আঞ্চলিক পর্যায়ে বাংলাদেশে স্টারলিংকের দাম কম এবং যে দাম ধরা হয়েছে, সেটাকে যৌক্তিক বলছে সরকার। তবে প্রতিবেশী অন্যান্য দেশেও যখন চালু হবে এবং সেখানকার দাম বিবেচনায় সরকারের তা পর্যালোচনার সুযোগ রয়েছে।
আজ মঙ্গলবার প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান। রাজধানীর বেইলি রোডে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এ সংবাদ সম্মেলন হয়। এর আগে সকালে তিনি নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে স্টারলিংক বিষয়ে জানিয়েছেন, গতকাল সোমবার বিকেলে স্টারলিংক তাঁকে ফোন করে বাংলাদেশে যাত্রা শুরুর বিষয়ে জানিয়েছে। এ ছাড়া আজ স্টারলিংক নিজেদের এক্সে এই তথ্য জানিয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে ফয়েজ আহমদ বলেন, এ অঞ্চলে স্টারলিংকের দাম পর্যালোচনা দেখা গেছে, বাংলাদেশে স্টারলিংকের দাম সবচেয়ে কম। শ্রীলঙ্কা, থাইল্যান্ডের চেয়েও কম। স্টারলিংকের প্রস্তাব ৭ হাজার টাকার বেশি ছিল।
স্টারলিংকের ট্যারিফ বিটিআরসি অনুমোদন দিয়েছেন বলেও জানান ফয়েজ আহমদ। তিনি জানান, স্টারলিংকের সেটআপ যন্ত্রপাতির জন্য এককালীন খরচ হবে ৪৭ হাজার টাকা। এ ছাড়া মাসে স্টারলিংক রেসিডেন্সের খরচ ৬ হাজার এবং রেসিডেন্স লাইটের খরচ ৪ হাজার ২০০ টাকা। এরপর দাম আর সরকার নিয়ন্ত্রণ করবে না। বাজারের ওপর ছেড়ে দেওয়া হবে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, একটা ডিভাইস থেকে ২০ থেকে সর্বোচ্চ ৫০ মিটার পর্যন্ত ইন্টারনেট পাওয়া যাবে। গ্রামে এটা ৫০ থেকে ৬০ মিটার পর্যন্ত হবে। এক ব্যক্তি কিনে বা একাধিক ব্যক্তি সমিতি আকারে কিনে সেটা ভাগাভাগি করে ব্যবহার করতে পারবেন।
সরকারের কাছে স্টারলিংক কেন গুরুত্বপূর্ণ এবং এর প্রচারণা চালাচ্ছে কেন, স্টারলিংক চালু নিয়ে সরকার কি অস্বাভাবিকভাবে তড়িঘড়ি করছে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে ফয়েজ আহমদ বলেন, কোনো অস্বাভাবিক তড়িঘড়ি হয়নি। সরকার সব কাজই দ্রুততার করতে চেষ্টা করছে। জুলাইয়ে ইন্টারনেট বন্ধের কারণে বিনিয়োগ ক্ষতি হয়। তখন উচ্চগতি ও মানের একটি টেকসই বিকল্প সরকার খুঁজছিল। সেখান থেকে স্টারলিংক এসেছে। সরকার বিশ্বকে দেখাতে চেয়েছে বাংলাদেশ বিনিয়োগবান্ধব এবং স্টারলিংক এলে অন্যরাও আসবে। স্যাটেলাইটভিত্তিক ইন্টারনেট–সেবার আরও চারটা কোম্পানি আসার জন্য আগ্রহ দেখিয়েছে। বাংলাদেশের ইন্টারনেটের মান নিকৃষ্ট, এই মান উন্নয়নেরও দাবি ছিল।
টেলিযোগাযোগ আইন প্রসঙ্গে বলেন, সরকার কাজ করছে। বছরের তৃতীয় বা চতুর্থ প্রান্তিকে এ আইনের সংশোধন করে ইন্টারনেট বন্ধ করার বিধানের কালাকানুন বন্ধ করা হবে। এ সরকার ইন্টারনেট বন্ধ করবে না।
তিন বছর ধরে বাংলাদেশে ব্যবসা করার আগ্রহ দেখাচ্ছে স্টারলিংক। ২০২৩ সালের জুলাইয়ে বাংলাদেশে স্টারলিংকের প্রযুক্তি এনে পরীক্ষা করা হয়। তৎকালীন মন্ত্রীদের সঙ্গে স্টারলিংকের বৈঠকও হয়েছিল। সে সময় সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল, স্টারলিংকের সেবার সম্ভাব্যতা যাচাইয়ে প্রযুক্তিগত পরীক্ষা-নিরীক্ষা হয় এবং ফল ইতিবাচক ছিল।
অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় আসার পর বাংলাদেশের বাজারে স্টারলিংকের প্রবেশের ক্ষেত্র আরও ত্বরান্বিত হয়। ২০২৪ সালের অক্টোবরে স্টারলিংকের একটি প্রতিনিধিদল ঢাকায় এসে বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরীর সঙ্গে বৈঠক করে।
ইলন মাস্কের সঙ্গে গত ১৩ ফেব্রুয়ারি ভিডিও কলে স্টারলিংক প্রসঙ্গে আলোচনা করেন অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। এ ছাড়া প্রতিষ্ঠানটির একটি দল বাংলাদেশে বিভিন্ন অংশীজনের সঙ্গে বৈঠক করছে। প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ৯০ কার্যদিবসের মধ্যে স্টারলিংকের স্যাটেলাইট ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট-সেবা বাংলাদেশে বাণিজ্যিকভাবে চালুর নির্দেশনা দিয়েছেন।
বিডা গত ২৯ মার্চ স্টারলিংককে বিনিয়োগের নিবন্ধন দেয়। এর এক মাস পর ২৯ এপ্রিল বিটিআরসি ১০ বছরের জন্য তাদের লাইসেন্স দেয়।
মঙ্গলবার, ২০ মে ২০২৫
আঞ্চলিক পর্যায়ে বাংলাদেশে স্টারলিংকের দাম কম এবং যে দাম ধরা হয়েছে, সেটাকে যৌক্তিক বলছে সরকার। তবে প্রতিবেশী অন্যান্য দেশেও যখন চালু হবে এবং সেখানকার দাম বিবেচনায় সরকারের তা পর্যালোচনার সুযোগ রয়েছে।
আজ মঙ্গলবার প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান। রাজধানীর বেইলি রোডে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এ সংবাদ সম্মেলন হয়। এর আগে সকালে তিনি নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে স্টারলিংক বিষয়ে জানিয়েছেন, গতকাল সোমবার বিকেলে স্টারলিংক তাঁকে ফোন করে বাংলাদেশে যাত্রা শুরুর বিষয়ে জানিয়েছে। এ ছাড়া আজ স্টারলিংক নিজেদের এক্সে এই তথ্য জানিয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে ফয়েজ আহমদ বলেন, এ অঞ্চলে স্টারলিংকের দাম পর্যালোচনা দেখা গেছে, বাংলাদেশে স্টারলিংকের দাম সবচেয়ে কম। শ্রীলঙ্কা, থাইল্যান্ডের চেয়েও কম। স্টারলিংকের প্রস্তাব ৭ হাজার টাকার বেশি ছিল।
স্টারলিংকের ট্যারিফ বিটিআরসি অনুমোদন দিয়েছেন বলেও জানান ফয়েজ আহমদ। তিনি জানান, স্টারলিংকের সেটআপ যন্ত্রপাতির জন্য এককালীন খরচ হবে ৪৭ হাজার টাকা। এ ছাড়া মাসে স্টারলিংক রেসিডেন্সের খরচ ৬ হাজার এবং রেসিডেন্স লাইটের খরচ ৪ হাজার ২০০ টাকা। এরপর দাম আর সরকার নিয়ন্ত্রণ করবে না। বাজারের ওপর ছেড়ে দেওয়া হবে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, একটা ডিভাইস থেকে ২০ থেকে সর্বোচ্চ ৫০ মিটার পর্যন্ত ইন্টারনেট পাওয়া যাবে। গ্রামে এটা ৫০ থেকে ৬০ মিটার পর্যন্ত হবে। এক ব্যক্তি কিনে বা একাধিক ব্যক্তি সমিতি আকারে কিনে সেটা ভাগাভাগি করে ব্যবহার করতে পারবেন।
সরকারের কাছে স্টারলিংক কেন গুরুত্বপূর্ণ এবং এর প্রচারণা চালাচ্ছে কেন, স্টারলিংক চালু নিয়ে সরকার কি অস্বাভাবিকভাবে তড়িঘড়ি করছে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে ফয়েজ আহমদ বলেন, কোনো অস্বাভাবিক তড়িঘড়ি হয়নি। সরকার সব কাজই দ্রুততার করতে চেষ্টা করছে। জুলাইয়ে ইন্টারনেট বন্ধের কারণে বিনিয়োগ ক্ষতি হয়। তখন উচ্চগতি ও মানের একটি টেকসই বিকল্প সরকার খুঁজছিল। সেখান থেকে স্টারলিংক এসেছে। সরকার বিশ্বকে দেখাতে চেয়েছে বাংলাদেশ বিনিয়োগবান্ধব এবং স্টারলিংক এলে অন্যরাও আসবে। স্যাটেলাইটভিত্তিক ইন্টারনেট–সেবার আরও চারটা কোম্পানি আসার জন্য আগ্রহ দেখিয়েছে। বাংলাদেশের ইন্টারনেটের মান নিকৃষ্ট, এই মান উন্নয়নেরও দাবি ছিল।
টেলিযোগাযোগ আইন প্রসঙ্গে বলেন, সরকার কাজ করছে। বছরের তৃতীয় বা চতুর্থ প্রান্তিকে এ আইনের সংশোধন করে ইন্টারনেট বন্ধ করার বিধানের কালাকানুন বন্ধ করা হবে। এ সরকার ইন্টারনেট বন্ধ করবে না।
তিন বছর ধরে বাংলাদেশে ব্যবসা করার আগ্রহ দেখাচ্ছে স্টারলিংক। ২০২৩ সালের জুলাইয়ে বাংলাদেশে স্টারলিংকের প্রযুক্তি এনে পরীক্ষা করা হয়। তৎকালীন মন্ত্রীদের সঙ্গে স্টারলিংকের বৈঠকও হয়েছিল। সে সময় সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল, স্টারলিংকের সেবার সম্ভাব্যতা যাচাইয়ে প্রযুক্তিগত পরীক্ষা-নিরীক্ষা হয় এবং ফল ইতিবাচক ছিল।
অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় আসার পর বাংলাদেশের বাজারে স্টারলিংকের প্রবেশের ক্ষেত্র আরও ত্বরান্বিত হয়। ২০২৪ সালের অক্টোবরে স্টারলিংকের একটি প্রতিনিধিদল ঢাকায় এসে বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরীর সঙ্গে বৈঠক করে।
ইলন মাস্কের সঙ্গে গত ১৩ ফেব্রুয়ারি ভিডিও কলে স্টারলিংক প্রসঙ্গে আলোচনা করেন অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। এ ছাড়া প্রতিষ্ঠানটির একটি দল বাংলাদেশে বিভিন্ন অংশীজনের সঙ্গে বৈঠক করছে। প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ৯০ কার্যদিবসের মধ্যে স্টারলিংকের স্যাটেলাইট ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট-সেবা বাংলাদেশে বাণিজ্যিকভাবে চালুর নির্দেশনা দিয়েছেন।
বিডা গত ২৯ মার্চ স্টারলিংককে বিনিয়োগের নিবন্ধন দেয়। এর এক মাস পর ২৯ এপ্রিল বিটিআরসি ১০ বছরের জন্য তাদের লাইসেন্স দেয়।