alt

অর্থ-বাণিজ্য

চট্টগ্রামের ‘বিহারীপল্লী’চলছে নকশা তৈরীর কাজ , ঈদ সামনে রেখে দম ফেলার ফুরসত নেই কারিগরদের

নিরুপম দাশগুপ্ত, চট্টগ্রাম ব্যুরো : বুধবার, ১৯ মার্চ ২০২৫

ঈদকে সামনে রেখে চট্টগ্রাম মহানগরের ঝাউতলা বাজার এলাকায় ‘বিহারীপল্লীতে’মোটেও দম ফেলার ফুরসত নেই। দিন রাত কাজ করছেন কারিগররা। নিপুন হাতে চলছে নকশা তৈরীর কাজ। দিনরাত পরিশ্রম করে থ্রি-পিছ, সালোয়ার কামিজ, লেহেঙ্গা ও বোরকাতে ফুল, পাখিসহ নানা নকশা ফুটিয়ে তুলছেন তারা। ছেলেদের পাঞ্জাবি ও মেয়েদের শাড়ি-সালোয়ার কামিজে ব্যবহৃত বিশেষ নকশার জারদৌসিতে ধাতব সুতো ও ভারি নকশা বেশি ব্যবহৃত হয়, যা বেশ রাজকীয় ও জাঁকজমকপূর্ণ। কারচুপি এটি তুলনামূলক হালকা ও আধুনিক ডিজাইনের হয়, যেখানে চুমকি, পুঁতি ও জরি বেশি ব্যবহৃত হয়।

বিহারিপল্লীতে জারদৌসী ও কারচুপির কারখানা আছে ১৫ থেকে ২০টির মতো। সেখানে কারিগর হিসেবে কাজ করছেন প্রায় দেড় শতাধিক লোক। এছাড়া ওই এলাকার অনেক বাসা-বাড়িতে এসব কাজ করা হয়ে থাকে। কাপড়ে একেকটি কাজ করতে তারা তিন থেকে চার হাজার টাকা পর্যন্ত নিয়ে থাকেন। নকশা বেশি হলে টাকার পরিমাণ আরও বাড়ে। তাদের কাছে কাজ নিয়ে বেশি আসেন পাইকারী ব্যবসায়ীরা। নকশা করা সেসব কাপড় চলে যায় চটগ্রামসহ দেশের বড় বড় শপিং মল ও মার্কেটে। অনেকে আবার নিজেদের পছন্দমতো নকশা তাদের কাপড়ে করে নিয়ে যান।

জাল্লাল উদ্দিন ২৫ বছর ধরে কাপড়ে জারদৌসী ও কারচুপির কাজ করছেন। ১৮ বছর আগে তিনি নিজের কারখানা খুলেন। তার প্রতিষ্ঠানের নাম ‘চয়েস কারচুপি’। বর্তমানে ২২ জন কারিগর তার কারখানায় কাজ করেন।

জালাল উদ্দিন বলেন, ২৫ বছর ধরে আমি এ কাজ করছি। চাচার হাত ধরে এ পেশায় এসেছি। ১২ মাসেই আমাদের কাজ থাকে। কিন্তু ঈদে অর্ডার বেশি থাকে। এত অর্ডার পাই যে, কারিগরের অভাবে অনেক কাজ সময়মত ডেলিভারী দিতে পারি না। সাধারণ সময়ে আট থেকে ১০ ঘণ্টা আমরা কাজ করি। তবে ঈদে কাজ বেশি থাকায় ২৪ ঘণ্টা আমাদের পালাবদল করে কাজ করতে হয়।

তিনি বলেন, আমরা নরমাল একটি নকশা করতে তিন থেকে চার হাজার টাকা নেই। এসব নকশা করতে দু-তিনদিন লেগে যায়। আবার লেহেঙ্গাতে কাজ বেশি থাকে। সেটা একটু দাম বেশি পড়ে। লাখ-দেড় লাখার টাকার কাজও আছে। সেগুলো করতে মাসখানেক সময় লাগে।

আনুশা বুটিকস ফ্যাশনের সত্ত্বাধিকারী মো. শাহিদ বলেন, সবচেয়ে কম মজুরি নেওয়া হয় পাঞ্জাবিতে কাজ করতে। এক হাজার টাকার মধ্যেই খুব ভালো নকশা করে দেয়া যায় পাঞ্জাবিতে। তবে আমাদের বেশি কাজ থাকে থ্রি-পিছ ও বোরকাতে। তবে ঈদ আসলেই মেয়েদের সালোয়ার কামিজ ও লেহেঙ্গার কাজ বেশি থাকে। একটি লেহেঙ্গায় কাজ করাতে আমরা ২০ হাজার টাকা মতো মজুরি নিয়ে থাকি। মেশিনে এখন জারদৌসি ও কারচুপির যে কাজ করা হয় সেটার চেয়ে হাতে করা কাজের মান অনেক উন্নত বলে জানান তিনি।

তিনি বলেন, মেশিনে এসব কাজ করতে খুব কম সময় লাগে। আবার দামও কম। কিন্তু আমরা হাতে যে কাজ করি সেটা উন্নত মানের। মেশিনের কাজের কোনো গ্যারান্টি নেই।

কারিগররা জানিয়েছেন, বছরের ১২ মাসেই তাদের অর্ডার থাকে। তবে ঈদ আসলেই তাদের দম ফেলার সময় থাকে না। দেশ ছাড়িয়ে বিদেশ থেকেও তাদের কাছে অর্ডার আসে। একেকটি নকশা করতে তাদের গড়ে দেড় থেকে দুদিন সময় লাগে। যে নকশায় কাজ বেশি থাকে, সেটাতে সময়ও বেশি লাগে। দামও নকশার ওপর নির্ধারিত হয়। বিহারীপল্লি থেকে কাজ শেখে অনেকেই দুবাই, সৌদি আরবসহ মধ্যেপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে গিয়ে নিজেদের ভাগ্যে পরিবর্তন করেছেন বলে কারিগররা জানিয়েছেন। এদিকে জারদৌসি ও কারচুপির কাজ মেশিনে সহজে করতে পারায় হাতে করা কাজের চাহিদা একটু কমেছে বলে জানিয়েছেন বুটিকস মালিকরা।

সাইরান বুটিক্স ফ্যাশনের মালিক মো. আরিফ বলেন, আমাদের যেরকম ডিজাইন এনে দেয়া হয় আমরা হুবুহু সেভাবে কাজ করে দেয়। অনেক দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ আসেন আমাদের এখানে। এখন অনেক জায়গায় এসব কাজ করা হচ্ছে। কিন্তু আমাদের এখানকার মতো কাজ কেউ করে দিতে পারবে না। তাই ক্রেতারা আমাদের ওপর ভরসা পায়। দাম বেশি হলেও আমাদের এখান থেকেই কাজ করান তারা।

স্বর্ণের দামে রেকর্ড, প্রতি ভরি ১ লাখ সাড়ে ৭২ হাজার টাকা

সিপিডির গবেষণা: ৪৫ শতাংশ কোম্পানি বলছে কর কর্মকর্তারা ঘুষ চেয়েছেন

আমদানি মূল্য পরিশোধে উত্তম চর্চা অনুসরণের নির্দেশ

ছবি

শেয়ারবাজারে ফের বড় পতন

গ্যাসের দাম পুনর্নির্ধারণের দাবি জানিয়েছেন দেশের শীর্ষ ব্যবসায়ীরা

ছবি

৪২ দিন পর রিজার্ভ ফের বেড়ে দাঁড়ালো ২১ বিলিয়ন ডলারে

ছবি

বিদেশি বিনিয়োগে সুবাতাস, অক্টোবর-ডিসেম্বরে বেড়েছে প্রায় ৩০ শতাংশ

ছবি

মডেল মেঘনা আলমের ব্যাংক হিসাব তলব

বিনা খরচে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ডে হিসাব খুলতে পারবেন ফ্রিল্যান্সাররা

চট্টগ্রামে বে টার্মিনাল নির্মাণের প্রস্তুতিতে ১৫ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প

ধারাবাহিক পতন চলছে শেয়ারবাজারে

যুক্তরাষ্ট্র থেকে রেমিটেন্স বেড়েছে দ্বিগুণেরও বেশি

ছবি

তৈরি পোশাক খাতে নতুন কারখানা চালু হচ্ছে

ছবি

৯ মাসে রাজস্ব ঘাটতি ৬৫ হাজার কোটি টাকা

স্বল্পমেয়াদি ঋণ নিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে আলোচনা করবে আইএমএফ

ছবি

৩১৬ চালকলের লাইসেন্স বাতিল

আমানত ও ঋণের সুদের তথ্য দিতে হবে মাসের ১০ তারিখের মধ্যে

ছবি

নেতৃত্ব গড়ার সুযোগ নিয়ে ফিরলো দারাজ ফিউচার লিডারস প্রোগ্রাম

ছবি

অপ্রচলিত বাজারে তৈরি পোশাক রপ্তানি বাড়লেও বড় বাজারের তুলনায় কম

ছবি

ফেব্রুয়ারিতে ক্রেডিট কার্ডে খরচ কমেছে

ছবি

দেশ–বিদেশে বাংলাদেশি ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারে ‘ভাটা’

অভ্যন্তরীণ পর্যটনের বিকাশে জোর নতুন পর্যটন উপদেষ্টার

গ্রিন ডাটা সেন্টার নির্মাণের প্রস্তাব নীতিগত অনুমোদন

সরকার পুঁজিবাজারের সমস্যা দ্রুত সমাধানের চেষ্টা করছে: প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী

ছবি

সপ্তাহজুড়ে পতন, কমেছে লেনদেন ও বাজার মূলধন

নেদারল্যান্ডসে চলছে ‘বেস্ট অব বাংলাদেশ ইন ইউরোপ’ প্রদর্শনী

ছবি

চলতি অর্থবছরের জুলাই-মার্চে পাঁচ বছরের সর্বনিম্নএডিপি বাস্তবায়ন

পুঁজিবাজারের সমস্যা-সমাধানের অ্যাকশন প্ল্যান দাখিলের নির্দেশ

ছবি

ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপিদের তথ্য দিতে নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক

ছবি

ভোজ্যতেল আমদানিতে ৫ শতাংশ আগাম কর অব্যাহতি

ছবি

প্রচলিত প্রবৃদ্ধির মডেল পর্যালোচনা করা প্রয়োজন: হোসেন জিল্লুর রহমান

ছবি

মিষ্টি ব্যবসায়ীরা ভ্যাটের রিসিট দেন না, অভিযোগ এনবিআর চেয়ারম্যানের

ছবি

স্বর্ণের দামে ফের রেকর্ড, বেড়ে দাঁড়ালো ১ লাখ ৬৫ হাজার টাকায়

ছবি

বাজেটে প্রথম অগ্রাধিকার ‘মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ’, সুযোগ তৈরি হবে গ্রামীণ কর্মসংস্থানের

প্রতি তিন মাসে ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপিদের বিস্তারিত তথ্য জমা দিতে নির্দেশ বাংলাদেশ ব্যাংকের

তৈরি পোশাকে করপোরেট কর অপরিবর্তিত চান ব্যবসায়ীরা

tab

অর্থ-বাণিজ্য

চট্টগ্রামের ‘বিহারীপল্লী’চলছে নকশা তৈরীর কাজ , ঈদ সামনে রেখে দম ফেলার ফুরসত নেই কারিগরদের

নিরুপম দাশগুপ্ত, চট্টগ্রাম ব্যুরো

বুধবার, ১৯ মার্চ ২০২৫

ঈদকে সামনে রেখে চট্টগ্রাম মহানগরের ঝাউতলা বাজার এলাকায় ‘বিহারীপল্লীতে’মোটেও দম ফেলার ফুরসত নেই। দিন রাত কাজ করছেন কারিগররা। নিপুন হাতে চলছে নকশা তৈরীর কাজ। দিনরাত পরিশ্রম করে থ্রি-পিছ, সালোয়ার কামিজ, লেহেঙ্গা ও বোরকাতে ফুল, পাখিসহ নানা নকশা ফুটিয়ে তুলছেন তারা। ছেলেদের পাঞ্জাবি ও মেয়েদের শাড়ি-সালোয়ার কামিজে ব্যবহৃত বিশেষ নকশার জারদৌসিতে ধাতব সুতো ও ভারি নকশা বেশি ব্যবহৃত হয়, যা বেশ রাজকীয় ও জাঁকজমকপূর্ণ। কারচুপি এটি তুলনামূলক হালকা ও আধুনিক ডিজাইনের হয়, যেখানে চুমকি, পুঁতি ও জরি বেশি ব্যবহৃত হয়।

বিহারিপল্লীতে জারদৌসী ও কারচুপির কারখানা আছে ১৫ থেকে ২০টির মতো। সেখানে কারিগর হিসেবে কাজ করছেন প্রায় দেড় শতাধিক লোক। এছাড়া ওই এলাকার অনেক বাসা-বাড়িতে এসব কাজ করা হয়ে থাকে। কাপড়ে একেকটি কাজ করতে তারা তিন থেকে চার হাজার টাকা পর্যন্ত নিয়ে থাকেন। নকশা বেশি হলে টাকার পরিমাণ আরও বাড়ে। তাদের কাছে কাজ নিয়ে বেশি আসেন পাইকারী ব্যবসায়ীরা। নকশা করা সেসব কাপড় চলে যায় চটগ্রামসহ দেশের বড় বড় শপিং মল ও মার্কেটে। অনেকে আবার নিজেদের পছন্দমতো নকশা তাদের কাপড়ে করে নিয়ে যান।

জাল্লাল উদ্দিন ২৫ বছর ধরে কাপড়ে জারদৌসী ও কারচুপির কাজ করছেন। ১৮ বছর আগে তিনি নিজের কারখানা খুলেন। তার প্রতিষ্ঠানের নাম ‘চয়েস কারচুপি’। বর্তমানে ২২ জন কারিগর তার কারখানায় কাজ করেন।

জালাল উদ্দিন বলেন, ২৫ বছর ধরে আমি এ কাজ করছি। চাচার হাত ধরে এ পেশায় এসেছি। ১২ মাসেই আমাদের কাজ থাকে। কিন্তু ঈদে অর্ডার বেশি থাকে। এত অর্ডার পাই যে, কারিগরের অভাবে অনেক কাজ সময়মত ডেলিভারী দিতে পারি না। সাধারণ সময়ে আট থেকে ১০ ঘণ্টা আমরা কাজ করি। তবে ঈদে কাজ বেশি থাকায় ২৪ ঘণ্টা আমাদের পালাবদল করে কাজ করতে হয়।

তিনি বলেন, আমরা নরমাল একটি নকশা করতে তিন থেকে চার হাজার টাকা নেই। এসব নকশা করতে দু-তিনদিন লেগে যায়। আবার লেহেঙ্গাতে কাজ বেশি থাকে। সেটা একটু দাম বেশি পড়ে। লাখ-দেড় লাখার টাকার কাজও আছে। সেগুলো করতে মাসখানেক সময় লাগে।

আনুশা বুটিকস ফ্যাশনের সত্ত্বাধিকারী মো. শাহিদ বলেন, সবচেয়ে কম মজুরি নেওয়া হয় পাঞ্জাবিতে কাজ করতে। এক হাজার টাকার মধ্যেই খুব ভালো নকশা করে দেয়া যায় পাঞ্জাবিতে। তবে আমাদের বেশি কাজ থাকে থ্রি-পিছ ও বোরকাতে। তবে ঈদ আসলেই মেয়েদের সালোয়ার কামিজ ও লেহেঙ্গার কাজ বেশি থাকে। একটি লেহেঙ্গায় কাজ করাতে আমরা ২০ হাজার টাকা মতো মজুরি নিয়ে থাকি। মেশিনে এখন জারদৌসি ও কারচুপির যে কাজ করা হয় সেটার চেয়ে হাতে করা কাজের মান অনেক উন্নত বলে জানান তিনি।

তিনি বলেন, মেশিনে এসব কাজ করতে খুব কম সময় লাগে। আবার দামও কম। কিন্তু আমরা হাতে যে কাজ করি সেটা উন্নত মানের। মেশিনের কাজের কোনো গ্যারান্টি নেই।

কারিগররা জানিয়েছেন, বছরের ১২ মাসেই তাদের অর্ডার থাকে। তবে ঈদ আসলেই তাদের দম ফেলার সময় থাকে না। দেশ ছাড়িয়ে বিদেশ থেকেও তাদের কাছে অর্ডার আসে। একেকটি নকশা করতে তাদের গড়ে দেড় থেকে দুদিন সময় লাগে। যে নকশায় কাজ বেশি থাকে, সেটাতে সময়ও বেশি লাগে। দামও নকশার ওপর নির্ধারিত হয়। বিহারীপল্লি থেকে কাজ শেখে অনেকেই দুবাই, সৌদি আরবসহ মধ্যেপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে গিয়ে নিজেদের ভাগ্যে পরিবর্তন করেছেন বলে কারিগররা জানিয়েছেন। এদিকে জারদৌসি ও কারচুপির কাজ মেশিনে সহজে করতে পারায় হাতে করা কাজের চাহিদা একটু কমেছে বলে জানিয়েছেন বুটিকস মালিকরা।

সাইরান বুটিক্স ফ্যাশনের মালিক মো. আরিফ বলেন, আমাদের যেরকম ডিজাইন এনে দেয়া হয় আমরা হুবুহু সেভাবে কাজ করে দেয়। অনেক দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ আসেন আমাদের এখানে। এখন অনেক জায়গায় এসব কাজ করা হচ্ছে। কিন্তু আমাদের এখানকার মতো কাজ কেউ করে দিতে পারবে না। তাই ক্রেতারা আমাদের ওপর ভরসা পায়। দাম বেশি হলেও আমাদের এখান থেকেই কাজ করান তারা।

back to top