জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের এক কর্মীকে বাসে উঠতে না দিয়ে ধাক্কা দেওয়ার জেরে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে সেলফি পরিবহনের ২০টি বাস আটক করার অভিযোগ উঠেছে।
আজ শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে তাঁরা বিশ্ববিদ্যালয়-সংলগ্ন ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের আরিচাগামী লেনে বাসগুলো আটকাতে শুরু করেন। পরে বেলা দুইটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান ওরফে লিটন ও মালিকপক্ষের মধ্যস্ততায় ২০ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ আদায় সাপেক্ষে বাসগুলো ছেড়ে দেওয়া হয়।
ভুক্তভোগী বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগে অধ্যয়নরত এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের আবাসিক ছাত্র আবদুল্লাহ আল সাদ। তিনি ছাত্রলীগের কর্মী। আবদুল্লাহ আল সাদ সংবাদকে বলেন,‘গতকাল রাতে গাবতলী থেকে সেলফি পরিবহনের বাসে উঠতে গিয়েছিলাম। তখন জাহাঙ্গীরনগর যাব বললে আমাকে বাস থেকে ধাক্কা দিয়ে নামিয়ে দেয়। তখন আমি আঘাত পাই এবং আমার ল্যাপটপ ক্ষতিগ্রস্ত হয়।’
এ ঘটনার জের ধরে আজ শুক্রবার বেলা ১১টা থেকে ওই হলের ছাত্রলীগের কর্মীরা বাস আটকাতে শুরু করেন। বেলা একটার দিকে সরেজমিনে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক-সংলগ্ন ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের আরিচা লেনে বাস আটক করছেন ছাত্রলীগের কর্মীরা। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের ৪৯তম ব্যাচের শিক্ষার্থীদের সেলফি পরিবহনের বাসগুলোকে যাত্রাপথে থামিয়ে বাস থেকে চাবি নিয়ে নিতে দেখা যায়। তাঁরা সবাই ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত এবং শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান ওরফে লিটনের অনুসারী।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সেলফি পরিবহনের মালিকদের একজন সংবাদকে বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অন্তত ২০টি বাস আটকে রাখেন। এতগুলো বাস আটকে রাখলে আমাদের বিশাল আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়। পরে মালিকপক্ষ ও লিটন ভাই (ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক) আলোচনায় বসে ২০ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ নিয়ে সমাধান করেন।’
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান লিটন বলেন, ‘বাস আটকানোর ঘটনা শুনেছি। সমস্যার সমাধান হয়েছে। টাকাপয়সার ব্যাপারে আমার জানা নেই। আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে এই সমস্যার সমাধান চাই। প্রশাসন যেন বাসমালিকদের সঙ্গে কথা বলে। কোনো শিক্ষার্থী যেন বাস-সংশ্লিষ্ট কারও থেকে কোনো ধরনের হেনস্তার শিকার না হন।’
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আ স ম ফিরোজ-উল-হাসান বলেন, ‘তখন নিরাপত্তা শাখার এক কর্মকর্তাকে পাঠিয়েছিলাম। তিনি জানিয়েছেন, শিক্ষার্থীরা বাসগুলো ছেড়ে দিয়েছে। তবে বাসমালিক বা শিক্ষার্থীরা কেউ আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেনি।’
এর আগে চলতি বছরের ২৫ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতা সাভার-আশুলিয়া রুটে চলাচলকারী ২৪টি লেগুনা আটকে রাখেন। তখন লেগুনার চালক ও মালিকপক্ষ অভিযোগ করে বলেন, প্রতিদিন প্রতিটি লেগুনা থেকে ২৫ টাকা করে চাঁদা দেওয়া হতো ছাত্রলীগকে। এই রুটে প্রতিদিন ২০০টি লেগুনা চলাচল করে। কিন্তু ছাত্রলীগের নেতারা বলছেন, এখন থেকে ১০০ টাকা করে চাঁদা দেওয়ার জন্য। চাঁদা আদায়ের বিষয়টি সুরাহা না হওয়ায় লেগুনাগুলো আটকে রাখা হয়।
আর ছাত্রলীগ নেতাদের অভিযোগ ছিল, বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থীর মোটরসাইকেলে ধাক্কা দেওয়ায় শিক্ষার্থীরা লেগুনাগুলো আটক করেন। তিন দিন পর ছাত্রলীগের নেতাদের সঙ্গে লেগুনার মালিকেরা আলোচনায় বসেন। পরে লেগুনাগুলো ছেড়ে দেওয়া হয়।
আন্তর্জাতিক: পাকিস্তান-আফগানিস্তান সীমান্তে তুমুল সংঘর্ষ
অপরাধ ও দুর্নীতি: ব্যাগভর্তি জাল টাকা, হাসপাতালে বিল দেয়ার সময় আটক তিন
সারাদেশ: সীমিত আকারে পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি