কয়েক বছর ধরে নিত্যপণ্যের দাম অস্বাভাবিক বাড়ায় নাভিশ্বাস উঠছে স্বল্প আয়ের মানুষের। এখন এখন প্রতি লিটার সয়াবিন তেল কিনতে গুনতে হচ্ছে ১৬৮ থেকে ১৭০ টাকা, গরুর মাংস কিনতে গুনতে হচ্ছে সাড়ে ৬শ’ টাকা, মোটা চাল কিনতে গুনতে হচ্ছে ৫৫ টাকা, ব্রয়লার মুরগি ১৭০ টাকা, সবজির কেজি গড়ে ৫০ থেকে ৬০ টাকা। শুক্রবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর বিভিন্ন কাঁচাবাজার ঘুরে নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধির চিত্র দেখা গেছে। নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধি এমন পর্যায়ে পৌঁছে যাওয়ার পরও জনগণকে আশার বাণী শোনাতে পারছে না সরকার। সরকার বলছে, আন্তর্জাতিক বাজারে এসব পণ্যের দাম বাড়ার প্রভাব দেশের বাজারে পড়ছে। তাই খুব দ্রুত নিত্যপণ্যের দাম কমবে না। আর সামনে রমজান মাস আসছে। প্রতি রমজান মাসে নিত্যপণ্যের দাম বাড়ে। এবার আগে থেকেই দাম বেড়ে রয়েছে। এরপরও রমজানে যদি আরও বাড়ে তাহলে স্বল্প আয়ের মানুষের দিনাতিপাত করার আরও কঠিন হয়ে দাঁড়াবে।
শুক্রবার কারওয়ান বাজারে দেখা যায়, বাজারে শাক সবজির পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকলেও চড়া সবজির বাজার। টমেটো ৪০ টাকা, গোল বেগুন ৮০ টাকা, লম্বা বেগুন ৭০ টাকা, করলা ৮০ টাকা, শিম ৫০-৬০ টাকা, কাঁচা পেঁপে ৫০ টাকা, শসা ৩৫ টাকা, গাজর ৩০ টাকা, ফুলকপি ৪০ টাকা, বরবটি ১০০ টাকা, চিচিঙ্গা ৮০, পেঁয়াজ ৫০-৫২ টাকা, কাঁচামরিচ ৬০ টাকা, রসুন ১১০-১২০ টাকা, গোল আলু ২০ টাকা, দেশি আদা ৭০-৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া লাউ ৯০-১০০ টাকা, ব্রুকলি, ফুলকপি, বাঁধা কপি ৪০ টাকা পিস বিক্রি হচ্ছে।
মুদি পণ্যের মধ্যে মুগ ডাল ১২৫ টাকা, বুটের ডাল ৮০ টাকা, অ্যাংকর ডাল ৪৫ টাকা, মসুর ডাল ১১৫ টাকা, ছোলা ৭৫ টাকা, খোলা চিনিগুড়া চাল ৯০-১০০ টাকা, মিনিকেট চাল ৫৫ টাকা, নাজিরশাইল চাল ৭০ টাকা, চিনি ৭৫ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।
রানা নামের এক ক্রেতা বলেন, ‘নিত্যপ্রয়োজনীয় এমন কোন পণ্য নেই যার দাম বাড়েনি। সংসার চালানো খুবই কষ্টকর হয়ে পড়েছে। আমরা যারা সাধারণ মানুষ তারা হিমশিম খাচ্ছি। সবকিছুর দাম এভাবে বাড়তে থাকলে চলার উপায় থাকবে না।’
স্বস্তি নেই আমিষের সহজলভ্য উপাদান মুরগির বাজারেও। কেজি প্রতি ব্রয়লার মুরগি ১৭০ টাকা, লাল লেয়ার মুরগি ২৬৫-২৭০ টাকা, সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২৮০-২৯০ টাকায়। তাছাড়া গরু ও খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে আগের দামেই।
হুট করেই রাজধানীর বাজারগুলোতে অস্বাভাবিক বেড়েছে পেঁয়াজের দাম। এক লাফে পেঁয়াজের দাম বেড়ে প্রায় দ্বিগুণ হয়ে গেছে। বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ব্যবসায়ীরা দেশি পেঁয়াজের কেজি বিক্রি করছেন ৫০-৬০ টাকা। এক সপ্তাহ আগে এই পেঁয়াজের কেজি ছিল ৩০-৩৫ টাকা।
ব্যবসায়ীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে সম্প্রতি বোতলজাত সয়াবিনের লিটারে আট টাকা বাড়িয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। বাজারে এক লিটারের বোতল বিক্রি হচ্ছে ১৬০ থেকে ১৬৫ টাকায়। বোতলজাত সয়াবিন তেলের ক্ষেত্রে বোতলের গায়ে দর লেখা থাকলেও খোলা সয়াবিনে সে সুযোগ নেই। ফলে খোলা সয়াবিন আর পাম তেল বিক্রি হচ্ছে আরও বেশি দামে। খুচরা বাজারে প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন ১৬০ থেকে ১৭০ টাকা এবং পাম তেল ১৫৫ থেকে ১৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
কয়েক মাস স্থির থাকার পর আবার নড়েচড়ে উঠেছে চিনির বাজার। চিনির চাহিদাও রমজানে বাড়ে। গত সপ্তাহে প্রতি কেজি খোলা চিনি বিক্রি হয়েছিল ৭৫ থেকে ৭৬ টাকা। এক সপ্তাহের ব্যবধানে তিন থেকে চার টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৭৮ থেকে ৮০ টাকায়।
এছাড়া ধানের ফলন ভালো হওয়ার পরও চালের দাম কমছে না, উল্টো বাড়ছে। কৃষি মন্ত্রণালয়ের তথ্য বলছে, ২০২১-২২ অর্থবছরে ধান উৎপাদনের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে তিন কোটি ৯৫ লাখ টন। আমন ও আউশ মৌসুমে ফলন হয়েছে ভালো। বাজারে সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে আমদানিও করা হয়েছে চাল। খাদ্য মন্ত্রণালয় বলছে, চালের মজুদও রয়েছে রেকর্ড পরিমাণে। গত ১৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চালের মজুদ ছিল ১৭ লাখ ১৫ হাজার টন। এরপরও কমেনি দাম। বাজারে মোটা চালের দাম এখন ৪৮ থেকে ৫৫ টাকা। প্রতি কেজি মিনেকেট চাল ৬২ থেকে ৬৫ এবং নাজিরশাইল ৬৫ থেকে ৭২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
মাছ বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতি কেজি বড় রুই ৩০০-৩৫০ টাকা, মাঝারি রুই মাছ ২৫০-২৭০ টাকা, ছোট কাতল মাছ ২৫০-৩০০ টাকা, বড় কাতল ৪০০ টাকা, বড় পাঙ্গাশ মাছ ২৮০-৩০০ টাকা, আকার ভেদে ইলিশ মাছ ৭০০-১২০০ টাকা, সিলভার কার্প মাছ ২০০ টাকা, বোয়াল ৫০০ টাকা, কালিবাউশ ৩৫০ টাকা, ফলি মাছ ৪৫০ টাকা, আইর ৬০০ টাকা, বড় কৈ ৬০০ টাকা, বেলে ৪৫০ টাকা, শিং ৮৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
ছোট মাছের মধ্যে চিংড়ি ৩০০ টাকা, কাচকি ৪৫০ টাকা, মলা ৩০০ টাকা, টাটকিনি ২৫০ টাকা, পাবদা ৫০০-৬০০ টাকা, গলদা চিংড়ি আকার ভেদে ৬৫০-৭৫০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। সামুদ্রিক মাছের মধ্যে বড় সুরমা মাছ ৩০০ টাকা, রূপচাঁদা ৬০০-৮০০ টাকা, লাল কোরাল ৫০০-৬০০ টাকা ও বাটা মাছ ২০০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।
শুক্রবার, ১৮ ফেব্রুয়ারী ২০২২
কয়েক বছর ধরে নিত্যপণ্যের দাম অস্বাভাবিক বাড়ায় নাভিশ্বাস উঠছে স্বল্প আয়ের মানুষের। এখন এখন প্রতি লিটার সয়াবিন তেল কিনতে গুনতে হচ্ছে ১৬৮ থেকে ১৭০ টাকা, গরুর মাংস কিনতে গুনতে হচ্ছে সাড়ে ৬শ’ টাকা, মোটা চাল কিনতে গুনতে হচ্ছে ৫৫ টাকা, ব্রয়লার মুরগি ১৭০ টাকা, সবজির কেজি গড়ে ৫০ থেকে ৬০ টাকা। শুক্রবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর বিভিন্ন কাঁচাবাজার ঘুরে নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধির চিত্র দেখা গেছে। নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধি এমন পর্যায়ে পৌঁছে যাওয়ার পরও জনগণকে আশার বাণী শোনাতে পারছে না সরকার। সরকার বলছে, আন্তর্জাতিক বাজারে এসব পণ্যের দাম বাড়ার প্রভাব দেশের বাজারে পড়ছে। তাই খুব দ্রুত নিত্যপণ্যের দাম কমবে না। আর সামনে রমজান মাস আসছে। প্রতি রমজান মাসে নিত্যপণ্যের দাম বাড়ে। এবার আগে থেকেই দাম বেড়ে রয়েছে। এরপরও রমজানে যদি আরও বাড়ে তাহলে স্বল্প আয়ের মানুষের দিনাতিপাত করার আরও কঠিন হয়ে দাঁড়াবে।
শুক্রবার কারওয়ান বাজারে দেখা যায়, বাজারে শাক সবজির পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকলেও চড়া সবজির বাজার। টমেটো ৪০ টাকা, গোল বেগুন ৮০ টাকা, লম্বা বেগুন ৭০ টাকা, করলা ৮০ টাকা, শিম ৫০-৬০ টাকা, কাঁচা পেঁপে ৫০ টাকা, শসা ৩৫ টাকা, গাজর ৩০ টাকা, ফুলকপি ৪০ টাকা, বরবটি ১০০ টাকা, চিচিঙ্গা ৮০, পেঁয়াজ ৫০-৫২ টাকা, কাঁচামরিচ ৬০ টাকা, রসুন ১১০-১২০ টাকা, গোল আলু ২০ টাকা, দেশি আদা ৭০-৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া লাউ ৯০-১০০ টাকা, ব্রুকলি, ফুলকপি, বাঁধা কপি ৪০ টাকা পিস বিক্রি হচ্ছে।
মুদি পণ্যের মধ্যে মুগ ডাল ১২৫ টাকা, বুটের ডাল ৮০ টাকা, অ্যাংকর ডাল ৪৫ টাকা, মসুর ডাল ১১৫ টাকা, ছোলা ৭৫ টাকা, খোলা চিনিগুড়া চাল ৯০-১০০ টাকা, মিনিকেট চাল ৫৫ টাকা, নাজিরশাইল চাল ৭০ টাকা, চিনি ৭৫ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।
রানা নামের এক ক্রেতা বলেন, ‘নিত্যপ্রয়োজনীয় এমন কোন পণ্য নেই যার দাম বাড়েনি। সংসার চালানো খুবই কষ্টকর হয়ে পড়েছে। আমরা যারা সাধারণ মানুষ তারা হিমশিম খাচ্ছি। সবকিছুর দাম এভাবে বাড়তে থাকলে চলার উপায় থাকবে না।’
স্বস্তি নেই আমিষের সহজলভ্য উপাদান মুরগির বাজারেও। কেজি প্রতি ব্রয়লার মুরগি ১৭০ টাকা, লাল লেয়ার মুরগি ২৬৫-২৭০ টাকা, সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২৮০-২৯০ টাকায়। তাছাড়া গরু ও খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে আগের দামেই।
হুট করেই রাজধানীর বাজারগুলোতে অস্বাভাবিক বেড়েছে পেঁয়াজের দাম। এক লাফে পেঁয়াজের দাম বেড়ে প্রায় দ্বিগুণ হয়ে গেছে। বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ব্যবসায়ীরা দেশি পেঁয়াজের কেজি বিক্রি করছেন ৫০-৬০ টাকা। এক সপ্তাহ আগে এই পেঁয়াজের কেজি ছিল ৩০-৩৫ টাকা।
ব্যবসায়ীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে সম্প্রতি বোতলজাত সয়াবিনের লিটারে আট টাকা বাড়িয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। বাজারে এক লিটারের বোতল বিক্রি হচ্ছে ১৬০ থেকে ১৬৫ টাকায়। বোতলজাত সয়াবিন তেলের ক্ষেত্রে বোতলের গায়ে দর লেখা থাকলেও খোলা সয়াবিনে সে সুযোগ নেই। ফলে খোলা সয়াবিন আর পাম তেল বিক্রি হচ্ছে আরও বেশি দামে। খুচরা বাজারে প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন ১৬০ থেকে ১৭০ টাকা এবং পাম তেল ১৫৫ থেকে ১৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
কয়েক মাস স্থির থাকার পর আবার নড়েচড়ে উঠেছে চিনির বাজার। চিনির চাহিদাও রমজানে বাড়ে। গত সপ্তাহে প্রতি কেজি খোলা চিনি বিক্রি হয়েছিল ৭৫ থেকে ৭৬ টাকা। এক সপ্তাহের ব্যবধানে তিন থেকে চার টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৭৮ থেকে ৮০ টাকায়।
এছাড়া ধানের ফলন ভালো হওয়ার পরও চালের দাম কমছে না, উল্টো বাড়ছে। কৃষি মন্ত্রণালয়ের তথ্য বলছে, ২০২১-২২ অর্থবছরে ধান উৎপাদনের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে তিন কোটি ৯৫ লাখ টন। আমন ও আউশ মৌসুমে ফলন হয়েছে ভালো। বাজারে সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে আমদানিও করা হয়েছে চাল। খাদ্য মন্ত্রণালয় বলছে, চালের মজুদও রয়েছে রেকর্ড পরিমাণে। গত ১৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চালের মজুদ ছিল ১৭ লাখ ১৫ হাজার টন। এরপরও কমেনি দাম। বাজারে মোটা চালের দাম এখন ৪৮ থেকে ৫৫ টাকা। প্রতি কেজি মিনেকেট চাল ৬২ থেকে ৬৫ এবং নাজিরশাইল ৬৫ থেকে ৭২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
মাছ বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতি কেজি বড় রুই ৩০০-৩৫০ টাকা, মাঝারি রুই মাছ ২৫০-২৭০ টাকা, ছোট কাতল মাছ ২৫০-৩০০ টাকা, বড় কাতল ৪০০ টাকা, বড় পাঙ্গাশ মাছ ২৮০-৩০০ টাকা, আকার ভেদে ইলিশ মাছ ৭০০-১২০০ টাকা, সিলভার কার্প মাছ ২০০ টাকা, বোয়াল ৫০০ টাকা, কালিবাউশ ৩৫০ টাকা, ফলি মাছ ৪৫০ টাকা, আইর ৬০০ টাকা, বড় কৈ ৬০০ টাকা, বেলে ৪৫০ টাকা, শিং ৮৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
ছোট মাছের মধ্যে চিংড়ি ৩০০ টাকা, কাচকি ৪৫০ টাকা, মলা ৩০০ টাকা, টাটকিনি ২৫০ টাকা, পাবদা ৫০০-৬০০ টাকা, গলদা চিংড়ি আকার ভেদে ৬৫০-৭৫০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। সামুদ্রিক মাছের মধ্যে বড় সুরমা মাছ ৩০০ টাকা, রূপচাঁদা ৬০০-৮০০ টাকা, লাল কোরাল ৫০০-৬০০ টাকা ও বাটা মাছ ২০০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।