করোনার থাবায় সারাবিশ্ব বিপর্যস্ত। এর প্রভাবে দেশের অর্থনীতিও নাজুক। এই অবস্থা থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর আগেই আবার শুরু হলো ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ। এটি হলো ‘মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা’। দেশের অর্থনীতিতে ফের নেমে আসলো কালো ছায়া। এদিকে আগামীবছরই জাতীয় নির্বাচন। অর্থাৎ বর্তমান সরকার রয়েছে নানামুখী চ্যালেঞ্জে। এসব চ্যালেঞ্জ সামনে নিয়ে আগামীকাল জাতীয় সংসদে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেট পেশ করবেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। এই অবস্থায় সরকার বাজেটকে কতটা গণমুখী করতে পারবে, তা নিয়ে চ্যালেঞ্জ দেখছেন অর্থনীতিবিদরা।
সাধারণ মানুষের ওপর রেকর্ড মূল্যস্ফীতির চাপ আর রাজস্ব আহরণ বৃদ্ধিতে অদক্ষতা, এই দুই বাস্তবতা বাজেটের অর্থ সংস্থানকে কঠিন করে তুলেছে। পাশাপাশি আইএমএফের শর্ত বাস্তবায়ন, রিজার্ভ আর ডলার সংকটের মতো বিষয়গুলোও মাথায় রাখতে হচ্ছে সরকারকে। তাই অর্থনীতিবিদদের অনেকেই মনে করছেন, নির্বাচনকে মাথায় রেখে জনতুষ্টির বাজেট করা এবার খুব কঠিন।
তবে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেছেন, ‘আমরা জনকল্যাণমূলক কর্মসূচি অব্যাহত রাখব। কিন্তু রাজস্ব আয় বাড়ানো ছাড়া উপায় নেই।’
তারপরও এবারের বাজেটের আকার হতে পারে সাত লাখ ৬১ হাজার ৯৯১ কোটি টাকার। মোট আয়ের লক্ষ্যমাত্রা পাঁচ লাখ কোটি টাকা এবং ঘাটতি দুই লাখ ৬১ হাজার ৯৯১ কোটি টাকা। এর মধ্যে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিবি) হতে পারে দুই লাখ ৬৩ হাজার কোটি টাকা। চলতি (২০২২-২৩) অর্থবছরের মূল বাজেট ছয় লাখ ৭৮ হাজার কোটি টাকার। তবে পরে সংশোধন করে কিছুটা কমানো হয়।
ইউক্রেন যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে উচ্চ মূল্যস্ফীতি, রিজার্ভ ও ডলার সংকট, আইএমএফের শর্ত, এসব বিবেচনায় রেখে জাতীয় নির্বাচনের আগে এই বাজেট পেশ করা হচ্ছে। ফলে সরকারকে জনতুষ্টির বিষয়টিও মাথায় রাখতে হচ্ছে।
তবে পলিসি রিচার্স ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, ‘নির্বাচন সামনে থাকলেও বাজেটে জনতুষ্টির তেমন সুযোগ নেই। আর এত বড় বাজেটের অর্থ কোথা থেকে আসবে, সেটাই এখন প্রধান চ্যালেঞ্জ। এবার বাজেটের আকার হতে পারে ২৫ বিলিয়ন ডলার। এর মধ্যে ১২ বিলিয়ন বাইরে থেকে এলে এর রি-পেমেন্ট হবে দুই বিলিয়ন। থাকছে ১০ বিলিয়ন ডলার। ডমেস্টিক অর্থনীতি থেকে আরও ১৫ বিলিয়ন ডলার জোগাড় করতে হবে। মানে এক লাখ ৫৫ হাজার কোটি টাকা।’
রাজস্ব ঘাটতির বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের রাজস্ব-ঘাটতি আছে। এখানে তো অনেক চ্যালেঞ্জ। এত টাকা তো দিতে পারবে না। তাহলে কী হবে? আমাদের টাকা ছেপে পরিস্থিতি সামাল দিতে হবে। তাতে অর্থনীতি দুর্বল হবে, মূল্যস্ফীতি আরও বাড়বে, বাজারে চাপ সৃষ্টি হবে।’
এ বিষয়ে গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘ঘাটতি বাজেটের অর্থায়ন কীভাবে হবে এটা অবশ্যই একটা বড় চ্যালেঞ্জ। এই অর্থ কোথা থেকে সরকার জোগাড় করবে, এটা কি ব্যাংকিং সেক্টর থেকে ঋণ নেবে, না কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ঋণ নেবে, না বৈদেশিক ঋণ নেবে সেটা সরকারকে নির্ধারণ করতে হবে।’
চলতি (২০২২-২৩) অর্থবছরের প্রথম ৯ মাস, অর্থাৎ জুলাই থেকে মার্চ পর্যন্ত লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় রাজস্ব আদায়ে ঘাটতি প্রায় ২৮ হাজার কোটি টাকা। আর ১২ মাসে এই ঘাটতি হতে পারে ৪০ হাজার কোটি টাকা।
এর বাইরে আরও যে বড় চ্যালেঞ্জ আছে তা হলো, উচ্চ মূল্যস্ফীতি। এখন মূল্যস্ফীতির সাধারণ হার ৯ দশমিক ৩৩ শতাংশ। খাদ্যপণ্যে এটা আরও বেশি। এই মূল্যস্ফীতির কারণে অনেকের আয় কমেছে, ক্রয়ক্ষমতা কমেছে। আর সে জন্য সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির বিস্তৃতি ঘটাতে হবে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সক্ষমতা যদি না বাড়ানো যায়, তাহলে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হবে না। উন্নয়ন কর্মসূচির বাস্তবায়ন এই অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে মাত্র ৫০ ভাগ হয়েছে। বিদেশি ঋণের যেসব প্রকল্প পাইপ লাইনে আছে, সেগুলো দ্রুত বাস্তবায়ন করা হলে, তার একটা প্রভাব রিজার্ভে পড়বে।
মোস্তাফিজুর রহমান মনে করেন, ‘নির্বাচনের আগে বাজেট হলেও তথাকথিত জনতুষ্টির বাজেট করার সুযোগ নাই। তবে সামাজিক নিরাপত্তাবেষ্টনী বাড়াতে হবে। সাধারণ মানুষের ওপর প্রভাব পড়ে, এমন পণ্যে হয়তো নতুন কর আরোপ করা হবে না। তবে বিলাস পণ্যে কর বাড়বে। করমুক্ত আয়সীমা বাড়তে পারে।’
এ বিষয়ে সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিং (সানেম)-এর নির্বাহী পরিচালক সেলিম রায়হান মনে করেন, ‘মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আনা সরকারের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলেও এটা নিয়ন্ত্রণে সরকারের পদক্ষেপ পর্যাপ্ত নয়। প্রকৃত অর্থে কোন জরিপও করা হয়নি যে কী পরিমাণ মানুষ মূল্যস্ফীতির চাপে আছে। এখন বিশ্ববাজারে জিনিসপত্রের দাম কমে এলেও এখানে কমছে না। এই প্রেক্ষাপটে সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচি বিস্তৃত করতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘গত দুই-তিন বছর ধরে দেখা যাচ্ছে রাজস্ব আদায় পেছন দিকে হাঁটছে। আর নানা ধরনের অর্থনেতিক অব্যবস্থাপনাও দেখা গেছে। বিশেষ করে, বিনিময় হার, সুদের হার- এসব বিষয়ে যথা সময়ে যথা সিদ্ধান্ত না নিতে পারার কারণে আমাদের সামষ্টিক অর্থনীতি বড় ধরনের চাপের মুখে আছে। ব্যাংক ও আর্থিক খাতে যে সংস্কারগুলো প্রয়োজন। সেগুলো করা হয়নি।’
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, আগের নির্বাচনগুলোর সময় অর্থনীতি এত বহুমুখী চাপের মুখে ছিল না। এবার আইএমএফের শর্তগুলো বাস্তবায়ন করতে হলে জনতুষ্টির ভাবনা দূরে রাখতে হবে। ভর্তুকি নিয়ে সরকার উভয়সংকটে আছে।
রপ্তানি এবং রেমিট্যান্সও খুব যে ভালো অবস্থায় আছে, তা মনে করেন না অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান। তিনি মনে করেন, ‘জাতীয় প্রবৃদ্ধিও লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে কম হতে পারে।’
এসব অনেকটা মেনে নিয়েই পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেছেন, ‘আমাদের রাজস্ব আয় বাড়াতে হবে। এর কোন বিকল্প নেই। আমাদের বড় বড় বেশ কিছু প্রকল্প শেষের দিকে আছে, সেখানে বেশ টাকা দিতে হচ্ছে।’
মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধিকে বড় চ্যালেঞ্জ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচি নিয়ে মানুষের আশা আরও বাড়ছে। আর মূল্যস্ফীতি, ডলারের দাম বেড়ে গেছে। বাইরে থেকে অনেক কিছু আনতে হয়। এগুলো আমাদের বড় চ্যালেঞ্জ।’
মঙ্গলবার, ৩০ মে ২০২৩
করোনার থাবায় সারাবিশ্ব বিপর্যস্ত। এর প্রভাবে দেশের অর্থনীতিও নাজুক। এই অবস্থা থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর আগেই আবার শুরু হলো ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ। এটি হলো ‘মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা’। দেশের অর্থনীতিতে ফের নেমে আসলো কালো ছায়া। এদিকে আগামীবছরই জাতীয় নির্বাচন। অর্থাৎ বর্তমান সরকার রয়েছে নানামুখী চ্যালেঞ্জে। এসব চ্যালেঞ্জ সামনে নিয়ে আগামীকাল জাতীয় সংসদে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেট পেশ করবেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। এই অবস্থায় সরকার বাজেটকে কতটা গণমুখী করতে পারবে, তা নিয়ে চ্যালেঞ্জ দেখছেন অর্থনীতিবিদরা।
সাধারণ মানুষের ওপর রেকর্ড মূল্যস্ফীতির চাপ আর রাজস্ব আহরণ বৃদ্ধিতে অদক্ষতা, এই দুই বাস্তবতা বাজেটের অর্থ সংস্থানকে কঠিন করে তুলেছে। পাশাপাশি আইএমএফের শর্ত বাস্তবায়ন, রিজার্ভ আর ডলার সংকটের মতো বিষয়গুলোও মাথায় রাখতে হচ্ছে সরকারকে। তাই অর্থনীতিবিদদের অনেকেই মনে করছেন, নির্বাচনকে মাথায় রেখে জনতুষ্টির বাজেট করা এবার খুব কঠিন।
তবে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেছেন, ‘আমরা জনকল্যাণমূলক কর্মসূচি অব্যাহত রাখব। কিন্তু রাজস্ব আয় বাড়ানো ছাড়া উপায় নেই।’
তারপরও এবারের বাজেটের আকার হতে পারে সাত লাখ ৬১ হাজার ৯৯১ কোটি টাকার। মোট আয়ের লক্ষ্যমাত্রা পাঁচ লাখ কোটি টাকা এবং ঘাটতি দুই লাখ ৬১ হাজার ৯৯১ কোটি টাকা। এর মধ্যে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিবি) হতে পারে দুই লাখ ৬৩ হাজার কোটি টাকা। চলতি (২০২২-২৩) অর্থবছরের মূল বাজেট ছয় লাখ ৭৮ হাজার কোটি টাকার। তবে পরে সংশোধন করে কিছুটা কমানো হয়।
ইউক্রেন যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে উচ্চ মূল্যস্ফীতি, রিজার্ভ ও ডলার সংকট, আইএমএফের শর্ত, এসব বিবেচনায় রেখে জাতীয় নির্বাচনের আগে এই বাজেট পেশ করা হচ্ছে। ফলে সরকারকে জনতুষ্টির বিষয়টিও মাথায় রাখতে হচ্ছে।
তবে পলিসি রিচার্স ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, ‘নির্বাচন সামনে থাকলেও বাজেটে জনতুষ্টির তেমন সুযোগ নেই। আর এত বড় বাজেটের অর্থ কোথা থেকে আসবে, সেটাই এখন প্রধান চ্যালেঞ্জ। এবার বাজেটের আকার হতে পারে ২৫ বিলিয়ন ডলার। এর মধ্যে ১২ বিলিয়ন বাইরে থেকে এলে এর রি-পেমেন্ট হবে দুই বিলিয়ন। থাকছে ১০ বিলিয়ন ডলার। ডমেস্টিক অর্থনীতি থেকে আরও ১৫ বিলিয়ন ডলার জোগাড় করতে হবে। মানে এক লাখ ৫৫ হাজার কোটি টাকা।’
রাজস্ব ঘাটতির বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের রাজস্ব-ঘাটতি আছে। এখানে তো অনেক চ্যালেঞ্জ। এত টাকা তো দিতে পারবে না। তাহলে কী হবে? আমাদের টাকা ছেপে পরিস্থিতি সামাল দিতে হবে। তাতে অর্থনীতি দুর্বল হবে, মূল্যস্ফীতি আরও বাড়বে, বাজারে চাপ সৃষ্টি হবে।’
এ বিষয়ে গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘ঘাটতি বাজেটের অর্থায়ন কীভাবে হবে এটা অবশ্যই একটা বড় চ্যালেঞ্জ। এই অর্থ কোথা থেকে সরকার জোগাড় করবে, এটা কি ব্যাংকিং সেক্টর থেকে ঋণ নেবে, না কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ঋণ নেবে, না বৈদেশিক ঋণ নেবে সেটা সরকারকে নির্ধারণ করতে হবে।’
চলতি (২০২২-২৩) অর্থবছরের প্রথম ৯ মাস, অর্থাৎ জুলাই থেকে মার্চ পর্যন্ত লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় রাজস্ব আদায়ে ঘাটতি প্রায় ২৮ হাজার কোটি টাকা। আর ১২ মাসে এই ঘাটতি হতে পারে ৪০ হাজার কোটি টাকা।
এর বাইরে আরও যে বড় চ্যালেঞ্জ আছে তা হলো, উচ্চ মূল্যস্ফীতি। এখন মূল্যস্ফীতির সাধারণ হার ৯ দশমিক ৩৩ শতাংশ। খাদ্যপণ্যে এটা আরও বেশি। এই মূল্যস্ফীতির কারণে অনেকের আয় কমেছে, ক্রয়ক্ষমতা কমেছে। আর সে জন্য সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির বিস্তৃতি ঘটাতে হবে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সক্ষমতা যদি না বাড়ানো যায়, তাহলে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হবে না। উন্নয়ন কর্মসূচির বাস্তবায়ন এই অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে মাত্র ৫০ ভাগ হয়েছে। বিদেশি ঋণের যেসব প্রকল্প পাইপ লাইনে আছে, সেগুলো দ্রুত বাস্তবায়ন করা হলে, তার একটা প্রভাব রিজার্ভে পড়বে।
মোস্তাফিজুর রহমান মনে করেন, ‘নির্বাচনের আগে বাজেট হলেও তথাকথিত জনতুষ্টির বাজেট করার সুযোগ নাই। তবে সামাজিক নিরাপত্তাবেষ্টনী বাড়াতে হবে। সাধারণ মানুষের ওপর প্রভাব পড়ে, এমন পণ্যে হয়তো নতুন কর আরোপ করা হবে না। তবে বিলাস পণ্যে কর বাড়বে। করমুক্ত আয়সীমা বাড়তে পারে।’
এ বিষয়ে সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিং (সানেম)-এর নির্বাহী পরিচালক সেলিম রায়হান মনে করেন, ‘মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আনা সরকারের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলেও এটা নিয়ন্ত্রণে সরকারের পদক্ষেপ পর্যাপ্ত নয়। প্রকৃত অর্থে কোন জরিপও করা হয়নি যে কী পরিমাণ মানুষ মূল্যস্ফীতির চাপে আছে। এখন বিশ্ববাজারে জিনিসপত্রের দাম কমে এলেও এখানে কমছে না। এই প্রেক্ষাপটে সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচি বিস্তৃত করতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘গত দুই-তিন বছর ধরে দেখা যাচ্ছে রাজস্ব আদায় পেছন দিকে হাঁটছে। আর নানা ধরনের অর্থনেতিক অব্যবস্থাপনাও দেখা গেছে। বিশেষ করে, বিনিময় হার, সুদের হার- এসব বিষয়ে যথা সময়ে যথা সিদ্ধান্ত না নিতে পারার কারণে আমাদের সামষ্টিক অর্থনীতি বড় ধরনের চাপের মুখে আছে। ব্যাংক ও আর্থিক খাতে যে সংস্কারগুলো প্রয়োজন। সেগুলো করা হয়নি।’
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, আগের নির্বাচনগুলোর সময় অর্থনীতি এত বহুমুখী চাপের মুখে ছিল না। এবার আইএমএফের শর্তগুলো বাস্তবায়ন করতে হলে জনতুষ্টির ভাবনা দূরে রাখতে হবে। ভর্তুকি নিয়ে সরকার উভয়সংকটে আছে।
রপ্তানি এবং রেমিট্যান্সও খুব যে ভালো অবস্থায় আছে, তা মনে করেন না অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান। তিনি মনে করেন, ‘জাতীয় প্রবৃদ্ধিও লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে কম হতে পারে।’
এসব অনেকটা মেনে নিয়েই পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেছেন, ‘আমাদের রাজস্ব আয় বাড়াতে হবে। এর কোন বিকল্প নেই। আমাদের বড় বড় বেশ কিছু প্রকল্প শেষের দিকে আছে, সেখানে বেশ টাকা দিতে হচ্ছে।’
মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধিকে বড় চ্যালেঞ্জ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচি নিয়ে মানুষের আশা আরও বাড়ছে। আর মূল্যস্ফীতি, ডলারের দাম বেড়ে গেছে। বাইরে থেকে অনেক কিছু আনতে হয়। এগুলো আমাদের বড় চ্যালেঞ্জ।’