদ্ধকে কেন্দ্র করে বিশ্ববাজারে এখন স্বর্ণের দাম বাড়ছে বলে জানিয়েছে রয়টার্স। মূলত যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের পাল্টাপাল্টি শুল্কারোপের পর বিশ্ববাণিজ্যে অস্থিরতার কারণে স্বর্ণের দাম বাড়ছে।
ক্ষমতায় বসার পরপরই চীন থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর বাড়তি শুল্ক আরোপ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। নানা কৌশলে পাল্টা জবাবের ঘোষণা দিয়েছে বেইজিংও। পাল্টাপাল্টি এই পদক্ষেপের মধ্য দিয়ে বিশ্বের সবচেয়ে বড় অর্থনীতির দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যিক যুদ্ধ আরও জোরদার হয়েছে।
পাল্টা জবাবের অংশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর বাড়তি শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছে বেইজিং। পাশাপাশি আরও কিছু পদক্ষেপ নেবে তারা। ১০ ফেব্রুয়ারি থেকে এসব পদক্ষেপ কার্যকর হওয়ার কথা। এর আগে চীন থেকে আমদানি করা সব পণ্যের ওপর ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেয় যুক্তরাষ্ট্র। এরই মধ্যে মঙ্গলবার থেকে তা কার্যকর হয়েছে। রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বর্তমান বাণিজ্য পরিস্থিতির কারণে স্বর্ণের দাম বাড়ছে। নিরাপদ বিনিয়োগের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে স্বর্ণের চাহিদা বেড়ে গেছে। সে কারণেই দাম বাড়ছে।