ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
চলতি বছরের মার্চ মাস শেষে দেশের ২৩টি ব্যাংক মূলধন ঘাটতিতে পড়েছে। এসব ব্যাংকের সম্মিলিত ঘাটতির অঙ্ক দাঁড়িয়েছে এক লাখ ১০ হাজার ২৬০ কোটি টাকা, যা দেশের ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
গত ডিসেম্বর শেষে ১৯টি ব্যাংকের ঘাটতি ছিল এক লাখ ৭১ হাজার ৬৮৭ কোটি টাকা। মার্চ প্রান্তিকে ঘাটতির পরিমাণ কমলেও ঘাটতিতে থাকা ব্যাংকের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৩-এ। এর মূল কারণ, ডিসেম্বরভিত্তিক ২৮টি ব্যাংককে ডেফারেল (ঋণ পরিশোধে ছাড় বা বিলম্ব) সুবিধা দেওয়া হয়, ফলে হিসাবের কাগজে ঘাটতি কম দেখা গেলেও বাস্তবে ব্যাংকগুলোর অবস্থার খুব বেশি উন্নতি হয়নি।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, মার্চ শেষে ব্যাংকখাতের সিআরএআর দাঁড়িয়েছে ৬.৭৪ শতাংশ, যা আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে ন্যূনতম ১০ শতাংশ হওয়া দরকার।
ডেফারেল সুবিধা না থাকলে এ হার হতো ঋণাত্মক ১০.৯৭ শতাংশ। গত বছরের শেষে এই হার ছিল মাত্র ৩.০৮ শতাংশ।
মার্চ শেষে ছয়টি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক মূলধন ঘাটতিতে পড়েছে। এর মধ্যে সর্বোচ্চ ঘাটতি রয়েছে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে (বিকেবি) ১৮ হাজার ৯৪৫ কোটি টাকা। জনতা ব্যাংকের ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ১২ হাজার ৭৬৮ কোটি টাকা, যা ডিসেম্বরে ছিল ৫২ হাজার ৮৯০ কোটি টাকা। অগ্রণী ব্যাংকের ঘাটতি বেড়ে হয়েছে পাঁচ হাজার ৮২২ কোটি টাকা, আর রূপালী ব্যাংকের ঘাটতি কমে দাঁড়িয়েছে চার হাজার ৪৭০ কোটি টাকা। এছাড়া বেসিক ব্যাংকের ঘাটতি বেড়ে হয়েছে তিন হাজার ৫০৬ কোটি টাকা এবং রাকাবের ঘাটতি দাঁড়িয়েছে দুই হাজার ৫১১ কোটি টাকা।
ইসলামী ধারার ব্যাংকগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ ঘাটতি ইউনিয়ন ব্যাংকে, ১৭ হাজার ৪৯২ কোটি টাকা। ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের ঘাটতি ৭ হাজার ৭৯০ কোটি, ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ ৬ হাজার ৪৫৪ কোটি, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক ৩ হাজার ৯৮১ কোটি, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক ১ হাজার ৯৮০ কোটি এবং আইসিবি ইসলামিক ব্যাংকের ঘাটতি ১ হাজার ৪৯৯ কোটি টাকা। এ ছাড়া এক্সিম ব্যাংকের ঘাটতি ৫২১ কোটি টাকা।
বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মধ্যে আইএফআইসি ব্যাংকের ঘাটতি কমে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৬৯৮ কোটি টাকা (আগে ছিল ৯ হাজার ২৯ কোটি টাকা)। ন্যাশনাল ব্যাংকের ঘাটতি কমে দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ৯৩৯ কোটি টাকা। তবে বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক ও এবি ব্যাংকের ঘাটতি বেড়ে যথাক্রমে ১ হাজার ৭৮২ কোটি এবং ৩ হাজার ৬৯৩ কোটি টাকায় পৌঁছেছে। পদ্মা ব্যাংকের ঘাটতি বেড়ে হয়েছে ৫ হাজার ১৭১ কোটি টাকা।
ডেফারেল সুবিধা নেওয়ার পরও মার্চ প্রান্তিকে নতুন করে ঘাটতিতে পড়েছে প্রিমিয়ার ব্যাংক (১,১৭১ কোটি), সীমান্ত ব্যাংক (২৬ কোটি) এবং ইউসিবি ব্যাংক (৯৫৪ কোটি)। এবারের প্রতিবেদনে বিদেশি খাতের হাবিব ব্যাংকও মূলধন ঘাটতিতে পড়েছে। মার্চ শেষে ব্যাংকটির ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ৩৬ লাখ টাকা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাব বলছে, মার্চ শেষে ব্যাংকখাতে খেলাপি ঋণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪ লাখ ২০ হাজার ৩৩৪ কোটি টাকা। ডেফারেল সুবিধা নেওয়ার পরও খেলাপি ঋণের চাপেই ২৩টি ব্যাংক মূলধন ঘাটতিতে পড়েছে।
ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
শনিবার, ২৩ আগস্ট ২০২৫
চলতি বছরের মার্চ মাস শেষে দেশের ২৩টি ব্যাংক মূলধন ঘাটতিতে পড়েছে। এসব ব্যাংকের সম্মিলিত ঘাটতির অঙ্ক দাঁড়িয়েছে এক লাখ ১০ হাজার ২৬০ কোটি টাকা, যা দেশের ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
গত ডিসেম্বর শেষে ১৯টি ব্যাংকের ঘাটতি ছিল এক লাখ ৭১ হাজার ৬৮৭ কোটি টাকা। মার্চ প্রান্তিকে ঘাটতির পরিমাণ কমলেও ঘাটতিতে থাকা ব্যাংকের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৩-এ। এর মূল কারণ, ডিসেম্বরভিত্তিক ২৮টি ব্যাংককে ডেফারেল (ঋণ পরিশোধে ছাড় বা বিলম্ব) সুবিধা দেওয়া হয়, ফলে হিসাবের কাগজে ঘাটতি কম দেখা গেলেও বাস্তবে ব্যাংকগুলোর অবস্থার খুব বেশি উন্নতি হয়নি।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, মার্চ শেষে ব্যাংকখাতের সিআরএআর দাঁড়িয়েছে ৬.৭৪ শতাংশ, যা আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে ন্যূনতম ১০ শতাংশ হওয়া দরকার।
ডেফারেল সুবিধা না থাকলে এ হার হতো ঋণাত্মক ১০.৯৭ শতাংশ। গত বছরের শেষে এই হার ছিল মাত্র ৩.০৮ শতাংশ।
মার্চ শেষে ছয়টি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক মূলধন ঘাটতিতে পড়েছে। এর মধ্যে সর্বোচ্চ ঘাটতি রয়েছে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে (বিকেবি) ১৮ হাজার ৯৪৫ কোটি টাকা। জনতা ব্যাংকের ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ১২ হাজার ৭৬৮ কোটি টাকা, যা ডিসেম্বরে ছিল ৫২ হাজার ৮৯০ কোটি টাকা। অগ্রণী ব্যাংকের ঘাটতি বেড়ে হয়েছে পাঁচ হাজার ৮২২ কোটি টাকা, আর রূপালী ব্যাংকের ঘাটতি কমে দাঁড়িয়েছে চার হাজার ৪৭০ কোটি টাকা। এছাড়া বেসিক ব্যাংকের ঘাটতি বেড়ে হয়েছে তিন হাজার ৫০৬ কোটি টাকা এবং রাকাবের ঘাটতি দাঁড়িয়েছে দুই হাজার ৫১১ কোটি টাকা।
ইসলামী ধারার ব্যাংকগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ ঘাটতি ইউনিয়ন ব্যাংকে, ১৭ হাজার ৪৯২ কোটি টাকা। ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের ঘাটতি ৭ হাজার ৭৯০ কোটি, ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ ৬ হাজার ৪৫৪ কোটি, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক ৩ হাজার ৯৮১ কোটি, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক ১ হাজার ৯৮০ কোটি এবং আইসিবি ইসলামিক ব্যাংকের ঘাটতি ১ হাজার ৪৯৯ কোটি টাকা। এ ছাড়া এক্সিম ব্যাংকের ঘাটতি ৫২১ কোটি টাকা।
বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মধ্যে আইএফআইসি ব্যাংকের ঘাটতি কমে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৬৯৮ কোটি টাকা (আগে ছিল ৯ হাজার ২৯ কোটি টাকা)। ন্যাশনাল ব্যাংকের ঘাটতি কমে দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ৯৩৯ কোটি টাকা। তবে বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক ও এবি ব্যাংকের ঘাটতি বেড়ে যথাক্রমে ১ হাজার ৭৮২ কোটি এবং ৩ হাজার ৬৯৩ কোটি টাকায় পৌঁছেছে। পদ্মা ব্যাংকের ঘাটতি বেড়ে হয়েছে ৫ হাজার ১৭১ কোটি টাকা।
ডেফারেল সুবিধা নেওয়ার পরও মার্চ প্রান্তিকে নতুন করে ঘাটতিতে পড়েছে প্রিমিয়ার ব্যাংক (১,১৭১ কোটি), সীমান্ত ব্যাংক (২৬ কোটি) এবং ইউসিবি ব্যাংক (৯৫৪ কোটি)। এবারের প্রতিবেদনে বিদেশি খাতের হাবিব ব্যাংকও মূলধন ঘাটতিতে পড়েছে। মার্চ শেষে ব্যাংকটির ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ৩৬ লাখ টাকা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাব বলছে, মার্চ শেষে ব্যাংকখাতে খেলাপি ঋণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪ লাখ ২০ হাজার ৩৩৪ কোটি টাকা। ডেফারেল সুবিধা নেওয়ার পরও খেলাপি ঋণের চাপেই ২৩টি ব্যাংক মূলধন ঘাটতিতে পড়েছে।