যুক্তরাষ্ট্র চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশ থেকে ৭ দশমিক ৫৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের পোশাক আমদানি করেছে। এটি আগের বছরের প্রথম নয় মাসের তুলনায় প্রায় ৫১ শতাংশ বেশি। যুক্তরাষ্ট্রের ‘অফিস অব টেক্সটাইলস অ্যান্ড অ্যাপারেল’ (অটেক্সা) প্রকাশিত সর্বশেষ পোশাক আমদানির পরিসংখ্যান থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
বাংলাদেশের পাশাপাশি চলতি বছরের জানুয়ারি-সেপ্টেম্বর সময়ে বর্হিবিশ্ব থেকে যুক্তরাষ্ট্রের পোশাক আমদানি ৩৪ দশমিক ৬১ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। ৮ দশমিক ৫৪ শতাংশ শেয়ার নিয়ে বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের জন্য পোশাক আমদানির ৩য় বৃহত্তম উৎস হিসাবে অবস্থান ধরে রেখেছে।
বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রের পোশাক আমদানি বৃদ্ধির বিষয়ে রপ্তানিমুখী তৈরি পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ’র পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল বলেন, ‘কোভিডকালীন সময়ে সরকার ও উদ্যোক্তাদের নানামুখী পদক্ষেপ এবং কমপ্লায়েন্স পরিস্থিতি ভালো হওয়ায় বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রের ক্রেতাদের পোশাক কেনার আগ্রহ বেড়েছে। একই সঙ্গে দেশটির চীন থেকে পোশাক আমদানি কমানোর প্রভাব বাংলাদেশের জন্য ইতিবাচক হয়েছে।’
অটেক্সা পরিসংখ্যান অনুযায়ী, চীন ২২ দশমিক ৪৮ শতাংশ শেয়ার নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জন্য সর্ব বৃহৎ পোশাক সরবরাহকারী। এরপরে ১৮ দশমিক ৫১ শতাংশ শেয়ার নিয়ে ভিয়েতনামের অবস্থান। ২০২২ সালের প্রথম ১০ মাসে চীন থেকে যুক্তরাষ্ট্রের আমদানি ২৮ দশমিক ৯৪ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে এবং আমদানির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৭ দশমিক ৭২ বিলিয়ন ডলার। একই সময়ে ভিয়েতনাম থেকে আমদানি ১৪ দশমিক ৫৯ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে, বছরওয়ারি ৩৪ দশমিক ৬৯ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে।
এ বিষয়ে বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান বলেন, ‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে তৈরি পোশাক রপ্তানিতে উচ্চ প্রবৃদ্ধির পেছনে কয়েকটি কারণ রয়েছে। প্রথম কারণ হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান চেইন শপ ওয়ালমার্টসহ শীর্ষ ক্রেতা প্রতিষ্ঠানগুলো বিগত কয়েক মাস অনেক অর্ডার স্থগিত রেখেছিল। পরে সেসব স্থগিত করা অর্ডার অনুযায়ী তারা পোশাক নিতে আগ্রহ দেখায়। আমরা তাদের চাহিদামতো পোশাক রপ্তানি করেছি। এর ফলে দেশটিতে আমাদের পোশাক রপ্তানি বেড়েছে। এ ছাড়া কাঁচামালের মূল্যবৃদ্ধির কারণে আমাদের পোশাকের ইউনিট প্রাইস বেড়েছে। এ কারণেও রপ্তানি আয় বেশি হয়েছে। তৃতীয়ত-মার্কিন বাজারে আমরা হাই ভ্যালু প্রডাক্ট রপ্তানি বাড়িয়েছি। আশা করছি আগামী আরও কয়েক মাস এ অবস্থা বিরাজ থাকবে।’
এর আগে তৈরি পোশাক রপ্তানি ফের দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেছে বাংলাদেশ। একবছর ধরে দ্বিতীয় স্থানটি দখল করে রেখেছিল ভিয়েতনাম। শুধু তাই নয়, সারা বিশ্বে পোশাক রপ্তানি ভিয়েতনামের চেয়ে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধিও বেড়ে বেড়েছে। অন্যদিকে ইউরোপিয় ইউনিয়নের পোশাক আমদানিতে সরবরাহকারী সব শীর্ষ দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রবৃদ্ধি হয়েছে বাংলাদেশের।
এই সময়ে ইউরোপিয় ইউনিয়ন বাংলাদেশ থেকে ১৫ দশমিক ৩৭ বিলিয়ন ডলার মূল্যের পোশাক আমদানি করেছে, যেখানে বিশ্ব থেকে তাদের মোট আমদানির পরিমান ছিল ৬৭ দশমিক ১৮ বিলিয়ন ডলারের।
সম্প্রতি বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) ‘ওয়ার্ল্ড স্ট্যাটিস্টিক্যাল রিভিউ ২০২২’ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। সেই প্রতিবেদনে দেখা গেছে, বরাবরের মতো বিশ্বে পোশাক রপ্তানিতে শীর্ষ স্থানে রয়েছে চীন। দ্বিতীয় অবস্থানে আছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। ইইউভুক্ত দেশগুলো ১৫ হাজার ১০০ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি করেছে। তবে একক দেশ হিসেবে বাংলাদেশ দ্বিতীয় শীর্ষ পোশাক রপ্তানিকারক। আর তৃতীয় ভিয়েতনাম।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, চীন, ইইউ, বাংলাদেশ, ভিয়েতনামসহ শীর্ষ ১০ রপ্তানিকারক দেশ গত বছর ৪৬ হাজার কোটি বা ৪৬০ বিলিয়ন ডলারের তৈরি পোশাক বিক্রি করেছে। অন্যদিকে ইইউ, যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, যুক্তরাজ্য, চীন, কানাডা, কোরিয়া, রাশিয়াসহ শীর্ষ ১০ আমদানিকারক দেশ ৪১ হাজার ৪০০ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক কিনেছে।
২০২০ সালে করোনাকালে বাংলাদেশকে টপকে দ্বিতীয় শীর্ষ তৈরি পোশাক রপ্তানিকারক দেশ হয়ে যায় ভিয়েতনাম। তার কয়েক বছর আগে থেকেই বাংলাদেশের সঙ্গে তীব্র প্রতিযোগিতা করেছে দেশটি। যদিও এক বছরের ব্যবধানে ২০২১ সালে তৈরি পোশাক রপ্তানিতে ভিয়েতনামকে পেছনে ফেলে দিয়েছে বাংলাদেশ।
অন্যদিকে ইউরোপিয় পরিসংখ্যান সংস্থা, ইউরোস্ট্যাট জানুয়ারী-আগস্ট ২০২২ সময়ে পোশাক আমদানির সর্বশেষ পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছে। ইউরোপিয় ইউনিয়নের পোশাক আমদানিতে সরবরাহকারী সব শীর্ষ দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রবৃদ্ধি হয়েছে বাংলাদেশের।
মঙ্গলবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০২২
যুক্তরাষ্ট্র চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশ থেকে ৭ দশমিক ৫৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের পোশাক আমদানি করেছে। এটি আগের বছরের প্রথম নয় মাসের তুলনায় প্রায় ৫১ শতাংশ বেশি। যুক্তরাষ্ট্রের ‘অফিস অব টেক্সটাইলস অ্যান্ড অ্যাপারেল’ (অটেক্সা) প্রকাশিত সর্বশেষ পোশাক আমদানির পরিসংখ্যান থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
বাংলাদেশের পাশাপাশি চলতি বছরের জানুয়ারি-সেপ্টেম্বর সময়ে বর্হিবিশ্ব থেকে যুক্তরাষ্ট্রের পোশাক আমদানি ৩৪ দশমিক ৬১ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। ৮ দশমিক ৫৪ শতাংশ শেয়ার নিয়ে বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের জন্য পোশাক আমদানির ৩য় বৃহত্তম উৎস হিসাবে অবস্থান ধরে রেখেছে।
বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রের পোশাক আমদানি বৃদ্ধির বিষয়ে রপ্তানিমুখী তৈরি পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ’র পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল বলেন, ‘কোভিডকালীন সময়ে সরকার ও উদ্যোক্তাদের নানামুখী পদক্ষেপ এবং কমপ্লায়েন্স পরিস্থিতি ভালো হওয়ায় বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রের ক্রেতাদের পোশাক কেনার আগ্রহ বেড়েছে। একই সঙ্গে দেশটির চীন থেকে পোশাক আমদানি কমানোর প্রভাব বাংলাদেশের জন্য ইতিবাচক হয়েছে।’
অটেক্সা পরিসংখ্যান অনুযায়ী, চীন ২২ দশমিক ৪৮ শতাংশ শেয়ার নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জন্য সর্ব বৃহৎ পোশাক সরবরাহকারী। এরপরে ১৮ দশমিক ৫১ শতাংশ শেয়ার নিয়ে ভিয়েতনামের অবস্থান। ২০২২ সালের প্রথম ১০ মাসে চীন থেকে যুক্তরাষ্ট্রের আমদানি ২৮ দশমিক ৯৪ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে এবং আমদানির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৭ দশমিক ৭২ বিলিয়ন ডলার। একই সময়ে ভিয়েতনাম থেকে আমদানি ১৪ দশমিক ৫৯ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে, বছরওয়ারি ৩৪ দশমিক ৬৯ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে।
এ বিষয়ে বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান বলেন, ‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে তৈরি পোশাক রপ্তানিতে উচ্চ প্রবৃদ্ধির পেছনে কয়েকটি কারণ রয়েছে। প্রথম কারণ হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান চেইন শপ ওয়ালমার্টসহ শীর্ষ ক্রেতা প্রতিষ্ঠানগুলো বিগত কয়েক মাস অনেক অর্ডার স্থগিত রেখেছিল। পরে সেসব স্থগিত করা অর্ডার অনুযায়ী তারা পোশাক নিতে আগ্রহ দেখায়। আমরা তাদের চাহিদামতো পোশাক রপ্তানি করেছি। এর ফলে দেশটিতে আমাদের পোশাক রপ্তানি বেড়েছে। এ ছাড়া কাঁচামালের মূল্যবৃদ্ধির কারণে আমাদের পোশাকের ইউনিট প্রাইস বেড়েছে। এ কারণেও রপ্তানি আয় বেশি হয়েছে। তৃতীয়ত-মার্কিন বাজারে আমরা হাই ভ্যালু প্রডাক্ট রপ্তানি বাড়িয়েছি। আশা করছি আগামী আরও কয়েক মাস এ অবস্থা বিরাজ থাকবে।’
এর আগে তৈরি পোশাক রপ্তানি ফের দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেছে বাংলাদেশ। একবছর ধরে দ্বিতীয় স্থানটি দখল করে রেখেছিল ভিয়েতনাম। শুধু তাই নয়, সারা বিশ্বে পোশাক রপ্তানি ভিয়েতনামের চেয়ে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধিও বেড়ে বেড়েছে। অন্যদিকে ইউরোপিয় ইউনিয়নের পোশাক আমদানিতে সরবরাহকারী সব শীর্ষ দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রবৃদ্ধি হয়েছে বাংলাদেশের।
এই সময়ে ইউরোপিয় ইউনিয়ন বাংলাদেশ থেকে ১৫ দশমিক ৩৭ বিলিয়ন ডলার মূল্যের পোশাক আমদানি করেছে, যেখানে বিশ্ব থেকে তাদের মোট আমদানির পরিমান ছিল ৬৭ দশমিক ১৮ বিলিয়ন ডলারের।
সম্প্রতি বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) ‘ওয়ার্ল্ড স্ট্যাটিস্টিক্যাল রিভিউ ২০২২’ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। সেই প্রতিবেদনে দেখা গেছে, বরাবরের মতো বিশ্বে পোশাক রপ্তানিতে শীর্ষ স্থানে রয়েছে চীন। দ্বিতীয় অবস্থানে আছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। ইইউভুক্ত দেশগুলো ১৫ হাজার ১০০ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি করেছে। তবে একক দেশ হিসেবে বাংলাদেশ দ্বিতীয় শীর্ষ পোশাক রপ্তানিকারক। আর তৃতীয় ভিয়েতনাম।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, চীন, ইইউ, বাংলাদেশ, ভিয়েতনামসহ শীর্ষ ১০ রপ্তানিকারক দেশ গত বছর ৪৬ হাজার কোটি বা ৪৬০ বিলিয়ন ডলারের তৈরি পোশাক বিক্রি করেছে। অন্যদিকে ইইউ, যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, যুক্তরাজ্য, চীন, কানাডা, কোরিয়া, রাশিয়াসহ শীর্ষ ১০ আমদানিকারক দেশ ৪১ হাজার ৪০০ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক কিনেছে।
২০২০ সালে করোনাকালে বাংলাদেশকে টপকে দ্বিতীয় শীর্ষ তৈরি পোশাক রপ্তানিকারক দেশ হয়ে যায় ভিয়েতনাম। তার কয়েক বছর আগে থেকেই বাংলাদেশের সঙ্গে তীব্র প্রতিযোগিতা করেছে দেশটি। যদিও এক বছরের ব্যবধানে ২০২১ সালে তৈরি পোশাক রপ্তানিতে ভিয়েতনামকে পেছনে ফেলে দিয়েছে বাংলাদেশ।
অন্যদিকে ইউরোপিয় পরিসংখ্যান সংস্থা, ইউরোস্ট্যাট জানুয়ারী-আগস্ট ২০২২ সময়ে পোশাক আমদানির সর্বশেষ পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছে। ইউরোপিয় ইউনিয়নের পোশাক আমদানিতে সরবরাহকারী সব শীর্ষ দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রবৃদ্ধি হয়েছে বাংলাদেশের।