বৈশ্বিক বর্তমান প্রেক্ষাপটে বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের মূল্য বাংলাদেশের তুলনায় অনেক বেশি হওয়ার কারণে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন (বিপিসি), ইস্টার্ণ রিফাইনারী লিমিটেড (ই আর এল)-এ পরিশোধিত এবং আমদানি/ক্রয়কৃত ডিজেল, কেরোসিন, অকটেন ও পেট্রোলের মূল্য সমন্বয় করে ভোক্তা পর্যায়ে দাম পুনর্নির্ধারণ করেছে। ভোক্তা পর্যায়ে খুচরা মূল্য ডিজেল ১১৪ টাকা লিটার, কেরোসিন ১১৪ টাকা লিটার, অকটেন ১৩৫ টাকা লিটার ও পেট্রোল ১৩০ টাকা লিটার।
শুক্রবার (৫ আগস্ট) রাতে জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগ থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। প্রজ্ঞাপনে নতুন ঘোষণা অনুযায়ী, শুক্রবার রাত ১২টা থেকে জ্বালানি তেলের বর্ধিত দাম কার্যকর হবে।
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছেন, জনবান্ধব আওয়ামী লীগ সরকার সব সময় আমজনতার স্বস্তি ও স্বাচ্ছন্দ্য বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়। যতদিন সম্ভব ছিল ততদিন সরকার জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধির চিন্তা করে নাই। অবস্থার প্রেক্ষিতে অনেকটা নিরুপায় হয়েই কিছুটা এডজাস্টমেন্টে যেতে হচ্ছে। ২০১৬ সালের এপ্রিল মাসে সরকার জ্বালানি তেলের মূল্য কমিয়ে দিয়েছিল। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে সে অনুযায়ী জ্বালানি তেলের মূল্য পুনঃবিবেচনা করা হবে।
বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের উর্ধ্বগতির কারণে পার্শ্ববর্তী দেশ সহ বিভিন্ন দেশে নিয়মিত তেলের মূল্য সমন্বয় করে থাকে। ভারত ২২মে ২০২২ তারিখ থেকে কলকাতায় ডিজেলের মূল্য প্রতি লিটার ৯২.৭৬ রুপি এবং পেট্রোল লিটার প্রতি ১০৬.০৩ রুপি নির্ধারণ করেছে যা এখনো বিদ্যমান রয়েছে। এই মূল্য বাংলাদেশী টাকায় যথাক্রমে ১১৪.০৯ টাকা এবং ১৩০.৪২ টাকা। ( ১ রুপি = গড় ১.২৩ টাকা)। অর্থাৎ বাংলাদেশে কলকাতার তুলনায় ডিজেলের মূল্য লিটার প্রতি ৩৪.০৯ এবং পেট্টোল লিটার প্রতি ৪৪.৪২ টাকা কমে বিক্রয় হচ্ছিল। মূল্য কম থাকায় তেল পাচার হওয়ার আশঙ্কা থেকেও জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধি পাওয়া সময়ের দাবী।
উল্লেখ্য যে, বাংলাদেশ পেট্টোলিয়াম কর্পোরেশন বিগত ছয় মাসে ( ফেব্রুয়ারি ২২ থেকে জুলাই ২০২২ পর্যন্ত) জ্বালানি তেল বিক্রয়ে (সকল পণ্য ) ৮০১৪.৫১ কোটি টাকা লোকসান দিয়েছে। বর্তমানে, আন্তর্জাতিক তেলের বাজার পরিস্থিতির কারণে বিপিসির আমদানি কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখাতে যৌক্তিক মূল্য সমন্বয় অপরিহার্য হয়ে পড়েছে।
এর আগে, শুক্রবার সকালে রাজধানীর বারিধারায় গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে বিদ্যুৎ, গ্যাস ও জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির ইঙ্গিত দিয়েছেন প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, বিশ্ববাজারে দাম বেড়ে যাওয়ার প্রেক্ষাপটে ডিজেল, পেট্রল, অকটেন, গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম বাড়িয়ে ‘যৌক্তিক’ পর্যায়ে নিয়ে আসার সময় এসেছে।
গত সপ্তাহ থেকেই ডিজেলসহ অন্যান্য জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির পরিকল্পনার কথা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের মুখে শোনা যাচ্ছিল। বৃহস্পতিবার বিদ্যুৎ-জ্বালানি বিষয়ে এফবিসিসিআইয়ের আলোচনায় ‘প্রয়োজনে দাম বাড়িয়ে হলেও’ নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস-বিদ্যুৎ সরবরাহের জানান কয়েকজন ব্যবসায়ী। এক দিন পরেই বিষয়টি আরও স্পষ্ট হলো প্রতিমন্ত্রীর কথায়।
গত বছরের নভেম্বরে ডিজেল ও কেরোসিনের দাম লিটারে ১৫ টাকা বাড়িয়েছিল সরকার। চলতি বছরের গত ৫ জুন মাসের শুরুতে গ্যাসের দাম এক দফায় ২২ দশমিক ৭৮ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে। আর বিদ্যুতের পাইকারি দাম বাড়ানো হয়েছিল সর্বশেষ ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে। তখন খুচরায়ও দাম বেড়েছিল।
জ্বালানি তেলের প্রসঙ্গে প্রতিমন্ত্রী বলেন, যেহেতু বিশ্ববাজারে জ্বালানির দাম ঊর্ধমুখী, সেই জায়গায় আমাদের খুব চিন্তাভাবনা করতে হবে। এটার সরাসরি প্রভাব পড়ে জনগণের ওপর। ডিজেল, পেট্রল, অকটেন- এগুলো যেন একটা সহনীয় পর্যায়ে থাকে। দেশ ও দশের কথা চিন্তা করে আমরা একটা অ্যাডজাস্টমেন্টে যাব।
তিনি আরও বলেন, বিশ্ববাজারে তেলের দাম ৭০ ডলারের ওপরে উঠে গেলেই আমরা লোকসানের মধ্যে পড়ে যাই। ইতোমধ্যে বিপিসি নিজের থেকে ৮ হাজার কোটি টাকার মতো লোকসান দিয়েছে। তাই আমি মনে করি, বিশ্ব বাজারের সঙ্গে একটা অ্যাডজাস্টমেন্ট থাকা উচিত। না হলে আমাদের অনেক ক্ষতি হয়ে যাবে।
নসরুল হামিদ বলেন, ‘উন্নত বিশ্বের সব দেশেই এভাবে সমন্বয় করতে হচ্ছে। আমরাই কেবল বসে আছি।… তেলের মার্কেটে এখন পুরোপুরি লস দেওয়া হচ্ছে। পাশের দেশে তেলের দাম বাড়ছে, সঙ্গে সঙ্গে অ্যাডজাস্ট করতেছে। পৃথিবীর অনেক দেশেই এমন হচ্ছে।’
ডিজেলসহ অন্যান্য জ্বালানি তেলের দাম বাড়ালে জনজীবনে যে প্রভাব পড়বে- তা নিয়েও সরকার চিন্তাভাবনা করছে বলেও জানান নসরুল হামিদ।
শুক্রবার, ০৫ আগস্ট ২০২২
বৈশ্বিক বর্তমান প্রেক্ষাপটে বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের মূল্য বাংলাদেশের তুলনায় অনেক বেশি হওয়ার কারণে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন (বিপিসি), ইস্টার্ণ রিফাইনারী লিমিটেড (ই আর এল)-এ পরিশোধিত এবং আমদানি/ক্রয়কৃত ডিজেল, কেরোসিন, অকটেন ও পেট্রোলের মূল্য সমন্বয় করে ভোক্তা পর্যায়ে দাম পুনর্নির্ধারণ করেছে। ভোক্তা পর্যায়ে খুচরা মূল্য ডিজেল ১১৪ টাকা লিটার, কেরোসিন ১১৪ টাকা লিটার, অকটেন ১৩৫ টাকা লিটার ও পেট্রোল ১৩০ টাকা লিটার।
শুক্রবার (৫ আগস্ট) রাতে জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগ থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। প্রজ্ঞাপনে নতুন ঘোষণা অনুযায়ী, শুক্রবার রাত ১২টা থেকে জ্বালানি তেলের বর্ধিত দাম কার্যকর হবে।
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছেন, জনবান্ধব আওয়ামী লীগ সরকার সব সময় আমজনতার স্বস্তি ও স্বাচ্ছন্দ্য বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়। যতদিন সম্ভব ছিল ততদিন সরকার জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধির চিন্তা করে নাই। অবস্থার প্রেক্ষিতে অনেকটা নিরুপায় হয়েই কিছুটা এডজাস্টমেন্টে যেতে হচ্ছে। ২০১৬ সালের এপ্রিল মাসে সরকার জ্বালানি তেলের মূল্য কমিয়ে দিয়েছিল। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে সে অনুযায়ী জ্বালানি তেলের মূল্য পুনঃবিবেচনা করা হবে।
বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের উর্ধ্বগতির কারণে পার্শ্ববর্তী দেশ সহ বিভিন্ন দেশে নিয়মিত তেলের মূল্য সমন্বয় করে থাকে। ভারত ২২মে ২০২২ তারিখ থেকে কলকাতায় ডিজেলের মূল্য প্রতি লিটার ৯২.৭৬ রুপি এবং পেট্রোল লিটার প্রতি ১০৬.০৩ রুপি নির্ধারণ করেছে যা এখনো বিদ্যমান রয়েছে। এই মূল্য বাংলাদেশী টাকায় যথাক্রমে ১১৪.০৯ টাকা এবং ১৩০.৪২ টাকা। ( ১ রুপি = গড় ১.২৩ টাকা)। অর্থাৎ বাংলাদেশে কলকাতার তুলনায় ডিজেলের মূল্য লিটার প্রতি ৩৪.০৯ এবং পেট্টোল লিটার প্রতি ৪৪.৪২ টাকা কমে বিক্রয় হচ্ছিল। মূল্য কম থাকায় তেল পাচার হওয়ার আশঙ্কা থেকেও জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধি পাওয়া সময়ের দাবী।
উল্লেখ্য যে, বাংলাদেশ পেট্টোলিয়াম কর্পোরেশন বিগত ছয় মাসে ( ফেব্রুয়ারি ২২ থেকে জুলাই ২০২২ পর্যন্ত) জ্বালানি তেল বিক্রয়ে (সকল পণ্য ) ৮০১৪.৫১ কোটি টাকা লোকসান দিয়েছে। বর্তমানে, আন্তর্জাতিক তেলের বাজার পরিস্থিতির কারণে বিপিসির আমদানি কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখাতে যৌক্তিক মূল্য সমন্বয় অপরিহার্য হয়ে পড়েছে।
এর আগে, শুক্রবার সকালে রাজধানীর বারিধারায় গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে বিদ্যুৎ, গ্যাস ও জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির ইঙ্গিত দিয়েছেন প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, বিশ্ববাজারে দাম বেড়ে যাওয়ার প্রেক্ষাপটে ডিজেল, পেট্রল, অকটেন, গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম বাড়িয়ে ‘যৌক্তিক’ পর্যায়ে নিয়ে আসার সময় এসেছে।
গত সপ্তাহ থেকেই ডিজেলসহ অন্যান্য জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির পরিকল্পনার কথা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের মুখে শোনা যাচ্ছিল। বৃহস্পতিবার বিদ্যুৎ-জ্বালানি বিষয়ে এফবিসিসিআইয়ের আলোচনায় ‘প্রয়োজনে দাম বাড়িয়ে হলেও’ নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস-বিদ্যুৎ সরবরাহের জানান কয়েকজন ব্যবসায়ী। এক দিন পরেই বিষয়টি আরও স্পষ্ট হলো প্রতিমন্ত্রীর কথায়।
গত বছরের নভেম্বরে ডিজেল ও কেরোসিনের দাম লিটারে ১৫ টাকা বাড়িয়েছিল সরকার। চলতি বছরের গত ৫ জুন মাসের শুরুতে গ্যাসের দাম এক দফায় ২২ দশমিক ৭৮ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে। আর বিদ্যুতের পাইকারি দাম বাড়ানো হয়েছিল সর্বশেষ ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে। তখন খুচরায়ও দাম বেড়েছিল।
জ্বালানি তেলের প্রসঙ্গে প্রতিমন্ত্রী বলেন, যেহেতু বিশ্ববাজারে জ্বালানির দাম ঊর্ধমুখী, সেই জায়গায় আমাদের খুব চিন্তাভাবনা করতে হবে। এটার সরাসরি প্রভাব পড়ে জনগণের ওপর। ডিজেল, পেট্রল, অকটেন- এগুলো যেন একটা সহনীয় পর্যায়ে থাকে। দেশ ও দশের কথা চিন্তা করে আমরা একটা অ্যাডজাস্টমেন্টে যাব।
তিনি আরও বলেন, বিশ্ববাজারে তেলের দাম ৭০ ডলারের ওপরে উঠে গেলেই আমরা লোকসানের মধ্যে পড়ে যাই। ইতোমধ্যে বিপিসি নিজের থেকে ৮ হাজার কোটি টাকার মতো লোকসান দিয়েছে। তাই আমি মনে করি, বিশ্ব বাজারের সঙ্গে একটা অ্যাডজাস্টমেন্ট থাকা উচিত। না হলে আমাদের অনেক ক্ষতি হয়ে যাবে।
নসরুল হামিদ বলেন, ‘উন্নত বিশ্বের সব দেশেই এভাবে সমন্বয় করতে হচ্ছে। আমরাই কেবল বসে আছি।… তেলের মার্কেটে এখন পুরোপুরি লস দেওয়া হচ্ছে। পাশের দেশে তেলের দাম বাড়ছে, সঙ্গে সঙ্গে অ্যাডজাস্ট করতেছে। পৃথিবীর অনেক দেশেই এমন হচ্ছে।’
ডিজেলসহ অন্যান্য জ্বালানি তেলের দাম বাড়ালে জনজীবনে যে প্রভাব পড়বে- তা নিয়েও সরকার চিন্তাভাবনা করছে বলেও জানান নসরুল হামিদ।