বিদেশ থেকে ব্যক্তিগত পর্যায়ে সোনা আমদানি নিরুৎসাহিত করতে নতুন সিদ্ধান্ত নিয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। নতুন বিধিমালা অনুযায়ী, এখন থেকে একজন যাত্রী বছরে সর্বোচ্চ একবার ১১৭ গ্রাম বা ১০ ভরি স্বর্ণের বার আনতে পারবেন। এর আগে একজন যাত্রী নির্ধারিত শুল্ক-কর পরিশোধের মাধ্যমে বছরে একাধিকবার ওই পরিমাণ সোনা আনতে পারতেন।
এই নতুন সিদ্ধান্ত ‘ব্যাগেজ বিধিমালা’তে সংশোধন এনে বাস্তবায়নের পথে রয়েছে। সংশোধিত বিধিমালা প্রজ্ঞাপন আকারে প্রকাশের ৩০ দিন পর কার্যকর হবে বলে জানা গেছে।
শুধু আমদানির সীমাবদ্ধতা নয়, একই সঙ্গে স্বর্ণবার আমদানির ওপর শুল্ক-করও বাড়ানো হয়েছে। বর্তমানে একজন যাত্রীকে ১০ ভরি সোনার জন্য ৪০ হাজার টাকা শুল্ক-কর পরিশোধ করতে হয়, যা বাড়িয়ে করা হচ্ছে ৫০ হাজার ১৫৫ টাকা। কেউ যদি এর বেশি সোনা লুকিয়ে আনার চেষ্টা করেন, তা আইন অনুযায়ী বাজেয়াপ্ত করা হবে।
যদিও দেশে বাণিজ্যিকভাবে সোনা আমদানির সুযোগ রয়েছে, বাস্তবে সিংহভাগ সোনাই ব্যাগেজ বিধির অধীন কিংবা চোরাপথে আসে। এ নিয়ে বেশ কয়েকবার সোনার ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. আব্দুর রহমান খান। গত ফেব্রুয়ারিতে আগারগাঁওয়ে রাজস্ব ভবনে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বাজুস) নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি বলেছিলেন, “দেশে সোনা চোরাচালানের ৯৯ শতাংশই ধরা পড়ে না। এর পেছনে ব্যবসায়ীদের সম্পৃক্ততা রয়েছে কি না, সেই প্রশ্ন উঠছে।”
তিনি বলেন, “বাজারে সোনার সরবরাহ অনেক, অথচ বৈধ আমদানি কম—এই অস্বাভাবিকতার কারণ খুঁজতে হবে। ব্যবসায়ী নেতারা যদি বলেন, তারা এতে জড়িত নন, তাহলে সোনা আসে কোথা থেকে?”
বৈঠকে এনবিআর চেয়ারম্যান জানান, ব্যাগেজ রুলের অপব্যবহার রোধে সংশোধনী আনার প্রস্তুতি চলছে—নতুন সিদ্ধান্ত সেই ঘোষণারই বাস্তবায়ন।
বাজুসের তথ্য অনুযায়ী, দেশে বছরে ১৮ থেকে ২০ টনের নতুন সোনার চাহিদা রয়েছে। তবে ২০১৮ সালের স্বর্ণনীতিমালায় এই চাহিদার পরিমাণ বলা হয়েছে ১৮ থেকে ৩৬ টন। ২০২২ সালে দেশে বৈধভাবে অন্তত ৫৪ টন স্বর্ণ আমদানি হয়েছিল।
কিন্তু বৈশ্বিক বাজারে মূল্যবৃদ্ধি, ডলারের বিনিময় হারের ওঠানামা এবং বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে টান পড়ায় সোনার আমদানি হঠাৎ কমে যায়। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২১-২২ অর্থবছরে দেশে ৪১ লাখ ৬৪ হাজার ডলারের স্বর্ণ আমদানি হলেও ২০২২-২৩ অর্থবছরে তা নেমে আসে মাত্র ৬ লাখ ৭০ হাজার ডলারে। অর্থাৎ, এক বছরের ব্যবধানে আমদানি কমেছে প্রায় ৮৪ শতাংশ।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ২০২০ থেকে ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত সময়ে বাংলাদেশ ব্যাংক অনুমোদিত ১৯টি কোম্পানির মধ্যে মাত্র সাতটি কোম্পানি স্বর্ণ আমদানি করেছে। তারা মোট ১৩৯ কেজি ৬৪০ গ্রাম স্বর্ণের বার আনলেও বাকি ১২টি কোম্পানি লাইসেন্স পেলেও আমদানি করেনি।
বুধবার, ০৪ জুন ২০২৫
বিদেশ থেকে ব্যক্তিগত পর্যায়ে সোনা আমদানি নিরুৎসাহিত করতে নতুন সিদ্ধান্ত নিয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। নতুন বিধিমালা অনুযায়ী, এখন থেকে একজন যাত্রী বছরে সর্বোচ্চ একবার ১১৭ গ্রাম বা ১০ ভরি স্বর্ণের বার আনতে পারবেন। এর আগে একজন যাত্রী নির্ধারিত শুল্ক-কর পরিশোধের মাধ্যমে বছরে একাধিকবার ওই পরিমাণ সোনা আনতে পারতেন।
এই নতুন সিদ্ধান্ত ‘ব্যাগেজ বিধিমালা’তে সংশোধন এনে বাস্তবায়নের পথে রয়েছে। সংশোধিত বিধিমালা প্রজ্ঞাপন আকারে প্রকাশের ৩০ দিন পর কার্যকর হবে বলে জানা গেছে।
শুধু আমদানির সীমাবদ্ধতা নয়, একই সঙ্গে স্বর্ণবার আমদানির ওপর শুল্ক-করও বাড়ানো হয়েছে। বর্তমানে একজন যাত্রীকে ১০ ভরি সোনার জন্য ৪০ হাজার টাকা শুল্ক-কর পরিশোধ করতে হয়, যা বাড়িয়ে করা হচ্ছে ৫০ হাজার ১৫৫ টাকা। কেউ যদি এর বেশি সোনা লুকিয়ে আনার চেষ্টা করেন, তা আইন অনুযায়ী বাজেয়াপ্ত করা হবে।
যদিও দেশে বাণিজ্যিকভাবে সোনা আমদানির সুযোগ রয়েছে, বাস্তবে সিংহভাগ সোনাই ব্যাগেজ বিধির অধীন কিংবা চোরাপথে আসে। এ নিয়ে বেশ কয়েকবার সোনার ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. আব্দুর রহমান খান। গত ফেব্রুয়ারিতে আগারগাঁওয়ে রাজস্ব ভবনে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বাজুস) নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি বলেছিলেন, “দেশে সোনা চোরাচালানের ৯৯ শতাংশই ধরা পড়ে না। এর পেছনে ব্যবসায়ীদের সম্পৃক্ততা রয়েছে কি না, সেই প্রশ্ন উঠছে।”
তিনি বলেন, “বাজারে সোনার সরবরাহ অনেক, অথচ বৈধ আমদানি কম—এই অস্বাভাবিকতার কারণ খুঁজতে হবে। ব্যবসায়ী নেতারা যদি বলেন, তারা এতে জড়িত নন, তাহলে সোনা আসে কোথা থেকে?”
বৈঠকে এনবিআর চেয়ারম্যান জানান, ব্যাগেজ রুলের অপব্যবহার রোধে সংশোধনী আনার প্রস্তুতি চলছে—নতুন সিদ্ধান্ত সেই ঘোষণারই বাস্তবায়ন।
বাজুসের তথ্য অনুযায়ী, দেশে বছরে ১৮ থেকে ২০ টনের নতুন সোনার চাহিদা রয়েছে। তবে ২০১৮ সালের স্বর্ণনীতিমালায় এই চাহিদার পরিমাণ বলা হয়েছে ১৮ থেকে ৩৬ টন। ২০২২ সালে দেশে বৈধভাবে অন্তত ৫৪ টন স্বর্ণ আমদানি হয়েছিল।
কিন্তু বৈশ্বিক বাজারে মূল্যবৃদ্ধি, ডলারের বিনিময় হারের ওঠানামা এবং বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে টান পড়ায় সোনার আমদানি হঠাৎ কমে যায়। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২১-২২ অর্থবছরে দেশে ৪১ লাখ ৬৪ হাজার ডলারের স্বর্ণ আমদানি হলেও ২০২২-২৩ অর্থবছরে তা নেমে আসে মাত্র ৬ লাখ ৭০ হাজার ডলারে। অর্থাৎ, এক বছরের ব্যবধানে আমদানি কমেছে প্রায় ৮৪ শতাংশ।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ২০২০ থেকে ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত সময়ে বাংলাদেশ ব্যাংক অনুমোদিত ১৯টি কোম্পানির মধ্যে মাত্র সাতটি কোম্পানি স্বর্ণ আমদানি করেছে। তারা মোট ১৩৯ কেজি ৬৪০ গ্রাম স্বর্ণের বার আনলেও বাকি ১২টি কোম্পানি লাইসেন্স পেলেও আমদানি করেনি।