alt

news » business

নবায়নযোগ্য জ্বালানির লক্ষ্য অর্জনে দরকার ৪২ বিলিয়ন ডলার: সিপিডি

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক : সোমবার, ২৫ আগস্ট ২০২৫

বাংলাদেশের ২০৪০ সালের মধ্যে ৩০ শতাংশ নবায়নযোগ্য জ্বালানির লক্ষ্য অর্জনে ৩৫ দশমিক ২ থেকে ৪২ দশমিক ৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ প্রয়োজন। তবে নীতিগত অসংগতি, জীবাশ্ম জ্বালানি বন্ধে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনার অভাব এবং বিনিয়োগ অনিশ্চয়তার কারণে এই লক্ষ্য অর্জন হুমকির মুখে পড়তে পারে বলে সতর্ক করেছে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)।

বাংলাদেশের ২০৪০ সালের মধ্যে ৩০ শতাংশ নবায়নযোগ্য জ্বালানির লক্ষ্য অর্জনে ৩৫ দশমিক ২ থেকে ৪২ দশমিক ৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ প্রয়োজন। তবে নীতিগত অসংগতি, জীবাশ্ম জ্বালানি বন্ধে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনার অভাব এবং বিনিয়োগ অনিশ্চয়তার কারণে এই লক্ষ্য অর্জন হুমকির মুখে পড়তে পারে

গতকাল রোববার রাজধানীর ব্র্যাক সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ‘২০৪০ সালের মধ্যে নবায়নযোগ্য জ্বালানিভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা পুনর্মূল্যায়ন: স্মার্ট লক্ষ্য ও প্রয়োজনীয় বিনিয়োগের পূর্বাভাস’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে আসে। প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করেন সিপিডির প্রোগ্রাম অ্যাসোসিয়েট মেহেদী হাসান শামীম।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিভিন্ন জাতীয় নীতি পরিকল্পনায় নবায়নযোগ্য জ্বালানির লক্ষ্য ভিন্ন ভিন্ন। মুজিব ক্লাইমেট প্রসপারিটি প্ল্যানে ২০৩০ সালের মধ্যে ৩০ শতাংশ নবায়নযোগ্য জ্বালানির লক্ষ্য ধরা হলেও নবায়নযোগ্য জ্বালানি নীতি ২০২৫-এ এ লক্ষ্য ধরা হয়েছে ২০৪০ সালের মধ্যে। আবার সমন্বিত বিদ্যুৎ জ্বালানি মহাপরিকল্পনায় (আইইপিএমপি) ২০৪০ সালের মধ্যে ৪০ শতাংশ পরিচ্ছন্ন জ্বালানির লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে আইইপিএমপি-তে পারমাণবিক বিদ্যুৎ ও কার্বন ক্যাপচারের মতো অপ্রমাণিত প্রযুক্তিকে ‘পরিচ্ছন্ন জ্বালানি’ হিসেবে দেখানোর সমালোচনা করেছে সিপিডি।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, বর্তমানে জাতীয় গ্রিডে নবায়নযোগ্য জ্বালানির অংশ মাত্র ৩ দশমিক ৬ শতাংশ। বিপরীতে গ্যাসভিত্তিক জীবাশ্ম জ্বালানি ৪৩ দশমিক ৪ শতাংশ এবং কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতাও বাড়ছে। ফলে জীবাশ্ম জ্বালানির উদ্বৃত্ত সক্ষমতা তৈরি হলেও নবায়নযোগ্য খাতে ঘাটতি বেড়ে চলেছে।

গবেষণা প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, সরকারের লক্ষ্য পূরণ করতে হলে ২০৩০ সালের মধ্যে ১৮ হাজার ১৬২ মেগাওয়াট নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন জরুরি। অথচ বর্তমান পরিকল্পনায় রয়েছে মাত্র ১ হাজার ৯৬৭ মেগাওয়াট, যা পাঁচ বছরের ব্যবধানে ১৬ হাজার মেগাওয়াটেরও বেশি ঘাটতি তৈরি করবে।

সিপিডির বিশ্লেষণে বলা হয়, নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে সবচেয়ে বেশি বিনিয়োগ করতে হবে ২০২৫ থেকে ২০৩৫ সময়কালে—প্রায় ২৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এর মধ্যে সৌর শক্তিতে বিনিয়োগের প্রয়োজন ১৬ দশমিক ৫ বিলিয়ন, বায়ু শক্তিতে ১২ দশমিক ৬ বিলিয়ন, জলবিদ্যুতে ৬ বিলিয়ন এবং আমদানি ও অন্যান্য খাতে ৭ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলার।

এদিকে নবায়নযোগ্য জ্বালানির মিশ্রণে সৌর বিদ্যুৎ প্রধান উৎস হিসেবে উল্লেখ করে বলা হয়েছে, বর্তমান ৭০০ মেগাওয়াট থেকে ২০৪০ সালে ১৭ হাজার ২২৯ মেগাওয়াটে উন্নীত করতে হবে। অন্যদিকে বায়ু বিদ্যুৎকে ৬২ মেগাওয়াট থেকে ১৩ হাজার ৬২৫ মেগাওয়াটে নিতে হবে, যা অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, জীবাশ্মভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র অবসরে সুনির্দিষ্ট সময়সীমা না থাকায় জ্বালানি রূপান্তরে বড় প্রতিবন্ধকতা তৈরি হয়েছে। এতে নবায়নযোগ্য জ্বালানির পাশাপাশি ব্যয়বহুল অতিরিক্ত সক্ষমতা বজায় রাখার ঝুঁকি রয়েছে।

সিপিডির সুপারিশে বলা হয়, সব জাতীয় নীতিতে সমন্বিতভাবে ২০৪০ সালের মধ্যে ৩০% নবায়নযোগ্য জ্বালানির লক্ষ্য গ্রহণ কর?তে হবে। ২০৩০ ও ২০৩৫ সালের জন্য স্পষ্ট মাইলফলক নির্ধারণ ও জীবাশ্ম বিদ্যুৎকেন্দ্র অবসরের পরিকল্পনা করতে হবে। এছাড়া প্রতিবেশী দেশ থেকে বিদ্যুৎ আমদানি ও আন্তঃসীমান্ত বিনিয়োগ উৎসাহিত করা,উন্নয়ন ব্যাংক ও জলবায়ু তহবিলের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়ে স্বল্পসুদে অর্থায়ন নিশ্চিত করা ও গ্রিড অবকাঠামো উন্নয়ন, বিদ্যুৎ সঞ্চয় প্রযুক্তি ও বিকেন্দ্রীকৃত জ্বালানি ব্যবস্থা (রুফটপ সোলার, মিনি-গ্রিড) প্রসার করার সুপারিশ দিয়েছে সিপিডি।

বাংলাদেশ ইন্ডিপেনডেন্ট পাওয়ার প্রডিউসারস অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক প্রেসিডেন্ট ইমরান করিম বলেন, বর্তমানে নবায়নযোগ্য জ্বালানির অংশ মাত্র ২ শতাংশ। এটিকে ২০৩০ সালের মধ্যে ২০ শতাংশে উন্নীত করতে হলে ১২ থেকে ১৪ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের প্রয়োজন হবে। তিনি বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরিয়ে আনার গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, সরকার এলওআই দিলেও দ্রুত টেন্ডার নিষ্পত্তি করতে হবে।

সিপিডির গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, বাংলাদেশ যদি নীতিগত অস্পষ্টতা ও জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর নির্ভরতা বজায় রাখে, তবে আর্থিক সংকট ও জলবায়ু লক্ষ্যে ব্যর্থ হওয়ার ঝুঁকি বাড়বে। অন্যদিকে, ঐক্যবদ্ধ কৌশল গ্রহণ করলে নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে সফল রূপান্তর সম্ভব।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ নাভিদ সলিমুল্লাহ, পাওয়ার গ্রিড বাংলাদেশের চেয়ারম্যান রেজওয়ান খান, পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক মির্জা শওকত আলী ও ফাহমিদা খানম প্রমুখ।

ছবি

তিন বছরে দেশে দারিদ্র্য বেড়েছে

ছবি

রূপালী ব্যাংকের ফরিদপুর বিভাগীয় ব্যবসায়িক পর্যালোচনা সভা

ছবি

বিএসইসি’র নতুন মার্জিন বিধিমালা খসড়া অনুমোদন

ছবি

ডিজিটাল ব্যাংক খুলতে লাগবে ৩০০ কোটি টাকা

ছবি

নিট রিজার্ভ বেড়ে দাঁড়ালো ২৫ দশমিক ৮৭ বিলিয়ন ডলার

ছবি

২৩ দিনে রেমিট্যান্স এলো ১৭৪ কোটি ডলার

ছবি

শেয়ারবাজারে বড় উত্থান, সূচক লেনদেন দুটোই বাড়লো

বাংলাদেশ ব্যাংক ডিজিটাল ব্যাংকের ন্যূনতম মূলধন দ্বিগুণ বাড়িয়ে ৩০০ কোটি টাকা করেছে

ছবি

সংস্কারে নিজের কর্তৃত্ব ব্যবহার করেননি মুহাম্মদ ইউনূস: রেহমান সোবহান

ছবি

এলডিসি উত্তরণ ৩ থেকে ৫ বছর পেছানোর দাবি জানাল শীর্ষ ১৬ বাণিজ্য সংগঠন

ছবি

এক বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ লেনদেন শেয়ারবাজারে

ছবি

এলডিসি উত্তরণ পেছানো হবে কি না, এ সিদ্ধান্ত নেবে পরবর্তী সরকার: মনজুর হোসেন

ছবি

আজিজ খান পরিবারের ১৯১ ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধের আদেশ বহাল

ছবি

শীর্ষ ১৬ বাণিজ্য সংগঠন এলডিসি উত্তরণ পেছানোর দাবি জানাল

ছবি

ভ্যাট না কমালে পাউরুটি-বিস্কুটের ‘প্যাকেট’ ছোট করবেন ব্যবসায়ীরা

ছবি

মূলধন সংকটে ২৩ ব্যাংক, ঘাটতি এক লাখ কোটি টাকা

ছবি

ডিএসইতে বাজার মূলধন কমলো সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা

ছবি

ঘুরে দাঁড়াচ্ছে রাষ্ট্রায়ত্ত এসেনশিয়াল ড্রাগস, সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ পর্যন্ত ওষুধের দাম কমালো প্রতিষ্ঠানটি

ছবি

দ্রুত নগরায়ণে চাপে ঢাকা, প্রয়োজন বিকেন্দ্রীকরণ: ডিসিসিআই

ছবি

এফবিসিসিআইয়ের নির্বাচন বোর্ড পুনর্গঠন

ছবি

পাল্টা শুল্ক নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করা উচিত ছিল: রাশেদ আল তিতুমীর

ছবি

চার মাস পর বেনাপোল বন্দর দিয়ে ফের চাল আমদানি শুরু

ছবি

নিত্যপণ্যের বাজারে আগুন, ৮০ টাকার নিচে নেই কোনো সবজি

ছবি

পাকিস্তান–বাংলাদেশ বাণিজ্যে বিনিয়োগ ও বিমান সংযোগ বৃদ্ধির পরিকল্পনা

ছবি

রাজধানীর কাঁচাবাজারে সবজির দাম আকাশছোঁয়া

ছবি

ইইউর বাজারে বাংলাদেশের চেয়ে বেশি প্রবৃদ্ধি চীনের

ছবি

ব্যবসা-বিনিয়োগ বাড়াতে পাকিস্তানের সঙ্গে যৌথ কমিশন করবে বাংলাদেশ

ছবি

গ্যাস সংকট নিরসনে ৫ জরুরি পদক্ষেপ নেয়ার প্রস্তাব বিজিএমইএর

ছবি

২০ দিনে ২০ হাজার কোটি টাকা পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা

ছবি

বন্ধ হচ্ছে দুর্বল ৯টি ব্যাংক বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠান

ছবি

পেইজ মাইক্রোফাইন্যান্স ও বিকাশের মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষর

ছবি

বিমান টিকেটের অস্বাভাবিক দাম বাড়ালে এজেন্সির নিবন্ধন বাতিল

ছবি

অভিজ্ঞ কর্মকর্তাকে রাজস্ব নীতি বিভাগের প্রধান করার সিদ্ধান্ত

ছবি

নির্বাচনের আগে ব্যাংকের সাইবার নিরাপত্তা বড় চ্যালেঞ্জ: তৈয়্যব

ছবি

প্রবৃদ্ধি ২৪ শতাংশ হলেও জুলাইয়ে বড় ঘাটতির মুখে এনবিআর

ছবি

যুক্তরাজ্য থেকে আসছে তিন কার্গো এলএনজি

tab

news » business

নবায়নযোগ্য জ্বালানির লক্ষ্য অর্জনে দরকার ৪২ বিলিয়ন ডলার: সিপিডি

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক

সোমবার, ২৫ আগস্ট ২০২৫

বাংলাদেশের ২০৪০ সালের মধ্যে ৩০ শতাংশ নবায়নযোগ্য জ্বালানির লক্ষ্য অর্জনে ৩৫ দশমিক ২ থেকে ৪২ দশমিক ৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ প্রয়োজন। তবে নীতিগত অসংগতি, জীবাশ্ম জ্বালানি বন্ধে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনার অভাব এবং বিনিয়োগ অনিশ্চয়তার কারণে এই লক্ষ্য অর্জন হুমকির মুখে পড়তে পারে বলে সতর্ক করেছে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)।

বাংলাদেশের ২০৪০ সালের মধ্যে ৩০ শতাংশ নবায়নযোগ্য জ্বালানির লক্ষ্য অর্জনে ৩৫ দশমিক ২ থেকে ৪২ দশমিক ৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ প্রয়োজন। তবে নীতিগত অসংগতি, জীবাশ্ম জ্বালানি বন্ধে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনার অভাব এবং বিনিয়োগ অনিশ্চয়তার কারণে এই লক্ষ্য অর্জন হুমকির মুখে পড়তে পারে

গতকাল রোববার রাজধানীর ব্র্যাক সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ‘২০৪০ সালের মধ্যে নবায়নযোগ্য জ্বালানিভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা পুনর্মূল্যায়ন: স্মার্ট লক্ষ্য ও প্রয়োজনীয় বিনিয়োগের পূর্বাভাস’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে আসে। প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করেন সিপিডির প্রোগ্রাম অ্যাসোসিয়েট মেহেদী হাসান শামীম।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিভিন্ন জাতীয় নীতি পরিকল্পনায় নবায়নযোগ্য জ্বালানির লক্ষ্য ভিন্ন ভিন্ন। মুজিব ক্লাইমেট প্রসপারিটি প্ল্যানে ২০৩০ সালের মধ্যে ৩০ শতাংশ নবায়নযোগ্য জ্বালানির লক্ষ্য ধরা হলেও নবায়নযোগ্য জ্বালানি নীতি ২০২৫-এ এ লক্ষ্য ধরা হয়েছে ২০৪০ সালের মধ্যে। আবার সমন্বিত বিদ্যুৎ জ্বালানি মহাপরিকল্পনায় (আইইপিএমপি) ২০৪০ সালের মধ্যে ৪০ শতাংশ পরিচ্ছন্ন জ্বালানির লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে আইইপিএমপি-তে পারমাণবিক বিদ্যুৎ ও কার্বন ক্যাপচারের মতো অপ্রমাণিত প্রযুক্তিকে ‘পরিচ্ছন্ন জ্বালানি’ হিসেবে দেখানোর সমালোচনা করেছে সিপিডি।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, বর্তমানে জাতীয় গ্রিডে নবায়নযোগ্য জ্বালানির অংশ মাত্র ৩ দশমিক ৬ শতাংশ। বিপরীতে গ্যাসভিত্তিক জীবাশ্ম জ্বালানি ৪৩ দশমিক ৪ শতাংশ এবং কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতাও বাড়ছে। ফলে জীবাশ্ম জ্বালানির উদ্বৃত্ত সক্ষমতা তৈরি হলেও নবায়নযোগ্য খাতে ঘাটতি বেড়ে চলেছে।

গবেষণা প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, সরকারের লক্ষ্য পূরণ করতে হলে ২০৩০ সালের মধ্যে ১৮ হাজার ১৬২ মেগাওয়াট নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন জরুরি। অথচ বর্তমান পরিকল্পনায় রয়েছে মাত্র ১ হাজার ৯৬৭ মেগাওয়াট, যা পাঁচ বছরের ব্যবধানে ১৬ হাজার মেগাওয়াটেরও বেশি ঘাটতি তৈরি করবে।

সিপিডির বিশ্লেষণে বলা হয়, নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে সবচেয়ে বেশি বিনিয়োগ করতে হবে ২০২৫ থেকে ২০৩৫ সময়কালে—প্রায় ২৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এর মধ্যে সৌর শক্তিতে বিনিয়োগের প্রয়োজন ১৬ দশমিক ৫ বিলিয়ন, বায়ু শক্তিতে ১২ দশমিক ৬ বিলিয়ন, জলবিদ্যুতে ৬ বিলিয়ন এবং আমদানি ও অন্যান্য খাতে ৭ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলার।

এদিকে নবায়নযোগ্য জ্বালানির মিশ্রণে সৌর বিদ্যুৎ প্রধান উৎস হিসেবে উল্লেখ করে বলা হয়েছে, বর্তমান ৭০০ মেগাওয়াট থেকে ২০৪০ সালে ১৭ হাজার ২২৯ মেগাওয়াটে উন্নীত করতে হবে। অন্যদিকে বায়ু বিদ্যুৎকে ৬২ মেগাওয়াট থেকে ১৩ হাজার ৬২৫ মেগাওয়াটে নিতে হবে, যা অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, জীবাশ্মভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র অবসরে সুনির্দিষ্ট সময়সীমা না থাকায় জ্বালানি রূপান্তরে বড় প্রতিবন্ধকতা তৈরি হয়েছে। এতে নবায়নযোগ্য জ্বালানির পাশাপাশি ব্যয়বহুল অতিরিক্ত সক্ষমতা বজায় রাখার ঝুঁকি রয়েছে।

সিপিডির সুপারিশে বলা হয়, সব জাতীয় নীতিতে সমন্বিতভাবে ২০৪০ সালের মধ্যে ৩০% নবায়নযোগ্য জ্বালানির লক্ষ্য গ্রহণ কর?তে হবে। ২০৩০ ও ২০৩৫ সালের জন্য স্পষ্ট মাইলফলক নির্ধারণ ও জীবাশ্ম বিদ্যুৎকেন্দ্র অবসরের পরিকল্পনা করতে হবে। এছাড়া প্রতিবেশী দেশ থেকে বিদ্যুৎ আমদানি ও আন্তঃসীমান্ত বিনিয়োগ উৎসাহিত করা,উন্নয়ন ব্যাংক ও জলবায়ু তহবিলের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়ে স্বল্পসুদে অর্থায়ন নিশ্চিত করা ও গ্রিড অবকাঠামো উন্নয়ন, বিদ্যুৎ সঞ্চয় প্রযুক্তি ও বিকেন্দ্রীকৃত জ্বালানি ব্যবস্থা (রুফটপ সোলার, মিনি-গ্রিড) প্রসার করার সুপারিশ দিয়েছে সিপিডি।

বাংলাদেশ ইন্ডিপেনডেন্ট পাওয়ার প্রডিউসারস অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক প্রেসিডেন্ট ইমরান করিম বলেন, বর্তমানে নবায়নযোগ্য জ্বালানির অংশ মাত্র ২ শতাংশ। এটিকে ২০৩০ সালের মধ্যে ২০ শতাংশে উন্নীত করতে হলে ১২ থেকে ১৪ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের প্রয়োজন হবে। তিনি বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরিয়ে আনার গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, সরকার এলওআই দিলেও দ্রুত টেন্ডার নিষ্পত্তি করতে হবে।

সিপিডির গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, বাংলাদেশ যদি নীতিগত অস্পষ্টতা ও জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর নির্ভরতা বজায় রাখে, তবে আর্থিক সংকট ও জলবায়ু লক্ষ্যে ব্যর্থ হওয়ার ঝুঁকি বাড়বে। অন্যদিকে, ঐক্যবদ্ধ কৌশল গ্রহণ করলে নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে সফল রূপান্তর সম্ভব।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ নাভিদ সলিমুল্লাহ, পাওয়ার গ্রিড বাংলাদেশের চেয়ারম্যান রেজওয়ান খান, পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক মির্জা শওকত আলী ও ফাহমিদা খানম প্রমুখ।

back to top