ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জাকসু) নির্বাচনে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল মঙ্গলবার,(২৬ আগস্ট ২০২৫) ও পূর্ণাঙ্গ প্যানেল ঘোষণা করতে পারেনি। সংগঠনের এখানকার শীর্ষ নেতাদের ছাত্রত্ব নেই। যা তাদের জন্য বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। সংগঠনটির যারা নিয়মিত শিক্ষার্থী তাদের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার মতো পরিচিত ও প্রভাবশালী নামের অভাব।
আর সাম্প্রতিক কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে উদ্ভূত অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব এবং বিক্ষোভের জেরে প্যানেল চূড়ান্তকরণ প্রক্রিয়া আরও জটিল হয়ে উঠেছে বলে সংগঠনটির সূত্র জানিয়েছে।
তবে জাবি শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক জহির উদ্দিন মোহাম্মদ বাবর বলেছেন, ‘প্যানেল নিয়ে কাজ প্রায় শেষ। একটি খসড়া তালিকা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কাছে পাঠানো হয়েছে এবং তার অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে সংগঠন।’
খসড়া তালিকায় ভিপি পদে শেখ সাদি এবং আবদুল গাফফার জিসান, জিএস পদে তানজিলা হোসেন বৈশাখী, এজিএস (ছাত্র) পদে রুবেল হোসেন, মেহেদী ইমন এবং হামিদুল্লাহ সালমান, এবং এজিএস (ছাত্রী) পদে মীর্জা সাকি ও সৈয়দা অনন্যা ফারিয়ার নাম প্রস্তাব করা হয়েছে।
ছাত্রদল বলছে, তালিকায় জুলাই গণঅভ্যুত্থানে অবদান রাখা এবং পূর্ববর্তী সময়ে সংগঠনে সক্রিয় নেতাকর্মীদের প্রাধান্য দেয়া হয়েছে। তবে, এই নামগুলো ক্যাম্পাসে ততটা পরিচিত নন বলে সূত্রগুলোর দাবি।
গত ৮ আগস্ট ছাত্রদলের ৩৭০ সদস্যের বর্ধিত কমিটি এবং ১৭টি হল কমিটি ঘোষণা করায় অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব প্রকাশ্য হয়। অভিযোগ কমিটিতে ‘ত্যাগী’ নেতাকর্মীদের ‘উপেক্ষা’ করে ‘বিতর্কিতদের’ অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এতে ‘হত্যা মামলার আসামি, চুরি-ছিনতাই এবং মাদকাসক্ত ব্যক্তিদের’ পদ দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। পদবঞ্চিতরা কমিটি বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ করেন, যার ফলে কেন্দ্রীয় ছাত্রদল গত ১১ আগস্ট ১৩ নেতাকে শোকজ করে।
এই দ্বন্দ্বের জেরে শীর্ষ নেতারা ক্যাম্পাসে অনুপস্থিত ছিলেন। গত ১৭ আগস্ট কেন্দ্রীয় নেতাদের উপস্থিতিতে দু’পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি হয়। পরবর্তীতে গত ১৯ আগস্ট ঢাকায় বৈঠকে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব দ্বন্দ্ব মিটিয়ে নির্বাচনের প্রস্তুতি নেয়ার নির্দেশ দেন এবং নির্বাচন পরবর্তী কমিটির অনিয়মের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দেন।
বিক্ষুব্ধদের অন্যতম যুগ্ম আহ্বায়ক রায়হান মিল্টন জানান, ‘কেন্দ্রের অনুরোধে আন্দোলন স্থগিত করা হয়েছে এবং আগামী ১৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে কমিটি বাতিলের আশ্বাস পাওয়া গেছে।’
১১ সেপ্টেম্বর জাকসুর ভোট হওয়ার কথা। নির্বাচনের জন্য মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই হয়ে গেছে। নির্বাচন কমিশন মঙ্গলবার খসড়া প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করেছে। ভিপি পদে প্রার্থী ২০ জন। তবে সামগ্রিকভাবে প্রার্থী সংকট দেখা দিয়েছেঅ। বিশেষ করে নারী
প্রার্থী কম।
####নারীদের আগ্রহ ‘কম’
ভিপি পদে কোনো নারী প্রার্থী নেই। পাঁচটি নারী হলে ১৫টি পদের বিপরীতে মাত্র ১৫টি মনোনয়ন জমা পড়েছে, অর্থাৎ ওই পদগুলোতে ভোটের প্রয়োজন হবে না।
সামাজিক চাপ, সাইবার বুলিং এবং পরিবারিক উদ্বেগের কারণে নারীরা নেতৃত্বের পদে এগিয়ে আসতে অনীহা প্রকাশ করছেন বলে বলছেন শিক্ষার্থীরা।
###### অন্যদের কী অবস্থা
বামপন্থি অন্যান্য সংগঠনগুলোর মধ্যে ফাটল দেখা দিয়েছে। যার ফলে দুটি পৃথক প্যানেল হচ্ছে। একটি ‘সম্প্রীতির ঐক্য’ নামে আমার্ত্য রায় এবং শরণ ইহসানের নেতৃত্বে, অন্যটি ‘শিক্ষার্থী ঐক্য সংসদ’ নামে মাহফুজ ইসলাম মেঘ এবং জাহিদুল ইসলাম ইমনের নেতৃত্বে।
অন্য সংগঠনগুলো ইতোমধ্যে প্যানেল ঘোষণা করেছে। ইসলামী ছাত্রশিবির ‘সমন্বিত শিক্ষার্থী জোট’ নামে পূর্ণাঙ্গ প্যানেল ঘোষণা করেছে। বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ (বাগছাস) ‘শিক্ষার্থী ঐক্য ফোরাম’ নামে প্যানেল ঘোষণা করেছে।
এদিকে, গণঅভ্যুত্থান রক্ষা আন্দোলনের আহ্বায়ক আবদুর রশিদ জিতু স্বতন্ত্র প্যানেল গঠন করছেন, যাতে ভিপি পদে তিনি নিজে এবং জিএস পদে শাকিল আলী প্রার্থী হবেন।
এই নির্বাচন তিন দশকেরও বেশি সময় পর অনুষ্ঠিত হচ্ছে, যা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র রাজনীতিতে নতুন গতিশীলতা আনবে বলে আশা করা হচ্ছে। তবে, প্রার্থী সংকট এবং অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের কারণে নির্বাচনী প্রক্রিয়া চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি।
ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
মঙ্গলবার, ২৬ আগস্ট ২০২৫
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জাকসু) নির্বাচনে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল মঙ্গলবার,(২৬ আগস্ট ২০২৫) ও পূর্ণাঙ্গ প্যানেল ঘোষণা করতে পারেনি। সংগঠনের এখানকার শীর্ষ নেতাদের ছাত্রত্ব নেই। যা তাদের জন্য বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। সংগঠনটির যারা নিয়মিত শিক্ষার্থী তাদের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার মতো পরিচিত ও প্রভাবশালী নামের অভাব।
আর সাম্প্রতিক কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে উদ্ভূত অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব এবং বিক্ষোভের জেরে প্যানেল চূড়ান্তকরণ প্রক্রিয়া আরও জটিল হয়ে উঠেছে বলে সংগঠনটির সূত্র জানিয়েছে।
তবে জাবি শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক জহির উদ্দিন মোহাম্মদ বাবর বলেছেন, ‘প্যানেল নিয়ে কাজ প্রায় শেষ। একটি খসড়া তালিকা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কাছে পাঠানো হয়েছে এবং তার অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে সংগঠন।’
খসড়া তালিকায় ভিপি পদে শেখ সাদি এবং আবদুল গাফফার জিসান, জিএস পদে তানজিলা হোসেন বৈশাখী, এজিএস (ছাত্র) পদে রুবেল হোসেন, মেহেদী ইমন এবং হামিদুল্লাহ সালমান, এবং এজিএস (ছাত্রী) পদে মীর্জা সাকি ও সৈয়দা অনন্যা ফারিয়ার নাম প্রস্তাব করা হয়েছে।
ছাত্রদল বলছে, তালিকায় জুলাই গণঅভ্যুত্থানে অবদান রাখা এবং পূর্ববর্তী সময়ে সংগঠনে সক্রিয় নেতাকর্মীদের প্রাধান্য দেয়া হয়েছে। তবে, এই নামগুলো ক্যাম্পাসে ততটা পরিচিত নন বলে সূত্রগুলোর দাবি।
গত ৮ আগস্ট ছাত্রদলের ৩৭০ সদস্যের বর্ধিত কমিটি এবং ১৭টি হল কমিটি ঘোষণা করায় অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব প্রকাশ্য হয়। অভিযোগ কমিটিতে ‘ত্যাগী’ নেতাকর্মীদের ‘উপেক্ষা’ করে ‘বিতর্কিতদের’ অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এতে ‘হত্যা মামলার আসামি, চুরি-ছিনতাই এবং মাদকাসক্ত ব্যক্তিদের’ পদ দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। পদবঞ্চিতরা কমিটি বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ করেন, যার ফলে কেন্দ্রীয় ছাত্রদল গত ১১ আগস্ট ১৩ নেতাকে শোকজ করে।
এই দ্বন্দ্বের জেরে শীর্ষ নেতারা ক্যাম্পাসে অনুপস্থিত ছিলেন। গত ১৭ আগস্ট কেন্দ্রীয় নেতাদের উপস্থিতিতে দু’পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি হয়। পরবর্তীতে গত ১৯ আগস্ট ঢাকায় বৈঠকে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব দ্বন্দ্ব মিটিয়ে নির্বাচনের প্রস্তুতি নেয়ার নির্দেশ দেন এবং নির্বাচন পরবর্তী কমিটির অনিয়মের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দেন।
বিক্ষুব্ধদের অন্যতম যুগ্ম আহ্বায়ক রায়হান মিল্টন জানান, ‘কেন্দ্রের অনুরোধে আন্দোলন স্থগিত করা হয়েছে এবং আগামী ১৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে কমিটি বাতিলের আশ্বাস পাওয়া গেছে।’
১১ সেপ্টেম্বর জাকসুর ভোট হওয়ার কথা। নির্বাচনের জন্য মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই হয়ে গেছে। নির্বাচন কমিশন মঙ্গলবার খসড়া প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করেছে। ভিপি পদে প্রার্থী ২০ জন। তবে সামগ্রিকভাবে প্রার্থী সংকট দেখা দিয়েছেঅ। বিশেষ করে নারী
প্রার্থী কম।
####নারীদের আগ্রহ ‘কম’
ভিপি পদে কোনো নারী প্রার্থী নেই। পাঁচটি নারী হলে ১৫টি পদের বিপরীতে মাত্র ১৫টি মনোনয়ন জমা পড়েছে, অর্থাৎ ওই পদগুলোতে ভোটের প্রয়োজন হবে না।
সামাজিক চাপ, সাইবার বুলিং এবং পরিবারিক উদ্বেগের কারণে নারীরা নেতৃত্বের পদে এগিয়ে আসতে অনীহা প্রকাশ করছেন বলে বলছেন শিক্ষার্থীরা।
###### অন্যদের কী অবস্থা
বামপন্থি অন্যান্য সংগঠনগুলোর মধ্যে ফাটল দেখা দিয়েছে। যার ফলে দুটি পৃথক প্যানেল হচ্ছে। একটি ‘সম্প্রীতির ঐক্য’ নামে আমার্ত্য রায় এবং শরণ ইহসানের নেতৃত্বে, অন্যটি ‘শিক্ষার্থী ঐক্য সংসদ’ নামে মাহফুজ ইসলাম মেঘ এবং জাহিদুল ইসলাম ইমনের নেতৃত্বে।
অন্য সংগঠনগুলো ইতোমধ্যে প্যানেল ঘোষণা করেছে। ইসলামী ছাত্রশিবির ‘সমন্বিত শিক্ষার্থী জোট’ নামে পূর্ণাঙ্গ প্যানেল ঘোষণা করেছে। বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ (বাগছাস) ‘শিক্ষার্থী ঐক্য ফোরাম’ নামে প্যানেল ঘোষণা করেছে।
এদিকে, গণঅভ্যুত্থান রক্ষা আন্দোলনের আহ্বায়ক আবদুর রশিদ জিতু স্বতন্ত্র প্যানেল গঠন করছেন, যাতে ভিপি পদে তিনি নিজে এবং জিএস পদে শাকিল আলী প্রার্থী হবেন।
এই নির্বাচন তিন দশকেরও বেশি সময় পর অনুষ্ঠিত হচ্ছে, যা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র রাজনীতিতে নতুন গতিশীলতা আনবে বলে আশা করা হচ্ছে। তবে, প্রার্থী সংকট এবং অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের কারণে নির্বাচনী প্রক্রিয়া চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি।