বাস্তবায়নের এ হার আগের অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে কম। গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরে এ হার ছিল ৪৯ দশমিক ২৬ শতাংশ। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) তথ্য বলছে, জুলাই থেকে এপ্রিল সময়ে বাস্তবায়নের এ হার গত দেড় দশকের মধ্যে সর্বনিম্ন।
চলতি অর্থবছরের শেষভাগে এসেও উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে গতি না আসায় এপ্রিল পর্যন্ত সময়ে সংশোধিত বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) ব্যয় হয়েছে ৪১ দশমিক ৩১ শতাংশ
এর আগে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মূল এডিপি বাস্তবায়নের তথ্য দেওয়া হয়েছিল ২৪ দশমিক ২৭ শতাংশ; সে হিসাবে ১০ মাসে ৩৩ শতাংশের আশেপাশে বাস্তবায়ন হওয়ার কথা থাকলেও এডিপি কাটছাঁট করায় এ হার বেড়ে গেছে। এরমধ্যে অর্থবছরের প্রথমভাগে রাজনৈতিক অস্থিরতায় উন্নয়ন কাজ ধীর হয়ে পড়লেও ডিসেম্বরে গতি কিছুটা বাড়ে। তবে পরের মাসগুলোতে আবার তা ধীর হয়ে গেছে।
আইএমইডির তথ্য বলছে, এপ্রিলে উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে খরচ হয় ১০ হাজার ৫৩০ কোটি ৭৫ লাখ টাকা, যা মোট সংশোধিত এডিপির ৪ দশমিক ৬৬ শতাংশ। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের এপ্রিলে এ হার ছিল ৬ দশমিক ৯৬ শতাংশ। খরচ হয়েছিল ১৭ হাজার ৭০৩ কোটি ২৪ লাখ টাকা। সব মিলিয়ে চলতি অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যয় হয়েছে ৯৩ হাজার ৪২৪ কোটি ৮৩ লাখ টাকা, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ১ লাখ ২৫ হাজার ৩১৫ কোটি ৬৮ লাখ টাকা।
সম্প্রতি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (এনইসি) সভায় আগামী অর্থবছরের প্রস্তাবিত এডিপি অনুমোদনের পর ব্রিফিংয়ে চলতি অর্থবছরে বাস্তবায়ন কম হওয়া প্রসঙ্গে কথা বলেন পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ।
তিনি বলেন, ‘আমি আগেও অনেকবার বলেছি যে এইটার (চলতি অর্থবছর) মূল বাজেট বরাদ্দ যা ছিল আসলে তার বাস্তবায়ন অনেক কম হবে। অন্য বছরের তুলনায় কম হবে। কেন কম হবে তার কারণও আমরা বলেছি যে, যেই প্রকল্পগুলো আছে এগুলোকে তো আমরা প্রত্যেকটাই যাচাই বাছাই করে দিচ্ছি। কাটছাঁট করছি। ছোট করছি। এছাড়া ঠিকাদাররা চলে গেছে। প্রকল্প পরিচালকরা চলে গেছে। এগুলাকে আবার চলমান করতে সময় লেগেছে। সেইভাবে বাস্তবায়ন কমেছে। এবং যে প্রকল্পগুলোতে অনেক অপচয় ছিল, সবগুলি যখন আমরা সংশোধন করেছি তখন সেগুলোর ব্যয় সংকোচন হয়েছে এবং সেগুলো বাস্তবায়নের গতি ধীর হয়ে গেছে।’
ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকার চলতি অর্থবছরে স্বায়ত্তশাসিত সংস্থার বরাদ্দসহ এডিপিতে ২ লাখ ৭৮ হাজার ২৮৮ কোটি ৯০ লাখ টাকা বরাদ্দ রেখে বাজেট পাস করেছিল। ছাত্র-জনতার গণ আন্দোলনে সরকার পতনকে কেন্দ্র করে জুলাই-অগাস্ট জুড়ে জ্বালাও পোড়াওয়ের পর এডিপি বাস্তবায়নে ধস নামে। শেখ হাসিনার সরকার পতনের পর দায়িত্বে আসা অন্তর্বর্তী সরকার অগ্রাধিকার ভিত্তিতে প্রকল্প বাস্তবায়নে জোর দেয়। আগের সরকারের নেওয়া অনেক প্রকল্পে অর্থছাড় কমিয়ে দেওয়া হয়। এতে চলমান অনেক প্রকল্পের কাজও স্থবির হয়ে যায়। এসব মিলিয়ে এডিপির বরাদ্দ করা অর্থ ব্যয় কমে যায় বলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের ভাষ্য।
সাধারণত অর্থবছরের প্রথমদিকে এডিপির ব্যয়ের পরিমাণ কম থাকে। তবে রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে এবার তা আরও কমে গেছে। একই সঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারের ব্যয় সাশ্রয়ী নীতির প্রভাবও পড়েছে এডিপি বাস্তবায়নে। সরকার কম ব্যয়ের দিকে ধাবিত হয়ে এটি কাটছাঁটও করেছে। সংশোধিত এডিপিতে টাকার অঙ্কে কমানো হয়েছে ৪৯ হাজার কোটি টাকা, যা মোট বরাদ্দের ১৮ দশমিক ৪৯ শতাংশ। চলতি অর্থবছরে ২ লাখ ৬৫ হাজার টাকার এডিপি কমিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ২ লাখ ১৬ হাজার কোটি টাকায় সংশোধন করে।
মঙ্গলবার, ২০ মে ২০২৫
বাস্তবায়নের এ হার আগের অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে কম। গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরে এ হার ছিল ৪৯ দশমিক ২৬ শতাংশ। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) তথ্য বলছে, জুলাই থেকে এপ্রিল সময়ে বাস্তবায়নের এ হার গত দেড় দশকের মধ্যে সর্বনিম্ন।
চলতি অর্থবছরের শেষভাগে এসেও উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে গতি না আসায় এপ্রিল পর্যন্ত সময়ে সংশোধিত বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) ব্যয় হয়েছে ৪১ দশমিক ৩১ শতাংশ
এর আগে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মূল এডিপি বাস্তবায়নের তথ্য দেওয়া হয়েছিল ২৪ দশমিক ২৭ শতাংশ; সে হিসাবে ১০ মাসে ৩৩ শতাংশের আশেপাশে বাস্তবায়ন হওয়ার কথা থাকলেও এডিপি কাটছাঁট করায় এ হার বেড়ে গেছে। এরমধ্যে অর্থবছরের প্রথমভাগে রাজনৈতিক অস্থিরতায় উন্নয়ন কাজ ধীর হয়ে পড়লেও ডিসেম্বরে গতি কিছুটা বাড়ে। তবে পরের মাসগুলোতে আবার তা ধীর হয়ে গেছে।
আইএমইডির তথ্য বলছে, এপ্রিলে উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে খরচ হয় ১০ হাজার ৫৩০ কোটি ৭৫ লাখ টাকা, যা মোট সংশোধিত এডিপির ৪ দশমিক ৬৬ শতাংশ। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের এপ্রিলে এ হার ছিল ৬ দশমিক ৯৬ শতাংশ। খরচ হয়েছিল ১৭ হাজার ৭০৩ কোটি ২৪ লাখ টাকা। সব মিলিয়ে চলতি অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যয় হয়েছে ৯৩ হাজার ৪২৪ কোটি ৮৩ লাখ টাকা, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ১ লাখ ২৫ হাজার ৩১৫ কোটি ৬৮ লাখ টাকা।
সম্প্রতি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (এনইসি) সভায় আগামী অর্থবছরের প্রস্তাবিত এডিপি অনুমোদনের পর ব্রিফিংয়ে চলতি অর্থবছরে বাস্তবায়ন কম হওয়া প্রসঙ্গে কথা বলেন পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ।
তিনি বলেন, ‘আমি আগেও অনেকবার বলেছি যে এইটার (চলতি অর্থবছর) মূল বাজেট বরাদ্দ যা ছিল আসলে তার বাস্তবায়ন অনেক কম হবে। অন্য বছরের তুলনায় কম হবে। কেন কম হবে তার কারণও আমরা বলেছি যে, যেই প্রকল্পগুলো আছে এগুলোকে তো আমরা প্রত্যেকটাই যাচাই বাছাই করে দিচ্ছি। কাটছাঁট করছি। ছোট করছি। এছাড়া ঠিকাদাররা চলে গেছে। প্রকল্প পরিচালকরা চলে গেছে। এগুলাকে আবার চলমান করতে সময় লেগেছে। সেইভাবে বাস্তবায়ন কমেছে। এবং যে প্রকল্পগুলোতে অনেক অপচয় ছিল, সবগুলি যখন আমরা সংশোধন করেছি তখন সেগুলোর ব্যয় সংকোচন হয়েছে এবং সেগুলো বাস্তবায়নের গতি ধীর হয়ে গেছে।’
ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকার চলতি অর্থবছরে স্বায়ত্তশাসিত সংস্থার বরাদ্দসহ এডিপিতে ২ লাখ ৭৮ হাজার ২৮৮ কোটি ৯০ লাখ টাকা বরাদ্দ রেখে বাজেট পাস করেছিল। ছাত্র-জনতার গণ আন্দোলনে সরকার পতনকে কেন্দ্র করে জুলাই-অগাস্ট জুড়ে জ্বালাও পোড়াওয়ের পর এডিপি বাস্তবায়নে ধস নামে। শেখ হাসিনার সরকার পতনের পর দায়িত্বে আসা অন্তর্বর্তী সরকার অগ্রাধিকার ভিত্তিতে প্রকল্প বাস্তবায়নে জোর দেয়। আগের সরকারের নেওয়া অনেক প্রকল্পে অর্থছাড় কমিয়ে দেওয়া হয়। এতে চলমান অনেক প্রকল্পের কাজও স্থবির হয়ে যায়। এসব মিলিয়ে এডিপির বরাদ্দ করা অর্থ ব্যয় কমে যায় বলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের ভাষ্য।
সাধারণত অর্থবছরের প্রথমদিকে এডিপির ব্যয়ের পরিমাণ কম থাকে। তবে রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে এবার তা আরও কমে গেছে। একই সঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারের ব্যয় সাশ্রয়ী নীতির প্রভাবও পড়েছে এডিপি বাস্তবায়নে। সরকার কম ব্যয়ের দিকে ধাবিত হয়ে এটি কাটছাঁটও করেছে। সংশোধিত এডিপিতে টাকার অঙ্কে কমানো হয়েছে ৪৯ হাজার কোটি টাকা, যা মোট বরাদ্দের ১৮ দশমিক ৪৯ শতাংশ। চলতি অর্থবছরে ২ লাখ ৬৫ হাজার টাকার এডিপি কমিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ২ লাখ ১৬ হাজার কোটি টাকায় সংশোধন করে।