আলাপ-আলোচনা ছাড়া বাজেট প্রণয়ন করা হয়েছে—এই সমালোচনাকে নাকচ করে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, এক বাজেটে রাতারাতি সব সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়।
তিনি বলেন, “অনেকের ধারণা হচ্ছে, একবারে এমন এক বাজেট আমি করব, যাতে ট্যারিফ, ভ্যাট, ট্যাক্স একেবারে সব কমে যাবে। আয় বাড়বে, ব্যবসা বাড়বে—সব কিছু ঠিকঠাক হয়ে যাবে। এটা কেমন বাজেট? এটা তো আকাশ থেকে পড়া একটা বাজেট। এটা হয় না, এক বাজেটে এগুলো হয় না।”
২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট উপদেষ্টা পরিষদে অনুমোদন পাওয়ার পর সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সামনে এসব কথা বলেন তিনি।
রোববার সকালে প্রধান উপদেষ্টার সভাপতিত্বে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে সাত লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার বাজেট অনুমোদন দেওয়া হয়, যা চলতি অর্থবছরের মূল বাজেটের চেয়ে সাত হাজার কোটি টাকা কম।
গত ২ জুন রাষ্ট্রায়ত্ত সম্প্রচার মাধ্যমে বাজেট প্রস্তাব করেন অর্থ উপদেষ্টা। বাজেটে মোট ব্যয়ের কাঠামো অপরিবর্তিত থাকলেও সামাজিক নিরাপত্তা, রপ্তানি প্রণোদনা ও সরকারি কর্মকর্তাদের বিশেষ সুবিধায় ইতিবাচক পরিবর্তন এসেছে। বাতিল করা হয়েছে কালো টাকা সাদা করার প্রস্তাব।
সামাজিক নিরাপত্তা খাতে বরাদ্দ বাড়িয়ে করা হয়েছে ৯১ হাজার ২৯৭ কোটি টাকা। রপ্তানিখাতের প্রণোদনা তৃতীয় ধাপে জুলাইয়ে প্রত্যাহার হওয়ার কথা থাকলেও তা পিছিয়ে ২০২৬ সালের জানুয়ারি করা হয়েছে।
অর্থ উপদেষ্টা বলেন, “অনেকে বলে, কারও সঙ্গে আলাপ আলোচনা ছাড়াই আমরা বাজেট করেছি। এটা একেবারেই সঠিক নয়। আমরা ব্যাপকভাবে আলোচনা করেছি। ব্যবসায়ী, সাংবাদিক, অর্থনীতিবিদদের সঙ্গে বসেছি। এমনকি অর্থনীতিবিদ রেহমান সোবহানের সঙ্গেও বসেছি। প্রতিদিনই এনবিআরের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি।”
চ্যালেঞ্জের মুখে বাজেট প্রণয়নের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে তিনি বলেন, “আমরা একটি বিশেষ সময়ে বাজেট দিয়েছি। অনেকে বলেন এটা করলে ভালো হতো, ওটা করলে ভালো হতো। কিন্তু পুরোনো পথে চলারও সুবিধা আছে। সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে—অনেক প্রতিষ্ঠান দুর্বল করে দেওয়া হয়েছে।”
অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা আনার দিকটি নিজের সাফল্য হিসেবে তুলে ধরে তিনি বলেন, “পরশু এডিবি ৪০০ মিলিয়ন ডলার, গতকাল বিশ্ব ব্যাংক ৫০০ মিলিয়ন ডলার, জাইকা ৪১৪ মিলিয়ন ডলার এবং এআইআইবি ৪০০ মিলিয়ন ডলার সহায়তা দেওয়ার কথা জানিয়েছে। সব মিলিয়ে বাজেট সহায়তা হিসেবে ২ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলার আসছে। খারাপ ব্যবস্থাপনায় এত সহায়তা আসতো না।”
মূল্যস্ফীতি প্রসঙ্গে বলেন, “আমরা ভেবেছিলাম মূল্যস্ফীতি বেশ কমে যাবে। এখনো ৯ এর মধ্যে আছে। আশা করছি এটা ৬ দশমিক ৫ শতাংশের ঘরে আসবে।”
‘সালেহউদ্দিন তুমি দাম বাড়িয়ে দিলা?’
কিছু পণ্যের দাম বাড়ার বিষয়ে বলেন, “অনেক বন্ধু বলছে, সালেহউদ্দিন তুমি স্পঞ্জের স্যান্ডেলের দাম বাড়িয়ে দিলা। ১৫০ টাকার স্যান্ডেল ১৬৫ টাকায় কিনতে হবে—এটা কি কোনো বিষয়? ১৮ লাখ টিআইএনের মধ্যে দুই-তৃতীয়াংশের ট্যাক্স জিরো। তাহলে ট্যাক্স আসবে কোথা থেকে? ১২ লাখ লোকের কি সাড়ে তিন লাখ টাকার ওপর ইনকাম নেই?”
কালো টাকা সাদা করার সুযোগ প্রসঙ্গে বলেন, “আমরা দায়িত্ব নেওয়ার পর সুযোগ কিছুটা কমিয়েছিলাম, এখন পুরোপুরি তুলে নিয়েছি। সব টাকাই কালো টাকা নয়, কিছু অপ্রদর্শিত আয়ের সুযোগ দেওয়া হয়েছিল।”
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে কর আরোপ নিয়ে বলেন, “বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো ভ্যাট নেই। তাদের মুনাফা করার কথা নয়। তাদের উদ্বৃত্ত আয়ের ওপর কর ১৫ থেকে ১০ শতাংশ করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর বাড়তি আয়ের বিষয়ে আমি কিছু বলছি না, কী হয় না হয়—আপনারাই জানেন।”
সংবাদ সম্মেলনে অর্থ সচিব খায়েরুজ্জামান মজুমদার, এনবিআর চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খানসহ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
রোববার, ২২ জুন ২০২৫
আলাপ-আলোচনা ছাড়া বাজেট প্রণয়ন করা হয়েছে—এই সমালোচনাকে নাকচ করে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, এক বাজেটে রাতারাতি সব সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়।
তিনি বলেন, “অনেকের ধারণা হচ্ছে, একবারে এমন এক বাজেট আমি করব, যাতে ট্যারিফ, ভ্যাট, ট্যাক্স একেবারে সব কমে যাবে। আয় বাড়বে, ব্যবসা বাড়বে—সব কিছু ঠিকঠাক হয়ে যাবে। এটা কেমন বাজেট? এটা তো আকাশ থেকে পড়া একটা বাজেট। এটা হয় না, এক বাজেটে এগুলো হয় না।”
২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট উপদেষ্টা পরিষদে অনুমোদন পাওয়ার পর সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সামনে এসব কথা বলেন তিনি।
রোববার সকালে প্রধান উপদেষ্টার সভাপতিত্বে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে সাত লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার বাজেট অনুমোদন দেওয়া হয়, যা চলতি অর্থবছরের মূল বাজেটের চেয়ে সাত হাজার কোটি টাকা কম।
গত ২ জুন রাষ্ট্রায়ত্ত সম্প্রচার মাধ্যমে বাজেট প্রস্তাব করেন অর্থ উপদেষ্টা। বাজেটে মোট ব্যয়ের কাঠামো অপরিবর্তিত থাকলেও সামাজিক নিরাপত্তা, রপ্তানি প্রণোদনা ও সরকারি কর্মকর্তাদের বিশেষ সুবিধায় ইতিবাচক পরিবর্তন এসেছে। বাতিল করা হয়েছে কালো টাকা সাদা করার প্রস্তাব।
সামাজিক নিরাপত্তা খাতে বরাদ্দ বাড়িয়ে করা হয়েছে ৯১ হাজার ২৯৭ কোটি টাকা। রপ্তানিখাতের প্রণোদনা তৃতীয় ধাপে জুলাইয়ে প্রত্যাহার হওয়ার কথা থাকলেও তা পিছিয়ে ২০২৬ সালের জানুয়ারি করা হয়েছে।
অর্থ উপদেষ্টা বলেন, “অনেকে বলে, কারও সঙ্গে আলাপ আলোচনা ছাড়াই আমরা বাজেট করেছি। এটা একেবারেই সঠিক নয়। আমরা ব্যাপকভাবে আলোচনা করেছি। ব্যবসায়ী, সাংবাদিক, অর্থনীতিবিদদের সঙ্গে বসেছি। এমনকি অর্থনীতিবিদ রেহমান সোবহানের সঙ্গেও বসেছি। প্রতিদিনই এনবিআরের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি।”
চ্যালেঞ্জের মুখে বাজেট প্রণয়নের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে তিনি বলেন, “আমরা একটি বিশেষ সময়ে বাজেট দিয়েছি। অনেকে বলেন এটা করলে ভালো হতো, ওটা করলে ভালো হতো। কিন্তু পুরোনো পথে চলারও সুবিধা আছে। সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে—অনেক প্রতিষ্ঠান দুর্বল করে দেওয়া হয়েছে।”
অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা আনার দিকটি নিজের সাফল্য হিসেবে তুলে ধরে তিনি বলেন, “পরশু এডিবি ৪০০ মিলিয়ন ডলার, গতকাল বিশ্ব ব্যাংক ৫০০ মিলিয়ন ডলার, জাইকা ৪১৪ মিলিয়ন ডলার এবং এআইআইবি ৪০০ মিলিয়ন ডলার সহায়তা দেওয়ার কথা জানিয়েছে। সব মিলিয়ে বাজেট সহায়তা হিসেবে ২ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলার আসছে। খারাপ ব্যবস্থাপনায় এত সহায়তা আসতো না।”
মূল্যস্ফীতি প্রসঙ্গে বলেন, “আমরা ভেবেছিলাম মূল্যস্ফীতি বেশ কমে যাবে। এখনো ৯ এর মধ্যে আছে। আশা করছি এটা ৬ দশমিক ৫ শতাংশের ঘরে আসবে।”
‘সালেহউদ্দিন তুমি দাম বাড়িয়ে দিলা?’
কিছু পণ্যের দাম বাড়ার বিষয়ে বলেন, “অনেক বন্ধু বলছে, সালেহউদ্দিন তুমি স্পঞ্জের স্যান্ডেলের দাম বাড়িয়ে দিলা। ১৫০ টাকার স্যান্ডেল ১৬৫ টাকায় কিনতে হবে—এটা কি কোনো বিষয়? ১৮ লাখ টিআইএনের মধ্যে দুই-তৃতীয়াংশের ট্যাক্স জিরো। তাহলে ট্যাক্স আসবে কোথা থেকে? ১২ লাখ লোকের কি সাড়ে তিন লাখ টাকার ওপর ইনকাম নেই?”
কালো টাকা সাদা করার সুযোগ প্রসঙ্গে বলেন, “আমরা দায়িত্ব নেওয়ার পর সুযোগ কিছুটা কমিয়েছিলাম, এখন পুরোপুরি তুলে নিয়েছি। সব টাকাই কালো টাকা নয়, কিছু অপ্রদর্শিত আয়ের সুযোগ দেওয়া হয়েছিল।”
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে কর আরোপ নিয়ে বলেন, “বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো ভ্যাট নেই। তাদের মুনাফা করার কথা নয়। তাদের উদ্বৃত্ত আয়ের ওপর কর ১৫ থেকে ১০ শতাংশ করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর বাড়তি আয়ের বিষয়ে আমি কিছু বলছি না, কী হয় না হয়—আপনারাই জানেন।”
সংবাদ সম্মেলনে অর্থ সচিব খায়েরুজ্জামান মজুমদার, এনবিআর চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খানসহ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।