চামড়াজাত জুতা রপ্তানিতে সুখবর পাওয়া গেছে। গত চার মাসে এই খাতে রপ্তানি বেড়েছে প্রায় ২৫ শতাংশেরও বেশি।
২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে এপ্রিল- এই চার মাসে চামড়াজাত জুতা রপ্তানি বেড়েছে ২৫ দশমিক ২৪ শতাংশ, যার আর্থিক পরিমাণ ৪৯৬ দশমিক ১৭ মিলিয়ন ডলার। একই সময়ে সিন্থেটিক ও স্পোর্টস ফুটওয়্যারের রপ্তানি বেড়েছে ৩৪ দশমিক ১৫ শতাংশ, অর্থাৎ প্রায় ৪১৪ দশমিক ৬৮ মিলিয়ন ডলার।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশীয় ব্র্যান্ডগুলোর উত্থান এবং চামড়াজাত পণ্য, সিন্থেটিক ও স্পোর্টস ফুটওয়্যারের রফতানিতে ধারাবাহিক অগ্রগতি জুতা শিল্পকে বাংলাদেশের রফতানি মানচিত্রে নতুনভাবে প্রতিষ্ঠিত করছে।
দেশে জুতার বাজার নিয়ে সঠিক কোনও পরিসংখ্যান নেই। তবে বিভিন্ন জরিপ থেকে অনুমান করা হয়, স্থানীয় জুতার বার্ষিক বাজার অন্তত ২৪ হাজার কোটি টাকার। এর মধ্যে ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ আসে ব্র্যান্ডের জুতা থেকে। বাকি অংশে রয়েছে নন-ব্র্যান্ডেড, আঞ্চলিক এবং আমদানি করা জুতা। এছাড়াও বছরে প্রায় ১১১ কোটি ডলারের জুতা রফতানি হয়।
বাংলাদেশ রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) ও লেদারগুডস অ্যান্ড ফুটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (এলএফএমইএবি) তথ্য অনুসারে, ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে এপ্রিল- এই চার মাসে চামড়াজাত জুতা রফতানি বেড়েছে ২৫ দশমিক ২৪ শতাংশ, যার আর্থিক পরিমাণ ৪৯৬ দশমিক ১৭ মিলিয়ন ডলার। একই সময়ে সিন্থেটিক ও স্পোর্টস ফুটওয়্যারের রফতানি বেড়েছে ৩৪ দশমিক ১৫ শতাংশ, অর্থাৎ প্রায় ৪১৪ দশমিক ৬৮ মিলিয়ন ডলার।
বিশ্বজুড়ে জুতার বাজারে বাংলাদেশ ধীরে ধীরে গুরুত্বপূর্ণ অবস্থান দখল করছে। চামড়ার জুতা ও চামড়াবিহীন জুতা- দুই ক্ষেত্রেই রফতানির প্রবৃদ্ধি দেশের অর্থনীতিতে আশার আলো দেখাচ্ছে।
রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) হালনাগাদ তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে (জুলাই-ডিসেম্বর) বাংলাদেশ জুতা রফতানি করে আয় করেছে প্রায় ৬২ কোটি ৬৫ লাখ মার্কিন ডলার, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ৩৪ দশমিক ৩০ শতাংশ বেশি। এর মধ্যে চামড়ার জুতা থেকেই ছয় মাসে আয় হয়েছে ৩৫ কোটি ২৬ লাখ ৫০ হাজার ডলার (প্রবৃদ্ধি ৩০ দশমিক ৮০ শতাংশ)। অন্যদিকে, চামড়াবিহীন (নন-লেদার) জুতা রফতানি থেকে এসেছে ২৭ কোটি ৩৯ লাখ ডলার, যা গত বছরের তুলনায় ৩৯ দশমিক ১০ শতাংশ বেশি। আগের বছর এই আয় ছিল ১৯ কোটি ৬৯ লাখ ডলার।
বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় জুতা রফতানিকারক দেশ চীন থেকে ক্রয়াদেশ সরিয়ে নিচ্ছেন আন্তর্জাতিক ক্রেতারা। তাদের নতুন গন্তব্য হিসেবে উঠে আসছে বাংলাদেশ। ফলে দেশের জুতাশিল্পে রফতানি প্রবৃদ্ধি বাড়ছে উল্লেখযোগ্য হারে। রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্য বলছে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বাংলাদেশ থেকে প্রায় ৯৬ কোটি মার্কিন ডলারের জুতা রফতানি হয়েছে। যা আগের বছরের তুলনায় বেশ উর্ধ্বমুখী প্রবণতা দেখিয়েছে। এর মধ্যে চামড়াবিহীন (নন-লেদার) জুতার রফতানি আয় ছিল ৪১ কোটি ৬৮ লাখ ডলার, যা মোট রফতানির বড় অংশ জুড়ে রয়েছে।
করোনাভাইরাস মহামারির আগেই- ২০১৮-১৯ অর্থবছরে চামড়াবিহীন জুতার রফতানি ছিল মাত্র ২৭ কোটি ডলার। পরবর্তী তিন বছরে এই আয় প্রায় দ্বিগুণ হয়ে ৪৫ কোটি ডলারে পৌঁছে যায়। তবে ২০২২-২৩ অর্থবছরে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ও ইউরোপ-মার্কিন বাজারে মূল্যস্ফীতির ধাক্কায় রফতানি আয় কমে দাঁড়ায় ৩৮ কোটি ডলারে। তবে সেখান থেকে খাতটি আবার ঘুরে দাঁড়িয়েছে। চলতি অর্থবছরে রফতানিতে নতুন গতি এসেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, আন্তর্জাতিক বাজারে চীনের ওপর নির্ভরতা কমিয়ে টেকসই, মানসম্পন্ন ও প্রতিযোগিতামূলক মূল্যের কারণে বাংলাদেশি জুতার চাহিদা বাড়ছে, যা ভবিষ্যতে ১০০ কোটির ঘর ছাড়িয়ে যেতে পারে।
তৈরি পোশাকের পর জুতা রফতানি দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম খাত। ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসেই চামড়ার জুতা রফতানি থেকে প্রায় ৩৫ কোটি ২৭ লাখ ডলার আয় হয়েছে, যা বার্ষিক লক্ষ্যমাত্রার ৬৫ শতাংশ পূরণ করেছে। আগের রেকর্ড অনুযায়ী, ২০২০-২১ অর্থবছরে চামড়ার জুতা রফতানি থেকে আয় ছিল ৫৬ কোটি ৯৯ লাখ ডলার, যা ২০২১-২২ অর্থবছরে বেড়ে হয় ৭৫ কোটি ৬২ লাখ ডলার—এই খাতের সর্বোচ্চ। পরবর্তী সময়ে কিছুটা পতন হলেও চলতি বছর আবারও প্রবৃদ্ধির পথে। সিন্থেটিক, রাবার বা ফ্যাব্রিক-ভিত্তিক জুতা—যা চামড়াবিহীন জুতা নামে পরিচিত—গত কয়েক বছরে উল্লেখযোগ্য হারে রফতানি বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে এ খাতে আয় ছিল ২৭৩ দশমিক ৯ মিলিয়ন ডলার, এবং পুরো বছরের প্রথম ১১ মাসে তা দাঁড়ায় ৪৩৩ দশমিক ৫৪ মিলিয়ন ডলারে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই পণ্য বহুমুখী, টেকসই ও তুলনামূলক সাশ্রয়ী হওয়ায় আন্তর্জাতিক বাজারে এর চাহিদা বাড়ছে।
বাংলাদেশ শুধু রফতানিকারক দেশ নয়, একইসঙ্গে একটি বড় ভোক্তা বাজার। ওয়ার্ল্ড ফুটওয়্যারের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালে দেশে ৩৫ কোটি জোড়া জুতার চাহিদা ছিল। বিশ্বের প্রধান ভোক্তা দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ নবম। শীর্ষে রয়েছে চীন (৩৫৩ কোটি জোড়া) ও ভারত (২৫৬ কোটি জোড়া)।
ব্যবসায়ীদের মতে, দেশে প্রতিবছর ব্র্যান্ডেড জুতার বিক্রি গড়ে ১২ থেকে ১৫ শতাংশ হারে বাড়ছে। ঈদুল ফিতরের সময়টিতেই হয় সারা বছরের প্রায় ২৫-৩০ শতাংশ বিক্রি। ফলে ঈদ সামনে রেখে প্রতিষ্ঠানগুলো নতুন নতুন ডিজাইন, ফ্যাশন ও প্রযুক্তি নির্ভর জুতা বাজারজাত করে থাকে।
উদাহরণ হিসেবে, অ্যাপেক্স চলতি বছর ঈদ উপলক্ষে এনেছে আড়াই হাজার নতুন ডিজাইনের জুতা। প্রতিষ্ঠানটির শোরুম সংখ্যা ৫০৬টি। তাদের প্রিমিয়াম ব্র্যান্ড ‘ভ্যানচুরিনী’ বাজারে এনেছে ইতালি থেকে আমদানি করা ৫০ হাজার টাকা মূল্যের ১২ জোড়া হ্যান্ডমেড জুতা।
বিশ্ববাজারে জুতার পারিমাণিক আকার প্রায় ৪০০ বিলিয়ন ডলার। এর অর্ধেকের বেশি নিয়ন্ত্রণ করছে চীন। কিন্তু বিশ্বজুড়ে বিকল্প সরবরাহকারী খুঁজছে অনেক আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান। বাংলাদেশ ইতিমধ্যে ভারত, দুবাই, যুক্তরাজ্য, জার্মানি, ইতালি ও ইউরোপীয় দেশসহ ৫০টিরও বেশি দেশে জুতা রফতানি করছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মান নিয়ন্ত্রণ, পণ্য বৈচিত্র্য, দক্ষ শ্রমিক এবং কাঁচামাল উৎপাদনে বিনিয়োগ বাড়ানো গেলে জুতা খাত হতে পারে বাংলাদেশের পরবর্তী রফতানি নেতৃত্বদানকারী খাত।
রোববার, ২২ জুন ২০২৫
চামড়াজাত জুতা রপ্তানিতে সুখবর পাওয়া গেছে। গত চার মাসে এই খাতে রপ্তানি বেড়েছে প্রায় ২৫ শতাংশেরও বেশি।
২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে এপ্রিল- এই চার মাসে চামড়াজাত জুতা রপ্তানি বেড়েছে ২৫ দশমিক ২৪ শতাংশ, যার আর্থিক পরিমাণ ৪৯৬ দশমিক ১৭ মিলিয়ন ডলার। একই সময়ে সিন্থেটিক ও স্পোর্টস ফুটওয়্যারের রপ্তানি বেড়েছে ৩৪ দশমিক ১৫ শতাংশ, অর্থাৎ প্রায় ৪১৪ দশমিক ৬৮ মিলিয়ন ডলার।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশীয় ব্র্যান্ডগুলোর উত্থান এবং চামড়াজাত পণ্য, সিন্থেটিক ও স্পোর্টস ফুটওয়্যারের রফতানিতে ধারাবাহিক অগ্রগতি জুতা শিল্পকে বাংলাদেশের রফতানি মানচিত্রে নতুনভাবে প্রতিষ্ঠিত করছে।
দেশে জুতার বাজার নিয়ে সঠিক কোনও পরিসংখ্যান নেই। তবে বিভিন্ন জরিপ থেকে অনুমান করা হয়, স্থানীয় জুতার বার্ষিক বাজার অন্তত ২৪ হাজার কোটি টাকার। এর মধ্যে ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ আসে ব্র্যান্ডের জুতা থেকে। বাকি অংশে রয়েছে নন-ব্র্যান্ডেড, আঞ্চলিক এবং আমদানি করা জুতা। এছাড়াও বছরে প্রায় ১১১ কোটি ডলারের জুতা রফতানি হয়।
বাংলাদেশ রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) ও লেদারগুডস অ্যান্ড ফুটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (এলএফএমইএবি) তথ্য অনুসারে, ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে এপ্রিল- এই চার মাসে চামড়াজাত জুতা রফতানি বেড়েছে ২৫ দশমিক ২৪ শতাংশ, যার আর্থিক পরিমাণ ৪৯৬ দশমিক ১৭ মিলিয়ন ডলার। একই সময়ে সিন্থেটিক ও স্পোর্টস ফুটওয়্যারের রফতানি বেড়েছে ৩৪ দশমিক ১৫ শতাংশ, অর্থাৎ প্রায় ৪১৪ দশমিক ৬৮ মিলিয়ন ডলার।
বিশ্বজুড়ে জুতার বাজারে বাংলাদেশ ধীরে ধীরে গুরুত্বপূর্ণ অবস্থান দখল করছে। চামড়ার জুতা ও চামড়াবিহীন জুতা- দুই ক্ষেত্রেই রফতানির প্রবৃদ্ধি দেশের অর্থনীতিতে আশার আলো দেখাচ্ছে।
রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) হালনাগাদ তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে (জুলাই-ডিসেম্বর) বাংলাদেশ জুতা রফতানি করে আয় করেছে প্রায় ৬২ কোটি ৬৫ লাখ মার্কিন ডলার, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ৩৪ দশমিক ৩০ শতাংশ বেশি। এর মধ্যে চামড়ার জুতা থেকেই ছয় মাসে আয় হয়েছে ৩৫ কোটি ২৬ লাখ ৫০ হাজার ডলার (প্রবৃদ্ধি ৩০ দশমিক ৮০ শতাংশ)। অন্যদিকে, চামড়াবিহীন (নন-লেদার) জুতা রফতানি থেকে এসেছে ২৭ কোটি ৩৯ লাখ ডলার, যা গত বছরের তুলনায় ৩৯ দশমিক ১০ শতাংশ বেশি। আগের বছর এই আয় ছিল ১৯ কোটি ৬৯ লাখ ডলার।
বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় জুতা রফতানিকারক দেশ চীন থেকে ক্রয়াদেশ সরিয়ে নিচ্ছেন আন্তর্জাতিক ক্রেতারা। তাদের নতুন গন্তব্য হিসেবে উঠে আসছে বাংলাদেশ। ফলে দেশের জুতাশিল্পে রফতানি প্রবৃদ্ধি বাড়ছে উল্লেখযোগ্য হারে। রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্য বলছে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বাংলাদেশ থেকে প্রায় ৯৬ কোটি মার্কিন ডলারের জুতা রফতানি হয়েছে। যা আগের বছরের তুলনায় বেশ উর্ধ্বমুখী প্রবণতা দেখিয়েছে। এর মধ্যে চামড়াবিহীন (নন-লেদার) জুতার রফতানি আয় ছিল ৪১ কোটি ৬৮ লাখ ডলার, যা মোট রফতানির বড় অংশ জুড়ে রয়েছে।
করোনাভাইরাস মহামারির আগেই- ২০১৮-১৯ অর্থবছরে চামড়াবিহীন জুতার রফতানি ছিল মাত্র ২৭ কোটি ডলার। পরবর্তী তিন বছরে এই আয় প্রায় দ্বিগুণ হয়ে ৪৫ কোটি ডলারে পৌঁছে যায়। তবে ২০২২-২৩ অর্থবছরে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ও ইউরোপ-মার্কিন বাজারে মূল্যস্ফীতির ধাক্কায় রফতানি আয় কমে দাঁড়ায় ৩৮ কোটি ডলারে। তবে সেখান থেকে খাতটি আবার ঘুরে দাঁড়িয়েছে। চলতি অর্থবছরে রফতানিতে নতুন গতি এসেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, আন্তর্জাতিক বাজারে চীনের ওপর নির্ভরতা কমিয়ে টেকসই, মানসম্পন্ন ও প্রতিযোগিতামূলক মূল্যের কারণে বাংলাদেশি জুতার চাহিদা বাড়ছে, যা ভবিষ্যতে ১০০ কোটির ঘর ছাড়িয়ে যেতে পারে।
তৈরি পোশাকের পর জুতা রফতানি দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম খাত। ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসেই চামড়ার জুতা রফতানি থেকে প্রায় ৩৫ কোটি ২৭ লাখ ডলার আয় হয়েছে, যা বার্ষিক লক্ষ্যমাত্রার ৬৫ শতাংশ পূরণ করেছে। আগের রেকর্ড অনুযায়ী, ২০২০-২১ অর্থবছরে চামড়ার জুতা রফতানি থেকে আয় ছিল ৫৬ কোটি ৯৯ লাখ ডলার, যা ২০২১-২২ অর্থবছরে বেড়ে হয় ৭৫ কোটি ৬২ লাখ ডলার—এই খাতের সর্বোচ্চ। পরবর্তী সময়ে কিছুটা পতন হলেও চলতি বছর আবারও প্রবৃদ্ধির পথে। সিন্থেটিক, রাবার বা ফ্যাব্রিক-ভিত্তিক জুতা—যা চামড়াবিহীন জুতা নামে পরিচিত—গত কয়েক বছরে উল্লেখযোগ্য হারে রফতানি বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে এ খাতে আয় ছিল ২৭৩ দশমিক ৯ মিলিয়ন ডলার, এবং পুরো বছরের প্রথম ১১ মাসে তা দাঁড়ায় ৪৩৩ দশমিক ৫৪ মিলিয়ন ডলারে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই পণ্য বহুমুখী, টেকসই ও তুলনামূলক সাশ্রয়ী হওয়ায় আন্তর্জাতিক বাজারে এর চাহিদা বাড়ছে।
বাংলাদেশ শুধু রফতানিকারক দেশ নয়, একইসঙ্গে একটি বড় ভোক্তা বাজার। ওয়ার্ল্ড ফুটওয়্যারের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালে দেশে ৩৫ কোটি জোড়া জুতার চাহিদা ছিল। বিশ্বের প্রধান ভোক্তা দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ নবম। শীর্ষে রয়েছে চীন (৩৫৩ কোটি জোড়া) ও ভারত (২৫৬ কোটি জোড়া)।
ব্যবসায়ীদের মতে, দেশে প্রতিবছর ব্র্যান্ডেড জুতার বিক্রি গড়ে ১২ থেকে ১৫ শতাংশ হারে বাড়ছে। ঈদুল ফিতরের সময়টিতেই হয় সারা বছরের প্রায় ২৫-৩০ শতাংশ বিক্রি। ফলে ঈদ সামনে রেখে প্রতিষ্ঠানগুলো নতুন নতুন ডিজাইন, ফ্যাশন ও প্রযুক্তি নির্ভর জুতা বাজারজাত করে থাকে।
উদাহরণ হিসেবে, অ্যাপেক্স চলতি বছর ঈদ উপলক্ষে এনেছে আড়াই হাজার নতুন ডিজাইনের জুতা। প্রতিষ্ঠানটির শোরুম সংখ্যা ৫০৬টি। তাদের প্রিমিয়াম ব্র্যান্ড ‘ভ্যানচুরিনী’ বাজারে এনেছে ইতালি থেকে আমদানি করা ৫০ হাজার টাকা মূল্যের ১২ জোড়া হ্যান্ডমেড জুতা।
বিশ্ববাজারে জুতার পারিমাণিক আকার প্রায় ৪০০ বিলিয়ন ডলার। এর অর্ধেকের বেশি নিয়ন্ত্রণ করছে চীন। কিন্তু বিশ্বজুড়ে বিকল্প সরবরাহকারী খুঁজছে অনেক আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান। বাংলাদেশ ইতিমধ্যে ভারত, দুবাই, যুক্তরাজ্য, জার্মানি, ইতালি ও ইউরোপীয় দেশসহ ৫০টিরও বেশি দেশে জুতা রফতানি করছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মান নিয়ন্ত্রণ, পণ্য বৈচিত্র্য, দক্ষ শ্রমিক এবং কাঁচামাল উৎপাদনে বিনিয়োগ বাড়ানো গেলে জুতা খাত হতে পারে বাংলাদেশের পরবর্তী রফতানি নেতৃত্বদানকারী খাত।